কোশিশ
কোশিশ (হিন্দি: कोशिश, অনুবাদ: প্রচেষ্টা) হল ১৯৭২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত হিন্দি ভাষার ভারতীয় প্রণয়ধর্মী চলচ্চিত্র। এর প্রধান ভূমিকায় ছিলেন সঞ্জীব কুমার এবং জয়া ভাদুড়ি। ছবিটির নির্দেশক ছিলেন গুলজার।
কোশিশ | |
---|---|
পরিচালক | গুলজার |
প্রযোজক | রোমু এন.সিপ্পি রাজ এন.সিপ্পি |
রচয়িতা | গুলজার |
শ্রেষ্ঠাংশে | সঞ্জীব কুমার জয়া ভাদুড়ি |
সুরকার | মদন মোহন |
চিত্রগ্রাহক | কে. বৈকুন্ঠ |
সম্পাদক | ওয়ামান বি ভোঁসলে গুরুদত্ত শিরালি |
মুক্তি |
|
স্থিতিকাল | ১২৫ মিনিট |
দেশ | ভারত |
ভাষা | হিন্দি |
এই চলচ্চিত্রটির গল্প একটি মূক ও বধির দম্পতিকে ঘিরে এগিয়েছে। এখানে তাদের দ্বন্দ্ব, ব্যথা এবং সংবেদনহীন সমাজে নিজেদের জন্য একটি স্থান তৈরির সংগ্রাম পরিস্ফুট হয়েছে। ১৯৭৭ সালে তামিল ভাষায় এই ছবিটির পুনর্নির্মাণ হয়েছিল, ছবির নাম উয়ারান্ধাভার্গা এবং এর প্রধান ভূমিকায় ছিলেন কমল হাসান ও সুজাতা। ১৯৬১ সালের জাপানি চলচ্চিত্র হ্যাপিনেস অফ আস অ্যালোন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এই চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করা হয়েছিলছিল।[১][২]
ঘটনা
সম্পাদনাহরি (সঞ্জীব কুমার) এবং আরতি (জয়া ভাদুড়ি) দুজনেই মূক ও বধির। তাদের মধ্যে দেখা হয়, দুজনের একই রকম প্রতিবন্ধকতা এবং তাদের প্রতি সমাজের সংবেদনহীনতা তাদের কাছাকাছি নিয়ে আসে। তাদের মধ্যে প্রণয় জন্মায় এবং তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। তাদের প্রথম সন্তানটি নষ্ট হয়ে যায়, আরতির ভাই কানুর লোভের কারণে। কিন্তু তারা কখনই জীবনের প্রতি আশা ছেড়ে দেয় নি এবং পুরো চলচ্চিত্র জুড়ে এক মুহুর্তের জন্যও তারা জীবন শেষ করার বিষয়ে চিন্তা করে নি। তারা জীবনধারন করেছে, জীবনের জন্য লড়াই করেছে এবং যে কোনও সাধারণ ব্যক্তির চেয়ে বৃহত্তর পরিসরে সফল হয়েছে। এর পরে তাদের একটি পুত্র সন্তান হয়। এর মধ্যেই বৃদ্ধ অন্ধ নারায়ণ তাদের সংসারে আশ্রয় নেয়। তাদের সঙ্গী ছিল আশা, আত্মবিশ্বাস এবং সমাজের কিছুটা উদারতা। কীভাবে বিবিধ প্রতিবন্ধকতা জয় করে তারা তাদের সন্তানকে বড় করে তোলে তা নিয়েই ছবির গল্প এগিয়ে গেছে। পরিশেষে ছেলেটি প্রথমে আপত্তি করেও পরে তার বাবা মায়ের মতই একটি মূক ও বধির মেয়েকে বিবাহ করে। কীভাবে জীবনযাপন করা উচিত, চলচ্চিত্রটি তার একটি পাঠ দেয়।
চরিত্র চিত্রণ
সম্পাদনাকোশিশ এর মূল দুটি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সঞ্জীব কুমার,- হরি চরণ মাথুরের ভূমিকায় এবং জয়া ভাদুড়ি,- আরতি মাথুরের ভূমিকায়। ওম শিবপুরি অভিনয় করেছিলেন অন্ধ বৃদ্ধ নারায়ণের ভূমিকায়। এছাড়াও আর যারা ছিলেন, তাঁরা হলেন সীমা দেও,- একজন শিক্ষিকা; আসরানি,- আরতির ভাই কানু এবং দীনা পাঠক,- আরতির মা দুর্গা। এছাড়া দিলীপ কুমার একটি বিশেষ ক্যামিও চরিত্রে (নিজের ভূমিকায়) অভিনয় করেছিলেন। এক নজরে চরিত্র চিত্রণঃ-
- সঞ্জীব কুমার হরি চরণ মাথুর
- জয়া ভাদুড়ি আরতি মাথুর
- ওম শিবপুরি অন্ধ বৃদ্ধ নারায়ণ
- সীমা দেও শিক্ষিকা
- আসরানি আরতির ভাই কানু
- দীনা পাঠক আরতির মা দুর্গা
- দিলীপ কুমার বিশেষ ক্যামিও চরিত্র
সঙ্গীত
সম্পাদনানির্বাক চলচ্চিত্র না হলেও ছবির প্রধান চরিত্র দুটি মূক হওয়ার কারণে এখানে গানের সুযোগ সীমিত। এই চলচ্চিত্রে দুটি মাত্র গান আছে। গানদুটি লিখেছিলেন গুলজার নিজেই। গানে সুরারোপ করেছিলেন মদন মোহন। নিচে একনজরে গানগুলি এবং সেগুলির গায়ক / গায়িকা।
নং. | শিরোনাম | গায়ক | দৈর্ঘ্য |
---|---|---|---|
১. | "শো জা বাবা মেরা" | মোহাম্মদ রফি | |
২. | "হামসে হ্যায় ওয়তন হামারা" | সুষমা শ্রেষ্ঠ |
পুরস্কার এবং মনোনয়ন
সম্পাদনাএই চলচ্চিত্রটি ১৯৭৩ সালে ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিভাগে দুটি রজত কমল পুরস্কার অর্জন করেছিল, সেরা চিত্রনাট্য এবং সেরা অভিনেতা বিভাগে পুরস্কার লাভ করেছিলেন যথাক্রমে গুলজার এবং সঞ্জীব কুমার। এছাড়াও বাংলা চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি থেকে ১৯৭৪ সালে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা (হিন্দি) পুরস্কারটি পান কোশিশের মুখ্য অভিনেতা সঞ্জীব কুমার।[৩]
বছর | পুরস্কার | বিষয়শ্রেণী | প্রাপক | ফলাফল |
---|---|---|---|---|
১৯৭৩ | জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (ভারত) | সেরা চিত্রনাট্য | গুলজার | বিজয়ী |
১৯৭৩ | জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার | শ্রেষ্ঠ অভিনেতা | সঞ্জীব কুমার | বিজয়ী |
১৯৭৪ | ফিল্মফেয়ার পুরস্কার | শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র | কোশিশ | মনোনীত |
১৯৭৪ | ফিল্মফেয়ার পুরস্কার | শ্রেষ্ঠ পরিচালক | গুলজার | মনোনীত |
১৯৭৪ | ফিল্মফেয়ার পুরস্কার | শ্রেষ্ঠ অভিনেতা | সঞ্জীব কুমার | মনোনীত |
১৯৭৪ | ফিল্মফেয়ার পুরস্কার | শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী | জয়া ভাদুড়ি | মনোনীত |
১৯৭৪ | ফিল্মফেয়ার পুরস্কার | শ্রেষ্ঠ কাহিনি | গুলজার | মনোনীত |
১৯৭৪ | বাংলা চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি পুরস্কার | শ্রেষ্ঠ অভিনেতা (হিন্দি) | সঞ্জীব কুমার | বিজয়ী |
তথ্যসূত্র
সম্পাদনাবহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে কোশিশ (ইংরেজি)