সারেং বৌ
সারেং বৌ ১৯৭৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি বাংলাদেশী চলচ্চিত্র, যা একই নামের উপন্যাস সারেং বৌ-এর উপর ভিত্তি করে তৈরি।[২] ছবিটি পরিচালনা করেছেন বাংলাদেশের বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার আবদুল্লাহ আল মামুন। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্হায় নির্মিত এই ছবিটিতে আবদুল জব্বারের কণ্ঠে গাওয়া ওরে নীল দরিয়া আমায় দে রে দে ছাড়িয়া গানটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের জীবন সংগ্রামের গল্পে নির্মিত এই ছবিটিতে অভিনয় করেছেন ফারুক, কবরী, আরিফুল হক, জহিরুল হক, বিলকিস, বুলবুল ইসলাম, ডলি চৌধুরীসহ আরো অনেকে।
সারেং বৌ | |
---|---|
পরিচালক | আবদুল্লাহ আল মামুন |
প্রযোজক | এ বি এম প্রোডাকসন |
রচয়িতা | শহীদুল্লাহ কায়সার (উপন্যাস) |
শ্রেষ্ঠাংশে | ফারুক কবরী আরিফুল হক জহিরুল হক বিলকিস বুলবুল ইসলাম ডলি চৌধুরী |
সুরকার | আলম খান |
চিত্রগ্রাহক | রফিকুল বারী চৌধুরী |
সম্পাদক | আমিনুল ইসলাম মিন্টু[১] |
পরিবেশক | এ বি এম প্রোডাকসন |
মুক্তি | ১৬ জুন, ১৯৭৮ |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা ভাষা |
কাহিনী সংক্ষেপ
সম্পাদনা“কদম” সারেং (ফারুক) জাহাজে কাজ করে অনেক দিন পর ফিরে আসে নিজ বাড়িতে, তারপর ভালবেসে বিয়ে করে “নবিতন”কে (কবরী)। বিয়ের কিছু দিন পরে আবার চলে যায় জাহাজের কাজে, কদম চলে যাওয়ার পর মাঝে মাঝেই নবিতনের কাছে চিঠি ও টাকা পাঠায়। কিন্তু গ্রামের প্রভাবশালী “মোড়ল” (আরিফুল হক) ডাক পিয়নকে হাত করে সেইসব চিঠি ও টাকা নিয়ে নেয়, যাতে করে নবিতনের সংসারে অভাব চলে আসে। আর এই অভাবের সুযোগে নবিতনকে তার লালসার শিকার বানাতে চায়, কিন্তু নবিতন নিজে গায়ে খেঁটে ঢেঁকিতে ধান বেঁনে কোন মতে সংসার চালায়। এদিকে কদমকে “মন্টু চাচা” (গোলাম মোস্তফা) পকেটে অবৈধ মাল পুরে দিলে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়, সাজার মেয়াদ শেষ হলে সে ফিরে আসে নিজ গ্রামে। ততক্ষনে চক্রান্তকারী মোড়ল কদমের চাচাতো ভাইয়ের সাথে নবিতনের বিয়ে ঠিক করে, কিন্তু কদম ফিরে আসাতে সব ঠান্ডা হয়ে যায় খুশিতে বুক ভরে ওঠে নবিতনের। এভাবে নানাঘটনায় অতিবাহিত হল কিছুদিন, হঠাৎ একদিন তীব্র বাতাস গণগণে শব্দে আতঙ্কিন উপকূলীয় অঞ্চলের সব মানুষ এ’যেন জলচ্ছাসের পূর্বাভাস। শুরু হলো উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের জীবন সংগ্রামের তড়িগড়ি, কিন্তু প্রলয়নকারী ঘূর্ণিঝড় ও জলচ্ছাসে বেচে থাকার সব আশা। দীর্ঘ ঘূর্ণিঝড় ও জলচ্ছাসের পর সব কিছু থমেথমে অবস্থা, চারিদিকে শুধু লাশ আর লাশ, মানুষ, পশু, পাখি কাররই রক্ষা হয়নি এই দুর্যোগে-দুর্ভোগে- যারা বেচে আছে! কদম সারেং তার শরীরের বেশির ভাগই কাদামাটি ও বালির ভিতরে আটকে গেছে আর পানি পানি করে কাতরাচ্ছে, এদিকে নবিতনও একই অবস্থা থেকে উঠে খুঁজছে আপনজনদের। হঠাৎ শুনতে পেল কেউ পানি খেতে চাইছে, কাছে গিয়ে দেখল তার স্বামী হাতে করে পানি এনে খাওয়ানোর চেষ্টা করে না পেরে, কদমকেই টেনে নিয়ে গেল পানির কাছে, পানি মুখেদিতেই মুখ থেকে বের করে দিতে চাইছে কদম, কারণ খুঁজতে নবিতন নিজেই একটু পানি মুখে দিয়ে দেখল এতো নোনাপানি। স্বামীকে বাচানোর কোন উপায় না দেখে মাতৃত্বকে জাগিয়ে স্বামীকে দুধের শিশুর মতো বুকে জড়িয়ে নবিতন নিজ স্তনদয় থেকে দুধ পান করায়। স্বামী কদম চোখ মেলে দেখে চমকে উঠে বলে- নবিতন তুই আমারে পর কইরা দিলি, নবিতন- না, জীবন বাচানো ফরজ।
শ্লোগান
সম্পাদনা“ | আবহমান বাংলাদেশের একান্ত আপনজন তার কাহিনী, আমার, আপনার, সবার... |
” |
শ্রেষ্ঠাংশে
সম্পাদনা- ফারুক - কদম (সারেং)
- কবরী - নবিতন
- আরিফুল হক -
- জহিরুল হক -
- বিলকিস -
- বুলবুল ইসলাম -
- ডলি চৌধুরী -
- মনোয়ারা বেগম -
- রত্না চৌধুরী -
- আবদুল কাদের -
- কানু ভৌমিক -
- আবদুল মতিন -
- নজরুল ইসলাম -
- মনিরুল ইসলাম বাদল -
- আহসানুর রহমান ভূঁইঞা -
- কামরুজ্জামান রুনু -
- সৈয়দ আকতার আলী -
- নাজমুল হুদা -
- দীন মোহাম্মদ -
- গোলাম রফিক -
- সিতারা -
- সাহরে বানু -
- মিনু রহমান -
- সীমা বেগম -
- সূজা খন্দকার -
- আজম -
- নার্গিস -
- সুলতানা -
- দারাসিকো -
- বাবর -
- গোলাম মোস্তফা - মন্টু চাচা
- সৈয়দ হাসান ইমাম
সংগীত
সম্পাদনাসারেং বৌ ছবির সংগীত পরিচালনা করেন বাংলাদেশের বিখ্যাত সংগীত পরিচালক আলম খান। গীত রচনা করেন মুকুল চৌধুরী।
গানের তালিকা
সম্পাদনাট্র্যাক | গান | কণ্ঠশিল্পী | নোট | পর্দায় |
---|---|---|---|---|
১ | হিরামতি হিরামতি হিরামতি | ফারুক ও কবরী | ||
২ | কবে হবে দেখা তোমার সনে | রবিন্দ্রনাথ রায় | ||
৩ | ওরে নীল দরিয়া আমায় দে রে দে ছাড়িয়া | আবদুল জব্বার | শিরোনাম গান | ফারুক |
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "লাইফ সাপোর্টে 'সারেং বউ' এর চিত্রসম্পাদক মিন্টু"। চ্যানেল আই অনলাইন। ২০২০-১২-১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১২-১৫।
- ↑ "'সারেং বৌ' চলচ্চিত্র (১৯৭৮)"। ২৩ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০১১।