মিন প্যাটেল

ইংরেজ ক্রিকেটার

মিনাল মহেশ প্যাটেল (মারাঠি: मिन पटेल; জন্ম: ৭ জুলাই, ১৯৭০) বোম্বে এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ভারতীয় বংশোদ্ভূত কোচ ও সাবেক ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়কালে অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

মিন প্যাটেল
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামমিনাল মহেশ প্যাটেল
জন্ম (1970-07-07) ৭ জুলাই ১৯৭০ (বয়স ৫৩)
বোম্বে, ভারত
ডাকনামডায়মন্ড
উচ্চতা৫ ফুট ৭ ইঞ্চি (১.৭০ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনস্লো লেফট আর্ম অর্থোডক্স
ভূমিকাবোলার, কোচ
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৫৭৯)
৬ জুন ১৯৯৬ বনাম ভারত
শেষ টেস্ট৯ জুলাই ১৯৯৬ বনাম ভারত
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৮৯ - ২০০৭কেন্ট (জার্সি নং ৭৭)
২০০৫/০৬সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্টস
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি এলএ টি২০
ম্যাচ সংখ্যা ২০৮ ৮৫
রানের সংখ্যা ৪৫ ৩,৯৪৫ ২৬৯ ১৮
ব্যাটিং গড় ২২.৫০ ১৭.৩৭ ৯.৯৬ ৬.০০
১০০/৫০ ০/০ ০/১৭ ০/০ ০/০
সর্বোচ্চ রান ২৭ ৮৭ ২৭*
বল করেছে ২৭৬ ৪৪,৭৮৭ ৩,৬৪৮ ১৯৬
উইকেট ৬৩০ ৮৮ ১৫
বোলিং গড় ১৮০.০০ ৩০.৬৪ ৩০.৬৯ ১৭.১৩
ইনিংসে ৫ উইকেট ৩০
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ১/১০১ ৮/৯৬ ৩/২০ ৪/২৬
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ২/– ১০২/– ২৪/– ০/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১০ ডিসেম্বর ২০২০

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে কেন্ট দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন ‘ডায়মন্ড’ ডাকনামে পরিচিত মিন প্যাটেল

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট সম্পাদনা

বোম্বেতে জন্মগ্রহণকারী মিন প্যাটেল ইংল্যান্ডের ডার্টফোর্ড গ্রামার স্কুলে অধ্যয়ন করেছেন। এরপর, ম্যানচেস্টার পলিটেকনিকে পড়াশুনো করেন। ১৯৮৯ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত মিন প্যাটেলের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল।

১৯৮৯ মৌসুমের শেষদিকে মিডলসেক্সের বিপক্ষে কেন্টের সদস্যরূপে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয় মিন প্যাটেলের।[১] পরবর্তী বছরগুলোয় দলের নিয়মিত সদস্যের মর্যাদা লাভ করেন। ১৯৯৪ ও ১৯৯৫ সালে খুব সহজেই উইকেট লাভ করতে থাকেন তিনি।[২] পাশাপাশি, ১৯৯৪ সালে ইংল্যান্ডের শীর্ষস্থানীয় উইকেটশিকারীতে পরিণত হন। ২২.৮৬ গড়ে ৯০ উইকেট লাভ করেন তিনি।[৩]

কেন্টের নিজস্ব মাঠ সেন্ট লরেন্স গ্রাউন্ড মিন প্যাটেল ও কার্ল হুপারের উপযোগী করে পিচ তৈরি করা হয়। তবে, দলে অ্যালেন ইগলসডেন, মার্টিন ম্যাককেগ, ডিন হ্যাডলি ও ডানকান স্পেন্সারের ন্যায় সিম বোলার ছিল।[৪]

১৯৯৭ সালে মিন প্যাটেলের খেলোয়াড়ী জীবন দৃশ্যতঃ অনেকাংশেই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। পিই শিক্ষাগ্রহণকালীন আঘাতের পাশাপাশি নিজ ক্লাবে তাকে ব্যাটিং করতে দেখা যায়। ফলে, ঐ মৌসুমের অধিকাংশ সময়ই মাঠের বাইরে তাকে অবস্থান করতে হয়েছিল।[৪] পরের মৌসুমে তিনি ক্লাবে ফিরে আসেন। পরবর্তী আট মৌসুম নিয়মিতভাবে খেলতে থাকেন তিনি।[৫]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে দুইটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন মিন প্যাটেল। ৬ জুন, ১৯৯৬ তারিখে বার্মিংহামে সফরকারী ভারত দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এরপর, ৪ জুলাই, ১৯৯৬ তারিখে নটিংহামে একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি। তাকে কোন ওডিআইয়ে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেয়া হয়নি।

