জ্যাক রিচার্ডস

ইংরেজ ক্রিকেটার
(Jack Richards থেকে পুনর্নির্দেশিত)

ক্লিফটন জেমস জ্যাক রিচার্ডস (ইংরেজি: Jack Richards; জন্ম: ১০ আগস্ট, ১৯৫৮) কর্নওয়ালের পেনজান্স এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও কোচ।[১] ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৮০-এর দশকে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

জ্যাক রিচার্ডস
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামক্লিফটন জেমস রিচার্ডস
জন্ম (1958-08-10) ১০ আগস্ট ১৯৫৮ (বয়স ৬৫)
পেনজান্স, কর্নওয়াল, ইংল্যান্ড
উচ্চতা৫ ফুট ১১ ইঞ্চি (১.৮০ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম
ভূমিকাউইকেট-রক্ষক, কোচ
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৫২৩)
১৪ নভেম্বর ১৯৮৬ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ টেস্ট৪ আগস্ট ১৯৮৮ বনাম ভারত
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ৬২)
২৫ নভেম্বর ১৯৮১ বনাম ভারত
শেষ ওডিআই৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৮ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৭৬ - ১৯৮৮সারে
১৯৮৩ - ১৯৮৪অরেঞ্জ ফ্রি স্টেট
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই
ম্যাচ সংখ্যা ২২
রানের সংখ্যা ২৮৫ ১৫৪
ব্যাটিং গড় ২১.৯২ ১১.৮৪
১০০/৫০ ১/– –/১
সর্বোচ্চ রান ১৩৩ ৫০
বল করেছে
উইকেট
বোলিং গড়
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট -
সেরা বোলিং
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ২০/১ ১৬/১
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৫ ডিসেম্বর ২০২০

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে সারে ও দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে অরেঞ্জ ফ্রি স্টেট দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন জ্যাক রিচার্ডস

খেলোয়াড়ী জীবন সম্পাদনা

কর্নওয়ালে জন্মগ্রহণ করলেও পেনজান্সে ক্রিকেট খেলায় হাতেখড়ি ঘটে তার। ১৯৭৬ সাল থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত জ্যাক রিচার্ডসের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল।

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে আটটিমাত্র টেস্ট ও বাইশটি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণ করেছেন জ্যাক রিচার্ডস। ১৪ নভেম্বর, ১৯৮৬ তারিখে ব্রিসবেনে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ৪ আগস্ট, ১৯৮৮ তারিখে ওভালে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি। ১৯৮১-৮২ মৌসুমে বব টেলরের সহকারী হিসেবে প্রথমবারের বিদেশ সফরের অংশ হিসেবে ভারত ও শ্রীলঙ্কা গমন করেন।

টেস্ট অভিষেক সম্পাদনা

১৯৮৬ সালের গ্রীষ্মে সহস্র রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুইটি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশ নেন। ঐ বছরের শীতকালে ব্রুস ফ্রেঞ্চের সহকারী হিসেবে অস্ট্রেলিয়া গমনের সুযোগ পান। ব্রিসবেনে রান খরায় ভোগা ইংরেজ দলের পক্ষে নিজেকে মেলে ধরতে সচেষ্ট হন।

প্রথম ইনিংসে শূন্য রান করলেও দলে তার স্থান নিশ্চিত হয়। সামগ্রীকভাবে এ সফরটি বেশ সফল ছিল। মাইক গ্যাটিংয়ের নেতৃত্বাধীন দলটি অ্যাশেজ জয় করে। রিচার্ডসও সম্মুখসারিতে চলে আসেন। নিচেরদিকের মাঝারিসারির কার্যকরী ব্যাটসম্যান হিসেবে পার্থের ওয়াকা গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ঠিক চার ঘণ্টা ক্রিজে অবস্থান করে ১৩৩ রানের ইনিংস খেলেন। ঐ সিরিজে ৩৭.৭১ গড়ে ২৬৪ রান সংগ্রহ করেন তিনি।

তবে, অস্ট্রেলিয়া সফরের পর থেকে তার খেলার মান দূর্বলতর হতে থাকে। ১৯৮৭ সালের শুরুতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওডিআই সিরিজে অংশ নেন। লিডসে টেস্টের পর দলের বাইরে তাকে অবস্থান করতে হয়। ৬ ও ২ রান তুলেন। এ সময়ে ব্রুস ফ্রেঞ্চ বসন্ত রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ব্রুস ফ্রেঞ্চের কাছে তিনি টেস্ট উইকেট-রক্ষকের অদল-বদল ঘটান। ঐ মৌসুমের শীতকালে তাকে নিউজিল্যান্ড গমনার্থে দলের সদস্যরূপে রাখা হয়। আবারও তিনি ব্রুস ফ্রেঞ্চের সহকারীতে পরিণত হন। পরবর্তী গ্রীষ্মে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আরও দুইটি খেলায় অংশ নেন। তবে, চার ইনিংস থেকে মোটে ১৩ রান তুলতে পেরেছিলেন।

অবসর সম্পাদনা

সারেতে রেকর্ড ভাঙ্গা আর্থিক সুবিধা গ্রহণের খেলায় অংশ নেন। তাসত্ত্বেও মাত্র ৩০ বছর বয়সে অবসর গ্রহণ করেন তিনি। পেশাদারী পর্যায়ের ক্রিকেট খেলা থেকে বিদেয় নেয়ার পর রটারডামে কাজ করেন। সেখানে তিনি ওলন্দাজ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক রবার্ট ফন ওয়েল্দের মালিকানাধীন ফন ওয়েল্দ আন্তর্জাতিক জাহাজীকরণ প্রতিষ্ঠানের অপারেশন্স ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেন।[২]

বেলজিয়ামের অনূর্ধ্ব-১৬ রাগবি ইউনিয়ন দলের ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে ছিলেন। অদ্যাবধি অ্যান্টওয়ার্প ক্রিকেট ক্লাবের সভাপতিত্ব করছেন। এছাড়াও, বেলজিয়াম জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন।

ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত তিনি। ওলন্দাজ রমণীর সাথে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন ও বর্তমানে বেলজিয়ামে বসবাস করছেন। প্রতিবেশী হল্যান্ডের রটারডাম জাহাজীকরণ প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন এবং একটি আন্তর্জাতিক নিয়োগ ও ক্রু এজেন্সির পরিচালক তিনি।[৩]

মূল্যায়ন সম্পাদনা

ক্রিকেট সংবাদদাতা কলিন বেটম্যান মন্তব্য করেছিলেন যে, অ্যালান নটের পর তিনিই ইংল্যান্ডের সহজাত উইকেট-রক্ষক-ব্যাটসম্যান হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। সর্বদাই প্রতিদ্বন্দ্বিতামুখর, প্রায়শঃই উপেক্ষিত ও কখনোবা বিক্ষিপ্ত মেজাজীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন তিনি। কিছু ভুল-ভ্রান্তি থাকলেও গ্লাভস হাতে নিয়ে তাকে বেশ সজাগ দৃষ্টিভঙ্গী ও চটপটে মনোভাবের অধিকারী হতে দেখা যায়।[১]

পরিচ্ছন্ন ও দক্ষ উইকেট-রক্ষক হিসেবে তার দৈহিক গড়ন ৫ ফুট ১১ ইঞ্চির অধিক ছিল না। চমৎকার পায়ের কারুকাজ ও চটপটে মনোভাবের কারণে মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি কার্যকারিতা প্রদর্শন করেছেন। এরফলে, তিনি ইংল্যান্ড দলের অন্যতম প্রতিযোগী হিসেবে আবির্ভূত হন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Bateman, Colin (১৯৯৩)। If The Cap Fits। Tony Williams Publications। পৃষ্ঠা 140আইএসবিএন 1-869833-21-X 
  2. "A Lost Talent"। Wisden Cricket Monthly। February 1995। 
  3. https://www.telegraph.co.uk/sport/cricket/international/england/3039269/1986-87-Ashes-squad-Where-are-they-now.html

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা