সূরা আ’লা

কুরআন শরীফের ৮৭তম সূরা
(সূরা আল-আ’লা থেকে পুনর্নির্দেশিত)

সূরা আল আ'লা পবিত্র কুরআনের ৮৭ তম সূরা; এতে আয়াত সংখ্যা ১৯টি এবং রূকুর সংখ্যা ১টি। এই সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে।

আল আ'লা
سوارةالاعلا
শ্রেণীমক্কী সূরা
নামের অর্থসুউচ্চ
অবতীর্ণ হওয়ার সময়হিজরত-পূর্ব
পরিসংখ্যান
সূরার ক্রম৮৭
আয়াতের সংখ্যা১৯
পারার ক্রম৩০
মঞ্জিল নং
রুকুর সংখ্যা
সিজদাহ্‌র সংখ্যানেই
শব্দের সংখ্যা৭৭
বিশেষ বিষয় সম্পর্কে আয়াতের সংখ্যা১৯
← পূর্ববর্তী সূরাসূরা তারিক্ব
পরবর্তী সূরা →সূরা গাশিয়াহ্‌
আরবি পাঠ্য · বাংলা অনুবাদ

শানে নূযুল সম্পাদনা

এর আলোচ্য বিষয় থেকে জানা যায় , এটি একেবারে প্রথম দিকে অবতীর্ণ সূরাগুলোর অন্যতম। ষষ্ঠ আয়াতে “ আমি তোমাকে পড়িয়ে দেবো , তারপর তুমি আর ভূলবে না ” এ বাক্যটিও একথা জানিয়ে দিচ্ছে যে , এটি এমন সময়ে অবতীর্ণ হয়েছিল , যখন রসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ভালোভাবে অহী আয়ত্ব করার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেননি। এবং অহী নাযিলের সময় তার কোন শব্দ ভুলে যাবেন বলে তিনি আশংকা করতেন। এই আয়াতের সাথে যদি সূরা ত্বা- হা’র ১১৪ আয়াত ও সূরা কিয়ামাহ’ র ১৬ – ১৯ আয়তগুলোকে মিলিয়ে পড়া হয় এবং তিনটি সূরার সংশ্লিষ্ট আয়াতগুলোর বর্ণনাভংগী ও পরিবেশ পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করা হয় , তাহলে এখানে উল্লেখিত ঘটনাবলীকে নিম্নোক্তভাবে সাজানো যায় : সর্বপ্রথম নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিশ্চয়তা দান করা হয়েছে যে , তুমি চিন্তা করো না , আমি এ বাণী তোমাকে পড়িয়ে দেবো এবং তুমি আর ভুলে যাবে না। তারপর বেশ কিছুকাল পরে যখন সূরা কিয়ামহ নাযিল হতে থাকে তখন তিনি অবচেতনভাবে অহীর শব্দগুলো পুনরাবৃত্তি করতে থাকেন। তখন বলা হয় “ হে নবী ! এই অহী দ্রুত মুখস্ত করার জন্য নিজের জিহ্বা সঞ্চালন করো না। এগুলো মুখস্থ করানো ও পড়িয়ে দেবার দায়িত্ব আমার । কাজেই যখন আমরা এগুলো পড়ি তখন তুমি এর পড়া মনোযোগ সহকারে শুনতে থাকো , তারপর এর মানে বুঝিয়ে দেয়ার দায়িত্বও আমার । ” শেষবার সূরা ত্বা- হা নাযিলের সময় মানবিক দুর্বলতার কারণে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবার এই পরপর নাযিল হওয়া ১১৩টি আয়াতের কোন অংশ স্মৃতি থেকে উধাও হয়ে যাবার আশংকা করেন , ফলে তিনি সেগুলো স্মরণ রাখার চেষ্টা করতে থাকেন। এর ফলে তাঁকে বলা হয় : “ আর কুরআন পড়ার ব্যাপারে তাড়াহুড়া করো না , যতক্ষণ পর্যন্ত তোমার কাছে এর অহী সম্পূর্ণরূপে পৌঁছে না যায়।” এরপর আর কখনো এমনটি ঘটেনি। নবী ( সা) আর কখনো এ ধরনের আশংকা করেননি। কারণ এ তিনটি জায়গা ছাড়া কুরআনের আর কোথাও এ ব্যাপারে কোন ইংগিত নেই ।

ফজিলত সম্পাদনা

আয়াতসমূহ সম্পাদনা

এই সূরাটিতে ১৯টি আয়াত রয়েছে।সেগুলো তালিকাকারে দেওয়া হলঃ

আরবি বাংলা অনুবাদ
‎*سَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ الْأَعْلَى পবিত্রতা বর্ণনা করুন আপনার সেই প্রভুর নামে যে সর্বোচ্চ।
‎*الَّذِي خَلَقَ فَسَوَّىٰ যিনি সৃষ্টি এবং সুবিন্যস্ত করেছেন।
‎*وَالَّذِي قَدَّرَ فَهَدَىٰ এবং যিনি সুপরিমিত এবং পথ প্রদর্শন করেছেন।
‎*وَالَّذِي أَخْرَجَ الْمَرْعَىٰ এবং যিনি তৃণাদি উত্‍পন্ন করেছেন।
*فَجَعَلَهُ غُثَاءً أَحْوَى ‎অতঃপর আমি আপনাকে পড়াতে থাকব যাতে আপনি না ভোলেন।
‎‏سَنُقْرِئُكَ فَلَا تَنْسَى তবে আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন তা ব্যতীত।
إِلَّا مَا شَاءَ اللَّهُ إِنَّهُ يَعْلَمُ الْجَهْرَ وَمَا يَخْفَى নিশ্চয়ই তিনি জানেন প্রকাশ্য ও গোপন সকল বিষয়।
*وَنُيَسِّرُكَ لِلْيُسْرَى আর আমরা তোমাকে সরল পথের জন্য সহজ করে দেব।
*فَذَكِّرْ إِنْ نَفَعَتِ الذِّكْرَى অতএব তুমি উপদেশ দাও যদি উপদেশ ফলপ্রসূ হয়।
*سَيَذَّكَّرُ مَنْ يَخْشَى সত্বর উপদেশ গ্রহণ করবে, যে ব্যক্তি ভয় করে।
*وَيَتَجَنَّبُهَا الْأَشْقَى আর তা উপেক্ষা করবে যে নিতান্ত হতভাগা।
*الَّذِي يَصْلَى النَّارَ الْكُبْرَى যে প্রবেশ করবে মহা অগ্নিতে।
*ثُمَّ لَا يَمُوتُ فِيهَا وَلَا يَحْيَى অতঃপর সেখানে সে মরবেও না, বাঁচবেও না।
*قَدْ أَفْلَحَ مَنْ تَزَكَّى নিশ্চয়ই সফল হয় সেই ব্যক্তি, যে পরিশুদ্ধ হয়।
*وَذَكَرَ اسْمَ رَبِّهِ فَصَلَّى‏ এবং তার প্রভুর নাম স্মরণ করে। অতঃপর ছালাত আদায় করে।
*بَلْ تُؤْثِرُونَ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا বস্ত্ততঃ তোমরা দুনিয়াবী জীবনকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাক।
*وَالْآخِرَةُ خَيْرٌ وَأَبْقَى‏ অথচ আখেরাত হ’ল উত্তম ও চিরস্থায়ী।
*إِنَّ هَذَا لَفِي الصُّحُفِ الْأُولَى নিশ্চয়ই এটা লিপিবদ্ধ ছিল পূর্ববর্তী কিতাব সমূহে-
*صُحُفِ إِبْرَاهِيمَ وَمُوسَى ইবরাহীম ও মূসার কিতাবসমূহে।

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা