মোহসিন খান

পাকিস্তানী ক্রিকেটার

মোহসিন হাসান খান (উর্দু: محسن خان‎‎; জন্ম: ১৫ মার্চ, ১৯৫৫) সিন্ধু প্রদেশের করাচি এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক পাকিস্তানি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। পাকিস্তান ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৭৭ থেকে ১৯৭৯ সময়কালে পাকিস্তানের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

মোহসিন খান
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামমোহসিন হাসান খান
জন্ম (1955-03-15) ১৫ মার্চ ১৯৫৫ (বয়স ৬৮)
করাচি, সিন্ধু, পাকিস্তান
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম পেস
ভূমিকাব্যাটসম্যান
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৭৯)
১৮ জানুয়ারি ১৯৮০ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট২০ নভেম্বর ১৯৮৯ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ১৭)
১৬ মার্চ ১৯৭৭ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
শেষ ওডিআই২ ডিসেম্বর ১৯৮৬ বনাম শ্রীলঙ্কা
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৭০পাকিস্তান রেলওয়েজ বি
১৯৭১পাকিস্তান রেলওয়েজ এ
১৯৭২/৭৩করাচি ব্লুজ
১৯৭৩/৭৪করাচি হোয়াইটস
১৯৭৪ - ১৯৭৮সিন্ধু
১৯৭৫ - ১৯৮৬হাবিব ব্যাংক লিমিটেড
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ৪৮ ৭৫ ১৯২ ১১৭
রানের সংখ্যা ২৭০৯ ১৮৭৭ ১১২৭৪ ৩০৭৭
ব্যাটিং গড় ৩৭.১০ ২৬.৮১ ৩৮.৮৭ ২৯.৫৮
১০০/৫০ ৭/১৪ ৬/১৬ ৩১/৪০ ১৬/৩৬
সর্বোচ্চ রান ২০০ ১২৮* ২৪৬ ১১৯
বল করেছে ৮৬ ১২ ১১২৮ ১১৬
উইকেট ১৪
বোলিং গড় ৫.০০ ৩৯.১৪ ২৬.৫০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট - -
সেরা বোলিং ১/২ ২/১৩ ১/০
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৩৪/– ১৩/– ১৪১/– ৩২/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর পাকিস্তানি ক্রিকেটে করাচি, সিন্ধু, হাবিব ব্যাংক লিমিটেড দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, দলের প্রয়োজনে ডানহাতে মিডিয়াম পেস বোলিং করতেন মোহসিন খান

শৈশবকালসম্পাদনা

পাকিস্তান নৌবাহিনীর কর্মকর্তা পিতা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে শিক্ষিত মাতা শিক্ষিকা ও উপাধ্যক্ষের সন্তান তিনি। শৈশবকাল থেকেই হরেকরকম ক্রীড়ায় দক্ষ ছিলেন। টেনিস, সাঁতার ও ক্রিকেট খেলায় অংশ নিতেন। এমনকি, এক পর্যায়ে পাকিস্তানের জুনিয়র ব্যাডমিন্টন শিরোপাধারী হন।[১]

১৯৭০-৭১ মৌসুম থেকে ১৯৮৫-৮৬ মৌসুম পর্যন্ত মোহসিন খানের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। মূলতঃ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। পাশাপাশি কার্যকরী অল-রাউন্ডার হিসেবেও তিনি পরিগণিত হতেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটসম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ৪৮ টেস্ট ও ৭৫টি ওডিআইয়ে অংশগ্রহণ করেছেন মোহসিন খান। ১৮ জানুয়ারি, ১৯৭৮ তারিখে করাচিতে সফরকারী ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ২০ নভেম্বর, ১৯৮৬ তারিখে একই মাঠে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

১৯৮২-৮৩ মৌসুমে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নামেন। সফরকারী ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৩৫/১ এর মধ্যে তিনি একাই অপরাজিত ১০১ রানের ইনিংস খেলেন। এরফলে, টেস্টে ক্রিকেটে দলীয় সর্বনিম্ন ইনিংসে শতরান করার গৌরবের অধিকারী হন।[২]

দক্ষিণ এশিয়ার স্বল্পসংখ্যক ক্রিকেটারদের অন্যতম হিসেবে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মাটিতে প্রভূতঃ সফলতার স্বাক্ষর রাখেন। ১৯৮৩-৮৪ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ায় ধারাবাহিকভাবে দুই সেঞ্চুরি করেন।[৩] ১৯৮২ সালের শুরুতে লর্ডসে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিশতক করেন। লর্ডসে এটিই যে-কোন পাকিস্তানির প্রথম দ্বি-শতরানের ইনিংস ছিল।[৪]

অবসরসম্পাদনা

২ মার্চ, ২০১০ তারিখে ইকবাল কাসিমের পরিবর্তে পাকিস্তান ক্রিকেট দলের প্রধান নির্বাচক হিসেবে স্থলাভিষিক্ত হন। ২০০৯-১০ মৌসুমে ১২ মাসের জন্য পাকিস্তানের চতুর্থ প্রধান দল নির্বাচক হন।[৫] ৩ অক্টোবর, ২০১১ তারিখে পাকিস্তান দলের অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে নিযুক্তি পান।[৬] ডেভ হোয়াটমোরকে ২০১২ সালের শুরুতে স্থায়ীভাবে কোচ হিসেবে নিযুক্ত করলে তিনি অব্যহতি পান।

ব্যক্তিগত জীবনসম্পাদনা

বলিউডের চলচ্চিত্র তারকা রীনা রায়ের সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন ও ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে অভিনয় করেন। ১৯৮৯ সালে জে পি দত্তের বাটোয়ারায় নায়কের চরিত্রে ছিলেন। ১৯৯১ সালে বলিউডে সর্বাধিক সফল হন। আদিত্য পাঞ্চালী ও বর্ষা আসগাওকরের সাথে মহেশ ভাটের সাথী চলচ্চিত্রে এ সফলতা পান। পরবর্তীতে রীনা রায়ের সাথে বিবাহ-বিচ্ছেদ ঘটে ও পুনরায় বিয়ে করে করাচিতে বসবাস করছেন। রীনা রায়ের সংসারে জান্নাত ও পরবর্তীতে নাম পরিবর্তিত হয়ে সনম নামে এক কন্যা মায়ের সাথে ভারতে বসবাস করছে। এছাড়াও, নব্বুইয়ের দশকে পাকিস্তানে বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি।

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

আরও দেখুনসম্পাদনা

বহিঃসংযোগসম্পাদনা