মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট
মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট (ইংরেজি: Mohun Bagan Super Giant) (পূর্বতন নাম: এটিকে মোহনবাগান ফুটবল ক্লাব) হল কলকাতা ভিত্তিক ভারতীয় পেশাদার ক্লাব মোহনবাগানের একটি ফুটবল শাখা। এই ক্লাবটি বর্তমানে ভারতের শীর্ষ স্তরের ফুটবল টুর্নামেন্ট ইন্ডিয়ান সুপার লিগে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। ৮৫,০০০ ধারণ ক্ষমতা বিশিষ্ট সল্ট লেক স্টেডিয়ামে দ্য মেরিনার্স নামে পরিচিত এই দলটি তাদের সকল হোম ম্যাচ আয়োজন করে থাকে, এছাড়াও মাঝেমধ্যে মোহনবাগান গ্রাউন্ডেও দলটি তাদের হোম ম্যাচ আয়োজন করে। বর্তমানে এই ক্লাবের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করছেন স্পেনীয় সাবেক ফুটবল খেলোয়াড় হোসে ফ্রান্সিসকো মোলিনা এবং সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন সঞ্জীব গোয়েঙ্কা। ভারতীয় জাতীয় দলের রক্ষণভাগের খেলোয়াড় সুভাশিস বোস এই ক্লাবের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন।
পূর্ণ নাম | মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট | ||
---|---|---|---|
ডাকনাম | দ্য মেরিনার্স | ||
প্রতিষ্ঠিত | ১৫ আগস্ট ১৮৮৯ | ||
মাঠ | সল্ট লেক স্টেডিয়াম, মোহনবাগান গ্রাউন্ড | ||
ধারণক্ষমতা | ৮৫,০০০[১] ২০,০০০ | ||
মালিক | মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট প্রাইভেট লিমিটেড
তালিকা | ||
সভাপতি | সঞ্জীব গোয়েঙ্কা | ||
প্রধান কোচ | হোসে ফ্রান্সিসকো মোলিনা | ||
লিগ | ইন্ডিয়ান সুপার লিগ | ||
২০২২–২৩ | আইএসএল:৩য় প্লে-অফ: চ্যাম্পিয়ন | ||
| |||
মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের মালিকানা আরপিএসজি মোহনবাগান প্রাইভেট লিমিটেডের অধীনে রয়েছে, যার ৮০% অংশীদার হলো আরপি-সঞ্জীব গোয়েঙ্কা গ্রুপ, এবং উৎসব পারেখ; অন্যদিকে অবশিষ্ট ২০% মালিকানায় রয়েছে মোহনবাগান অ্যাথলেটিক ক্লাব।[২][৩]
ইতিহাস
সম্পাদনাপটভূমি
সম্পাদনামোহনবাগান অ্যাথলেটিক ক্লাবটি পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় অবস্থিত একটি পেশাদার ফুটবল ক্লাব। ক্লাবটি ১৮৮৯ সালে মোহনবাগান স্পোর্টিং ক্লাব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং এটি ভারত ও এশিয়ার প্রাচীনতম ক্লাবগুলোর মধ্যে একটি।[৪] ১৯১১ সালে আইএফএ শিল্ডের ফাইনালে ইস্ট ইয়র্কশায়ার রেজিমেন্টের বিপক্ষে জয় ক্লাবটি সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য মুহূর্ত। সর্ব ভারতীয় পক্ষ থেকে সর্বপ্রথম মোহনবাগান ব্রিটিশ প্রতিযোগিতায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে চ্যাম্পিয়নশিপ জয়লাভ করেছে এবং এই জয় ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে ভূমিকা রেখেছিল।[৫] মোহনবাগান ১৯৯৬ সালে ভারতের প্রথম ঘরোয়া লীগ জাতীয় ফুটবল লিগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।[৬] মোহনবাগান পাঁচটি শিরোপা জয় করে, যার মধ্যে তিনটি এনএফএল এবং দুটি আই-লিগ শিরোপা রয়েছে।[৪] ক্লাবটি ভারতের প্রাক্তন ঘরোয়া কাপ প্রতিযোগিতা ফেডারেশন কাপের সবচেয়ে সফল ক্লাব, যারা সর্বমোট ১৪টি শিরোপা জয়লাভ করেছে। এছাড়াও ক্লাবটি স্থানীয় ৩০ বার কলকাতা ফুটবল লিগের শিরোপা জয়লাভ করেছে।[৭] ২০২২-২৩ সালে দলটি প্রথম বারের মতো আই এস এল প্লে অফ বিজয়ী হয়।
গঠন
