মুতাল তিরুবন্ততি ( তামিল: முதல் திருவந்தாதி ) [১] শ্রী বৈষ্ণবধর্মের দ্বাদশ আলবরের অন্যতম আলবর পোইগায় আল্বর দ্বারা রচিত একটি তামিল হিন্দু সাহিত্য রচনা। [২] এই স্তবগানটি [৩] অন্ততি কাব্যিক কৌশলে রচিত যাতে ১০০টি শ্লোক রয়েছে। এটি নালায়ীরা দিব্য প্রবন্ধম নামক স্তোত্রসংকলনের একটি অংশ। [৪]

মুতাল তিরুবন্ততি
বরাহের চিত্রকর্ম, শ্রী অপ্পান বেঙ্কটাচলপতি মন্দির, চেরনমহাদেবী।
তথ্য
ধর্মহিন্দুধর্ম
রচয়িতাপোইগায় আলবর
ভাষাতামিল
যুগখ্রিষ্টীয় ৯ম-১০ম শতাব্দী
শ্লোক১০০

কিংবদন্তি সম্পাদনা

শ্রী বৈষ্ণব কিংবদন্তি অনুসারে, পোইগায় আল্বর একবার তিরুকোইলুরের উলাগালান্থ পেরুমাল মন্দিরে বিষ্ণুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে গিয়েছিলেন। তিনি অপর দুই আলবর পেভুটথের সাথে দেখা করেন। তাদেরকে তিনি চিনতেন না।কিন্তু তারা একই সময়ে কাকতালীয়ভাবে মন্দিরে যাচ্ছিলেন। যাত্রাকালে ঝড় বৃষ্টি শুরু হওয়ায় পোইগাই একটি মন্ডপমে থাকার জায়গা খুঁজে পান এবং পে তাকে জিজ্ঞাসা করেন যে তিনি তার ঘরে কিছু জায়গা ভাগ করতে পারেন কিনা। মন্ডপমে একটিমাত্র শয্যা ছিল। তা পর্যবেক্ষণ করে পোইগাই মন্তব্য করেন শুধু একজন ব্যক্তিই শয্যায় শয়ন করতে পারবেন এবং তারই সুবিধা হবে বেশি, তবে দুজনকে বসে থাকতে হবে। এই মুহুর্তে ভুটথ এলেন, ও অন্য দুই কবি-সাধকের সাথে মন্ডপম ভাগ করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন। তখন কবিত্রয় সিদ্ধান্ত নিলেন একজন ব্যক্তির শুয়ে থাকাই সবচেয়ে উপযুক্ত হবে, দুজন লোক বসবে, কিন্তু তাদের মাঝে তিনজন থাকার মানে হল যে তারা দাঁড়িয়ে থাকলেই সবচেয়ে উপযুক্ত হবে। এইভাবে তিন কবি-সাধক সারা রাত দাঁড়িয়েছিলেন। হঠাৎ ভোরের সময় তারা তাদের মধ্যে এক চতুর্থ সত্তার উপস্থিতি অনুভব করলেন। সেই সময় তারা এতটাই অভিভূত হয়েছিলেন যে তাদের প্রত্যেকে তাদের অভিজ্ঞতালব্ধ একটি অন্ততি আকারে স্তোত্র রচনা করেন। সেই সত্তাটি ছিলেন পেরুমলমুতাল তিরুবন্ততিকে পোইগায় আলবরের রচিত স্তব বলে উল্লেখ করা হয়েছে যেখানে তিনি দেবতার প্রতি তার প্রেমকে সূর্যের আলো ও প্রদীপের সাথে তুলনা করেছেন। [৫] [৬]

স্তোত্রগান সম্পাদনা

মুটাল তিরুবন্ততি-এর প্রথম স্তোত্রে কবির চিত্তের অনুভুতির ব্যাখ্যা করা হয়েছে যখন পেরুমল স্বয়ং আবির্ভূত হয়ে তাঁকে অভিভূত করেছিলেন: [৭][৮]

ধরা আমার দীপক
যেখানে সাগর তৈল
এবং তেজোময় সূর্য বাতি।
আমার গানের এই মালা প্রদীপ্ত চক্রধারী প্রভুর কোমল চরণে অর্পণ করি
যাতে দুঃখের সাগর আমরা পার করতে পারি।

— মুটাল তিরুবন্ততি, স্তোত্র ১

পোইগাই আলবর এই রচনায় বিষ্ণুর বামনবরাহ অবতারের কার্যকেও উল্লেখ করেছেন: [৯]

হে চক্রধারী প্রভু! বিশাল রূপে চরণারবিন্দ দিয়ে আপনি ধরাকে পরিমাপ করেছেন
যখন সংসার ভয়গ্রস্ত ছিলো
এবং স্বর্গিকগণ কাঁপছিলেন।
যখন বৃহৎ বরাহরূপে আপনি ধরাকে আপনার দন্তে উঠিয়ে নিয়ে ছিলেন
তখন আপনার দাঁত কেনো ভেঙে যায় নি?
কেননা ধরা একদাঁতেই তখন স্থির ছিলো।

— মুটাল তিরুবন্ততি, স্তোত্র ৯

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Nair, Shantha (২০১৪-০১-০৭)। Sri Venkateshwara (ইংরেজি ভাষায়)। Jaico Publishing House। পৃষ্ঠা 70। আইএসবিএন 978-81-8495-445-6 
  2. Rosen, Steven (১৯৯৬)। Vaiṣṇavī: Women and the Worship of Krishna (ইংরেজি ভাষায়)। Motilal Banarsidass Publishe। পৃষ্ঠা 219। আইএসবিএন 978-81-208-1437-0 
  3. Pārttacārati, Intirā (২০০২)। Vaisnavisam in Tamil Literature Between the 7th and 9th Centuries (ইংরেজি ভাষায়)। International Institute of Tamil Studies। পৃষ্ঠা 48। 
  4. Kasturi, Geeta; N.V, Kasturi (২০১৩-০২-০৬)। Understanding The Elemental Hindu Works (ইংরেজি ভাষায়)। Lulu.com। পৃষ্ঠা 68। আইএসবিএন 978-1-291-31296-6 
  5. Pillai, M. S. Purnalingam (১৯৯৪)। Tamil Literature (ইংরেজি ভাষায়)। Asian Educational Services। পৃষ্ঠা 185। আইএসবিএন 978-81-206-0955-6 
  6. Nammalwar (২০১৪-০৫-১৫)। A Hundred Measures of Time: Tiruviruttam (ইংরেজি ভাষায়)। Penguin UK। পৃষ্ঠা 134। আইএসবিএন 978-93-5118-714-1 
  7. Young, Katherine (২০১৮-০৩-১৩)। Her Voice, Her Faith: Women Speak On World Religions (ইংরেজি ভাষায়)। Routledge। পৃষ্ঠা 37। আইএসবিএন 978-0-429-97965-1 
  8. Bryant, Edwin F. (২০০৭-০৬-১৮)। Krishna: A Sourcebook (ইংরেজি ভাষায়)। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 191–192। আইএসবিএন 978-0-19-028756-6 
  9. Makarand Joshi। The Sacred Book Of Four Thousand 01 Nalayira Divya Prabandham Sri Rama Bharati 2000। পৃষ্ঠা 622। 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

Sri Poigai Alvar's Mutal Tiruvantati (Text and commentary) - N Rajagopalan ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৬ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে