ভালবাসা ভালবাসা (২০০৮-এর চলচ্চিত্র)

রবি কিনাগী পরিচালিত ২০০৮-এর চলচ্চিত্র

ভালবাসা ভালবাসা ২০০৮ সালের রবি কিনাগীর একটি বাংলা চলচ্চিত্র। এই চলচ্চিত্রটি হিরণ চ্যাটার্জী এবং শ্রাবন্তী চ্যাটার্জীর অভিনীত দ্বিতীয় চলচ্চিত্র। পাঁচ সপ্তাহ চলা সাফল্যের পরে প্রযোজক অশোক ধনুকা কালী পূজার ঠিক পরে একটি গান "বল রাজা চাই কেমন রানী" শুটিং করেন এবং ছবিতে যুক্ত করেছিলেন। এটি অস্ট্রিয়ার সালজবার্গে শুটিং করা প্রথম বাংলা চলচ্চিত্র।[][][] এই চলচ্চিত্রটি তেলুগু ভাষায় বোম্মারিল্লু নামে রিমেকে প্রকাশ রাজ, জেনেলিয়া ডি সুজা এবং সিদ্ধার্থ নারায়ণ অভিনীত ভাস্কর পরিচালিত এবং সহ-রচয়িতা করেন।[] চলচ্চিত্রটি মূলত বাবা তার ছেলের উপর ভালোবাসায় অন্ধ হওয়া একটি পিতা এবং পুত্রের সম্পর্কের বাঁধনে জড়িয়ে থাকা। এই ছবির শিরোনাম সংগীতও বোম্মারিল্লু থেকে নেওয়া হয়েছে।

ভালবাসা ভালবাসা
প্রচারণা পোস্টার
পরিচালকরবি কিনাগী
প্রযোজকঅশোক কুমার ধানুকা
উৎসভাস্কর এবং আব্বুরি রবি কর্তৃক 
বোম্মারিল্লু
শ্রেষ্ঠাংশেসব্যসাচী চক্রবর্তী
হিরণ চট্টোপাধ্যায়
শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়
সুরকারএস. পি. ভেঙ্কটেশ
দেবী শ্রী প্রসাদ
পরিবেশকস্কাই মুভিস
মুক্তি
  • ২ অক্টোবর ২০০৮ (2008-10-02)
স্থিতিকাল১৫৫ মিনিট
দেশভারত
ভাষাবাংলা

কাহিনি

সম্পাদনা

চলচ্চিত্রটি শুরু হয় একটি শিশু যখন সমুদ্র সৈকতে তার প্রথম পদক্ষেপ দেয় তার বাবা তাকে সমর্থন করে। পটভূমির বর্ণনাকারী (প্রসেনজিৎ) বলেছেন যে, একজন পিতার পক্ষে তার সন্তানের শৈশবকালে সমর্থন করা ঠিক ছিল, তবে ২৪ বছর বয়সেও পিতা সন্তানের হাত ধরে রাখা উচিত কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন করে। ক্রেডিট রোল হিসাবে, একটি দৃশ্য রাগান্বিত সিধু (হিরণ) বিশ্বের সমস্ত পিতাদের কুকথা দেওয়া শুরু করে। তাঁর ঘৃণা কথা জিজ্ঞাসা করা হলে সে বলে যে তাঁর বাবা অরবিন্দ (সব্যসাচী চক্রবর্তী) র কাছে যা চান, তার চেয়ে বেশি পায়। তিনি উদাহরণস্বরূপ বলেছে যেখানে তাঁর পোশাক, হেয়ারড়ু এবং আরও অনেক পছন্দ তার বাবার থেকে দূরে রয়েছে। তবে তিনি বলেছেন যে দুটি জিনিসই তার পছন্দের হতে হবে তা হল তার ক্যারিয়ার এবং সে যে মেয়েকে বিয়ে করবে।

ক্রেডিট পোস্ট, সত্য (শুভাশিষ মুখোপাধ্যায়) অরবিন্দ এর কর্তব্যপরায়ণ পরিবারের চাকর সকালে সিধুকে ঘুম থেকে ওঠান। পটভূমিতে আমরা সিধুর মা লক্ষ্মী (লাবণী সরকার) রান্না করার সময় একটি ভক্তিমূলক গান গাইতে দেখি। ডাইনিং টেবিলে খাবার সময় অরবিন্দ জিজ্ঞাসাবাদ করে যে সিধু তাদের ব্যবসা পরিচালনার জন্য তাদের অফিসে যোগ দেবে কিনা। যখন সিধু ভাববে অন্য কিছু করবে তখন তার বাবা কোনমতে সায় দেবে না এবং সিধুর নীরব প্রতিবাদ সত্ত্বেও তার বাবা বিয়ে নিয়ে পরিকল্পনা করছিলেন। পরের সপ্তাহে, সে বাড়িতে ফিরে এসে বুঝতে পেরেছিল যে তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে মানসীর সম্পর্কে জড়িয়ে যাচ্ছেন। সে কেবল তাঁর "বাবার মেয়ে" এবং সে তাঁর পছন্দ মতো হচ্ছেন না বুঝতে পেরে তাঁর সাথে কথা বলেছেন। তবে অরবিন্দের বক্তব্য চূড়ান্ত তাই তারা অবশেষে সম্বন্ধ করতে শুরু করে দেয়।

কোন এক মন্দিরে তাঁর কথাগুলি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করার সময় সিধু ঘটনাক্রমে ইনঞ্জিনিয়ার ছাত্রী (শ্রাবন্তী মালাকার) এর সাথে দেখা হয়। তার হাসিখুশি স্বভাব এবং স্পন্দন দেখে সিধু তাকে পছন্দ করতে শুরু করে। সে নিয়মিত তার সাথে দেখা করে তাকে জানার চেষ্টা করেন। সে তার বন্ধুত্বপূর্ণ প্রকৃতি এমন কাউকে পছন্দ করে যা তার পছন্দেকে ভালোবাসে। সে বুঝতে পারছে যে তাঁর নিজের ছোট ছোট জিনিস যা তাকে সুখ দিয়েছে। সে বুঝতে পারে, যে সে তার প্রেমে পড়েছে।

এর পাশাপাশি সিধু তার ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্নটি শুরু করতে ব্যাংক লোনের জন্য আবেদন করেছিল। যখন প্রিয়ার প্রতি তার ভালবাসা গভীর হয় তখন তাকে প্রেমের কথা বলে। সে তার কাছে স্বীকার করেছে যে তার মানসিকতার বিপরীতে মানসীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে আছে কিন্তু সে তোমাকে চায়। তার সম্পর্কে জড়িত থাকার কথা শুনে প্রিয়া হতাশ হয়ে পড়ে তবে একদিন পরে ফিরে আসে এবং তাকে জিজ্ঞাসা করে তুমি কি চাও এবং তার প্রস্তাবটি গ্রহণ করে। সিধুকে বাড়িতে ফিরে আসার উপদেশ দেয় এবং সে মানসীর সাথে বিয়ের কথা বিরক্তি প্রকাশ করে। প্রিয়াকে পছন্দ করার কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে সিধু উত্তর দেয় যে প্রিয়া যদি তাদের পরিবারের সাথে এক সপ্তাহের জন্য থাকতে পারেন তবে তাদের সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে। তিনি তার বাবা কনক রাও (সুশান্ত দত্ত) এর কাছে মিথ্যা কথা বলেছিল যে সে কলেজ থেক বেড়াতে যাচ্ছে তার পরে সে প্রিয়াকে তার বাড়িতে থাকতে রাজি করায়।

প্রিয়া যখন সিধুর পরিবারের সাথে পরিচয় হয় তখন তাকে উষ্ণ আহবান জানায়। সে ঘরে আসার সাথে সাথে একের পর এক তাকে পছন্দ করতে শুরু করে। যদিও স্বেচ্ছাচারী অরবিন্দের বাড়িতে জীবনযাপনের অভ্যাস করা কঠিন ছিল প্রিয়া শুধু সিধুর জন্য থাকতে এসেছে। ইতিমধ্যে অরবিন্দ ভৎসনা করে সিধুকে তার ব্যাংক লোন এবং তাঁর পরিকল্পনা জন্য, কেবল সিধুকে আরও ক্রুদ্ধ করার জন্য। একদিন প্রিয়া সহ পুরো পরিবার একটি বিবাহ অনুষ্ঠানে যোগ দেয়। প্রিয়া আনন্দের সাথে হাসিখুশি মেজাজে অনুষ্ঠানটি উত্সাহিত করে। কাকতালীয়ভাবে, কনক রাও তার আশেপাশে ছিলো, সে সিধুকে মাতাল যুবক হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছেন এর আগে সে মুখোমুখি হয়েছিল। প্রিয়ার বাবার উপস্থিতি উপলব্ধি করে এবং তার দৃষ্টি এড়াতে চলে যায়। তাদের মাধুর্য রক্ষার পরে সিধু বিয়েতে প্রিয়াকে তাদের প্রতিপত্তির উপদেশ দেন। রাগে দুঃখে প্রিয়া বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছিল সে সিধুকে একই রকম খুঁজে পায় না এবং তাদের বাড়িতে থাকলে সে কোনও অভিনয় করতে পারবেন না। সে ঘরে ফিরে আসার পরে সে তার বাবার বিশ্বাস রেখেছিল সিধু রেখে যাওয়ার পরে তা পুনরায় তৈরি করে। লক্ষ্মী অরবিন্দকে সিধুর পছন্দ এবং কি চায় সেই বিষয়ে মুখোমুখি করাল। এতে সিধু তার মনের কথা খুলে বলে এবং অরবিন্দ তার মূর্খতার জন্য অনুশোচনা করতে লাগল। সিধু মানসীকে এবং তার বাবা-মাকে আসন্ন বিয়ে বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করল। তারা নরম হয়ে অরবিন্দ কনক বাবুকে সিধু এবং প্রিয়ার বিবাহ সম্পর্কে বোঝাতে সক্ষম হয়। বিনিময়ে কনক সিধুকে এক সপ্তাহ ঘরে রেখে আরও জানতে চায়। অরবিন্দ এর সাথে একমত হয় এবং গল্পটি পূর্ব দৃশ্যে ফিরে আসার সাথে সাথে নায়ক নায়িকাদের সুখী বিবাহ সম্পর্কে দর্শকদের ধারণা হয়।

অভিনয়ে

সম্পাদনা

ভালোবাসা ভালোবাসার সংগীত এস. পি. ভেঙ্কটেশ রচিত ২২ সেপ্টেম্বর ২০০৮ সালে ভারতে প্রকাশিত হয়েছিল। ধারাবাহিকভাবে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে এই সংগীত তালিকাটি প্রথম স্থানে রয়েছে।[] ভালোবাসা ভালোবাসার মিডিয়া পার্টনার হল বাংলা মিউজিক চ্যানেল সংগীত বাংলা।

ভালোবাসা ভালোবাসা
কর্তৃক স্টুডিও অ্যালবাম
মুক্তির তারিখ২২ শে সেপ্টেম্বর ২০০৮ (সিডি মুক্তি)
ঘরানাফিউচার ফিল্ম সাউন্ডট্র্যাক
সঙ্গীত প্রকাশনীভি মিউজিক
এস. পি. ভেঙ্কটেশ কালক্রম
বন্ধু
(২০০৭)
ভালোবাসা ভালোবাসা
(২০০৮)
গান গায়ক/গায়িকা সময়
"বল রাজা চাই কেমন রানি " প্রিয়া, ত্রিজয়, নীলাদ্রি ৪:১০
"বলতো লোকে বাসলে ভালো" শান ৫:৪৫
"হালকা হালকা এই একটু মেলামেশা" শান এবং অন্যান্য ৫:৪৫
"একটু লজ্জা চোখে একটু লজ্জা মুখে" অলকা ইয়াগনিক, শান ৫:৪১
"গুরুজন বলে প্রেম করোনা" প্রিয়া, অমিত পাল, মহম্মদ আজিজ ৪:১০
"ভেঙে গেল আজ স্বপ্ন আমার" কুমার শানু ৫:১০

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Nag, Kushali (৩ অক্টোবর ২০০৮)। "Dreamland"। www.telegraphindia.com। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১১-০৮ 
  2. "On song, Hiran"। www.telegraphindia.com। ৬ নভেম্বর ২০০৮। ১২ নভেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১১-০৮ 
  3. Nag, Kushali (১৫ অক্টোবর ২০০৮)। "Tolly tally"। www.telegraphindia.com। ১৮ অক্টোবর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১১-০৮ 
  4. "Most expensive Bengali movie"। www.tollynewz.com। ২২ অক্টোবর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০২-০৯ 
  5. "Top Ten albums of the week"। ১৮ জুলাই ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ নভেম্বর ২০১৯ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা