আবদুল মান্নান সৈয়দ
এই নিবন্ধটি উইকিপিডিয়ার জন্য মানসম্মত অবস্থায় আনতে পুনর্লিখন করা প্রয়োজন। |
আবদুল মান্নান সৈয়দ (জন্মসূত্রে নাম: সৈয়দ আবদুল মান্নান) (৩ আগস্ট ১৯৪৩ - ৫ সেপ্টেম্বর ২০১০) বাংলাদেশের একজন আধুনিক কবি, সাহিত্যিক, গবেষক ও সাহিত্য-সম্পাদক। তিনি ২০০২ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত নজরুল ইন্সটিটিউটের নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন।[১] তিনি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের "পোয়েট ইন রেসিডেন্স" ছিলেন।[২] বিংশ শতাব্দীর ষাট দশক থেকে বাংলা সমালোচনা-সাহিত্যে তার গবেষণাধর্মী অবদান ব্যাপকভাবে স্বীকৃত। কাজী নজরুল ইসলাম ও জীবনানন্দ দাশের উপর তার উল্লেখযোগ্য গবেষণা কর্ম রয়েছে।[১] তিনি ফররুখ আহমদ, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, বিষ্ণু দে, সমর সেন, বেগম রোকেয়া, আবদুল গনি হাজারী, মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী, প্রবোধচন্দ্র সেন প্রমুখ কবি-সাহিত্যিক-সম্পাদককে নিয়ে গবেষণা করেছেন। বাংলাদেশের সাহিত্যমহলে তিনি 'মান্নান সৈয়দ' নামেই পরিচিত ছিলেন।[১][৩]
আবদুল মান্নান সৈয়দ | |
---|---|
জন্ম | ৩ আগস্ট, ১৯৪৩ চব্বিশ পরগণা, বঙ্গ, ব্রিটিশ ভারত |
মৃত্যু | ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১০ (৬৭ বছর) ঢাকা, বাংলাদেশ |
ছদ্মনাম | অশোক সৈয়দ। |
পেশা | কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সমালোচক, সম্পাদক, চিত্রকর ও অধ্যাপক |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত) পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে) বাংলাদেশ |
সময়কাল | ভারত বিভাগোত্তর পূর্ব বাংলা অর্থাৎ পূর্ব পাকিস্তান-বাংলাদেশ |
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার | বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৮১। একুশে পদক। |
জন্ম, শিক্ষা, জীবিকা
সম্পাদনাআবদুল মান্নান সৈয়দের জন্ম অবিভক্ত ভারত উপমহাদেশের পশ্চিম বঙ্গে জালালপুর নামক গ্রামে ১৯৪৩ সালে।[৪] সেটা ছিল দুর্ভিক্ষের কাল। ১৯৫০ সালে ভয়াবহ দাঙ্গা হয় পশ্চিম বঙ্গে। তখন তার পিতা পালিয়ে সপরিবার পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ) চলে আসেন এবং ঢাকার গোপীবাগে বসবাস করতে শুরু করেন। তার পিতা সৈয়দ এ. এম. বদরুদ্দোজা ছিলেন সরকারি চাকুরে। মাতা কাজী আনোয়ারা মজিদ। তারা ছয় ভাই, চার বোন। তার স্ত্রীর নাম সায়রা সৈয়দ রানু। একমাত্র কন্যার নাম জিনান সৈয়দ শম্পা।[২][৫] তিনি ১৯৫৮ সালে ঢাকার নবাবপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ঢাকা কলেজ থেকে কলা বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হন ১৯৬০ সালে। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা ভাষা ও সাহিত্য অধ্যয়ন করেন এবং ১৯৬৩ সালে স্নাতক এবং ১৯৬৪ সালে স্নাতকোত্তর লাভ করেন। সাহিত্যজীবনের প্রস্তুতিপর্ব সম্পর্কে তিনি বলেছেন, "আমার জীবনে লেটো পিরিয়ড আছে। নজরুলের মতো। পিরিয়ডটা হলো আমার ক্লাস সেভেন-এইট থেকে এমএ পাস পর্যন্ত। আমি বিরামহীন লেখালেখি করতাম আর ছবি আঁকতাম। কিন্তু আব্বা আমার লেখা প্রকাশিত হতে দিতেন না। ওই পিরিয়ডে আমি নিজেকে ক্রমাগত শিক্ষিত ও সংস্কৃত করার চেষ্টা করেছি। আমার কঠোর আব্বা, কলকাতা ইউনিভার্সিটিতে পড়েছেন ; চাচাও মেধাবী ছাত্র ; আমাকে পড়ালেখায় বাধ্য করেছেন যেন আমি এমএ পাস করি। এ জন্য ১৯৬৫ সালকে আমি ধরি আমার আত্মপ্রকাশের বছর"।[৬] শিক্ষা-জীবন শেষে তিনি একটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানে কাজ শুরু করেন। পরবর্তীতে সিলেটে মুরারীচাঁদ কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন। তিনি অধ্যাপনা করেই জীবিকা নির্বাহ করেন। কর্মজীবনে তিনি শেখ বোরহানুদ্দীন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজ, সিলেটের এম. সি. কলেজে, এবং ঢাকায় জগন্নাথ কলেজে অধ্যাপনা করেছেন। দায়িত্ব পালন করেছেন ডিসট্রিক্ট গেজেটিয়ারে।[৭] ঢাকার জগন্নাথ কলেজে দীর্ঘ কাল অধ্যাপনা করার পর ২০০২ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত মেয়াদের জন্য তিনি নজরুল ইন্সটিটিউটের নির্বাহী পরিচালকের পদে দায়িত্ব পালন করেন।
সাহিত্যচর্চা
সম্পাদনাতাকে বলা হয়েছে সব্যসাচী লেখক। বাংলা সাহিত্যের যে শাখায়ই তিনি চর্চা করেছেন, সাফল্য ও কীর্তি ধরা দিয়েছে অবলীলায়।[৩] বলা হয়েছে এদেশে তার মতো পরিশ্রমী লেখক নেই। যে কোন লেখার মধ্যেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতেন। প্রচণ্ড তোলপাড় করা শক্তি নিয়ে বাংলা সাহিত্যে আবির্ভূত হয়েছিলেন তিনি। বাংলা কবিতায় কবিতায় তিনি যুক্ত করেছিলেন পরাবাস্তববাদী দিগন্ত। তার উদ্ভাবনী শক্তি ও ব্যঞ্জনা সৃষ্টি তার ভাষাকে করে তুলেছে ব্যতিক্রমী। মহাসমর পরর্তীকালে দুই বাংলাতেই তার মতো সাহিত্যসমালোচক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। বিশ্বসাহিত্য সম্পর্কে ছিল তার অগাধ ধারণা। সমসাময়িককালে তার মতো বড় মাপের লেখক দেখা যায় না। কবিতা, গল্প, উপন্যাস ও কবিতায় তার সৃজনশীলতা অসাধারণ।[৭] সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় প্রচৃর কাজ করলেও ভগ্নস্বাস্থ্য উপেক্ষা করে তিনি আরো কাজ করার পরিকল্পনা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, "মাইকেল সম্পর্কে, বঙ্কিমের উপন্যাস সম্পর্কে আমার লেখার ইচ্ছা আছে। ফররুখ আহমেদ একজন বিরাট লেখক। আমার একটা আক্ষেপ, এত বড় কবি জসীমউদ্দীন, তাঁর ওপর আমি কোনো কাজ করিনি। জীবনানন্দকে নিয়ে আমি যে কাজটা করেছি, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়েও সে রকম কাজ করা আমার উচিত ছিল।"[৮] তার আত্মজৈবনিক লেখার মধ্যে বিষাদের সুর পরিলক্ষিত হয়। যে তুলনারহিত সৃজনশক্তির স্বাক্ষর তিনি রেখে গেছেন তার মূল্য জীবদ্দশায় যথাযথভাবে স্বীকৃত হয়নি। স্বীয় বিশ্বাসে রাজনৈতিক ঔদার্যের কারণে তাকে প্রায়শ: রাষ্ট্রীয় উপেক্ষার শিকার হতে হয়েছে।
মান্নান সৈয়দ ছিলে বাংলাদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম "পোয়েট ইন রেসিডেন্স"। তাকে স্কলার-ইন-রেসিডেন্স পদমর্যাদায় নিয়োগ করে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সংগ্রামী জীবনকে গ্রথিত করে পূর্ণাঙ্গ নজরুলজীবনী রচনার দায়িত্ব দেয়া হয়।[২]
কবিতা
সম্পাদনাবাংলা ভাষায় তিনি সেই একজন কবি যিনি ষাটের দশকে সমকালীন কাব্যরুচিকে বদলে দেয়ার অভিপ্রায়ে পরাবাস্তবতার শরণাপন্ন হয়েছিলেন। এভাবেই তিনি স্বীয় কবিকণ্ঠস্বরকে অনন্যসাধারণ করে উপস্থাপন করেছিলেন।[৯] ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন ইত্তেফাক পত্রিকার সাহিত্যবিভাগে "সোনার হরিণ" শিরোনামে একটি কবিতা প্রকাশের মধ্য দিয়ে বাংলা কবিতার জগতে তার অন্নপ্রাশন হয়েছিল।[১০] ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দে জন্মান্ধ কবিতাগুচ্ছ শিরোনামীয় কাব্যগ্রন্থের মধ্য দিয়ে বাংলা কবিতায় আবদুল মান্নান সৈয়দের অনির্বচনীয় আসনের শিলান্যাস হয়েছিল। জীবদ্দশায় তার প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ২১। ষাটের দশকের আধুনিকতাবাদী কবিদের মধ্যে আবদুল মান্নান সৈয়দ অন্যতম। তার কাব্যশৈলীর বড় বৈশিষ্ট্য আধুনিকতা ও নন্দনতত্ত্বের বহুমাত্রিক প্রয়োগ। স্যুররিয়ালিস্ট বা পরাবাস্তবতার কবি হিসেবে তিনি খ্যাতিমান ছিলেন। বলা হয়েছে, "তিনি প্রচণ্ড তোলপাড় করা শক্তি নিয়ে বাংলা সাহিত্যে আবির্ভূত হয়েছিলেন। কবিতায় তিনি এনেছেন পরাবাস্তববাদী অনন্য বৈভব।"[১১] নতুনতর সৃষ্টির মধ্য দিয়ে গতানুগতিকতাকে তিনি বরাবরই চ্যালেঞ্জ করেছেন। নিজের রচনায় নিরন্তর তিনি নিরীক্ষা চালিয়েছেন। ফলত: প্রায় পাঁচ দশকের কবি জীবনে তিনি বহু বার বাঁকবদল করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, "কবিতায় আমি ভ্রাম্যমাণ। ফলে বছর পঞ্চাশ ধরে কবিতা যে লিখে গেছি, তার মধ্যে যে রূপান্তর তাকে আমি বাধা দিইনি। জোর করে কখনো কবিতা লিখিনি। আজো না। কবিতা আমি তখনই লিখি যখন কবিতা নিজে এসে আমার ওষ্ঠ চুম্বন করে।" প্রতীক-পরাবাস্তব থেকে সহজ-সাধারন ধর্মীয় কবিতা; অক্ষরবৃত্ত-মাত্রাবৃত্ত থেকে সনেট ও টানাগদ্য - প্রায় সর্ববিধ আঙ্গিকে তিনি নিরীক্ষাধর্মীতার স্বাক্ষর রেখেছেন। তবে সর্বদাই যে প্রণোদনা তার কবিসত্তায় অন্তর্নিহিত ছিল তা' হলো ১৯৩০ দশকের কবিদের প্রভাব মুক্ত হয়ে বাংলা আধুনিক কবিতায় নতুন একটি দিগন্ত সৃষ্টি করা।[১২] বহুলপ্রজ এই কবির কবিজীবনে সবচেয়ে ফলপ্রসূ সময় আশির দশক। এই কালপরিধিতে প্রকাশিত হয়েছে তার ৬টি কাব্যগ্রন্থ। শৈলী ও বিষয়বস্তুর বৈচিত্রে এই কাব্যগ্রন্থগুলো ভাস্বর, বহুবর্ণিল। নির্বাচিত কবিতা (২০০১) শিরোনামীয় সংকলনগ্রন্থে তার কবিসত্তার সামগ্রিক পরিচয় পাওয়া যায়।[১৩]
সাহিত্য-সমালোচনা
সম্পাদনাআবদুল মান্নান সৈয়দ কবিতা বা কথাসাহিত্যের চেয়েও সাহিত্য-সমালোচক হিসেবে অধিকতর খ্যাতিমান। পঞ্চাশ বছর তিনি সাহিত্য-সমালোচনার ক্ষেত্রে নিরলসভাবে কাজ করে বাংলা সমালোচনা-সাহিত্যকে একটি দৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়েছেন। তার সমালোচনা নিবিড় গবেষণার ওপর প্রতিষ্ঠিত। সমালোচনার জন্য তিনি আবিষ্কার করেছেন একটি নিজস্ব ভাষা যা প্রায়শ: দুর্জ্ঞেয়-দুরতিক্রম্য। সাহিত্য প্রবন্ধে তিনি বিশুদ্ধ শিল্পলোক-বিচরণে প্রতিশ্রতিবদ্ধ ছিলেন। তিনি সমালোচনায় নিমোর্হ এবং বিবেকী। শুদ্ধতম কবি , করতলে মহাদেশ, দশ দিগণ্তের দ্রষ্টা প্রভৃতি গ্রন্থের রচয়িতা আবদুল মান্নান সৈয়দের প্রবন্ধ ষাটের কাব্য-লক্ষণ গদ্যভাষার সবচেয়ে উজ্জ্বল উদাহরণ। বলা হয়েছে, সুগভীর শিল্প-এষণা, নন্দনতাত্ত্বিক ব্যুৎপন্ন এবং সাহিত্যচর্চায় প্রশ্নাতীত নিষ্ঠা ও সততা ষাটের প্রাবন্ধিকদের মধ্যে তাকে স্বতন্ত্র অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত করেছে। প্রবন্ধের বিষয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে তিনি মূলত নন্দনতত্ত্বের বিভিন্ন শাখায় স্বচ্ছন্দ হলেও কবি ও কবিতা এবং কাব্য-আঙ্গিক তার অভিনিবেশের ঐকান্তিক ক্ষেত্র। অনেক ক্ষেত্রে তার প্রবন্ধে যুক্তি-জ্ঞান-অভিজ্ঞতার চেয়ে কবি-কল্পনাই প্রাধান্য পেয়েছে। তার প্রথম প্রবন্ধ মুদ্রিত হয়েছিল সাম্প্রতিক পত্রিকায়, ১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দে, শিরোনাম "কথাসাহিত্য প্রাসঙ্গিক"। প্রথম গ্রন্থালোচনা প্রকাশ করেছিলসমকাল পত্রিকায়।[১৪]
জীবনানন্দ চর্চা
সম্পাদনাতিনি আধুনিক বাংলা কবিতার পথিকৃৎ এবং প্রধানতম কবি জীবনানন্দ দাশের ওপর আলোচনার জন্য সুবিখ্যাত। তার শুদ্ধতম কবি জীবনানন্দ বিষয়ে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য আলোচনা গ্রন্থ। তিনি জীবনানন্দ দাশের কবিতা, গল্প, পত্রাবলী ইত্যাদি সংগ্রন্থিত ক'রে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তার জীবনানন্দ পাঠ সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য বিবেচিত।
নজরুল চর্চা
সম্পাদনানজরুল চর্চ্চায় তিনি কবি মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ এবং প্রাবন্ধিক শাহাবুদ্দীন আহমদের গবেষণা দ্বারা অণুপ্রাণিত হয়েছিলেন।[১৫] তার নজরুল ইসলাম - কবি ও কবিতা একটি উল্লেখযোগ্য গবেষণাগ্রন্থ।
কথাসাহিত্য
সম্পাদনাসব্যসাচী লেখক মান্নান সৈয়দ কথাসাহিত্যেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে গেছেন। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থাবলী হলো সত্যের মত বদমাস, চল যাই পরোক্ষে এবং মৃত্যুর অধিক লাল ক্ষুধা। এর মধ্যে সত্যের মত বদমাশ প্রকাশিত হয় ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে। অশ্লীতার অভিযোগে তৎকালীন সরকার কর্তৃক এ গ্রন্থটি নিষিদ্ধ হয়। তার বহুল আলোচিত দুটি উপন্যাস হলো পরিপ্রেক্ষিতের দাসদাসী, অ-তে অজগর। তার গল্প-উপন্যাসে মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ প্রাধ্যন্য পেয়েছে। বলা হয়েছে, "ষাটের গল্পকারদের মধ্যে আবদুল মান্নান সৈয়দ সবচেয়ে বেশি প্রাতিস্বিকতাবিলাসী শিল্পী। আত্মজৈবনিক অভিজ্ঞতার গল্পভাষ্য নির্মাণে তিনি সিদ্ধহস্ত। বিষয়াংশ এবং প্রকরণের অভিনবত্বে তাঁর গল্পসাহিত্য বিশিষ্টতার দাবিদার। তবে, প্রথম পর্বের গল্পে, কনটেন্ট ও ফর্মে, আরোপিত উপাদান গল্পের মূলস্রোতের সঙ্গে জৈবসমগ্রতায় একাত্ম হতে পারেনি। বিচ্ছিন্নতা ও নির্বেদের যন্ত্রণায় তাঁর অধিকাংশ নায়ক পীড়িত ও পর্যুদস্ত। প্রতীকী এবং পরাবাস্তববাদী পরিচর্যা আবদুল মান্নান সৈয়দের ছোটগল্পের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। প্রথম পর্বের গল্পের ভাষারীতিতে আরোপিত আধুনিকতা দ্বিতীয় পর্বে পরিত্যক্ত হয়েছে; ফলে, গল্পস্রোত হয়েছে অনেক বেশি সাবলীল ও স্বচ্ছন্দ।"[১৬]
নাটক
সম্পাদনাশুধু কবিতা-কথাসাহিত্য নয়, তিনি লিখেছেন, কাব্যনাট্যপ্রহসন, একাঙ্ক, শ্রুতিনাট্য, পূর্ণাঙ্গ নাটক, অনুবাদ নাটক, ইত্যাদি। ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দে বাংলা একাডেমী কর্তৃক প্রকাশিত হয় তার নাট্যগুচ্ছ। ২০০৯-এ প্রকাশিত হয় নাট্যধর্মী সকল লেখার সঙ্কলন নাট্যসমগ্র। তিনি ছোটগল্পের নাট্যরূপ দিয়েছেন। তার কয়েকটি কাব্য নাট্যের নাম বিশ্বাসের তরু, জ্যোৎস্না-রৌদ্রের চিকিৎসা, ঈশ্বরপ্রাপ্তির ছোট্ট গাঁথা, চাকা, কবি ও অন্যেরা এবং আটতলার ওপরে।
সম্পাদনা
সম্পাদনাবিভিন্ন লেখক-সাহিত্যিকের রচনাসমগ্র সংকলন ও সম্পাদনায় মান্নান সৈয়দ অতুলনীয় ধৈর্য ও পরিশ্রমের স্বাক্ষর রেখে গেছেন। এ সবের মধ্যে কয়েকটি হলো: জীবনানন্দ দাশের কবিতা, ফররুখ আহমদের শ্রেষ্ঠ কবিতা, ফররুখ রচনাবলী (প্রথম খন্ড), বাংলাদেশের কবিতা, বাংলাদেশের ছড়া, সমরসেনের নির্বাচিত কবিতা, মোহিতলাল মজুমদারের নির্বাচিত কবিতা, বুদ্ধদেব বসুর সুনির্বাচিত কবিতা প্রভৃতি। এছাড়া তার ব্যতিক্রমী কাজের মধ্যে রয়েছে কবি শাহাদাত হোসেনের ইসলামী কবিতা এবং কমরেড মোজাফফর আহমদের পত্রাবলী সম্পাদনা ও সংগ্রন্থনা।
শিল্পতরু
সম্পাদনাকবি আবিদ আজাদ সম্পাদিত সাহিত্যসাময়িকী শিল্পতরু'র উপদেষ্টা সম্পাদক হিসাবে মান্নান সৈয়দ দীর্ঘকাল দায়িত্ব পালন করেছেন। এ সময় তিনি নবীন-প্রবীণ সকল কবি-সাহিত্যিকের রচনা সমান গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেছেন। তার সম্পাদনার মাধ্যমে শিল্পতরু আশীর দশকের শেষভাগে একটি মর্যাদাবান সাহিত্যপত্রে পরিণত হয়েছিল।
চিত্রকলা
সম্পাদনাছোটবেলা থেকেই তিনি আকিয়েঁ। ষাটের দশকে বেশ একেঁছেন। অশোক সৈয়দ ছদ্মনাম ব্যবহার করতেন তখন। কিন্তু দীর্ঘকাল তার আঁকিয়ে পরিচয়টি লুপ্ত ছিল। খেয়া সাময়িকীর ২৫তম বর্ষের প্রথম সংখ্যায় (আগস্ট ২০০৮) দীর্ঘ তিন-চার যুগের ব্যবধানে তার আঁকা ছবি মুদ্রিত হলে চিত্রকর পরিচয়টি আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে ওঠে।
গদ্য ভাষা
সম্পাদনামান্নান সৈয়দ তার প্রকাশ রীতির জন্য একটি বিশেষ গদ্য ভাষা আবিষ্কার করেছিলেন। তার বাক্যে পদসংস্থাপনার ক্রম ছিল অভিনব এবং সমাসবদ্ধ শব্দন্ধের ব্যবহার ছিল অকাতর। ফলে ভাষা ছিল কিছুটা জটিল ও দুবোর্ধ্য। তবে সার্বিকভাবে এ ভাষা ছিল প্রকাশ ক্ষমতায় ঋদ্ধ। জীবনের শেষভাগে তিনি সাদা-মাটা ভাষায় লিখতে শুরু করেন। তিনি প্রচুর সমাসবদ্ধ শব্দ সৃষ্টি করে ব্যবহার করেছেন।
মৃত্যু
সম্পাদনাদীর্ঘদিন তিনি ডায়াবেটিস ও হৃদরোগে ভুগছিলেন। ২৭ আগস্ট ২০১০ চ্যানেল আই নামক টেলিভিশনে আয়োজিত একটি আলোচনা অণুষ্ঠানে অংশ নিতে গিয়ে হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। নিকটস্থ ঢাকা মেট্রোপলিটন হাসপাতালে চিকিৎসা লাভ করেন তিনি।[১৭] সেই থেকে বাসায়ই অবস্থান করছিলেন কবি। ৫ সেপ্টেম্বর ২০১০ ইফতারীর কিছু আগে ঘুমের ভিতর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। বাসার অদূরে ল্যাবএইড হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে ডাক্তাররা তার মৃত্যু নিশ্চিত করে।[১৮][১৯] তার মরদেহ বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে সংরক্ষণ করা হয়। পরদিন ৬ আগস্ট তার বাসস্থানের সন্নিকটে গ্রীনরোড মসজিদে তার প্রথম নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তার লাশ বাংলা একাডেমীতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নজরুল মঞ্চে রাখা হয় মরদেহ। এ সময় কবি-সাহিত্যিকসহ সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করে। বাংলা একাডেমী, নজরুল ইনস্টিটিউট ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও এ সময় শ্রদ্ধা জানানো হয়। বেলা পৌনে ১২টায় এখানে মরহুমের দ্বিতীয় জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলা একাডেমীতে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে যান কবি সৈয়দ শামসুল হক, আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, আনোয়ারা সৈয়দ হক, বেলাল চৌধুরী, আসাদ চৌধুরী, রবিউল হুসাইন, হাসান হাফিজ, হাবীবুল্লাহ সিরাজী, রেজাউদ্দিন স্টালিন, রামেন্দু মজুমদার, আতাউর রহমান, এম হামিদ, আবদুল হাই শিকদার, জাতীয় কবির নাতনি খিলখিল কাজী প্রমুখ।[১১]] তৃতীয় এবং সর্বশেষ নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে জোহরের নামাজের অব্যবহিত পরে। সেখান থেকে তার লাশ আজিমপুর গোরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সমাধিস্থ করা হয়।[২০] বলা হয়েছে, তার মৃত্যুতে সমকালীন বাংলা সাহিত্য এক অপূরণীয় শূন্যতায় নিমজ্জিত হলো এবং এমন একটি সংকট তৈরি হলো যা দীর্ঘকাল ধরে অনুভূত হবে।[৩]
চারিত্র্য
সম্পাদনাজীবনানন্দকে তিনি বলেছিলেন "শুদ্ধতম কবি" ; কার্যত নিজ জীবনেও তিনি ছিলেন "শুদ্ধতার সাধক"।[২১] দীর্ঘ শালপ্রাংশু অবয়ব, কাঁধের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়া কেশগুচ্ছ, সব মিলিয়ে তিনি ছিলেন রীতিমতো সুদর্শন সুপুরুষ। একদিকে তিনি পৌরুষদীপ্ত ও ব্যক্তিত্বময় ; অন্য দিকে সদালাপী, সদা হাস্যময়। অন্তরে ছিলেন তীব্র অভিমানী। কথার ফাঁকে কৌতুক করা ছিল তার সুনিপুণ অভ্যাস। স্বভাবে বিজনবাসী হলেও তিনি ছিলেন আড্ডার ভক্ত তবে পড়াশুনা আর লেখালেখির ব্যাপারে এক মুহূর্ত ছাড় দেন নি। এ বিষয়ে তিনি সদা উন্নীদ্র, আমৃত্যু চঞ্চল। রাষ্ট্র ও সমাজ তার যথাযোগ্য মূল্যায়ন করতে পারেনি বলে একটি সূক্ষ্ণ অভিমান তাকে তাড়া ক'রে ফিরতো। দু'বার হার্ট এটাক তার জীবনী শক্তি অনেকখানি ক্ষয়ে ফেলেছিল। তার অস্তিত্বে সেঁটে গিয়েছিল এক অনপনেয় বিষণ্ণতা। একটি কবিতায় তিনি মৃদু কণ্ঠে বলেছেন: "আনন্দ কাকে বলে—আজ আর মনে নেই আমার।"[২২] তবে মৃত্যুঅবধি তিনি ছিলেন একজন জীবিত মানুষ। তাই জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে জীবন দর্শনের পুনমূর্ল্যায়ন করে বলেছিলেন, "একটা বয়সে এসে বুঝতে পারছি, আমি চারপাশে তাকাইনি। দ্বিতীয়বার হৃদরোগের পরে, দীর্ঘকাল শয্যাশায়ী থেকে আমি আমার আশপাশে মানুষদের দেখলাম- আমার পাড়ার মানুষেরা, বাজারের লোকজন, খুব সাধারণ মানুষদের। বুঝতে পারছি, যাদের দিয়ে আমার জীবন চলছে, তাদের জন্য আমি কোনো কিছু করিনি।"[৮] মান্নান সৈয়দ ছিলেন সাহিত্যের ঘোর লাগা মানুষ। তিনি আপাদমস্তক একজন কবি, সাহিত্যকর্মী।
প্রকাশিত গ্রন্থাবলি
সম্পাদনাকবিতা
সম্পাদনা- জন্মান্ধ কবিতাগুচ্ছ (১৯৬৭)
- জ্যোৎস্না রৌদ্রের চিকিৎসা (১৯৬৯)
- ও সংবেদন ও জলতরঙ্গ (১৯৭৪)
- কবিতা কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড (১৯৮২)
- পরাবাস্তব কবিতা (১৯৮৪)
- পার্ক স্ট্রিটে এক রাত্রি (১৯৮৩)
- মাছ সিরিজ (১৯৮৪)
- সকল প্রশংসা তার (১৯৯৩)
- নির্বাচিত কবিতা
- আমার সনেট।
উপন্যাস
সম্পাদনা- পরিপ্রেক্ষিতের দাস-দাসী
- অ-তে অজগর (১৯৮২),
- কলকাতা (১৯৮০),
- ক্ষুধা প্রেম আগুন' (১৯৯৪)
- কলকাতা,
- পোড়ামাটির কাজ,
- হে সংসার হে লতা,
ছোটগল্প
সম্পাদনা- সত্যের মতো বদমাশ
- চলো যাই পরোক্ষে (১৯৭৩)
- মৃত্যুর অধিক লাল ক্ষুধা
- নেকড়ে হায়েনা
- তিন পরী
প্রবন্ধ
সম্পাদনা- বিবেচনা-পুনর্বিবেচনা
- দশ দিগণ্তের দ্রষ্টা
- নির্বাচিত প্রবন্ধ
- করতলে মহাদেশ
- আমার বিশ্বাস,
- ছন্দ।
স্মৃতিকথা
সম্পাদনা- ভেসেছিলেম ভাঙা ভেলায়
- প্রণীত জীবন
- স্মৃতির নোটবুক
গবেষণা গ্রন্থ
সম্পাদনা- কালান্তরের যাত্রী।
জীবনী
সম্পাদনা- নজরুল ইসলাম: কবি ও কবিতা
- বেগম রোকেয়া
- সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ
- সৈয়দ মুর্তাজা আলী
- ফররুখ আহমদ
- শাহাদাত্ হোসেন
- জীবনানন্দ দাশ
- প্রবোধচন্দ্র সেন
- আবদুল গণি হাজারী
- সৈয়দ মুর্তাজা আলী ।
সুধীন্দ্রনাথ দত্তের সুনির্বাচিত কবিতা
গ্রন্থনা
সম্পাদনা- জীবনানন্দ দাশের কবিতা
- ফররুখ আহমদের শ্রেষ্ঠ কবিতা (১৯৭৫)
- ফররুখ রচনাবলী (প্রথম খণ্ড ১৯৭৯)
- ইসলামী কবিতা : শাহাদাত হোসেন (১৯৮৩)
- বাংলাদেশের কবিতা (১৯৮৮)
- বাংলাদেশের ছড়া (১৯৮৮)
- মুহম্মদ মনসুর উদ্দীন স্মৃতি অ্যালবাম (১৯৮৮)
- সমরসেনের নির্বাচিত কবিতা (১৯৮৯)
- মোহিতলাল মজুমদারের নির্বাচিত কবিতা (১৯৮৯)
- বুদ্ধদেব বসুর সুনির্বাচিত কবিতা (১৯৯০)।
জীবনানন্দ বিষয়ক গ্রন্থাবলি
সম্পাদনা- শুদ্ধতম কবি (১৯৭২),
- জীবনানন্দ দাশ (১৯৯৩),
- জীবনানন্দ (১৯৮৪),
- জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতা (১৯৮৬),
- জীবনানন্দ দাশের পত্রাবলী (১৯৮৭),
- জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ গল্প (১৯৮৯)।
পুরস্কার ও স্বীকৃতি
সম্পাদনা- বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৮১।
- ফররুখ স্মৃতি পুরস্কার, চট্টগ্রাম (১৯৯১)
- আলাওল সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯১)
- নজরুল পুরস্কার, পশ্চিম বঙ্গ, (১৯৯৮)
- কবি তালিম হোসেন পুরস্কার (২০০০)
- লেখিকা সংঘ পুরস্কার (২০০০)
- নজরুল পদক (২০০১)
- অলক্ত সাহিত্য পুরস্কার (২০০২)
- একুশে পদক
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ "সৈয়দ, আবদুল মান্নান - বাংলাপিডিয়া"। bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১২-২৪।
- ↑ ক খ গ "হিমঘরে রাত্রিবাস কিংবা 'আমি আর একটু ঘুমাব...'"। ১ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১০।
- ↑ ক খ গ "কবি গবেষক আবদুল মান্নান সৈয়দ আর নেই"। ১১ সেপ্টেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "আমার কথা - আবদুল মান্নান সৈয়দ"। ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১০।
- ↑ স্মৃতির নোটবুক - আবদুল মান্নান সৈয়দ, ২০০০। শিল্পতরু প্রকাশনী, ঢাকা। পৃষ্ঠা-৪৩-৪৭
- ↑ জীবনানন্দ ঈশ্বরে নয়, মানুষের নৈতিকতায় বিশ্বাসী ছিলেন
- ↑ ক খ "অন্তিম শয়ানে কবি আবদুল মান্নান সৈয়দ"। ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ ক খ আবদুল মান্নান সৈয়দ: অতৃপ্ত ও অস্তিত্ববাদীর প্রস্থান[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ পরাবাস্তবাদ ও আবদুল মান্নান সৈয়দ
- ↑ "আবদুল মান্নান সৈয়দ সূর্য গড়েছেন নিজের ভিতর"
- ↑ ক খ "অন্তিম শয়ানে কবি আবদুল মান্নান সৈয়দ"। ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ একজন শুদ্ধতম কবি - সাযযাদ কাদির[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ আবদুল মান্নান সৈয়দ- অতৃপ্ত ও অস্তিত্ববাদীর প্রস্থান[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ স্মৃতির নোটবুক - আবদুল মান্নান সৈয়দ, ২০০০। শিল্পতরু প্রকাশনী, ঢাকা। পৃষ্ঠা-২০
- ↑ আবদুল মান্নান সৈয়দ - কিছু কথা কিছু স্মৃতি[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "বাংলাদেশের ছোটগল্প একটি আন্ত:জরিপ"। ১ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১০।
- ↑ টক শোতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ আবদুল মান্নান সৈয়দ[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ আবদুল মান্নান সৈয়দ নেই[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "অভিমান' নিয়েই চলে গেলেন কবি আবদুল মান্নান সৈয়দ"। ১৭ আগস্ট ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ সেপ্টেম্বর ২০১০।
- ↑ চিরনিদ্রায় শায়িত আবদুল মান্নান সৈয়দ[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম"। ২০২০-০৮-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০১-০৩।
- ↑ "'একটি গ্রামের কথা'"। ২৮ মে ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ সেপ্টেম্বর ২০১০।
গ্রন্থসূত্র
সম্পাদনা- বাঙলা একাডেমি লেখক অভিধান, ২০০৮, ঢাকা। পৃষ্ঠা: ৩৩-৩৪।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- আবদুল মান্নান সৈয়দের কিছু রচনা
- আবদুল মান্নান সৈয়দের কিছু রচনা-২ ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৯ সেপ্টেম্বর ২০১০ তারিখে
- কবিতা - একটি গ্রামের কথা