শ্রী বেঙ্কটেশ্বর স্বামী বারি ব্রহ্মোৎসবম্ বা শ্রীবারি ব্রহ্মোৎসবম্ হল উল্লেখযোগ্য [১] বার্ষিক উৎসব যা তিরুমালা - তিরুপতি, তিরুপতি জেলা, অন্ধ্রপ্রদেশ, ভারতে ভেঙ্কটেশ্বর মন্দিরে উদ্‌যাপিত হয়। আশ্বিন মাসে এই উৎসবটি এক মাস স্থায়ী হয় ও গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার মাসের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যে পড়ে। [২]

শ্রীবারি ব্রহ্মোৎসবম্
శ్రీవారి బ్రహ్మొత్సవములు
আনুষ্ঠানিক নামশ্রী বেঙ্কটেশ্বর ব্রহ্মোৎসবম্
অন্য নামতিরুমালা ব্রহ্মোৎসবম্, তিরুপতি ব্রহ্মোৎসবম্
পালনকারীহিন্দু
উদযাপনমলয়াপ্পা (শ্রী ভু সহিত)(শোভাযাত্রার দেবতা) বেঙ্কটেশ্বর মন্দিরের চারপাশের চার রাস্তায় নয় দিনের উৎসবে সকাল-সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে নৃত্য, গীত, হাতি ও ঘোড়া।
সংঘটনবার্ষিক
সম্পর্কিতবেঙ্কটেশ্বর মন্দির, তিরুমালা

প্রধান দেবতা বেঙ্কটেশ্বরের উৎসব -মূর্তি (শোভাযাত্রার দেবতা) এবং তাঁর সহধর্মিণী শ্রীদেবী ও ভূদেবীকে মন্দিরের চারপাশের রাস্তায় বেশ কয়েকটি গাড়িতে শোভাযাত্রায় নিয়ে যাওয়া হয়। উদযাপনটি ভারত তথা সারা বিশ্বের তীর্থযাত্রী ও পর্যটকদের আকর্ষণ করে। ব্রহ্মোৎসব হল ভগবান ব্রহ্মার সম্মানে একটি শোধন অনুষ্ঠান ও তিরুমালার সবচেয়ে বৃহৎ অনুষ্ঠান। [৩]

ব্রহ্মোৎসবম্ শব্দটি দুটি সংস্কৃত শব্দ - ব্রহ্মউৎসবম্-এর সংমিশ্রণ। ব্রহ্মা প্রথম উৎসবটি পরিচালনা করেছিলেন বলে কথিত আছে। ব্রহ্ম অর্থ "মহান্" বা "বৃহৎ"। [৪] শ্রীবারি ব্রহ্মোৎসবম্ "বেঙ্কটেশ্বর সালকাতলা ব্রহ্মোৎসবম্" এবং "বেঙ্কটেশ্বর নবরাত্রি ব্রহ্মোৎসবম্" নামেও পরিচিত।

দুটি উৎসব সম্পাদনা

যখন চান্দ্র বর্ষপঞ্জিতে একটি অতিরিক্ত মাস থাকে, তখন দুটি ব্রহ্ম উৎসব অনুষ্ঠিত হয় যথা, সালকাতলা ও নবরাত্রি। দুটি উৎসবই ২০১৫, ২০১৮ ও ২০২০ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

ব্রহ্মোৎসবম্ ২০২৩

এই বছর, অধিক মাসের কারণে তিরুমালায় দুটি ব্রহ্মোৎসবম্ হবে।

প্রথমটি হল সালকাতলা ব্রহ্মোৎসবম যা নিয়মিত বার্ষিক সময়সূচী অনুসরণ করে এবং অনুষ্ঠিত হয় সেপ্টেম্বর ১৮-২৬, ২০২৩ থেকে।

দ্বিতীয় নবরাত্রি ব্রহ্মোৎসব অনুষ্ঠিত হয় যা নবরাত্রি উৎসবের সাথে মিলে যায় এবং উদ্‌যাপিত হয় অক্টোবর ১৪-২২, ২০২৩ থেকে। [৫]

সালকাতলা ব্রহ্মোৎসবমে রথোৎসবম (বড় রথ) অষ্টম দিনের সকালে অনুষ্ঠিত হয়; নবরাত্রি ব্রহ্মোৎসবের সময় অষ্টম দিনে সকালে স্বর্ণ রথোৎসব অনুষ্ঠিত হয়। সালাকাতলা ব্রহ্ম উৎসবে, ১ম দিন পতাকা উত্তোলন (ধ্বজারোহণম্) ও নবম দিন সন্ধ্যায় পতাকা নামানো (ধ্বজাবরোহণম্) হয়।

ইতিহাস ও কিংবদন্তি সম্পাদনা

তিরুমালার কিংবদন্তি অনুসারে, ব্রহ্মা উৎসব পরিচালনার জন্য পৃথিবীতে অবতরণ করেন। [১] শ্রী বেঙ্কটেশ্বর সহস্রনামস্তোত্রে ব্রহ্মার উৎসব পালনের উল্লেখ রয়েছে, যা একটি ছোট শূন্য কাঠের রথ ( ব্রহ্মরথম্ ) দ্বারা চিহ্নিত করা হয় এবং বেঙ্কটেশ্বর শোভাযাত্রার দেবতা মলয়প্পার শোভাযাত্রার আগে চলতে থাকে। [১] [৬]

তিরুমালা বেঙ্কটেশ্বর মন্দিরে উৎসবগুলির প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় ৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে যখন পল্লব রাণী সামাভাই জমি দান করেছিলেন এবং মন্দিরে উৎসব উদ্‌যাপনের জন্য রাজস্বের আদেশ দিয়েছিলেন। [৭][পূর্ণ তথ্যসূত্র প্রয়োজন][ সম্পূর্ণ উদ্ধৃতি প্রয়োজন ] [১] ১৫৮২ সাল পর্যন্ত বছরে ১২ বার ব্রহ্মোৎসবম্ অনুষ্ঠিত হতো। [১]

অনুষ্ঠান সম্পাদনা

নবরাত্রির সাথে হিন্দু পঞ্জিকা মাসের আশ্বিন মাসের শুরুতে নয় দিন ধরে ব্রহ্মোৎসব অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম দিনের পূর্ব সন্ধ্যায়, অঙ্কুরর্পণ (উর্বরতা ও প্রাচুর্যের সূচক বীজ বপন) অনুষ্ঠান করা হয়। প্রথম দিনের প্রধান ক্রিয়াকলাপ হল দ্বজারোহণ( উৎসবের সূচনা বোঝাতে গরুড় পতাকা উত্তোলন)। উৎসবের সময় ধর্মীয় কার্যকলাপের মধ্যে রয়েছে প্রতিদিনের হোম ও মন্দিরের চারপাশের রাস্তায় শোভাযাত্রা। শেষ দিনে বেঙ্কটেশ্বরের জন্ম তারকাকে স্মরণ করা হয়। ভক্তগণ সুদর্শন চক্রকে মন্দিরের জলাধারে স্নান করান। তারপরে চক্রটিকে একটি উচ্চ মঞ্চে স্থাপন করা হয়। ভক্তরা এর নীচে হেঁটে যান ও এর ফোঁটা জলের স্পর্শে ধন্য হন। গরুড় পতাকা নামিয়ে 'ধ্বজাবরোহনম' এর মাধ্যমে উৎসবের সমাপ্তি হয়।

  • দ্বজারোহণম্ঃ এটি প্রথম দিনে একটি অনুষ্ঠান। এ দিন মন্দিরের উপরে গরুড় (বিষ্ণুর বাহন) অঙ্কিত একটি পতাকা উত্তোলন করা হয়৷[৮] পতাকাটিকে হিন্দু দেবতাদের উৎসবে যোগ দেওয়ার জন্য একটি প্রতীকী আহ্বান্ বলে মনে করা হয়৷ [৮] অনুষ্ঠানের পর, অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী বেঙ্কটেশ্বরকে নতুন সিল্কের পোশাক প্রদান করেন।[৯]
  • গরুড় বাহনম্ঃ পঞ্চম দিনের সন্ধ্যায়, বেঙ্কটেশ্বর ও গরুড়কে শোভাযাত্রায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং ফুলের মালা দিয়ে সজ্জিত করা হয়৷[১০] প্রতি বছর তিরুপতি বেঙ্কটেশ্বরের মালা অন্ডালের বিবাহ উৎসবের জন্য শ্রীবিলিপুত্তুর অন্ডাল মন্দিরে পাঠানো হয়৷[১১]
  • হনুমন্ত বাহনম্ঃ ষষ্ঠ দিনের সকালে, বেঙ্কটেশ্বর ও হনুমানকে শোভাযাত্রায় নিয়ে যাওয়া হয়৷[১২]
  • চক্র স্নানম্ঃ নবম দিনের সকালে, মালয়প্পা, তার দুই সহধর্মিণী ও সুদর্শন চক্রকে বরাহস্বামী মন্দিরে শোভাযাত্রাসমেত নিয়ে যাওয়া হয়।[১৩][১৩]

উদ্‌যাপন্ প্রণালী সম্পাদনা

  • প্রথম দিন
 
সান্ধ্য পেদ্দা শেষ বাহনম্
  • দ্বিতীয় দিন
 
প্রাতঃকালীন চিন্না শেষ বাহনম্
 
সান্ধ্য হংস বাহনম্
  • তৃতীয় দিন
  • চতুর্থ দিন
 
প্রভাতকালীন কল্প বৃক্ষ বাহনম্
  • পঞ্চম দিন
  • ষষ্ঠ দিন
 
প্রাক্ সান্ধ্য স্বর্ণ রথোৎসবম্
  • সপ্তম দিন
  • অষ্টম দিন
  • নবম দিন

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Srivari Brahmotsavam। The Hindu। ১৯৭৫। [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. "8th Day of Srivari Salakatla Brahmotsavam-Aswa Vahanam on Oct 12"Tirumala Tirupati Devasthanams News। ১২ অক্টোবর ২০১৩। ১৮ মার্চ ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  3. "Brahmotsavam: Why is Brahmotsavam Celebrated"। Ygoy। ১৮ মার্চ ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  4. "Mother of all Festivals"The Hindu। ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২৫ অক্টোবর ২০১৭ 
  5. "Brahmotsavam 2023"Tirupati Balaji Online। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০২৩ 
  6. "Tirupati dresses up for Brahmotsavam"Times of India। ৭ অক্টোবর ২০০২। সংগ্রহের তারিখ ১ আগস্ট ২০১৭ 
  7. Feminism and World Religions 1999
  8. "Tirumala Brahmotsavam begins"The Hindu। ৬ অক্টোবর ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০১৭ 
  9. "TTD gearing up for Brahmotsavams"The Hindu। ৫ জুলাই ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুলাই ২০১৭ 
  10. "Andal Mala Presented to Lord Venkateswara in Tirumala"TTD News। ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪। ২০ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯ 
  11. "Srivilliputtur Andal Temple"। ২৪ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  12. "Srivari Salakatla Brahmotsavam - Hanumantha Vahanam"Indian New Times 24X7। ১০ অক্টোবর ২০১৩। ১৮ মার্চ ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  13. "Grand finale to Tirumala Brahmotsavam"The Hindu। ৮ অক্টোবর ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ১ আগস্ট ২০১৭ 

উৎস সম্পাদনা

  • "Tirupati dresses up for Brahmotsavam"The Times of India। ৬ অক্টোবর ২০০২। ১৪ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯ 
  • "Crafts mela to coincide with Brahmotsavam"The Hindu। ১৭ সেপ্টেম্বর ২০০১। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা