২০০১-২০০২ ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ

২০০১–২০০২ ভারত–পাকিস্তান সংঘর্ষ ছিল ভারতপাকিস্তানের মধ্যে একটি সামরিক অচলাবস্থা, যার ফলে কাশ্মীর অঞ্চলে সীমান্তের উভয়দিকে ও নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর সৈন্য-সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। ১৯৯৮ সালের দিকে উভয় দেশের পারমাণবিক অস্ত্রের সফল বিস্ফোরণের পরে এটি ছিল ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিতীয় বড় সামরিক অচলাবস্থা; প্রথমটি ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধ

২০০১-২০০২ ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ
ভারতীয় কোডনেম: অপারেশন পরাক্রম
মূল যুদ্ধ: ভারত–পাকিস্তান যুদ্ধ

থেকে দৃশ্যমান ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত
তারিখ১৩, ডিসেম্বর, ২০০১ – ১০ জুন, ২০০২
(৫ মাস ও ৪ সপ্তাহ)
অবস্থান
ফলাফল সিদ্ধান্তহীন
বিবাদমান পক্ষ

 ভারত

 পাকিস্তান

সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী
কে. আর. নারায়ণন
(ভারতের রাষ্ট্রপতি)
অটল বিহারী বাজপেয়ী
(ভারতের প্রধানমন্ত্রী)
সুন্দররাজন পদ্মনাভন
(সেনাবাহিনী প্রধান)
ACM S. Krishnaswamy
(Chief of Air Staff)
Adm. Madhvendra Singh
(Chief of Naval Staff)
জেনারেল পারভেজ মোশাররফ
(পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি)
জেনারেল আজিজ খান
(চেয়ারম্যান জয়েন্ট চিফ)
জেনারেল ইউসুফ খান
(ভাইস চিফ অফ আর্মি স্টাফ)
ACM Mushaf Ali Mir
(Chief of Air Staff)
Adm. Abdul Aziz Mirza
(Chief of Naval Staff)
শক্তি
৫০০,০০০–৮০০,০০০ সৈন্য[][] ৩০০,০০০–৪০০,০০০ সৈন্য[]
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি
৭৯৮ নিহত []
১,৮৭৪ সম্পূর্ণভাবে হতাহত [][][] (ভারতীয় সরকার মতে)
৯০০ জন নিহত[] (অর্জুন প্রকাশের তথ্যমতে)
এ সংক্রান্ত ঘটনায় ২০০১-২০০৫ সালের মধ্যে ১,২৯৫ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে (একটি ভারতীয় এনজিও'র গবেষণায়)[]
অজানা
১৫৫,০০০ ভারতীয় ও ৪৪,০০০ পাকিস্তানি বাস্তুচ্যুত []

২০০১ খ্রিস্টাব্দের ১৩ ডিসেম্বর নতুন দিল্লিতে ভারতীয় সংসদে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারত সামরিক পদক্ষপের সূচনা করে।[১০][১১] ভারত দাবি করেছিল যে, এ আক্রমণ ভারত-শাসিত কাশ্মীরে লড়াইরত দুটি পাকিস্তান–ভিত্তিক গোষ্ঠী দ্বারা পরিচালিত হয়: লস্কর-ই-তৈয়বাজইশে মুহাম্মদ এবং উভয়ই পাকিস্তানের আইএসআই দ্বারা সমর্থিত ছিল বলে ভারত অভিযোগ করে।[১২] তবে পাকিস্তান অভিযোগ অস্বীকার করে। [১৩] [১৪] [১৫] জম্মু এবং কাশ্মীর রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহ ভারতকে পাকিস্তানের সীমান্তে যুদ্ধ শুরু করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। [১১]

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সংঘাতকে সম্ভাবনাময় পারমাণবিক যুদ্ধের প্রথম ধাপ হিসেবে উল্লেখ করে। আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মধ্যস্থতার পর উত্তেজনা হ্রাস পায়। ফলে ২০০২ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবরে আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে ভারতীয় [১৬] এবং পাকিস্তানী সৈন্য [১৭] প্রত্যাহার হয়।

এই সামরিক সংঘাতের ভারতীয় সাংকেতিক নাম ছিল অপারেশন পরাক্রম। দীর্ঘস্থায়ী সামরিক অচলাবস্থার শেষের দিকে, একটি গোপন অভিযানে ভারতের জাট রেজিমেন্ট দ্রাস পয়েন্ট ৫০৭০–এর কাছে এলওসি'র পাকিস্তানের দিকে একটি কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ পর্বত শৃঙ্গ দখল করে নেয় এবং পরবর্তীতে একে বলওয়ান নামকরণ করে।[১৮] [১৯] ফলস্বরূপ, পাক সেনাবাহিনীর এই শৃঙ্গ হারানোর জন্য পাকিস্তানি ব্রিগেড কমান্ডার ও উত্তরাঞ্চলের জিওসিসহ তাদের সম্পূর্ণ চেইন অফ কমান্ড বিলুপ্ত করা হয়, যখন তাদের ভারতীয় সমকক্ষ লেফটেন্যান্ট জেনারেল দীপক সুম্মানওয়ারকে উত্তম যুদ্ধ সেবা পদক দিয়ে সম্মানিত করা হয়েছিল। [১৯]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Narang 2010
  2. Kashmir Crisis ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১১ জুলাই ২০০৬ তারিখে GlobalSecurity.org
  3. "Op Parakram claimed 798 soldiers"The Times of India। ৩১ জুলাই ২০০৩। ২২ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ মার্চ ২০১২ 
  4. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; 1874 Casualties নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  5. "Calculating the costs of India-Pakistan standoff" 
  6. Bhaskar, C. Uday (২০১৬-০৯-২০)। "No Nation Must Stumble Into War: Lessons from Op Parakram Post Uri"TheQuint (ইংরেজি ভাষায়)। ৩ মার্চ ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-১৫ 
  7. "India's national interests must not be subsumed by politically-motivated, competitive machismo masquerading as patriotism"The Indian Express (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-০৩-০৪। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-১৬ 
  8. Singh, Satnam Jit; Puangsuan, Yeshua Moser (২০১৫-০৩-১৯)। "It's time for India to join the Mine Ban Treaty"The Hindu (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0971-751X। ২০ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-১৬ 
  9. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; dc নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  10. Rajesh M. Basrur (১৪ ডিসেম্বর ২০০৯)। "The lessons of Kargil as learned by India"Asymmetric Warfare in South Asia: The Causes and Consequences of the Kargil Conflict (1st সংস্করণ)। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 326। আইএসবিএন 978-0-521-76721-7 
  11. "The brink of war"BBC News। ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-১৬ 
  12. "Who will strike first" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৫ ডিসেম্বর ২০০৮ তারিখে, The Economist, 20 December 2001.
  13. Jamal Afridi (৯ জুলাই ২০০৯)। "Kashmir Militant Extremists"। Council Foreign Relations। ২ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১২Pakistan denies any ongoing collaboration between the ISI and militants, stressing a change of course after 11 September 2001. 
  14. Perlez, Jane (২৯ নভেম্বর ২০০৮)। "Pakistan Denies Any Role in Mumbai Attacks"The New York Times। Mumbai (India);Pakistan। ৫ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জানুয়ারি ২০১২ 
  15. "Attack on Indian parliament heightens danger of Indo-Pakistan war"। Wsws.org। ২০ ডিসেম্বর ২০০১। ১৫ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জানুয়ারি ২০১২ 
  16. "India to withdraw troops from Pak border" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩০ নভেম্বর ২০০৩ তারিখে, The Times of India, 16 October 2002.
  17. "Pakistan to withdraw front-line troops" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৪ জুলাই ২০১৮ তারিখে, BBC, 17 October 2002.
  18. Singh, Amarinder (২০০১)। A Ridge Too Far: War in the Kargil Heights 1999। Motibagh Palace। পৃষ্ঠা 132। আইএসবিএন 9788193107416 
  19. Gen Ashok K. Mehta, Point 5353 still in Pakistan’s possession ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৯ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে, The Tribune (Chandigarh), 13 June 2004