মশিউর রহমান (রাজনীতিবিদ)
মশিউর রহমান (১৯২০-১৯৭০) হলেন বাংলাদেশী আইনজীবী, রাজনীতিবিদ ও মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য ২০০১ সালে তাকে “স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতা পুরস্কার” প্রদান করা হয়।[১][২]
মশিউর রহমান | |
---|---|
জন্ম | ১৯২০ |
মৃত্যু | ১৯৭১ |
নাগরিকত্ব | ![]() |
পেশা | রাজনীতি |
পিতা-মাতা | |
পুরস্কার | স্বাধীনতা পুরস্কার (২০০০) |
জন্ম ও শিক্ষাজীবনসম্পাদনা
মশিউর রহমানে জন্ম ১৯১৭ সালে যশোরের চৌগাছা উপজেলায় সিংহঝুলি গ্রামে। তার পিতার নাম মোহাম্মদ ইসমাইল ও মাতার নাম ছৈয়দুন্নেছা। তিনি চৌগাছা (এম.ই) মিডিল ইংলিশ স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করে ১৯৩৬ সালে যশোর জিলা স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করেন। কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ থেকে ১৯৩৮ সালে এইচএসসি এবং স্নাতক সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে ১৯৪৪ সালে কলকাতা লর্ড রিপন কলেজ (অধুনা সুরেন্দ্রনাথ আইন কলেজ) থেকে আইন বিষয়ে ডিগ্রি অর্জন করেন।
কর্মজীবনসম্পাদনা
তৎকালীন প্রাদেশিক সরকারে প্রাক্তন মন্ত্রী, প্রখ্যাত আইনজীবী ও জেলা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান মশিউর রহমান ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর। ভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা সংগ্রাম প্রত্যেকটিতে তিনি সোচ্চার ভ'মিকা পালন করেছেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকহানাদার বাহিনী যশোর শহরের নিজ বাসভবন থেকে তাকে যশোর সেনানিবাসে ধরে নিয়ে যায়। সেখানে আটকে রেখে নির্মম নির্যাতন করে ২৩ এপ্রিল হত্যা করে। ছাত্র জীবনেই তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর থেকে ১৯৭১ সাল পর্যনৱ সকল আন্দোলনে তিনি সক্রিয় ছিলেন। ছাত্র থাকাকালীন তিনি হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দীর সহচর হিসেবেও কাজ করেন। ১৯৪৯ সালে মাত্র ৩২ বছর বয়সে জেলা বোর্ডের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন । ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে বিপুল ভোটেন নির্বাচিত হন। তারপর প্রাদেশিক মন্ত্রীসভায় স্থানীয় সরকার এবং আইন ও বিচার বিভাগের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি রাজনৈতিক জীবনের আন্দোলন সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ১৯৬৬ সালের ৬ দফা দাবি ও ৬৯‘র গণঅভ্যত্থানে নেতৃত্ব দেন। ১৯৭০ এর নির্বাচনে এমএনএ (জাতীয় সংসদ সদস্য) নির্বাচিত হন। এরপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে অসহযোগ আন্দোলন সংগ্রামে ছিলেন সক্রিয়।
পুরস্কার ও সম্মননাসম্পাদনা
এদেশের স্বাধিকার আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে অসাধারণ অবদানের জন্য ২০০১ সালে দেশের “সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার”[৩][৪][৫] হিসাবে পরিচিত “স্বাধীনতা পুরস্কার” প্রদান করা হয় তাকে।[১] ১৯৭২ সালের ২৬ ডিসেম্বর যশোর পৌর উদ্যানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শহীদ মশিউর রহমানের স্মরণে একটি স্মৃতিসৌধের ফলক উন্মোচন করেন। এছাড়াও তার নামে ঝিকরগাছায় একটি কলেজ, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ছাত্র হল, চৌগাছা ডিগ্রি কলেজের একাডেমিক ভবন, ও তার জন্মস্থান সিংহঝুলিতে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ পাশাপোল গ্রামে একটি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় ও বেশ কিছু ক্লাবের নাম রয়েছে।
মৃত্যুসম্পাদনা
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তাকে অপহরণ করে এবং এক মাস পর তাকে হত্যা করে। ১৯৭২ সালের ২৬ ডিসেম্বর যশোর মিউনিসিপ্যাল পার্কে শেখ মুজিব তার একটি স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধন করেন।
আরও দেখুনসম্পাদনা
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ ক খ "স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের তালিকা"। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ০৯ অক্টোবর ২০১৭। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ "রহমান, মশিউর - বাংলাপিডিয়া"। bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৮-২৩।
- ↑ সানজিদা খান (জানুয়ারি ২০০৩)। "জাতীয় পুরস্কার: স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার"। সিরাজুল ইসলাম। [[বাংলাপিডিয়া]]। ঢাকা: এশিয়াটিক সোসাইটি বাংলাদেশ। আইএসবিএন 984-32-0576-6। সংগ্রহের তারিখ ০৯ অক্টোবর ২০১৭।
স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার।
এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য); ইউআরএল–উইকিসংযোগ দ্বন্দ্ব (সাহায্য) - ↑ "স্বাধীনতা পদকের অর্থমূল্য বাড়ছে"। কালেরকন্ঠ অনলাইন। ২ মার্চ ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২৫ অক্টোবর ২০১৭।
- ↑ "এবার স্বাধীনতা পদক পেলেন ১৬ ব্যক্তি ও সংস্থা"। এনটিভি অনলাইন। ২৪ মার্চ ২০১৬। ১ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ অক্টোবর ২০১৭।