সুরাবায়ার পরিবহন ব্যবস্থা

সুরাবায়ার পরিবহন স্থল, সমুদ্র এবং বিমান পরিবহনের মাধ্যমে স্থানীয়, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক যাত্রায় সাহায্য করছে। শহরের অভ্যন্তরে প্রাথমিক যাতায়াত ব্যবস্থা হল মোটর যান, মোটরসাইকেল এবং ট্যাক্সি। কিছু পাব্লিক বাস পরিবহন রয়েছে। সুরাবায়া জাকার্তা এবং বালি-এর মধ্যে ভূতল পরিবহনের মাধ্যম-শহর। জাকার্তা এবং নিকটবর্তী প্রতিবেশী দ্বীপ মাডুরার মধ্যে আরেকটা বাস রুট রয়েছে।

জুয়ান্ডা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর -আপ্রোন
উজুং যাত্রী পরিবহন বন্দর

সমুদ্রবন্দর সম্পাদনা

তান্‌জুং পেরাক বন্দর হল শহরের প্রধান বন্দর এবং দেশের ব্যাস্ততম বন্দরগুলির একটি। এটা দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার শ্রেষ্ঠ দশটি সর্বাধিক ব্যাস্ত জাহাজি পণ্যের বন্দরের একটি।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] যদিও বন্দরের বেশিরভাগ জাহাজি পণ্য সনাতন পদ্ধতিতে তদারকি করা হয়, তবে পৃথিবীব্যাপী দ্বিতীয় প্রজন্মের সর্বাধিক ১,০০০ টিউজ ক্ষমতার আধুনিক পণ্য জাহাজকেও ধারণ করতে সক্ষম। সম্প্রতি, পঞ্চম প্রজন্মের ১০,০০০ টিউজ ক্ষমতার জাহাজের জন্য বন্দরের ১৪ মিটার পর্যন্ত পঙ্কোদ্ধারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে যা খুব সম্ভাবত ২০১৫ সালের মাঝামাঝি শেষ হবে এবং সপ্তম প্রজন্মের ১৫,০০০ টিউজ ক্ষমতার জাহাজের জন্য বন্দরকে ১৬ মিটার গভীর, ২০০ মিটার চাওড়া করার কাজ ২০১৬ সালের মাঝামাঝি শেষ হবে। বর্তমানে সর্ববৃহৎ আন্তর্জাতিক জাহাজ নবম প্রজন্মের।[১] অঞ্চলের অন্য একটি বন্দর সুরাবায়ার মধ্য শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরবর্তী গ্রেসিক্‌ শহরে অবস্থিত। ২০১৪ সালের মে মাসে তান্‌জুং পেরাক বন্দর-এর অংশ হিসাবে, দুটি শিপ টু শোর(এস টি এস) ক্রেন, পাঁচটি অটোমেটেড স্টকিং ক্রেন(এ এস সি), এবং একটি অটোমোটিভ টার্মিনাল ট্রাক্টর(এ টি টি) সহ নতুন তেলুক লামং গ্রিন সি পোর্ট, থেকে পরীক্ষামূলক জাহাজচালনা শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে নতুন এই বন্দরের সুবিধা আন্তর্জাতিক জাহাজ পরিবহনে ব্যবহৃত হবে, যার পরিমাণ মনে করা হচ্ছে যে সপ্তাহ প্রতি ৭টি জাহাজ, আর যদি অতিরিক্ত ক্ষমতা অবশিষ্ট থাকে তো তা অন্তদেশিয় জাহাজ পরিবহনে ব্যবহার করা হতে পারে। নতুন সুবিধায় কাগজের কম ব্যবহার করা হবে এবং বন্দর এলাকাতে ধারক পরিবাহী গ্যাস ট্রাক ব্যবহৃত হবে।[২][৩] ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে, ২৫০ মিটার জেটির ১৪টি পর্যন্ত এল ডব্লিউ এস আন্তর্জাতিক জাহাজ উপযোগী বিশালায়তন শুষ্ক বন্দর তৈরি করা হবে যার নির্মাণকার্য এক বছরের মধ্যে শেষ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। বন্দরে পরিবাহক এবং ৮ হেক্টর পণ্যাগার সহ সম্পূর্ণ দুটি একক "জাহাজ খালাসি ব্যবস্থা" থাকবে। শুষ্ক বিশালায়তন টার্মিনাল থাকবে ২৬ হেক্টর এলাকা জুড়ে এবং ২,০০,০০,০০০ টনের ক্ষমতা সম্পন্ন ৩৬ হেক্টর এলাকা, সহায়ক এলাকা হিসাবে থাকবে।[৪]

বিমানবন্দর সম্পাদনা

জুয়ান্ডা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর যাত্রী পরিবহনের হিসাবে ইন্দোনেশিয়ার দ্বিতীয় ব্যাস্ততম বিমানবন্দর। পশ্চিম এবং পূর্ব ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে যাতায়াতের জন্য এটা প্রসিদ্ধ। তাছাড়াও এটা অনেক বিমান সংস্থার চক্রকেন্দ্র বিমানবন্দর হিসাবেও ব্যবহৃত হয়।

রেলপথ সম্পাদনা

শহরে বেশ কয়েকটি রেল স্টেশান আছে। তারা হল সুরাবায়া কোটা(সেমুত্‌ নামে বেশি পরিচিত), পাসার তুরি, এবং গুবেং। সুরাবায়ার প্রধান রেল স্টেশান হল পাসার তুরি স্টেশান। (ইন্দোনেশিয়ার প্রধান রেল অপারেটর), পি টি কেরেতা আপি দ্বারা চালিত আর্গো ব্রোমো আংগ্রেক্‌ সুরাবায়ার এই স্টেশান থেকে জাকার্তার গাম্বির স্টেশানকে সংযোজিত করে।

উচ্চগতির রেল সম্পাদনা

ইন্দোনেশিয়ার উচ্চগতির রেল বা ইন্দোনেশিয়ার হাইস্পিড রেলপথ হল ইন্দোনেশিয়া এর জাভা দ্বীপ এর পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে সুরাবায়া শহর পর্যন্ত পরিকল্পনাধিন একটি উচ্চ গতির রেলপথ।এটি ইন্দোনেশিয়ার রেল পরিবহন এর সবচেয়ে বড় প্রকল্প।এই রেলপথটি জাভা দ্বীপ এর পশ্চিমে অবস্থিত দেশের রাজধানী জাকার্তা থেকে জাভা দ্বীপের পূর্বের শহর বানদুং পর্যন্ত নির্মাণ করা হবে।ইন্দোনেশিয়া সরকার ২০১০ সালে প্রথম এই প্রকল্পের কথা ঘোষণা করে।কিন্তু পরিকল্পনাটি সফল হয়নি।এর পর ২০১৫ সালে এই প্রকল্প নতুন ভাবে শুরু হয়।এই রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে চিন ও জাপান উভয় দেশই আগ্রহ দেখিয়েছে।দেশ দুটি জাকার্তা থেকে বানদুং পর্যন্ত ১৫০ কিলোমিটার পথে পর্যবেক্ষণ করেছে।এর পর জাপান বানদুং থেকে জাভা দ্বীপের পূর্ব অংশের শহর সুরাবায়া পর্যন্ত ৭৩০ কিলোমিটার পথ পর্যবেক্ষণ করেছে।কিন্তু এই রেলপথ নির্মাণের দায়ীত্ব পায় চিন এর চীনা রেলওয়ে ইন্টারন্যাশনাল।২০১৬ সালে এই ঘোষণা করে ইন্দোনেশিয়া সরকার।

বাস সম্পাদনা

অন্তশহর যাতায়াতের জন্য কিছু অন্য পরিবহন ব্যবস্থা ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রধান বাস টার্মিনাল হল পুরাবায়া (বুঙুরাসিহ নামেও পরিচিত, যে অঞ্চলে এটা অবস্থিত)।

অন্যান্য সম্পাদনা

তাছাড়া শহরের মধ্যে বিভিন্ন রুটে রয়েছে শাটেল ভ্যান বা, মিক্রলেত, সিটি বাস, রিকশা বা, বেচাক্‌, এবংকমুটার ট্রেন। সম্প্রতি সরকার আরো দুটি পরিবহন ব্যবস্থার পরিলল্পনা করেছেঃ ট্রাম এবং মোনোরেল যেগুলির সম্ভাব্যতার পরীক্ষা এখন চলছে।

সুরামাডু ব্রিজ সম্পাদনা

 
সুরামাডু ব্রিজ বর্তমানে ইন্দোনেশিয়ার দীর্ঘতম কেবল-স্টেইড ব্রিজ

সুরামাডু ব্রিজ টোল রাস্তা সুরাবায়া এবং মাডুরা প্রণালীর মাডুরা দ্বিপকে সংযোজিত করে। সুরামাডু সুরাবায়া-মাডুরা এর সংক্ষিপ্ত রূপ। সুরামাডু ব্রিজ থেকে পেরমাজু গ্রাম, কচাহ্‌ জেলা, বাংকালান, মাডুরা-এর মাডুরা আন্তর্জাতিক সমুদ্রবন্দর শহর পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার জাতীয় সড়ক নির্মিত হবে যাতে খরচ পড়বে আনুমানিক ৬০০ কোটি Rp (৭০ কোটি মার্কিন $)। এই ধারক বন্দরটি সুরাবায়ার মাত্রাতিরিক্ত বোঝাই তান্‌জুং পেরাক বন্দর কে কিছুটা স্বাচ্ছন্দ্য করার জন্য তৈরি করা হয়েছে।[৫]

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Pertengahan 2015, Kapal Generasi Lima Sandar di Tanjung Perak"। নভেম্বর ১৬, ২০১৪। 
  2. Miftahul Ulum। "Teluk Lamong Can Serve 7 International Ships"। ৮ মে ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ মে ৮, ২০১৪ 
  3. "Pelindo III to start trial runs at Teluk Lamong port in May"। সংগ্রহের তারিখ মে ৮, ২০১৪ 
  4. Titis Jati Permata (ডিসেম্বর ২৭, ২০১৪)। "2015, Dermaga Curah Kering di Terminal Teluk Lamong Dibangun" 
  5. "Surabaya's hotel business boom "likely to continue""The Jakarta Post। ২০১৩-০৫-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৩-০৪