মোনেম মুন্না
মোহাম্মদ মোনেম মুন্না (৯ জুন ১৯৬৬ – ১২ ফেব্রুয়ারি ২০০৫; মোনেম মুন্না নামে সুপরিচিত)[১][২] একজন বাংলাদেশী পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড় ছিলেন।[৩] ভক্তদের কাছে কিংব্যাক ডাকনামে পরিচিত মুন্না তার ১৫ বছরের খেলোয়াড়ি জীবনের অধিকাংশ সময় ঢাকা আবাহনীর হয়ে একজন রক্ষণভাগের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেছিলেন। তিনি মূলত একজন কেন্দ্রীয় রক্ষণভাগের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেছিলেন।
ব্যক্তিগত তথ্য | |||
---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | মোহাম্মদ মোনেম মুন্না | ||
জন্ম | ৯ জুন ১৯৬৬ | ||
জন্ম স্থান | নারায়ণগঞ্জ, বাংলাদেশ | ||
মৃত্যু | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০০৫ | (বয়স ৩৮)||
মৃত্যুর স্থান | নারায়ণগঞ্জ, বাংলাদেশ | ||
মাঠে অবস্থান | রক্ষণভাগের খেলোয়াড় | ||
যুব পর্যায় | |||
১৯৮০–১৯৮১ | পোস্ট অফিস | ||
১৯৮২ | শান্তিনগর | ||
জ্যেষ্ঠ পর্যায়* | |||
বছর | দল | ম্যাচ | (গোল) |
১৯৮৩–১৯৮৫ | মুক্তিযোদ্ধা সংসদ | ||
১৯৮৬ | ব্রাদার্স ইউনিয়ন | ||
১৯৮৭–১৯৯১ | ঢাকা আবাহনী | ||
১৯৯১–১৯৯২ | ইস্টবেঙ্গল | ||
১৯৯৩–১৯৯৮ | ঢাকা আবাহনী | ||
১৯৯৮ | ইস্টবেঙ্গল | ||
জাতীয় দল | |||
১৯৮৬–১৯৯৭ | বাংলাদেশ | ||
* কেবল ঘরোয়া লিগে ক্লাবের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা গণনা করা হয়েছে |
১৯৮০–৮১ মৌসুমে, বাংলাদেশী ফুটবল ক্লাব পোস্ট অফিসের যুব পর্যায়ের হয়ে খেলার মাধ্যমে মুন্না ফুটবল জগতে প্রবেশ করেছিলেন এবং পরবর্তীকালে শান্তিনগরের যুব দলের হয়ে খেলার মাধ্যমে তিনি ফুটবল খেলায় বিকশিত হয়েছিলেন।[৪] ১৯৮৩–৮৪ মৌসুমে, বাংলাদেশী ক্লাব মুক্তিযোদ্ধা সংসদের হয়ে খেলার মাধ্যমে তিনি তার জ্যেষ্ঠ পর্যায়ের খেলোয়াড়ি জীবন শুরু করেছিলেন, যেখানে তিনি ২ মৌসুম অতিবাহিত করেছিলেন। অতঃপর ১৯৮৬–৮৭ মৌসুমে তিনি ব্রাদার্স ইউনিয়নে যোগদান করেছিলেন। ব্রাদার্স ইউনিয়নে মাত্র ১ মৌসুম অতিবাহিত করার পর ঢাকা আবাহনীর সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন। ১৯৯১–৯২ মৌসুমে, তিনি ভারতীয় ক্লাব ইস্টবেঙ্গলে যোগদান করার মাধ্যমে দ্বিতীয় বাংলাদেশী ফুটবলার হিসেবে দেশের বাইরে পেশাদার লীগে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। পরবর্তীকালে, তিনি পুনরায় ঢাকা আবাহনীর হয়ে খেলেছিলেন। সর্বশেষ ১৯৯৮–৯৯ মৌসুমে, তিনি ঢাকা আবাহনী হতে পুনরায় ভারতীয় ক্লাব ইস্টবেঙ্গলে যোগদান করেছিলেন; ইস্টবেঙ্গলের হয়ে মাত্র ১ মৌসুম খেলার পর তিনি অবসর গ্রহণ করেছিলেন।[৫]
১৯৮৬ সালে, মুন্না বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিষেক করেছিলেন। দলগতভাবে, মুন্না সর্বমোট ৫টি শিরোপা জয়লাভ করেছিলেন, যার সবগুলো ঢাকা আবাহনীর হয়ে জয়লাভ করেছিলেন।
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনামোহাম্মদ মোনেম মুন্না ১৯৬৬ সালের ৯ই জুন তারিখে বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং সেখানেই তার শৈশব অতিবাহিত করেছিলেন।
আন্তর্জাতিক ফুটবল
সম্পাদনা১৯৮৬ সালে, মুন্না আন্তর্জাতিক ফুটবলে বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক করেছিলেন। তিনি তিনবার জাতীয় দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।[৪] ১৯৯৫ সালে তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত ৪ জাতির টাইগার ট্রফি জয়লাভ করেছিল, যা দেশটির প্রথম আন্তর্জাতিক শিরোপা জয় ছিল। তার অধিনায়কত্বেই ১৯৯৫ সাফ গেমসে বাংলাদেশ রানার-আপ হয়েছিল।
১৯৯৭ সালের ৩১শে মার্চ তারিখে মুন্না ৩০ বছর বয়সে বাংলাদেশের তার সর্বশেষ ম্যাচটি খেলে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসর গ্রহণ করেছিলেন। সৌদি আরবের জেদ্দার প্রিন্স আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত মালয়েশিয়ার বিরুদ্ধে উক্ত ম্যাচে বাংলাদেশ ১–০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিল, ম্যাচটিতে তিনি পূর্ণ ৯০ মিনিট খেলেছিলেন।[৬]
শ্রদ্ধাঞ্জলি
সম্পাদনা২০০৮ সালে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন মুন্নার স্মরণে ধানমন্ডির ৮ নম্বর সেতুটির নাম "মোনেম মুন্না সেতু" রাখে।[৭][৮]
ব্যক্তিগত জীবন
সম্পাদনামুন্না ইয়াসমিন মোনেম সুরভীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। তাদের উভয়ের ইউসরা মোনেয়া দানিয়া নামে একটি কন্যাসন্তান এবং আজমান সালিদ নামে একটি পুত্রসন্তান রয়েছে।[৯][১০]
কিডনির জটিলতার কারণে ১৯৯৭ সালে মুন্না ফুটবল থেকে অবসর গ্রহণ করেন। [৪][১১][১২]
২০০৫ সালের ১২ই ফেব্রুয়ারি তারিখে, বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জে কিডনিজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন।[৯]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ফুটবলের সোনালি যুগের মহানায়ক মোনেম মুন্নাকে ভুলে গেছি আমরা। Jugantor। সংগ্রহের তারিখ ৭ নভেম্বর ২০২১।
- ↑ ‘কিংব্যাক’ খ্যাত বাংলার ফুটবল জাদুকর। Banglanews24.com। ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ৭ নভেম্বর ২০২১।
- ↑ "Monem Munna Bridge goes official today"। The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০০৮-০৬-০৯। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১১-২৪।
- ↑ ক খ গ "Career of late Monem Munna"। bdnews24.com। ২০০৫-০২-১১। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১১-২৪।
- ↑ "Memories of Munna"। The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১১-১২-০৯। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১১-২৪।
- ↑ "Bangladesh v Malaysia, 31 March 1997"। 11v11 (ইংরেজি ভাষায়)। ৩১ মার্চ ১৯৯৭। সংগ্রহের তারিখ ৫ এপ্রিল ২০২১।
- ↑ রাজু আহমেদ (১২ ফেব্রুয়ারি ২০২১)। "ফুটবলের সোনালি যুগের মহানায়ক মোনেম মুন্নাকে ভুলে গেছি আমরা"। দৈনিক যুগান্তর। সংগ্রহের তারিখ ৫ এপ্রিল ২০২১।
- ↑ ইয়াসির উবাইদ (১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫)। "'কিংব্যাক' খ্যাত বাংলার ফুটবল জাদুকর"। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। সংগ্রহের তারিখ ৫ এপ্রিল ২০২১।
- ↑ ক খ "Footballer Munna dies at 39"। bdnews24.com। ২০০৫-০২-১১। ২০১৭-১২-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১১-২৪।
- ↑ "Families of 2 ex-footballers, hockey player get flats from PM"। Dhaka Tribune। ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৭ নভেম্বর ২০২১।
- ↑ "Football lovers remember Monem Munna |"। Bff.com.bd। সংগ্রহের তারিখ ৭ নভেম্বর ২০২১।
- ↑ "Munna's historic jersey put up for auction Saturday"। The Independent। Dhaka। সংগ্রহের তারিখ ৭ নভেম্বর ২০২১।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ন্যাশনাল-ফুটবল-টিমস.কমে মোনেম মুন্না (ইংরেজি)