ইস্টার্ন মেট্রোপলিটান বাইপাস
ইস্টার্ন মেট্রোপলিটান বাইপাস (সংক্ষেপে ইএম বাইপাস) হল পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা মহানগরীর উত্তর ও দক্ষিণাংশকে সংযোগকারী একটি প্রধান রাস্তা।[১] উত্তর কলকাতার উল্টোডাঙা থেকে দক্ষিণ কলকাতার কামালগাজি পর্যন্ত মহানগরীর পূর্বপ্রান্ত বরাবর প্রসারিত ২১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই রাস্তাটি ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাস নামে পরিচিত। পরবর্তীকালে কলকাতার সাথে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য কলকাতা এবং দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার সংযোগকারী হিসাবে কামালগাজী উড়ালপুল তৈরি করা হয়। কামালগাজি উড়ালপুলের পর থেকে বারুইপুর পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই রাস্তাটি সাদার্ন বাইপাস নামে পরিচিত৷ ইস্টার্ন মেট্রোপলিটান বাইপাস কলকাতার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ও শহরের অর্থনৈতিক জীবনরেখা বলে বিবেচিত হয়। বর্তমানে হুগলি নদীর তীরে অবস্থিত ফলতার ফলতা রফতানি প্রক্রিয়াকরণ ক্ষেত্র বা ফলতা এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন (এফইপিজেড) পর্যন্ত রাস্তাটিকে প্রসারিত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
সংযোগকারী রাস্তা
সম্পাদনাবেশ কয়েকটি ‘কানেকটর’ বা সংযোগকারী রাস্তা মহানগরীর কেন্দ্রীয় অঞ্চলগুলির সঙ্গে বাইপাসের যোগাযোগ রক্ষা করছে। এই কানেকটরগুলির মধ্যে পার্ক সার্কাস-বাইপাস সংযোগকারী জে বি এস হ্যালডেন অ্যাভেনিউ এবং গড়িয়াহাট-বাইপাস সংযোগকারী রাসবিহারী কানেকটর বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। অন্যান্য কানেকটরগুলি হল : কামালগাজি-সোনারপুর কানেকটর, ঢালাই ব্রিজ-গড়িয়া স্টেশন কানেকটর, গড়িয়া-বৈষ্ণবঘাটা পাটুলি টাউনশিপ কানেকটর, নরেন্দ্রপুর কালীতলা-রাজপুর কানেকটর, সন্তোষপুর-যাদবপুর সংযোগকারী সন্তোষপুর অ্যাভিনিউ, ঢাকুরিয়া, সাউথ সিটি মল, লেক গার্ডেন্স সংযোগকারী প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড এবং মানিকতলা বাজার সংযোগকারী মানিকতলা কানেকটর।
জে বি এস হ্যালডেন অ্যাভেনিউ এবং ইএম বাইপাসের সংযোগস্থলে অবস্থিত কলকাতার অন্যতম প্রধান জাদুঘর সায়েন্স সিটি। রাসবিহারী কানেকটরটি কলকাতার অন্যতম প্রধান বেসরকারি চিকিৎসালয় রুবি জেনারেল হসপিটালের কাছে বাইপাসের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। এছাড়াও বাইপাসের দুইপাশে গড়ে উঠেছে কলকাতার বহু দ্রষ্টব্যস্থল ও প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও ইএম বাইপাস কলকাতার তথ্য প্রযুক্তি কেন্দ্র বিধাননগর এবং নিউ টাউনের প্রবেশপথ, এই কারণে বাইপাসকে কলকাতার অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবনের একটি প্রতীক হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে।
ইস্টার্ন মেট্রোপলিটান বাইপাসের ধারে অবস্থিত কলকাতার গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, ভবন ও দ্রষ্টব্যস্থলগুলি হল:
- হায়াট রিজেন্সি ও আইটিসি সোনার বাংলার মতো বিলাসবহুল পাঁচতারা হোটেল।
- ওয়েস্ট বেঙ্গল ন্যাশানাল ইউনিভার্সিটি অফ জুরিডিক্যাল সায়েন্সেস, গভর্নমেন্ট কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড লেদার টেকনোলজি ও সত্যজিৎ রায় চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন প্রতিষ্ঠান (সত্যজিৎ রে ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট)-এর মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
- যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গণ, স্বভূমি ও সায়েন্স সিটির মতো ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক ও বিজ্ঞান কেন্দ্র।
- বর্তমান পত্রিকার প্রধান কার্যালয় বর্তমানে বাইপাসের ধারে সুরম্য বর্তমান ভবনে স্থানান্তরিত হয়েছে।
- কলকাতা ইন্টারন্যাশানাল স্কুল।
এগুলি ছাড়াও সিলভার স্প্রিং, অভিস্তিকা, গ্রিনউড নুক, কলকাতা গ্রিনস, রাজাওয়াদা, উদয়ন ও হাইল্যান্ড পার্কের মতো বেশ কয়েকটি বিলাসবহুল আবাসন চত্বর ই এম বাইপাসের ধারে গড়ে উঠেছে।
বর্তমানে বাইপাসের চিংড়িঘাটা থেকে কামালগাজি পর্যন্ত অংশকে বিশ্ব বাংলা সরণির অন্তর্গত করা হয়েছে।
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Chaudhuri, Sumita (২০১৫)। Facets of Urbanisation: Views from Anthropology। পৃষ্ঠা 141। আইএসবিএন 9781443878869।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- হায়াট রিজেন্সি, কলকাতা ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৫ জুলাই ২০০৮ তারিখে
- গভর্নমেন্ট কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড লেদার টেকনোলজি
- আইটিসি সোনার বাংলা, কলকাতা
- ওয়েস্ট বেঙ্গল ন্যাশানাল ইউনিভার্সিটি অফ জুরিডিক্যাল সায়েন্সেস
- সত্যজিৎ রায় চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন প্রতিষ্ঠান
- বর্তমান পত্রিকার ওয়েবসাইট ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩ জুন ২০০৮ তারিখে
- রুবি জেনারেল হসপিটাল
- পিয়ারলেস হসপিটাল
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আন্তর্জাতিক হৃদবিজ্ঞান প্রতিষ্ঠান
- অ্যাপোলো গ্লিনিগল হসপিটাল
- সিলভার স্প্রিং কমপ্লেক্স ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ তারিখে
- হাইল্যান্ড পার্ক
- বাইপাসের বাণিজ্যিক উন্নয়ন বিষয়ক একটি নিবন্ধ