মির্জা আজম
মির্জা আজম একজন বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ। বর্তমানে, তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ১৯৯১, জুন ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে জামালপুর-৩ (সংসদীয় আসন নং: ১৪০) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[১][২][৩] ২০০১ সালে বিএনপি সরকার গঠন করলে তিনি জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় হুইপ এবং ২০০৮ সালে তার নিজ দল সরকার গঠন করার পর সরকারদলীয় হুইপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
মির্জা আজম | |
---|---|
সাবেক প্রতিমন্ত্রী বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের | |
কাজের মেয়াদ ১২ জানুয়ারি, ২০১৪ – বর্তমান | |
জাতীয় সংসদের সদস্য | |
দায়িত্বাধীন | |
অধিকৃত কার্যালয় ৫ মার্চ ১৯৯১ | |
পূর্বসূরী | সফিকুল ইসলাম |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ১৩ সেপ্টেম্বর ১৯৬২ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশি |
রাজনৈতিক দল | বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ |
দাম্পত্য সঙ্গী | দেওয়ান আলেয়া আজম |
পেশা | রাজনীতিবিদ |
২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হওয়ার পর থেকে তিনি একই বছরের ১২ জানুয়ারি হাসিনার তৃতীয় মন্ত্রিসভায় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান।[১]
প্রারম্ভিক জীবনসম্পাদনা
মির্জা আজম ১৯৬২ সালের ১৩ই সেপ্টেম্বর জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলার শুকনগরী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।[৪] তার পিতার নাম মির্জা আবুল কাশেম এবং মাতার নাম নূরুন্নাহার বেগম।[২] বালিজুড়ী মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৯৬৮ সালে শিক্ষাজীবন শুরু করেন এবং ১৯৭৮ সালে জামালপুর জিলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। ১৯৮০ সালে সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে একই কলেজ থেকে ১৯৮৩ সালে স্নাতক সম্পন্ন করেন।[৪]
রাজনৈতিক জীবনসম্পাদনা
মির্জা আজম মাধ্যমিকে থাকাকালীন ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনীতিতে জড়িত হন।[৫] সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ উচ্চ মাধ্যমিক পড়াবস্থায় ১৯৭৯ সালে কলেজের ছাত্র সংসদের আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক নির্বাচিত হন।[৪] পরবর্তীতে ১৯৮১ সালে জামালপুর জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি, ১৯৮৭ সালে জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক, ১৯৯১ সালে জেলা সভাপতি ও ১৯৯৩ সালে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন।[৪]
যুবলীগে থাকাবস্থায় ১৯৯১ সালে তিনি জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে মূল দলীয় রাজনীতে প্রবেশ করেন এবং একই বছর আওয়ামী লীগের মনোনয়নে জামালপুর-৩ আসন থেকে প্রথমবারের মত ৩৯,৯০৭ ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[২][৬] ১৯৯৬ সালে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পান এবং সে বছর জুনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৮০,০৫৬ পেয়ে বিজয়ী হন।[২][৭] ২০০১ সালের নির্বাচনে ১,১৯,৬১১ ভোট পেয়ে পুনরায় বিজয়ী হন।[৮][৯]
২০০৩ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত তিনি একই সাথে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[৪] এরমধ্যে ২০০৮ সালের নবম (১,৭১,৯২৬ ভোট পেয়ে) ও ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়) জয়লাভ করেন।[২][১০] ১৯৯১ সালে গঠিত সংসদে তিনি খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য, ১৯৯৬-এর জুনে গঠিত সংসদে সরকারি প্রতিশ্র“তি সংক্রান্ত কমিটি ও বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য, ২০০১ সালে বিরোধী দলীয় হুইপ, ২০০৮ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সরকারদলীয় হুইপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[৪]
২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান।[৩][১১] ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি একই আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান।[১২] ২০১৯ সালের ২১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় কাউন্সিলে নতুন কমিটিতে মির্জা আজমকে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নির্বাচিত করা হয়।[১৩]
ব্যক্তিগত জীবনসম্পাদনা
মির্জা আজম ব্যক্তিগত জীবনে দেওয়ান আলেয়া আজমের সাথ বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির মির্জা আফিয়া আজম অপি ও মির্জা আসফিয়া আজম অমি নামে দুই কন্যা রয়েছে।
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ ক খ "আ'লীগের কাণ্ডারি মির্জা আজম পরিবর্তনের আশা বিএনপিতে"। সমকাল। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসে ২০১৮।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "মির্জা আজম"। প্রথম আলো। ১০ নভে ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসে ২০১৮।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ ক খ "মির্জা আজমই আওয়ামী লীগের প্রার্থী আসন কব্জায় চায় নড়বড়ে বিএনপি"। যুগান্তর। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসে ২০১৮।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ "জনাব মির্জা আজম এম.পি"। motj.gov.bd। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। ২২ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "মির্জা আজম"। প্রিয়.কম। ১০ জুলাই ২০১৮। ৫ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসে ২০১৮।
- ↑ "৫ম জাতীয় সংসদ সদস্য তালিকা (বাংলা)"। www.parliament.gov.bd।
- ↑ "৭ম জাতীয় সংসদ সদস্য তালিকা (বাংলা)"। www.parliament.gov.bd।
- ↑ "জামালপুর-৩ পিছিয়ে থাকলেও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি"। somoynews.tv।
- ↑ "৮ম জাতীয় সংসদ সদস্য তালিকা (বাংলা)"। www.parliament.gov.bd।
- ↑ "৯ম জাতীয় সংসদ সদস্য তালিকা পার্টি অনুযায়ী (বাংলা)"। www.parliament.gov.bd।
- ↑ "১০ম জাতীয় সংসদ সদস্য তালিকা (বাংলা)"। www.parliament.gov.bd।
- ↑ "আচরণবিধি ভেঙে সমাবেশ প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজমের"। প্রথম আলো। ৫ ডিসে ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসে ২০১৮।
- ↑ "আ'লীগের কমিটিতে নতুন পদ পেলেন যারা"। Jugantor। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৩-০৪।