১৯৭১: বিয়ন্ড বর্ডার্স
১৯৭১: বিয়ন্ড বর্ডার্স হল একটি ২০১৭ সালের ভারতীয় মালয়ালম ভাষার যুদ্ধ চলচ্চিত্র, যেটির রচনা এবং পরিচালনা করেছিলেন মেজর রবি। এটি মেজর মহাদেবন চলচ্চিত্র ক্রমের চতুর্থ ভাগ, যেখানে মোহনলাল কর্নেল মহাদেবনের ভূমিকায় আবার অভিনয় করেছিলেন এবং একটি নতুন চরিত্র মেজর সহদেবনের চরিত্রেও অভিনয় করেছিলেন। এটিতে অরুণোদয় সিং এবং আল্লু শিরিশও ছিলেন। চলচ্চিত্রটি দুটি সময়কালকে ধারণ ক'রে, একাত্তরের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধকে ভিত্তি করে তৈরি। এই ছবিটি এই ক্রমের পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী দুই হিসাবেই কাজ করেছে। মোহনলালের এবং শিরিশের চরিত্রদুটি হোশিয়ার সিং এবং অরুণ ক্ষেত্রপালের আদলে তৈরি হয়েছিল, এঁদের দুজনই একাত্তরের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে তাঁদের ভূমিকার জন্য পরমবীর চক্রে ভূষিত হয়েছিলেন।[২]
১৯৭১: বিয়ন্ড বর্ডার্স | |
---|---|
পরিচালক | মেজর রবি |
প্রযোজক | অ্যান্ড্রু জনসন |
রচয়িতা |
|
শ্রেষ্ঠাংশে | |
বর্ণনাকারী | মম্মুট্টী |
সুরকার |
|
চিত্রগ্রাহক | সুজিত বাসুদেব |
সম্পাদক | সমজিত এমএইচডি |
প্রযোজনা কোম্পানি | রেড রোজ ক্রিয়েশনস |
পরিবেশক | রেড রোজ রিলিজ; সিঙ্গাপুর: সিঙ্গাপুর কলিজিয়াম |
মুক্তি |
|
স্থিতিকাল | ১৩০ মিনিট[১] |
দেশ | ভারত |
ভাষা | মালয়ালম |
রবির চিত্রনাট্যে সংলাপ লিখেছিলেন শিজু নামবিয়াথ। ছবিটির চিত্রগ্রহণে ছিলেন সুজিত বাসুদেব, এবং এর স্কোর করেছিলেন গোপী সুন্দর। সিদ্ধার্থ বিপিন, নাজিম আরশাদ, এবং রাহুল সুব্রহ্মণিয়ান সাউন্ড ট্র্যাকটি রচনা করেছিলেন। ২০১৬ সালের ৩১শে অক্টোবর রাজস্থানের সুরতগড়ে এই ছবির মুখ্য চিত্রগ্রহণ শুরু হয়েছিল এবং ২০১৭ সালের ৫ই ফেব্রুয়ারি জর্জিয়াতে কাজ শেষ হয়েছিল। ২০১৭ সালের ৭ই এপ্রিল ১৯৭১: বিয়ন্ড বর্ডার্স ভারতে মুক্তি পেয়েছিল। প্রথমে মালয়ালম ভাষায় তৈরি হয়ে, ছবিটি তেলুগু ভাষায় ডাব (ভাষান্তর) করা হয়েছিল এবং সেই সংস্করণের নাম ছিল যুদ্ধ ভূমি।
ঘটনা
সম্পাদনাছবিটি শুরু হয় জর্জিয়াতে, যেখানে একটি পাকিস্তানি জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনী একটি বাড়িতে পৌঁছোয়, সেই বাড়িতে দুর্বৃত্ত্বরা লুকিয়ে আছে। জঙ্গিবাদ বিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার সাথে সাথে, জঙ্গিরা গুলি চালায়। দলটি গুলিবৃষ্টির মধ্যে আটকা পড়ে এবং শক্তিবৃদ্ধির জন্য আরও বাহিনী চেয়ে পাঠায়। সেই সময় একটি ভারতীয় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী সেখানে পৌঁছে এই দলটিকে উদ্ধার করে। দলটির নেতা হল কর্নেল মহাদেবন। সে পাকিস্তানি দলটির নেতার সাথে সাক্ষাৎ করে, যার নাম কর্নেল আজমল রাজা আকরম। সে জানায় যে সে লেঃ কর্নেল মোহাম্মদ.আকরম রাজার পুত্র। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনীর সম্মান প্রদান অনুষ্ঠানে, আজমল প্রকাশ করে যে তার বাবা একাত্তরের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে নিহত হয়েছে। এই সম্বন্ধে জানার পর মহাদেবন প্রকাশ করে যে তার বাবা মেজর সহদেবন আজমলের বাবাকে হত্যা করেছিল।
গল্পটি এরপরে পিছিয়ে একাত্তর সালে চলে যায়, যখন বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হবার জন্য লড়াই করছিল। ১৯৭১ সালের ৩রা ডিসেম্বর, প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য পাকিস্তান সৈন্যদল ভারতীয় বিমান ক্ষেত্রগুলিতে আক্রমণ করে। এর প্রতিবাদে ইন্দিরা গান্ধী যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। ঘোষণার পরে পুরো সেনা একত্রিত হয় এবং সেনার ছুটি বাতিল করা হয়। যখন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সাঁজোয়াযুক্ত সৈন্যদল বসন্তসর নদীর ধারে ভারতীয় অবস্থানগুলিতে আক্রমণ করে, তখন যুদ্ধ শুরু হয়। ভারতীয়রা প্রস্তুত ছিলনা তাই তাদের পরাজয়ের মুখোমুখি হতে হয়। পাকিস্তান সেনাবাহিনী অনেককে যুদ্ধ বন্দী করে। সেনা সদস্যরা বন্দীদের নির্যাতন করতে থাকে রাজা এটি লক্ষ্য করে এবং জেনেভা কনভেনশন লঙ্ঘনের জন্য তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে তিরস্কার করে। জেনেভা কনভেনশনে বলা হয়েছে যে যুদ্ধবন্দীদের অতিথির মত ব্যবহার করতে হবে। এতে তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অসন্তুষ্ট হয়।
পরে, ভারতীয়রা পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে পূর্ণ শক্তি নিয়ে আক্রমণ চালায়, এই যুদ্ধে ভারতের অন্যতম সেরা সাঁজোয়া গাড়ির কমান্ডার চিন্ময় শহীদ হয়। চিন্ময়ের মুখ দেখে রাজা মন্তব্য করে যে এই তরুণ ছেলেটি ছয়টি ট্যাঙ্ক ধ্বংস করেছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী যাতে মৃতদেহ সংগ্রহ করতে পারে সে জন্য রাজা যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে। চিন্ময়ের মৃত্যু দেখে উত্তপ্ত ভারতীয় সেনা প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। বসন্তসর যুদ্ধ শুরু হয়, যাতে উভয় পক্ষেরই প্রচুর সংখ্যায় হতাহত হয়। শেষে, রাজা এবং সহদেবন একে অপরের মুখোমুখি হয় এবং সেই লড়াইয়ে সহদেবনের জয় হয়। একই সাথে, পাকিস্তান নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করে এবং যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়। ভারতীয় সৈন্য ও পাকিস্তান সৈন্যদের মৃত্যুতে সহদেবন অস্থির হয়ে পড়ে। সে সঙ্কল্প করে, যে যুদ্ধ মৃত্যু আর ধ্বংসের দিকে পরিচালিত করে, তেমন যুদ্ধ আর না।
চরিত্র চিত্রণ
সম্পাদনা- মোহনলাল- কর্নেল মহাদেবন এবং মেজর সহদেবন (কর্নেল হোশিয়ার সিংহ দাহিয়া)
- অরুণোদয় সিং- পাক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ.আকরম রাজা (মেজর শাব্বির শরীফ)
- আল্লু শিরিশ- লেফটেন্যান্ট চিন্ময় (দ্বিতীয় লেফটেন্যান্ট অরুণ ক্ষেত্রপাল)
- রেনজি পানিকার- লেঃ কর্নেল জনার্দনান
- সুধীর করমনা- ক্যাপ্টেন আধিসেলভম
- দেবন- আইবি অফিসার নায়ার
- আশা শরথ- পার্বতী সহদেবন
- প্রিয়াঙ্কা আগরওয়াল- শরীফের স্ত্রী
- সৃষ্টি দাঙ্গে- চিন্ময়ের স্ত্রী
- নেহা খান- জনসংযোগ কর্মকর্তা
- সাইজু কুরুপ- বন্দুকবাজ নাথান
- পদ্মরাজ রতীশ- বন্দুকবাজ প্রয়াগ
- কৃষ্ণ কুমার- সৈনিক সুদর্শন
- মণিকুট্টান- সৈনিক
- প্রদীপ চন্দ্রন রেডিও অপারেটর অভিনন্দ
- জোয়া জায়েদ খান- পাকিস্তানি চিকিৎসক
- জয়কৃষ্ণন- ক্যাপ্টেন আনন্দ
- কান্নান পাত্তাম্বি- কুন্জিকান্নান
- সামুথিরাকানি
- সৌপরনিকা সুভাষ- নার্স
- বালাজী সরমা- সহদেবনের বন্ধু
- কৃষ্ণ প্রসাদ- সহদেবনের বন্ধু
- মেঘনাথন- সুলায়মান
- কোল্লাম তুলসী- সহদেবনের বন্ধু
- দীপক জেঠি পাক কর্নেল আজমল রাজা (আকরম রাজার পুত্র)
- বিজয়ন পেরিংগোড়ে- কৃষ্ণ পিল্লাই
- সুধীর সুকুমারন
- সেতু লক্ষ্মী- সহদেবনের মা
- শরণ্যা আনন্দ- সামরিক নার্স
- টিনি টম