সম্পাদনা২০১৮ সালে, আইএসএল-এর সংগঠক এফএসডিএল প্রতিযোগিতায় কলকাতার দুই বড় ক্লাব ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগানকে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা করেছিল। পরবর্তীকালে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে ক্লাবটি কলকাতা ভিত্তিক ক্লাব এটিকের সাথে একীভূত হবে।[৮] তবে, আই লিগের ক্লাবগুলো যৌথভাবে এআইএফএফ-এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় উক্ত পরিকল্পনাটি স্থগিত করা হয়েছিল। ২০১৯ সালে, ভারতীয় ফুটবলের পথনির্দেশিকা প্রকাশের পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে আইএসএল শীর্ষ স্তরের লীগ হবে এবং উক্ত একীভূতকরণের পরিকল্পনাটি পুনর্নির্মাণ ও চূড়ান্ত করা হয়। ২০২০ সালের ১৬ই জানুয়ারি তারিখে আইএসএল পক্ষের এটিকে মালিক সংস্থা আরপিএসজি গ্রুপের মোহনবাগানের ৮০% অংশীদারিত্ব ক্রয় করে এবং অবশিষ্ট ২০% অংশীদারিত্ব মোহনবাগান ফুটবল ক্লাব প্রাইভেট লিমিটেডের কাছে রয়েছে।[৯][১০] অতঃপর এক ঘোষণায় জানানো হয়েছিল যে এটিকে মোহনবাগান ২০২০–২১ মৌসুম থেকে আইএসএলে প্রতিযোগিতা করবে এবং কলকাতার ক্লাব হিসেবে ইন্ডিয়ান সুপার লিগে প্রতিযোগিতা করবে।[১১] ২০২০ সালের ১০ই জুলাই তারিখে দলের নাম এবং লোগো প্রকাশ করা হয়েছে।[১১][১২][১৩]
স্টেডিয়াম
সম্পাদনাসল্ট লেক স্টেডিয়াম
সম্পাদনাপশ্চিমবঙ্গের কলকাতা শহরের বিধাননগরে অবস্থিত সল্ট লেক স্টেডিয়ামে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট তাদের হোম ম্যাচ আয়োজন করে।[১৪] বহুমুখী স্টেডিয়াম হিসেবে স্টেডিয়ামটি মূলত ফুটবল ম্যাচ আয়োজনের জন্য ব্যবহৃত হয়। স্টেডিয়ামটি মোহনবাগান দলই তাদের নিজস্ব স্টেডিয়াম হিসেবে ব্যবহার করতো।[১৫]
মোহনবাগান গ্রাউন্ড
সম্পাদনামোহনবাগান গ্রাউন্ড মোহনবাগানের মালিকানাধীন, যারা বর্তমানে স্টেডিয়ামটিকে তাদের প্রশিক্ষণ মাঠ হিসেবে ব্যবহার করে। মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট ব্যবস্থাপনা অদূর ভবিষ্যতে স্টেডিয়ামটি সংস্কারের পরিকল্পনা করছে, যেন তারা ইন্ডিয়ান সুপার লিগে তাদের হোম ম্যাচগুলো এই স্টেডিয়ামটি আয়োজন করতে পারে। এই স্টেডিয়ামটি মূলত কলকাতা ফুটবল লীগের খেলাগুলোর জন্য ব্যবহৃত হয়। স্টেডিয়ামটির তিন দিকে গ্যালারি এবং চতুর্থ দিকে একটি র্যামপার্ট রয়েছে। স্টেডিয়ামের উত্তর দিকে ক্লাবের সদস্যদের জন্য বিদ্যমান গ্যালারিতে বাকেট সিট সংযোজন করা হয়েছে।[১৬]
প্রতিদ্বন্দ্বিতা
সম্পাদনাকলকাতা শহরের প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাব ইস্টবেঙ্গলের সাথে মোহনবাগানের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে, যা কলকাতা ডার্বি নামে পরিচিত।
কর্মকর্তা
সম্পাদনাবর্তমান প্রযুক্তিগত কর্মকর্তা
অবস্থান | কর্মকর্তা |
---|---|
প্রধান প্রশিক্ষক | আন্তোনিও লোপেজ হাবাস |
সহকারী প্রশিক্ষক | বাস্তব রায় |
গোলরক্ষক প্রশিক্ষক | আনহেল পিন্দাদো[১৭] |
ফিটনেস প্রশিক্ষক | আলভারো রস বেরনাল[১৮] |
প্রধান ফিজিওথেরাপিস্ট | অভিনন্দন চ্যাটার্জী |
টেকনিক্যাল প্রশিক্ষক | আন্টোনিও লোপেজ হাবাস |
ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট হেড | সঞ্জয় সেন |
বোর্ডের সদস্য
সম্পাদনাঅবস্থান | সদস্য |
---|---|
সভাপতি | সঞ্জীব গোয়েঙ্কা[১৯] |
পরিচালক | উৎসব পারেখ[১৯] |
গৌতম রায়[১৯] | |
সঞ্জীব মেহরা[১৯] | |
সৌমিক বসু [১৯] | |
দেবাশীষ দত্ত[১৯] | |
CEO | রঘু আইয়ার |
খেলোয়াড়
বর্তমান দল
সম্পাদনা- ২৩ জুন ২০২৩ পর্যন্ত হালনাগাদকৃত।
টীকা: পতাকা জাতীয় দল নির্দেশ করে যা ফিফার যোগ্যতার নিয়মের অধীনে নির্ধারিত হয়েছে। খেলোয়াড়দের একাধিক জাতীয়তা থাকতে পারে যা ফিফা ভুক্ত নয়।
|
|
অন্যান্য চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড়
সম্পাদনা- ৬ জুন ২০২৩ পর্যন্ত হালনাগাদকৃত।
নোট: পতাকা জাতীয় দল নির্দেশ করে যা ফিফার যোগ্যতার নিয়মের অধীনে নির্ধারিত হয়েছে। খেলোয়াড়দের একাধিক জাতীয়তা থাকতে পারে যা ফিফা ভুক্ত নয়।
অন্য দলে ধারেসম্পাদনা
নোট: পতাকা জাতীয় দল নির্দেশ করে যা ফিফার যোগ্যতার নিয়মের অধীনে নির্ধারিত হয়েছে। খেলোয়াড়দের একাধিক জাতীয়তা থাকতে পারে যা ফিফা ভুক্ত নয়। তথ্যসূত্রসম্পাদনা
বহিঃসংযোগসম্পাদনা
|