বিধাননগর

পশ্চিমবঙ্গের একটি শহর

বিধাননগর পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার পূর্বপ্রান্তে অবস্থিত একটি পরিকল্পিত উপশহর[২] এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার অন্তর্গত।

বিধাননগর
কলকাতার পরিকল্পিত উপশহর
বিধাননগরের দিগন্তরেখা
ওমেগা এবং ইনফিনিটি বেঞ্চমার্ক ভবন
দেশভারত
রাজ্যপশ্চিমবঙ্গ
জেলাউত্তর চব্বিশ পরগনা
অঞ্চলকলকাতা মহানগর অঞ্চল
প্রতিষ্ঠাতাবিধানচন্দ্র রায়
নামকরণের কারণবিধানচন্দ্র রায়
সরকার
 • ধরনপৌরসংস্থা
 • শাসকবিধাননগর পৌরসংস্থা
 • নগরপ্রধনকৃষ্ণা চক্রবর্তী
 • নগর উপপ্রধানঅনিতা মণ্ডল
 • সভাপতিসব্যসাচী দত্ত
 • নগরপালগৌরব শর্মা
উচ্চতা১১ মিটার (৩৬ ফুট)
জনসংখ্যা (2011)[১]
 • মোট৬,৩২,১০৭
ওয়েবসাইটhttp://bmcwbgov.in/

বিধাননগর দুটি অংশ নিয়ে গঠিত: সল্ট লেক ও রাজারহাট গোপালপুর। কলকাতা শহরের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপ কমাতে ১৯৫৮ থেকে ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে পরিকল্পিতভাবে সল্ট লেক গড়ে তোলা হয়। ১৯৭২ সালে বিধানচন্দ্র রায়ের নামানুসারে শহরটির নাম হয় বিধাননগর। ২০১৫ সালে রাজারহাট-গোপালপুর বিধাননগর পৌরসংস্থার অন্তর্ভুক্ত হয়।[১]

ভূগোলসম্পাদনা

 
অনেক জলাভূমি এবং হ্রদগুলির একটি উদাহরণ যা বিধাননগরকে ঘিরে রয়েছে।
 
সল্ট লেকের মানচিত্র।

বিধাননগর ২২.৫৮ ডিগ্রি উত্তর থেকে ৮৮.৪২ ডিগ্রি পূর্বে অবস্থিত। [৩] সমুদ্র সমতল হতে এর গড় উচ্চতা হল ১১ মিটার (৪৯ ফুট)।

সল্ট লেকসম্পাদনা

সল্ট লেক ৫টি সেক্টরে বিভক্ত হলেও সেক্টর ১, ২ , ৩ এবং ৫ নম্বর সেক্টরই মূলত বসবাসের জায়গা। উল্টোডাঙা - বাঙুর সংলগ্ন পশ্চিমাংশ হচ্ছে সেক্টর ১। সেন্ট্রাল পার্ক - কেষ্টপুর সংলগ্ন পূর্বাংশ হচ্ছে সেক্টর ২। দক্ষিণ অংশ সেক্টর ৩। অতি পূর্বাংশ হচ্ছে সেক্টর ৫।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

সেক্টর ৫ হল কলকাতার দুটি তথ্য প্রযুক্তি কেন্দ্রের মধ্যে একটি। টিসিএস, উইপ্রো, কগনিজ্যান্ট ইত্যাদি সফটওয়্যার কোম্পানির কার্যালয় এখানে অবস্থিত। ২০১৯ সালের এপ্রিলে সেক্টর ৫-এ ১,৫০০ টি কোম্পানির অফিস ছিল।[৪]

রাজারহাটসম্পাদনা

 
চিনার পার্ক চৌমাথা, রাজারহাট

রাজারহাট গোপালপুর হল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বিধাননগর পৌরসংস্থার একটি অঞ্চল। নিউ টাউনের নিকটে অবস্থিত হওয়ায় রাজারহাট-গোপালপুরে আবাসন উন্নয়নে জোয়ার এসেছিল।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

জনসংখ্যাসম্পাদনা

২০১১সম্পাদনা

বিধাননগর পৌরসভাসম্পাদনা

২০১১ খ্রিস্টাব্দের জনগণনা অনুযায়ী[৫] বিধাননগর পৌরসভার জনসংখ্যা ২,১৫,৫১৪ জন,[৬] যার মধ্যে ১,০৯,০১৪ জন পুরুষ এবং ১,০৬,৫০০ জন নারী৷ প্রতি হাজার পুরুষে নারী সংখ্যা ৯৭৭ জন৷ পৌরসভায় ৬ বৎসরের অনূর্ধ্ব শিশু ৬.৬৮ শতাংশ তথা ১৪৩৯৯ জন৷ শিশুদের মধ্যে লিঙ্গানুপাত প্রতি হাজার পুরুষে নারী সংখ্যা ৯৯০ জন৷

২০১১ খ্রিস্টাব্দে বিধাননগর পৌরসভার সাক্ষরতার হার ৮৯.১৪ শতাংশ, যার মধ্যে পুরুষ সাক্ষরতার হার ৯১.৭২ শতাংশ ও নারী সাক্ষরতার হার ৮৬.৫০ শতাংশ৷ বিধাননগর পৌরসভার নথিভুক্ত মোট বসতবাড়ির সংখ্যা ৪৮,৯১৯টি৷ [৭]

বিধাননগর পৌরসভার মোট জনসংখ্যার ২,০৫,৩৬৩ জন (৯৫.২৯ শতাংশ) হিন্দু ধর্মাবলম্বী; ৫,৪৭৫ জন (২.৫৪ শতাংশ) ইসলাম ধর্মাবলম্বী; ৯৫৯ জন (০.৪৪ শতাংশ) খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী; ৪৫৬ জন (০.২১ শতাংশ) জৈন ধর্মাবলম্বী; ৩০১ জন (০.১৪ শতাংশ) শিখ ধর্মাবলম্বী; ২৩২ জন (০.১১ শতাংশ) বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী; ৬৩ জন (০.০৩ শতাংশ) অন্যান্য ধর্মাবলম্বী এবং ২,৬৬৫ জন (১.২৪ শতাংশ) এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি৷

বিধাননগর পৌরসংস্থাসম্পাদনা

২০১১ খ্রিস্টাব্দের জনগণনা অনুযায়ী বিধাননগর পৌরসংস্থার জনসংখ্যা ৬৩২,১০৭ জন। ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২০ নং ওয়ার্ডে সর্বোচ্চ জনসংখ্যা (২০,৯৮১ জন), যেখানে ২৩ নং ওয়ার্ডে সর্বনিম্ন জনসংখ্যা (১১,৬৩৯ জন)। বিধাননগর পৌরসংস্থার নথিভুক্ত মোট বসতবাড়ির সংখ্যা ১৫৩,৬৬১টি।[৮]

২০০১সম্পাদনা

২০০১ খ্রিস্টাব্দের জনগণনা অনুসারে বিধাননগর শহরের জনসংখ্যা হল ১৬৭,৮৪৮ জন।[৯] এর মধ্যে পুরুষ ৫১ শতাংশ, এবং নারী ৪৯ শতাংশ।

এখানে সাক্ষরতার হার ৭৮ শতাংশ। পুরুষদের মধ্যে সাক্ষরতার হার ৮১ শতাংশ, এবং নারীদের মধ্যে এই হার ৭৪ শতাংশ। সারা ভারতের সাক্ষরতার হার ৫৯.৫ শতাংশ, তার চেয়েও বিধাননগরের সাক্ষরতার হার বেশি।

এই শহরের জনসংখ্যার ৯ শতাংশ হল ৬ বছর বা তার কম বয়সী।

প্রশাসনসম্পাদনা

 
বিধাননগর পৌরসংস্থা ভবন

বিধাননগর পৌরসংস্থা হল বিধাননগর ও রাজারহাট অঞ্চলের পরিকাঠামো ও প্রশাসনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত পৌরসংস্থা। ১৮ জুনে ২০১৫-এ রাজারহাট-গোপালপুর পৌরসভা, বিধাননগর পৌরসভা ও মহিষবাথান-২ গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে পৌরসংস্থাটি গঠিত হয়।[১০] পৌরসংস্থাটি বিধাননগর মহকুমাবিধাননগর সিটি পুলিশের এক্তিয়ারের অন্তর্ভুক্ত। পৌরসংস্থাটির মোট ৪১টি ওয়ার্ড আছে।

পরিবহনসম্পাদনা

 
শিয়ালদহগামী মেট্রো ট্রেন সেন্ট্রাল পার্ক মেট্রো স্টেশনে প্রবেশ করছে

বিধাননগরের করুণাময়ীতে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার বাস ডিপো অবস্থিত। এখান থেকে দূরপাল্লার বাসে দক্ষিণ এবং উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় যাওয়া যায়। এছাড়া কলকাতা মেট্রো লাইন ২ বিধাননগরের সল্টলেক সেক্টর ৫ থেকে সল্টলেক স্টেডিয়াম পর্যন্ত বিস্তৃত।

ইস্টার্ন মেট্রোপলিটান বাইপাস, সল্টলেক বাইপাস (বিশ্ব বাংলা সরণির অংশ) এবং ভিআইপি রোড (কাজী নজরুল ইসলাম সরণি) হল বিধাননগরের প্রধান সড়কসমূহ। ২০১৫ সালে বিমানবন্দর থেকে সল্টলেক সেক্টর ৫ পর্যন্ত মেজর আর্টারিয়াল রোড (বিশ্ব বাংলা সরণির অংশ) সহ ১০.৫ কিলোমিটার ওয়াই-ফাই এলাকা স্থাপন করা হয়েছে, যা ভারতের প্রথম ওয়াই-ফাই সড়ক সংযোগ স্থাপন। এটি ইতিমধ্যে সবুজ করিডোর হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে।[১১]

আরও দেখুনসম্পাদনা

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. "About BMC"বিধাননগর পৌরসংস্থা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ 
  2. "Satellite Towns List" 
  3. Falling Rain Genomics, Inc - Bidhannagar
  4. চক্রবর্তী, সুমন (২০১৯-০৪-০৪)। "Soon, smart composting units at Sector V offices" (ইংরেজি ভাষায়)। 
  5. http://censusindia.gov.in/2011-Common/CensusData2011.html
  6. https://www.census2011.co.in/census/city/234-bidhan-nagar.html
  7. https://www.census2011.co.in/data/town/801716-bidhannagar-west-bengal.html
  8. "About BMC"বিধাননগর পৌরসংস্থা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ 
  9. "ভারতের ২০০১ সালের আদমশুমারি" (ইংরেজি ভাষায়)। Archived from the original on ১৬ জুন ২০০৪। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ২৫, ২০০৬ 
  10. "কর্পোরেশন গঠনের প্রজ্ঞাপন" (পিডিএফ)। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা। ২৬ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ০৯-০৮-২০১৬  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  11. "Archived copy"। ২০১৬-০১-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৩-১৫ 

বহিঃসংযোগসম্পাদনা