সৈয়দ মোহাম্মদ ছাইফুর রহমান নিজামী শাহ
সৈয়দ মোহাম্মদ ছাইফুর রহমান নিজামী শাহ (জন্ম ১৯১৬) একজন বাংলাদেশী ইসলামী চিন্তাবিদ ও হাদিস গবেষক। তিনি কোরআনের বাংলা ব্যখ্যাগ্রন্থ মাশাহেদুল ঈমান ও বোখারী শরীফের বাংলা ব্যখ্যাগ্রন্থ তাফহিমুল বোখারি-র প্রণেতা। ইসলামী গবেষণায় অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০২০ সালে একুশে পদক প্রদান করে।[১][২][৩]
সৈয়দ মোহাম্মদ ছাইফুর রহমান নিজামী শাহ | |
---|---|
জন্ম | ১৯১৬ (বয়স ১০৭–১০৮) |
নাগরিকত্ব | বাংলাদেশ |
মাতৃশিক্ষায়তন | সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়া, ঢাকা |
পরিচিতির কারণ | ইসলামী গবেষণা |
পুরস্কার | একুশে পদক (২০২০) |
জন্ম ও প্রাথমিক জীবন
সম্পাদনানিজামী শাহ ১৯১৬ সালে (১৩২৩ হিজরী) চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই উপজেলার ৬নং ইছাখালী ইউনিয়নের উত্তর ইছাখালী গ্রামে জম্মগ্রহণ করেন। তার পিতা সৈয়দ শাহ গোলাম রহমান এছমতী ছিলেন একজন হেকিম। তিনি মাত্র ৭বছর বয়সে কোরআনে হাফেজ হয়েছিলেন।[২] তিনি ১৯৬০ সালে ঢাকা সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা হতে টাইটেল (কামেল) পরীক্ষায় হাদিস বিভাগে বোর্ডে প্রথম শ্রেনীতে প্রথমস্থান অর্জন করেন।
কর্মজীবন
সম্পাদনানিজামী শাহ মাদ্রাসায় শিক্ষকতা দিয়ে কর্ম জীবন শুরু করেন। তিনি চট্টগ্রাম ষোলশহর জামেয়া আহমদিয়া ছুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসায় প্রথম প্রধান মুহাদ্দিস হিসাবে শিক্ষকতা করেন। ১৯৯৭ সালে মিশর সরকারের আমন্ত্রণে কায়রোর আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ে কোরআন প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন। আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক অনুষ্ঠানে কোরআন তিলাওয়াতের জন্য তিনি স্বর্ণ পদক পেয়েছিলেন।
অবদান
সম্পাদনা১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জনের পর চট্টগ্রামে বেতারে সর্বপ্রথম দোআ করেন যা চট্টগ্রাম বেতারের আর্কাইভে সংরক্ষিত রয়েছে।[২] ১৯৭৩ সালে আঞ্জুমানে ইখওয়াতে মারেফাত ট্রাস্ট নামে সেবামূলক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। ১৯৭৫ সালে তিনি মিরসরাই মস্তান নগরস্থ শাহ গোলাম রহমান এতিম খানা এবং ১৯৭৮ সালে জামেয়া রহমানিয়া ফাজিল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বিশ্ব সুন্নী আন্দোলন ও বিশ্ব ইনসানিয়াত বিপ্লব এর প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন।[৪]
সেমিনার
সম্পাদনাতিনি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে গমন করেছেন। তিনি ২৭ বার পবিত্র হজ্ব পালন করেছেন।[২][৫]
- ১৯৯৫ সালে কুয়েতের মন্ত্রণালয়ের সেমিনারে অংশগ্রহণ।
- ১৯৯৬ সালে লন্ডনে "ওয়ালথাম ফারইস্ট ইসলামি এসোসিয়েশন" কর্তৃক আয়োজিত সুন্নী সম্মেলনে যোগদান
- ১৯৯৭ সালে কায়রো আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্বেরাত প্রতিযোগীতার বিচারক
- ২০০৭ সালে উজবেকিস্থানের বোখারা প্রদেশে আয়োজিত 'ইসলামের আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যকে শক্তিশালী করা' সমাবেশের প্রধান বক্তা
গ্রন্থ
সম্পাদনাসৈয়দ সাইফুর রহমান নিজামী শাহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রায় ১০০টি গ্রন্থ রচনা করেন। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে:[২]
- তাফসিরে মাশাহেদুল ঈমান - কোরআনের বাংলা ব্যখ্যাগ্রন্থ
- তাফহিমুল বোখারী শরীফ - বোখারী শরীফের বাংলা ব্যখ্যাগ্রন্থ
পারিবারিক জীবন
সম্পাদনাসৈয়দ সাইফুর রহমান নিজামী শাহ ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত। তার ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] বড় ছেলে সৈয়দ আল্লামা ইমাম হায়াত, যিনি বিশ্ব সুন্নী আন্দোলন এবং বিশ্ব ইনসানিয়াত বিপ্লবের প্রতিষ্ঠাতা।[৬]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "২০ ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠান পাচ্ছে একুশে পদক"। দৈনিক প্রথম আলো। ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "ইসলামী গবেষণায় একুশে পদক পাচ্ছেন মীরসরাইয়ের সন্তান হাফেজ ক্বারী আল্লামা সৈয়দ মোহাম্মদ ছাইফুর রহমান নিজামী শাহ"। দৈনিক ইনকিলাব। ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০।
- ↑ "একুশে পদক পাচ্ছেন ২০ ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠান"। ঢাকা ট্রিবিউন। ২০২০-০২-০৫। ২০২১-০৭-০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-০৯।
- ↑ "ইসলামি গবেষণায় একুশে পদক পেতে যাচ্ছেন সৈয়দ সাইফুর রহমান নিজামী শাহ - মানব বার্তা"। www.manob-barta.com। ২০২০-০২-০৬। ২০২০-১০-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-৩১।
- ↑ "মহান একুশ 'হালাল' হয়েছে, হুজুরদের বিরোধিতা কমবে!"। NotunDesh। ২০২১-০৭-০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-০৯।
- ↑ "ঐক্যবদ্ধ না হলে দ্বীনের মূলধারা সুন্নীয়তের বিপর্যয় অবশ্যম্ভাবী -আল্লামা ইমাম হায়াত"। ইনকিলাব।