কাউন্টি ক্রিকেটে সাধারণমানের খেলা প্রদর্শন সত্ত্বেও ১৯৯৬ সালে ইংল্যান্ড দলে খেলার জন্যে আমন্ত্রণ পান। দলে ফিল টাফনেলের অনুপস্থিতিতে তিনি এ সুযোগ পান। ১৯৯৬ সালে নিজ জন্মভূমি ভারতের বিপক্ষে তিনি প্রথমবারের মতো টেস্টে অংশ নেন। ৬ জুন, ১৯৮৯ তারিখে এজবাস্টনে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম টেস্টে অভিষেক ঘটা সাতজন খেলোয়াড়ের অন্যতম ছিলেন তিনি।[৬] সবুজ উইকেটে তিনি কোন ভূমিকা রাখতে পারেননি। কেবলমাত্র দশ ওভার বোলিং করার সুযোগ পেয়েছিলেন। ঐ খেলায় ইংল্যান্ড দল আট উইকেটে জয়লাভ করে।[৭]

লর্ডসের দ্বিতীয় টেস্টে তাকে খেলানো হয়নি। তবে, ট্রেন্ট ব্রিজের তৃতীয় টেস্টে তাকে পুনরায় খেলার সুযোগ দেয়া হয়। আবারও স্পিন বোলিংয়ের অনুপযোগী পিচে হিমশিম খান। তাসত্ত্বেও, নিজস্ব প্রথম ও একমাত্র উইকেট লাভে সমর্থ হন। গ্রেইম হিকের কটে সঞ্জয় মাঞ্জরেকার বিদেয় করেন তিনি।[৮]

অবসর সম্পাদনা

২০০৬ সালে কেন্টের সহঃ অধিনায়কের মর্যাদাপ্রাপ্ত হন। অবসর গ্রহণের পূর্বেও তিনি বেশ ছন্দে ছিলেন। কনুইয়ের আঘাতের পুনরায় আবির্ভাবের কারণে ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ সালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট থেকে নিজের অবসর গ্রহণের কথা ঘোষণা করেন মিন প্যাটেল।[৯] ২০১৮ সালে কেন্ট দ্বিতীয় একাদশের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

২০০৫-০৬ মৌসুমে শীতকালে এক মৌসুমের অধিক সময় সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্টসের পক্ষে খেলেন। স্টেট চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা বিজয়ী দলের অমূল্য সম্পদ হিসেবে নিজেকে উপস্থাপনায় সচেষ্ট হন। চূড়ান্ত খেলায় ওয়েলিংটনের বিপক্ষে তিনি ছয় উইকেট পান।[১০] এর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইংল্যান্ড দলে পুনরায় অন্তর্ভূক্তির সম্ভাবনা জেগে উঠে।[৪] ২০০৫-০৬ মৌসুমে পাকিস্তান সফররত ইংল্যান্ড দলে অ্যাশলে জাইলসের পরিবর্তে তাকে এ আমন্ত্রণ জানানো হয়।

খেলার ধরন সম্পাদনা

ব্যস্তময় ভঙ্গীমায় বামহাতি স্পিনার হিসেবে মিন প্যাটেল বলে বাঁক খাওয়ানোর চেয়ে হতবুদ্ধি করতে অধিক সক্রিয় ছিলেন। বিভ্রান্তে নিপতিত ব্যাটসম্যান তার অবিস্মরণীয় নিখুঁত বোলিংয়ের ফাঁদে পা দিতে বাধ্য হতো। চমৎকার ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের তুলনায় স্থিরতা আনয়ণেই কেন্টে অবস্থান করেছেন। তার বোলিংয়ের ন্যায় ব্যাটিংশৈলীও নিষ্প্রভ ছিল।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. CricketArchive। "Kent v Middlesex at Canterbury, 1989"। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৫-০৪ 
  2. Cricinfo"Got him!"। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৫-০৪ 
  3. CricketArchive। "First-class Bowling in England for 1994 (Ordered by Wickets)"। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৫-০৪ 
  4. Matthew Reed। "Brief Profile of Min Patel"। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৫-০৪ 
  5. CricketArchive। "First-class bowling in Each Season by Min Patel"। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৫-০৪ 
  6. Wisden Cricketers' Almanack"1997 – England v India"। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৫-০৪ 
  7. Cricinfo। "1st Test: England v India at Edgbaston, Jun 6–9, 1996"। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৫-০৪ 
  8. Cricinfo। "3rd Test: England v India at Nottingham, Jul 4–9, 1996"। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৫-০৪ 
  9. Cricinfo। "Min Patel announces retirement"। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৫-০৪ 
  10. Cricinfo। "Final: Wellington v Central Districts at Wellington, 3–7 Apr, 2006"। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৫-০৪ 

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা