শ্যামপুর ইউনিয়ন, শিবগঞ্জ
শ্যামপুর ইউনিয়ন রাজশাহী বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার একটি ইউনিয়ন। শিবগঞ্জ পৌরসভা থেকে ১০ কিলোমিটার উত্তরে শ্যামপুর ইউনিয়ন পরিষদ অবস্থিত।
শ্যামপুর ইউনিয়ন | |
---|---|
ইউনিয়ন | |
বাংলাদেশে শ্যামপুর ইউনিয়ন, শিবগঞ্জের অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৪°৪৪′১১″ উত্তর ৮৮°৮′৪২″ পূর্ব / ২৪.৭৩৬৩৯° উত্তর ৮৮.১৪৫০০° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | রাজশাহী বিভাগ |
জেলা | চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা |
উপজেলা | শিবগঞ্জ উপজেলা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ |
আয়তন | |
• মোট | ৩০.৫৫২৭৫৪২৮ বর্গকিমি (১১.৭৯৬৪৮৪৩৮ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ৪০,৭৫৩ |
• জনঘনত্ব | ১,৩০০/বর্গকিমি (৩,৫০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৬০ % |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
অবস্থান সম্পাদনা
শ্যামপুর ইউনিয়ন পাগলা নদীর তীরে অবস্থিত। শ্যামপুর ইউনিয়ন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা, শিবগঞ্জ উপজেলা এর ১০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত । এ ইউনিয়নের উত্তরে শাহ্বাজপুর ইউনিয়ন, দক্ষিণে দূর্লভপুর ইউনিয়ন, পূর্বে কানসাট ইউনিয়ন , পশ্চিমে বিনোদপুর ইউনিয়ন ও মনাকষা ইউনিয়ন ।
যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পাদনা
সড়ক পথ- চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সদর হইতে সম্পূর্ণ পাকা সড়ক পথে ১৯ কি.মি. চলার পর শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদ তারপর আবার সড়ক পথে ৭ কি.মি. চলার পর কানসাট ইউনিয়ন হয়ে ৩ কিঃমি পশ্চিমে আসার পর অত্র ইউনিয়নে আসা যায়। নদী পথ- মহানন্দা ও পাগলা নদী পথে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সদর হইতে অত্র ইউনিয়নে আসা যায়।
প্রশাসনিক এলাকা সম্পাদনা
শ্যামপুর ইউনিয়নে গ্রামের সংখ্যা ২২টি, মৌজার সংখ্যা ১০ টি।
- কয়লার দিয়াড়
- দক্ষিণ উমরপুর
- বাজিতপুর
- সদাশিবপুর
- হাদিনগর
- উত্তর বাবুপুর
- পশ্চিম গোপালনগর
- শরৎনগর
- উত্তর ভবানীপুর
- পূর্বশ্যামপুর
ইতিহাস সম্পাদনা
এই এলাকার ইতিহাস অতি প্রাচীন ও সম্ভ্রান্ত। প্রায় ৪০০-৪৫০ বছর পূর্বে বর্তমান শ্যামপুর(মিঞাপাড়া ও চৌধুরীর-পাড়া) এলাকায় তর্তীপুর নৌ বন্দর ও নদী পথে যাতায়াত ভালো হওয়ায় ধনাঢ্য মুসলিম বণিক বা সওদাগর ব্যক্তিবর্গ তথা জনাব মোহাম্মদ আব্দুল করিম চৌধুরী ও জনাব মোহাম্মদ হাজ্বী জহির উদ্দিন বিশ্বাসের পূর্বপুরুষগণ বর্তমান শ্যামপুর চৌধুরীরপাড়া ও মিঞাপাড়া গ্রামে বসবাস শুরু করেন এবং ব্যবসা-বানিজ্যর ব্যাপক প্রসার করেন। ঐ সময় এই এলাকার নাম পাহাড়পুর সহ বিভিন্ন নামে পরিচিত ছিলো বলে জানা যায় । পরবর্তীতে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলে ১৭৯৩ ইং সালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত আইনে জমিদারী প্রথা প্রবর্তিত হলে তাহারা এই এলাকা সহ বিভিন্ন এলাকায় জমিদারী প্রতিষ্ঠা করেন। অতীত সময় থেকেই জমিদারগন অত্যন্ত দানশীল,সহানুভূতিশীল অর্থাৎ প্রজাগনদের সাহায্য সহযোগিতায় সর্বদা পাশে থেকেছেন ও বিভিন্ন মসজিদ,মাদ্রাসা,স্কুল,কলেজ,ঈদগাহ প্রতিষ্ঠা করে শ্যামপুর এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন সংগঠিত করেন । যার ফলশ্রুতিতে এলাকায় সর্বস্তরের প্রজাদের মাঝে অত্যন্ত সন্মান লাভ করেন। আফগানিস্তান সহ বিভিন্ন দেশ থেকে ঘোড়ার পিঠে চড়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা এই এলাকায় আসতেন বলে জানা যায়।
ইতিহাস পর্যবেক্ষণ করলে জানা যায়, কানসাটে বসবাসকারী ময়মনসিংহের সূর্যকান্ত আচার্য চৌধুরী,মহারাজা শশীকান্ত আচার্য চৌধুরী বাহাদুর,ব্যবসায়ী কেদার প্রসন্ন কুন্ড, মালদহ চাচলের রাজা শরৎচন্দ্র রায় চৌধুরী,রহনপুর এর জমিদার যামিনীকান্ত রায় চৌধুরী সহ বিভিন্ন মহারাজা ও জমিদারদের সাথে এই এলাকার জমিদার পরিবার দুটির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ও যাতায়াত ছিলো বলে জানা যায়। এমকি ব্রিটিশ কর্মকর্তাগণও তাহাদের সন্মান প্রদর্শন করে চলতেন।এলাকায় কোন সমস্যার সৃষ্টি হলে প্রজাগণ জমিদারদের জানাতেন, ইংরেজ কর্মকর্তাগণও কোন সমস্যায় এলাকায় আসলে জমিদারগনের অনুমতি গ্রহন করে সন্মান প্রদর্শন করতেন।
কানসাটের রাজবাড়ির পার্শ্ববর্তী মসজিদে মাগরিবের আজান ও নামাজের সময় রাজবাড়ির শঙ্খ বাজানো কে কেন্দ্র করে মহারাজ কে বিচার দেওয়া হলে তা তিনি প্রত্যাখান করে ও শঙ্খ বাজিয়ে যাওয়ার ঘোষনা দিলে শ্যামপুর চৌধুরী জমিদার বাড়ির নেতৃত্বে এলাকার মুসলমান সম্প্রদায় একজোট হয়ে উঠেন ও নদীর এক প্রান্তে অবস্থান নেয় এবং রাজবাড়ির সৈন্যরা অপরপ্রান্তে অবস্থান নেন। রাজবাড়ির সৈন্যদের সাথে কয়েকদিন ব্যাপী ব্যাপক সংঘর্ষ সংগঠিত হয় , অবশেষে মহারাজ হার মেনে নেয় ও জমিদারগনের সাথে বৈঠক করে ব্যাপারটি সমঝোতা করে নেন। এই থেকেই বোঝা যায় এই এলাকার মানুষ বলিষ্ঠ প্রচন্ড সাহসী ও প্রতিবাদ মূখর ছিলেন।
অতীতে শ্যামপুর শরৎনগর মিঞাপাড়া ঈদগাহ সংলগ্ন বৃহৎ এলাকা জুড়ে কয়লা খনির সন্ধান করা হয়েছিলো। যেখানে ভারতবর্ষের বিভিন্ন এলাকার কর্মকর্তা ও শ্রমিক কাজ করতেন কিন্তু পরবর্তীতে তা বন্ধ হয়ে যায়।
এই এলাকা পূর্ব থেকেই আমের জন্য বিখ্যাত ও এখনও আম্র কানন পরিবেষ্ঠিত এলাকা। বিভিন্ন এলাকার মানুষ এখনও আম বাগান পরিদর্শন করতে দূর দূরান্ত থেকে আসেন।
জনসংখ্যা[১] সম্পাদনা
ওর্য়াড নং | গ্রাম সমূহ | লোক সংখ্যা |
---|---|---|
০১ | কয়লারদিয়াড় | ১৮৮৭ |
০২ | কয়লারদিয়াড় | ১৮১৫ |
০৩ | বড় হাদিনগর,ছোট হাদিনগর,কামারটোলা | ২৮৭৯ |
০৪ | উমরপুর | ২২৩১ |
০৫ | বাজিতপুর | ২৭৭৭ |
০৬ | সদাশিবপুর,টিকোশ,আজগবী | ৩৩৫৯ |
০৭ | বাবুপুর,ভবানীপুর,গোপালনগর | ৩০৯৫ |
০৮ | মিঞা-পাড়া শরৎনগর,শরৎনগর,পুরাতন ভান্ডার | ৩১৬৫ |
০৯ | চকশ্যামপুর,কালুপুর,হাজারবিঘী,নতুনগ্রাম | ২৯১৮ |
কৃতী ব্যক্তিত্ব সম্পাদনা
- হাজী মাওলা বক্স বিশ্বাস - জমিদার ও সওদাগর
- আব্দুল করিম চৌধুরী - জমিদার ও বিশিষ্ট নাট্যকার
- ময়েজুল ইসলাম চৌধুরীর- সর্ব প্রথম চেয়ারম্যান,শ্যামপুর ইউনিয়ন
- আবু আমিন মুসা বিন কাসিম চৌধুরী - সাবেক চেয়ারম্যান,শ্যামপুর ইউনিয়ন।
- মনিরুল ইসলাম চৌধুরীর- সাবেক চেয়ারম্যান,শ্যামপুর ইউনিয়ন।
- ডঃ মাহতাজ উদ্দিন মিঞা।
- বীর বিক্রম কর্নেল এ.আর.আজম চৌধুরী।
- ডাঃ আতাউল মুলক চৌধুরী।
- বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডাঃ মোঃ মিজানুর রহমান মিঞা- সাবেক মহাপরিচালক,বাংলাদেশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ।
- মোহাম্মদ আব্দুর রহিম মিঞা- বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী
- ডাঃ আনোয়ারুল আলম মিঞা।
- আব্দুল মালেক মিটু চৌধুরী- সাবেক পৌরসভা মেয়র,নাচোল।
- নুরুল হুদা মিঞা - সাবেক চেয়ারম্যান
শিক্ষা সম্পাদনা
- সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় - ৮টি,
- বে-সরকারী রেজিঃ প্রাঃ বিদ্যালয় - ৯টি,
- কলেজ - ১টি,
- মাধ্যমিক বিদ্যালয় - ৫টি
- মাদ্রাসা - ৩টি।
- শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ
- শ্যামপুর হাজী মমতাজ মিঞা ডিগ্রী কলেজ
- শ্যামপুর ইউসি উচ্চ বিদ্যালয়
- পূর্ব শ্যামপুর উচ্চ বিদ্যালয়
- শ্যামপুর শরৎনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়
- শ্যামপুর বাজিতপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়
- ভবানীপুর ফাজিল মাদ্রাসা।
- শরৎনগর দাখিল মাদ্রাসা।
- পূর্ব শ্যামপুর দাখিল মাদ্রাসা।
- শ্যামপুর মিঞাপাড়া নূরানী ও ক্বারিয়ানা মাদ্রাসা
- শেরপুর চামাভান্ডার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- হাদিনগর বটতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- কয়লার দিয়াড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- হাজারবিঘী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- কয়লার দিয়াড় উচ্চ বিদ্যালয়।
- ভবানীপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
- পূর্বশ্যামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
জনপ্রতিনিধি সম্পাদনা
বর্তমান চেয়ারম্যান-
ক্রমিক | নাম | মেয়াদ |
---|---|---|
০১ | জনাব মোহাম্মদ মোয়েজুল ইসলাম চৌধুরী | ১৯৬২-৬৭ |
০২ | জনাব মোহাম্মদ নূরুল হোদা মিঞা | ১৯৬৮-৭১ |
০৩ | জনাব মোহাম্মদ আজিজ উদ্দৌলা | ১৯৭২-৭৩ |
০৪ | জনাব মোহাম্মদ আবু আমিন মুসা চৌধুরী | ১৯৭৩-৮৩ |
০৫ | জনাব মোহাম্মদ আজিজ উদ্দৌলা | ১৯৮৩-৮৮ |
০৬ | জনাব মোহাম্মদ আবু আমিন মুসা চৌধুরী | ১৯৮৮-৯২ |
০৭ | জনাব মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম চৌধুরী | ১৯৯২-২০০৩ |
চিত্র সংগ্রহ সম্পাদনা
আরও দেখুন সম্পাদনা
তথ্যসূত্র সম্পাদনা
- ↑ "গ্রামভিত্তিক লোকসংখ্যা"। বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ১৯ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭।
বহিঃসংযোগ সম্পাদনা
বাংলাদেশের ইউনিয়ন বিষয়ক এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |