লেস টেলর

ইংরেজ ক্রিকেটার

লেসলি ব্রায়ান টেলর (ইংরেজি: Les Taylor; জন্ম: ২৫ অক্টোবর, ১৯৫৩) লিচেস্টারশায়ারের আর্ল শিল্টন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়কালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

লেস টেলর
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামলেসলি ব্রায়ান টেলর
জন্ম (1953-10-25) ২৫ অক্টোবর ১৯৫৩ (বয়স ৭০)
আর্ল শিল্টন, লিচেস্টারশায়ার, ইংল্যান্ড
উচ্চতা৬ ফুট ৩ ইঞ্চি (১.৯১ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম
ভূমিকাবোলার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৫১৩)
১৫ আগস্ট ১৯৮৫ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ টেস্ট২৯ আগস্ট ১৯৮৫ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ৮৫)
১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৬ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
শেষ ওডিআই২৪ মে ১৯৮৬ বনাম ভারত
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই
ম্যাচ সংখ্যা
রানের সংখ্যা
ব্যাটিং গড়
১০০/৫০ –/– –/–
সর্বোচ্চ রান ১* ১*
বল করেছে ৩৮১ ৮৪
উইকেট
বোলিং গড় ৪৪.৫০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট -
সেরা বোলিং ২/৩৪
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১/– –/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৮ ডিসেম্বর ২০২০

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে লিচেস্টারশায়ার ও দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে নাটাল দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ডানহাতে ব্যাটিং করতেন লেস টেলর

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট সম্পাদনা

আর্ল শিল্টনের হিথফিল্ড হাই স্কুলে অধ্যয়ন করেছেন তিনি। ১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত লেস টেলরের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। খনি শ্রমিক হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। খনি এলাকা ছেড়ে চলে আসা শেষদিকের অন্যতম ইংরেজ সিমার ছিলেন। দীর্ঘদেহী ও পেশীবহুল লেস টেলর বলে নিখুঁততা আনয়ণে অফের দিকে বেশ কার্যকরী সিম বোলিং করতেন।

তুলনামূলকভাবে বেশ দেরীতে ২৩ বছর বয়সে প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবনের সূত্রপাত ঘটান লেস টেলর। তবে, বেশ দেরীতে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলতে নামলেও খুব দ্রুত নিজেকে দলে প্রতিষ্ঠিত করতে সচেষ্ট হন। ১৯৮১ সালে ৭৫ উইকেট লাভ করেন। তবে, দক্ষিণ আফ্রিকায় গমনের ফলে দল নির্বাচকমণ্ডলীর কাছ থেকে উপেক্ষিত হন। ক্রমাগত আঘাতের কারণে তার খেলোয়াড়ী জীবনে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে।

নিষেধাজ্ঞা লাভ সম্পাদনা

বেশ মজবুত গড়নের অধিকারী ছিলেন। ফাস্ট-মিডিয়াম বোলার হিসেবে বিশ্বস্ততার সাথে অনেকগুলো বছর কাউন্টি দলে খেলেছেন। ১৯৮২ সালে গ্রাহাম গুচের নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহী দলের সদস্যরূপে তৎকালীন নিষিদ্ধঘোষিত দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করেন। ফলশ্রুতিতে, তিন বছরের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে কার্যত তার টেস্ট দলে খেলার সম্ভাবনা স্তিমিত হয়ে পড়ে। ঐ সফরে ১৮.৭২ গড়ে ১১ উইকেট নিয়ে শীর্ষস্থানীয় বোলারে পরিণত হন।[১][২]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে দুইটিমাত্র টেস্ট ও দুইটিমাত্র একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণ করেছেন লেস টেলর। সবগুলো টেস্টই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলেছিলেন তিনি।[৩] ১৫ আগস্ট, ১৯৮৫ তারিখে বার্মিংহামে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এরপর, ২৯ আগস্ট, ১৯৮৫ তারিখে ওভালে একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি। এছাড়াও, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৬ তারিখে কিংস্টনে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিপক্ষে একদিনের আন্তর্জাতিকে অভিষেক ঘটে তার। ২৪ মে, ১৯৮৬ তারিখে ওভালে সফরকারী ভারত দলের বিপক্ষে সর্বশেষ ওডিআইয়ে অংশ নেন তিনি।

১৯৮৫ সালের গ্রীষ্মে তিন মৌসুম নিষেধাজ্ঞা লাভ শেষে নিজস্ব দুই টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। এরপর, ১৯৮৫-৮৬ মৌসুমের শীতকালে ইংল্যান্ড দলের সদস্যরূপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমন করেন। ঐ সফরে তার খেলায় কম অংশগ্রহণের কারণে গণমাধ্যমের কিছু সদস্য ব্যাঙ্গাত্মকভাবে তাকে ‘লর্ড লুকান’ নামে অভিহিত করে। কেবলমাত্র অভিজাত সদস্য হিসেবে নিখোঁজ না হওয়ার লক্ষ্যে স্বল্পকালীন জনসাধারণ্যে অবস্থান করতে দেখা যায়।[১] ঐ সফরে তিনি কেবলমাত্র একটি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশ নিয়েছিলেন। তবে, দেশে ফিরে সফরকারী ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয়বারের মতো সিরিজে অংশ নেন।

খেলার ধরন সম্পাদনা

তার ব্যাটিংয়ের মান বেশ নিম্নমূখী ছিল। একবার নিজ কাউন্টি দলের ফলো-অন এড়াতে মাত্র ২০ রানের দরকার পড়ে। ব্যাট হাতে নিয়ে ক্রিজে আসার পর তার মাথা লক্ষ্য করে গর্জে ওঠা সিলভেস্টার ক্লার্কের বল ছোঁড়া দেখে লিচেস্টারশায়ারের অধিনায়ক ডেভিড গাওয়ার বেশ ঘাবড়ে যান। তিনি মন্তব্য করেন যে, আমি তা করতে পারবো না। তিনি ইনিংস ঘোষণা করে দেন।[১]

আঘাতের কারণে তার খেলোয়াড়ী জীবনে বিরূপ প্রভাব ফেলে। মার্টিন জনসন একদা লিখেছিলেন যে, গ্রেস রোডের ফিজিওথেরাপিস্ট স্কেগনেসের বানরের তুলনায় অধিক কাজ করতে পারতেন। ব্যাটসম্যান হিসেবে এগারো নম্বরের জন্য উপযুক্ত ছিলেন। ক্রিকেট লেখক কলিন বেটম্যান মন্তব্য করেছেন যে, তার সিম বোলিং তেমন উল্লেখযোগ্য ছিল না; তবে, বেশ কার্যকর ও আক্রমণাত্মক ভূমিকা পালন করতো।[১]

১৯৯০ সালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের কথা ঘোষণা করেন। এ পর্যায়ে ২৫.২১ গড়ে ৫৮১ উইকেট লাভ করেছিলেন তিনি।[২] ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর অনেকগুলো বছর রয়্যাল মেইলে কাজ করেন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Bateman, Colin (১৯৯৩)। If The Cap Fits। Tony Williams Publications। পৃষ্ঠা 167আইএসবিএন 1-869833-21-X 
  2. "Les Taylor"। www.espncricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ২৯ এপ্রিল ২০১১ 
  3. "Les Taylor"। www.cricketarchive.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-১১-০৩ 

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা