সুহাসিনী মুলে
সুহাসিনী মুলে (জন্ম ১৯ নভেম্বর ১৯৫০) একজন ভারতীয় বলিউড এবং মারাঠি চলচ্চিত্রের অভিনেত্রী। পাশাপাশি তিনি টেলিভিশনেও কাজ করেন। তিনি ১৯৯৯ সালে, সেরা সহ অভিনেত্রী হিসাবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জেতেন। নির্দেশক গুলজারের হু তু তু ছবিতে অভিনয়ের জন্য তিনি এই পুরস্কার পেয়েছিলেন।[২][৩][৪]
সুহাসিনী মুলে | |
---|---|
জন্ম | |
কর্মজীবন | ১৯৬৯ - বর্তমান |
দাম্পত্য সঙ্গী | অতুল গুতরু (বি. ২০১১)[১] |
প্রাথমিক জীবন এবং শিক্ষা
সম্পাদনাসুহাসিনী মুলে পাটনায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং সেখানে তিনি তাঁর শৈশবের প্রথম দিককার সময় কাটিয়েছিলেন। তিনি মাত্র তিন বছর বয়সে বাবাকে হারিয়েছিলেন তাঁর মা, বিশিষ্ট তথ্যচিত্র নির্মাতা এবং চলচ্চিত্রের ইতিহাসবিদ বিজয়া মুলে, তাঁকে প্রতিপালন করে বড় করেছিলেন। সুহসিনী তাঁকে দেখেই চলচ্চিত্রের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন।[৫]
কর্মজীবন
সম্পাদনা১৯৬৫ সালে পিয়ার্স সাবান নির্মাতা তাঁকে তাদের মডেল হিসাবে বেছে নিয়েছিল। এই বিজ্ঞাপন চলচ্চিত্র নির্দেশক মৃণাল সেনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। তিনি তাঁর ভুবন সোম (১৯৬৯) ছবির জন্য সুহাসিনীকে নিয়েছিলেন।[৬]
যদিও ভুবন সোম ছবিটি ভারতীয় চলচ্চিত্রের একটি মাইলফলক হিসাবে প্রমাণিত, সুহাসিনী অভিনয়কে তাঁর কর্মজীবন হিসেবে বেছে নেননি। পরিবর্তে তিনি কানাডার মন্ট্রিয়ালের মর্যাদাপূর্ণ ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষি প্রযুক্তির একটি কোর্সে ভর্তি হন। তাঁর বিশেষ বিষয় ছিল মৃত্তিকা রসায়ন এবং মাইক্রোবায়োলজি। তিনি গণ যোগাযোগ (মাস কম্যুনিকেশন) বিষয় একটি স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন এবং একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চলচ্চিত্র, রেডিও, টিভি, সাংবাদিকতা এবং মুদ্রণে মেজর হন।[৭]
সুহাসিনী ১৯৭৫ সালে ভারতে ফিরে এসে সত্যজিৎ রায়ের বাংলা চলচ্চিত্র জন অরণ্য তে সহকারী হিসেবে কাজ করেছিলেন। পরে তিনি মৃণাল সেন পরিচালিত মৃগয়া ছবিতে সহকারী পরিচালক হিসেবে যোগদান করেছিলেন। তিনি লিখ কে দো নামে প্রাপ্তবয়স্কদের সাক্ষরতার উপর একটি তথ্যচিত্র তৈরি করেছিলেন, ইউনিসেফ সেটি কিনে নিয়েছিল। এর পরেই তিনি গত ২৬ বছর ধরে তথ্যচিত্র নির্মাতা হিসেবে কাজ করে গেছেন।[৮] তার পর থেকে, তিনি সক্রিয়ভাবে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন এবং ৬০ টিরও বেশি তথ্যচিত্র তৈরি করেছেন। অনেকেই জানেন না, সুহাসিনী তথ্যচিত্র নির্মাতা হিসাবে অনেক প্রশংসা অর্জন করেছিলেন। তিনি এর মধ্যে চারটি তথ্যচিত্রের জন্য জাতীয় পুরস্কারও অর্জন করেছেন।[৭]
ভুবন সোম ছবির প্রায় ৩০ বছর পরে, তিনি গুলজারের হু তু তু ছবির মাধ্যমে মূলধারার বলিউড চলচ্চিত্রে দুর্দান্তভাবে ফিরে আসেন। এই ছবির জন্য সেরা সহ অভিনেত্রী হিসেবে তিনি আরও একটি জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন। তখন থেকেই তিনি বলিউড চলচ্চিত্রে মায়ের চরিত্রে অভিনয় করছেন। তিনি দূরদর্শন ধারাবাহিক জানে ক্যায়া বাত হুই তে কাজ করেছেন। এখনও পর্যন্ত তাঁর সর্বশেষ চলচ্চিত্র হেমন্ত বর্মা পরিচালিত পীড়া, যেটি শেষ হয়েছে। পীড়া সম্প্রতি ইউএসএ-র এফওজি ফিল্ম ফেস্টিভালে সেরা ফিচার ফিল্মের পুরস্কার পেয়েছে।
ব্যক্তিগত জীবন
সম্পাদনাসুহাসিনী মুলে একা থাকতেই অভ্যস্ত ছিলেন। তিনি ১৯৯০ সাল পর্যন্ত একটি দীর্ঘ লিভ ইন সম্পর্কের মধ্যে ছিলেন। সেটি ভেঙে যাবার পর দীর্ঘ ২১ বছর তিনি একা ছিলেন। ২০১০ সালে ফেসবুকের মাধ্যমে তিনি পদার্থবিজ্ঞানী অধ্যাপক অতুল গুরতুর সাথে পরিচিত হন। এরপর ২০১১ সালের ৬ জানুয়ারি আর্য সমাজে তিনি অধ্যাপকের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।[১][৯]
সুহাসিনীর অভিনীত চলচ্চিত্র
সম্পাদনা- পীড়া মুক্তিপ্রাপ্ত....শ্রীমতি মালিক
- বাসমতি ব্লুজ (২০১৭) ... শ্রীমতি প্যাটেল
- মহেঞ্জো দারো (২০১৬) ... লাশী, মাহমের স্ত্রী
- রকি হ্যান্ডসাম (২০১৬) .... কার্লা আন্টি
- হামারি আধুরি কাহানী (২০১৫)...হরির মা
- প্রেম রতন ধন পায়ো (২০১৫) ... রাজকুমারী মৈথিলির ঠাকুমা
- গান্ধী অফ দ্য মান্থ (২০১৪) ... শ্রীমতি কুরিয়েন
- ক্লাব ৬০ (২০১৩) ...... শ্রীমতি মানসুখানি
- রঙ্গরসিয়া / আবেগের রং
- বিটস অ্যান্ড পিসেস (২০০৯)
- তুমহারে লিয়ে (২০০৯)
- দ্য হোয়াইট ল্যান্ড (২০০৯)
- মাই ফ্রেন্ড গনেশা ২ (২০০৮)
- জোধা আকবর (২০০৮) ...... রানী পদ্মাবতী
- ধামাল (২০০৭)
- ইউঁ হোতা তো ক্যায়া হোতা (২০০৬) ...... নম্রতা
- পেজ ৩ (২০০৫)
- লগান:ওয়ান আপন এ টাইম ইন ইন্ডিয়া (২০০১) ...... যশোদামাই
- হু তু তু (১৯৯৯) ...... মালতী বাই
- শতরঞ্জ (১৯৯৩) ...... শ্রীমতি ঊষা ডি. বর্মা
- সড়ক ছাপ (১৯৮৭)
- ভুবন সোম (১৯৬৯) ...... গৌরী
পুরস্কার
সম্পাদনা- ২০০০: বিজয়ী: সেরা সহ অভিনেত্রীর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার - হু তু তু
টেলিভিশন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ "The Times of India (bollywood)"। ২০১২-০৫-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৩-১৮।
- ↑ "Quest for creativity"। The Tribune। ২৪ নভেম্বর ২০০২।
- ↑ Interview with actor Suhasini Mulay indiantelevision.com, 20 March 2003.
- ↑ SUHASINI MULAY ... just begun' South Asian, 20 February 2003.
- ↑ "Suhasini Mulay"। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মার্চ ২০২০।
- ↑ "Suhasini Mulay"। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মার্চ ২০২০।
- ↑ ক খ "Suhasini Mulay Age, Family, husband"। ৮ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মার্চ ২০২০।
- ↑ "The Pathbreaker: Acting, Directing & Finding Companionship At 60. How Suhasini Mulay Has Defied Stereotypes"। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মার্চ ২০২০।
- ↑ Shah, Kunal M Shah (১১ মার্চ ২০১৪)। "Suhasini Mulay ties the knot at 60"। The Times of India। ১৫ মে ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মার্চ ২০২০।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে সুহাসিনী মুলে (ইংরেজি)