মৌসম (১৯৭৫-এর চলচ্চিত্র)
মৌসম (ঋতু) ১৯৭৫ সালে মুক্তি পাওয়া হিন্দি ভাষার একটি চলচ্চিত্র, যাতে অভিনয় করেছেন সঞ্জীব কুমার ও শর্মিলা ঠাকুর এবং পরিচালনা করেছেন গুলজার। ছবিটির চিত্রনাট্য এ.জে. ক্রোনিন এর দ্য জুদাস ট্রি নামে উপন্যাস অবলম্বনে রচিত। ২৩ তম জাতীয় চলচ্চিত্র উৎসবে শর্মিলা ঠাকুর তার অভিনয়ের জন্য রজত কমল পুরস্কার লাভ করেন এবং ছবিটি দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠ পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের পুরস্কার লাভ করে।[২] চলচ্চিত্রটি ২৪তম ফিল্মফেয়ার পুরস্কারে আটটি বিভাগে মনোনয়ন পেয়ে দুটিতে পুরস্কার লাভ করে। ছবিটি আরও অনেক সম্মাননা লাভ করে।[১]
মৌসম | |
---|---|
পরিচালক | গুলজার[১] |
প্রযোজক | পি. মল্লিকার্জুনা রাও |
রচয়িতা | ভূষণ বনমালী কমলেশ্বর গুলজার |
শ্রেষ্ঠাংশে | শর্মিলা ঠাকুর সঞ্জীব কুমার দীনা পাঠক ওম শিবপুরী সত্যেন কাপ্পু সি.এস. দুবে লিলি চক্রবর্তী |
সুরকার | গান: মদন মোহন আবহ সঙ্গীত: সলিল চৌধুরী |
চিত্রগ্রাহক | কে. বৈকুণ্ঠ |
সম্পাদক | ওয়ামান বি. ভোঁসলে গুরুদূত শিরালি |
মুক্তি |
|
স্থিতিকাল | ১৫৬ মিনিট |
দেশ | ভারত |
ভাষা | হিন্দি |
ছবিটি তামিল ভাষায় ভাসন্ধাথিল অর নাল নামে পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে।[৩]
কাহিনী সংক্ষেপ
সম্পাদনামৌসম হলো ডা. অমরনাথ গিলের নাট্য প্রণয়ধর্মী গল্প, অমরনাথ তার চিকিত্সাবিদ্যাবিষয়ক পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য দার্জিলিং গেলে স্থানীয় চিকিৎসক হরিহর থাপার কন্যা চন্দার প্রেমে পড়ে। তারপর তাকে তার চূড়ান্ত পরীক্ষার জন্য আবার কলকাতায় চলে যেতে হয়। সে চন্দাকে আবার ফিরে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যায়, যদিও সে তাঁর প্রতিশ্রুতি রাখেনি। পঁচিশ বছর পর সে একজন ধনী ব্যক্তি হিসাবে ফিরে আসে এবং চন্দা এবং তার বাবার সন্ধান করে। সে জানতে পারে যে হরিহর মারা গেছে এবং চন্দার একজন পঙ্গু বৃদ্ধের সাথে বিয়ে হয়েছে। সে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়, উন্মাদ হয়ে যায় এবং মারা যায়। চান্দের মেয়ে কাজলিকে খুঁজে পেলে দেখতে পায় যে সে দেখতে তার মায়ের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ এবং পরে জানতে পারে তার মায়ের দেবরের কাছে শ্লীলতাহানির পর পতিতালয়ে তার জায়গা হয়। পতিতালয় থেকে অমরনাথের তাকে কিনে নেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না এবং সে কাজলিকে বাড়িতে নিয়ে যায় এবং চান্দের প্রতি যে অন্যায় করেছিলেন তার প্রায়শ্চিত্যের জন্য তাকে পরিশুদ্ধ মহিলায় পরিণত করার চেষ্টা করে। অজ্ঞাত কারণে যে অমরনাথ তার মায়ের মৃত্যুর জন্য পরোক্ষভাবে দায়ী, কাজলি তাঁর প্রেমে পড়তে শুরু করে।
অভিনয়ে
সম্পাদনা- শর্মিলা ঠাকুর - চন্দা থাপা/কাজলি চরিত্রে
- সঞ্জীব কুমার - ড. অমরনাথ গিল চরিত্রে
- দীনা পাঠক - গাঙ্গু রানী (পতিতালয়ের ম্যাডাম) চরিত্রে
- ওম শিবপুরী - হরিহর থাপা চরিত্রে
নির্মাণ
সম্পাদনাচলচ্চিত্রটি কমলেশ্বর, ভূষণ বনমালী ও গুলজার আন্ধি (১৯৭৫) ছবির সাথে একযোগে লিখেন এবং এমনকি একসঙ্গে চিত্রায়নও করেন, ছবিতে একজন বৃদ্ধের চরিত্রে অভিনয় করেছেন সঞ্জীব কুমার। যদিও আন্ধি ছবি প্রথম মুক্তি দেওয়া হয়, তবে এটি রাজনৈতিক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে এবং এর কিছু অংশ পুনঃনির্মাণ করতে হয়েছিল, ইতোমধ্যে মৌসম-এর নির্মাণকাজ সম্পন্ন করে মুক্তি দেওয়া হয়।[৪] শর্মিলা ঠাকুরের সাথে "মেরি ইশক কে লাখন ঝাটকে" গানটির শুটিং চলাকালীন নৃত্য পরিচালক সরোজ খান অন্য একটি ছবির স্টুডিওতে ছিলেন, তখন গুলজার তাকে ঠাকুরকে কয়েকটি নাচ শেখানোর অনুরোধ করেছিলেন।[৪]
সঙ্গীত
সম্পাদনাচলচ্চিত্রটির নেপথ্য সঙ্গীত পরিচালনা করেছে সলিল চৌধুরী এবং গানের সুর করেছে মদন মোহন। ১৪ জুলাই ১৯৭৫-এ মারা যাওয়ার পর এই চলচ্চিত্রটি প্রয়াত মদন মোহনকে উৎসর্গ করা হয়। সিনেমার গান রচনা করেছে গুলজার। গুলজার পরিচালিত দুটি সিনেমার মধ্যে মৌসম অন্যতম, এর গানগুলির সুর করেছে মদন মোহন। অন্যটি হলো কোশিশ। গুলজার বলেন যে দিল ধুন্দতা হ্যায় গানটি "... তার অন্যতম স্মরণীয় গান ..." (স্ক্রোল.ইন, ১৮ আগস্ট, ২০১৬) ছবিটির জন্য তিনি গানটি লিখেছিলেন।[৫]
ভূপিন্দর সিং এবং লতা মঙ্গেশকর এর গাওয়া দিল ধুন্দতা হ্যায় গানটি ১৯৭৬ সালের বিনাকা গীতমালার বার্ষিক তালিকায় দ্বাদশ স্থানে অবস্থান করে।
ক্রম | গান | গায়ক | পর্দায় ঠোঁট মেলান |
---|---|---|---|
১ | "দিল ধুন্দতা হ্যায়" (করুণ) | ভূপিন্দর সিং | সূচনা সঙ্গীত |
২ | "ছাদী রে ছাদি" | মোহাম্মদ রফি, লতা মঙ্গেশকর | সঞ্জীব কুমার, শর্মিলা ঠাকুর |
৩ | "দিল ধুন্দতা হ্যায়" | ভূপিন্দর সিং ও লতা মঙ্গেশকর | সঞ্জীব কুমার, শর্মিলা ঠাকুর |
৪ | "মেরে ইশক মেইন" | আশা ভোঁসলে | সঞ্জীব কুমার, শর্মিলা ঠাকুর |
৫ | "রুক রুক সে কদম" | লতা মঙ্গেশকর | শর্মিলা ঠাকুর |
পুরস্কার
সম্পাদনাবিজয়ী
সম্পাদনা- শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয়র পুরস্কার - শর্মিলা ঠাকুর
- দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠ পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (ভারত)[২]- মৌসম
- ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র - মৌসম
- ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ পরিচালক - গুলজার
মনোনয়ন
সম্পাদনা- ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ অভিনেতা - সঞ্জীব কুমার (আন্ধি ছবিতে অভিনয়ের জন্য সঞ্জীব কুমার পুরস্কার জিতেন)
- ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী - শর্মিলা ঠাকুর (তপস্যা ছবিতে অভিনয়ের জন্যে রাখী পুরস্কার জিতেন)
- ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী - দীনা পাঠক (বালিকা বধু ছবিতে অভিনয়ের জন্যে পুরস্কার জিতেন)
- ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ কাহিনি - কমলেশ্বর (অর্জুন পণ্ডিত ছবির জন্য বালচাঁদ মুখপাধ্যায় পুরস্কার জিতেন)
- ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক - মদন মোহন (কাভি কাভি ছবির জন্য খৈয়াম পুরস্কার জিতেন)
- ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ গীতিকার - গুলজার দিল ধুন্দতা হ্যায় গানের জন্য (কাভি কাভি ছবির কাভি কাভি মেরে দিল মেইন গানের জন্য সাহির লুধিয়ানভি পুরস্কার জিতেন)
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ "'Bad' girls in filmi market"। India Times। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০০৩। সংগ্রহের তারিখ ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯।
- ↑ ক খ "23rd National Film Awards" (পিডিএফ)। ২৬ মে ২০১১ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০১১।
- ↑ http://behindwoods.com/tamil-movies-cinema-column/sivaji-ganesan.html
- ↑ ক খ "Mausam (1975)"। The Hindu। ৩০ মে ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জুন ২০১৩।
- ↑ "The debt owed by Gulzar's lyrics to Mirza Ghalib"। Scroll.in। ১৮ আগস্ট ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯।