সিরাজুল হক (শিক্ষাবিদ)

বাংলাদেশী শিক্ষাবিদ

ড. সিরাজুল হক (১৯০৫-২০০৫) হলেন বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ এবং গবেষক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে অধ্যাপক ছিলেন। শিক্ষায় অনন্য সাধারণ অবদানের জন্য ১৯৮৩ সালে তাকে “শিক্ষায় স্বাধীনতা পুরস্কার” এবং ১৯৯৭ সালে একুশে পদক প্রদান করা হয়।[] এছাড়াও তিনি ১৯৯৬ সালে কলকাতার এশিয়াটিক সোসাইটির প্রফেসর সুকুমার সেন স্বর্ণপদক এবং ১৯৯৭ সালে একুশে পদক লাভ করেন।[]

সিরাজুল হক
জন্ম১ এপ্রিল ১৯০৫
বেলাকোট, রামগঞ্জ থানার, নোয়াখালী জেলা
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত)
 পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ
মাতৃশিক্ষায়তনঢাকা মাদ্রাসা, কবি নজরুল সরকারি কলেজ
পেশাশিক্ষাবিদ
পিতা-মাতামৌলভি হামিদুল্লাহ (পিতা)
পুরস্কারসিতারা-এ-ইমতিয়াজ (১৯৬৯)
স্বাধীনতা পুরস্কার (১৯৮৩)
ইসলামিক ফাউন্ডেশন পদক (১৯৮৫)
একুশে পদক (১৯৯৭) প্রভৃতি

জন্ম ও পারিবারিক পরিচিতি

সম্পাদনা

সিরাজুল হক ১৯০৫ সালের ১ এপ্রিল নোয়াখালী জেলার রামগঞ্জ থানার বেলাকোট নামক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার মৌলভি হামিদুল্লাহ, সিরাজুল হক তার পিতা থেকে বাল্যকালে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন।

শিক্ষাজীবন

সম্পাদনা

সিরাজুল হক নিজ গ্রাম বেলাকোটের স্থানীয় মক্তব ও মাদ্রাসায় প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। এরপর সিরাজুল হক ঢাকা মুহসিনিয়া মাদ্রাসা হতে ১৯২১ সালে ম্যাট্রিক, ১৯২৩ সালে ঢাকা ইসলামিক ইন্টার মিডিয়েট কলেজ (বর্তমান কবি নজরুল সরকারি কলেজ) থেকে উচ্চ মাধ্যমিক, ১৯২৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিষয়ে বি এ অনার্স পাশ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুইবার এম এ পাশ করেছেন, ১৯২৭ সালে ইসলামিক স্টাডিজ বিষয়ে এম এ এবং ১৯৩০ সালে ফারসি বিষয়ে এম এ পাস করেন। তিনি ১৯৩৭ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।

কর্মজীবন

সম্পাদনা

সিরাজুল হকের ১৯২৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে সহকারি প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। এরপর ১৯৩৭ সালে তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক, ১৯৪৩ সালে রিডার এবং ১৯৫১ সালে প্রফেসর পদে পদোন্নতি লাভ করে। তিনি ১৯৫১ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত (অবসর গ্রহণের পূর্ব পর্যন্ত) আরবি ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ছিলেন। ১৯৪০ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত সহকারি প্রক্টর এবং ১৯৪৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারিকের দায়িত্বে কর্তব্যরত ছিলেন। এছাড়াও তিনি ১৯৬৪ থেকে ১৯৬৫ এবং ১৯৬৮ থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত দুবার কলা অনুষদের ডিনের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৭০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

তিনি ১৯৭০ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অবৈতনিক কোষাধ্যক্ষ এবং ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাছাড়া ১৯৭৫ সাল থেকে আমৃত্যু প্রফেসর ইমেরিটাস পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।

মৃত্যু

সম্পাদনা

২০০৫ সালের ৪ মার্চ সিরাজুল হকের মৃত্যু হয়।

পুরস্কার ও সম্মাননা

সম্পাদনা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁর স্মৃতি রক্ষার্থে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে ‘সিরাজুল হক ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার’ প্রতিষ্ঠা করেছে। এছাড়াও তিনি বহু পুরস্কার ও সন্মাননা পেয়েছেন।

  • ১৯৬৯ সালে তিনি সিতারা-এ-ইমতিয়াজ সম্মাননা পান।[]
  • ১৯৭৩ সালে এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশ ফেলোশীপ
  • ১৯৮৩ সালে দেশের “সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার” হিসাবে পরিচিত “স্বাধীনতা পুরস্কার” প্রদান করা হয় তাকে।[][][][] (শিক্ষা ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদানের জন্য)
  • ১৯৮৫ সালে ইসলামিক ফাউন্ডেশন পদক
  • ১৯৯৬ সালে কলকাতার এশিয়াটিক সোসাইটির প্রফেসর সুকুমার সেন স্বর্ণপদক
  • ১৯৯৭ সালে একুশে পদক

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের তালিকা"মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ০৯ অক্টোবর ২০১৭  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  2. "হক, সিরাজুল - বাংলাপিডিয়া"bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৬-২৩ 
  3. সানজিদা খান (জানুয়ারি ২০০৩)। "হক, সিরাজুল"। সিরাজুল ইসলাম[[বাংলাপিডিয়া]]ঢাকা: এশিয়াটিক সোসাইটি বাংলাদেশআইএসবিএন 984-32-0576-6। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০১৭  ইউআরএল–উইকিসংযোগ দ্বন্দ্ব (সাহায্য)
  4. "স্বাধীনতা পদকের অর্থমূল্য বাড়ছে"কালেরকন্ঠ অনলাইন। ২ মার্চ ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২৫ অক্টোবর ২০১৭ 
  5. সানজিদা খান (জানুয়ারি ২০০৩)। "জাতীয় পুরস্কার: স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার"। সিরাজুল ইসলাম[[বাংলাপিডিয়া]]ঢাকা: এশিয়াটিক সোসাইটি বাংলাদেশআইএসবিএন 984-32-0576-6। সংগ্রহের তারিখ ০৯ অক্টোবর ২০১৭স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য); ইউআরএল–উইকিসংযোগ দ্বন্দ্ব (সাহায্য)
  6. "এবার স্বাধীনতা পদক পেলেন ১৬ ব্যক্তি ও সংস্থা"এনটিভি অনলাইন। ২৪ মার্চ ২০১৬। ১ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ অক্টোবর ২০১৭ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা