বিশেষ বাহিনী
যারা বিশেষ অভিযান বা অপারেশন পরিচালনা করে থাকে তারা বিশেষ বাহিনী বা স্পেশাল ফোর্স নামে পরিচিত । এরা মূলত জল, স্থল বা নৌ বাহিনীর চৌকস সেনাদের সমন্বয়ে গঠিত । [১] [২] [৩]
ন্যাটো- কর্তৃক বিশেষ অভিযান - এর সংজ্ঞা -" যেসব সামরিক কার্যক্রম বিশেষভাবে মনোনীত, সংঘবদ্ধ , প্রশিক্ষিত , সুসজ্জিত এবং নির্বাচিত সৈন্য দ্বারা অপ্রচলিত যুদ্ধ কলা - কৌশল ও ভিন্ন কর্মপন্থার মাধ্যমে সম্পাদিত হয় তাকেই বিশেষ অভিযান বলে অভিহিত করা হবে। "
বিশেষ বাহিনী মূলত গঠিত হয় বিংশ শতাব্দীর ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় যখন বেশিরভাগ বৃহৎ সেনাবাহিনী যুদ্ধরত ছিল । এসময় শত্রুদের পশ্চাতে আক্রমণের উদ্দেশ্যে এ ধরনের বিশেষ বাহিনী সৃষ্টি করা হয় । [৫] বিভিন্ন দেশের ভিত্তিতে বিশেষ বাহিনী বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করত । যেমন - আকাশ থেকে আক্রমণ , বিদ্রোহ দমন, সন্ত্রাস দমন, গোপন অভিযান, সরাসরি আক্রমণ, বন্দী উদ্ধার, অপরাধী শিকার, অপ্রচলিত অভিযান প্রভৃতি।
সক্ষমতা
সম্পাদনাবিশেষ বাহিনীর সক্ষমতার মাঝে অন্তর্ভুক্তঃ
- প্রতিকূল পরিবেশে বিশেষ নিরীক্ষণ ও নজরদারি কার্যক্রম পরিচালনা
- অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ প্রতিরক্ষা :অন্য দেশের সেনা ও প্রতিরক্ষা কর্মীদের প্রশিক্ষণ প্রদান
- আক্রমনাত্মক কার্যক্রম পরিচালনা
- বিদ্রোহ দমনে লোকবল নিয়োগ ও সহায়তা প্রদান
- সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালনা
- অন্তর্ঘাতমূলক ও নাশকতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা
- বন্দী উদ্ধার
এছাড়াও ব্যক্তিবিশেষকে নিরাপত্তা প্রদান, আক্রমনাত্মক ডুবসাঁতার , উভচর অভিযান পরিচাল, বিমান বাহিনীর অভিযানে সহায়তা প্রভৃতি তেও বিশেষ বাহিনী সক্ষম।
ইতিহাস
সম্পাদনাযুদ্ধের সম্পূর্ণ ইতিহাস জুড়ে বিশেষ বাহিনী কর্তৃক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের উদাহরণ পাওয়া যায় । প্রচলিত লড়াইয়ের বদলে এদের মূলনীতি ছিল "আঘাত করেই পলায়ন" । অন্যান্য ভূমিকা পালনের মধ্যে রয়েছে নজরদারি কার্যক্রম পরিচালনা, শত্রুপক্ষ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করে সরবরাহ করা,অনিয়মিত বাহিনী ও অবকাঠামোর ক্ষতিসাধন করা প্রভৃতি৷ চীনা যুদ্ধকৌশলী জিয়ান জিয়া তার "৬টি গোপন শিক্ষা" বইতে বুদ্ধিমান ও উদ্যমী মানুষ বিশেষ দলে নিয়োগের কথা বর্ণনা করেছেন । [৬] সিসিলির হ্যামিলকার বার্সা খ্রীস্টপূর্ব ২৪৯ সনে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বিশেষ বাহিনী ব্যবহার করতেন যারা দৈনিক একাধিকবার শত্রুপক্ষকে আক্রমণ করত।জাপানি নিনজাদের নজরদারি ,গোয়েন্দা কার্যক্রমে এবং গুপ্তঘাতক,গুপ্তচর,দেহরক্ষী বা দুর্গরক্ষী হিসেবে ব্যবহার করা হতো।রোমান সাম্রাজ্যের শেষদিকে বা বাইজান্টাইন সাম্রাজ্যের শুরুর দিকে রোমান নৌবাহিনী নির্বাচিত সেনাদের নিয়ে ছোট,ক্ষিপ্র ,ছদ্মবেশী জাহাজে চড়ে নজরদারি ও বিশেষ অভিযান পরিচালনা করত। এছাড়া বাইজান্টাইন মুসলিমদেরও বিশেষ নৌবাহিনী ছিল যারা ছদ্মবেশী জাহাজে চড়ে তথ্যসংগ্রহ করত এবং আক্রমণের জন্য প্রেরিত ক্রুসেডারদের সৈন্যভর্তি জাহাজে হানা দিয়ে জাহাজ পাকড়াও ও ধ্বংস করত। [৭]
প্রথম বিশেষ বাহিনী
সম্পাদনাবর্ডারের যুদ্ধে ব্রিটিশ ভারতের আর্মি ১৮৪৬ সালে(কর্পস অব গাইডস) এবং ১৮৯০ সালে (গুর্খা স্কাউটস) গঠিত দুটি বিশেষ আর্মি ব্যবহার করেছিল । এদেরকে ১৮৯৭-১৮৯৮ সালে তিরাহ ক্যাম্পেইনে ব্যবহার করা হয়েছিল। [৮] দ্বিতীয় বোয়ের যুদ্ধে(১৮৯৯-১৯০২) ব্রিটিশ আর্মি বিশেষায়িত সেনাদলের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করল। লোভাট স্কাউটের মত একটি স্কাউট দল, যারা মূলত স্কটিশ উচ্চভূমির কাঠুরে বাসিন্দা ; গিলি স্যুট (এক ধরনের ছদ্মবেশী কাপড়) পরিধান করে ছদ্মবেশ , লক্ষ্যভেদে নৈপুণ্যতা ও সামরিক কলাকৌশল কাজে লাগিয়ে এ প্রয়োজন পূরণ করলো।এ দলটি ১৯০০ সালে লর্ড লোভাটের দ্বারা সৃষ্ট হয়েছিল । যুদ্ধ শেষে লোভাট স্কাউটদের আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম ব্রিটিশ স্নাইপার দল হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছিল ৷[৯] এছাড়াও ১৯০১ সালে সৃষ্ট "বুশভেট ক্যারবিনিয়ার"দেরকেও প্রথম অপ্রচলিত যোদ্ধাদল হিসেবে গণ্য করা হয়।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ
সম্পাদনাজার্মান "স্টর্মট্রুপার " এবং ইতালির "আরডিতি" ছিল প্রথম আধুনিক বিশেষায়িত আক্রমণাত্মক দল যাদের সাধারণ সৈনিকদের চেয়ে বেশি ট্রেনিং দেয়া হত ।এদেরকে শত্রু প্রতিরক্ষার বিরুদ্ধে ভীতিকর তীব্র আক্রমণ ও অতর্কিত হামলার কাজে ব্যবহার করা হতো । স্টর্মট্রুপারদের মতই আরডিতিদের পদাতিক সেনা হতে পৃথক দল হিসেবে বিবেচনা করা হতো ।[১০]
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ
সম্পাদনাব্রিটেন
সম্পাদনাকমান্ডো
সম্পাদনাআধুনিক বিশেষ বাহিনী উদিত হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কালে । ১৯৪০ সালে "ব্রিটিশ কমান্ডো" নামে বিশেষ বাহিনী তৈরি হয় উইনস্টন চার্চিলের " শিকারী প্রকৃতির বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত সেনাদল, যারা শত্রু তটে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করতে পারবে " এ কথা অনুযায়ী ।[১১] একজন দাপ্তরিক কর্মী লেফটেন্যান্ট কর্ণেল ডুডলি ক্লার্ক ইম্পেরিয়াল জেনারেল স্টাফ -এর প্রধান জেনারেল স্যার জন ডিল - এর নিকট ইতোমধ্যে এরকম প্রস্তাব পেশ করেছিলেন। ডিল চার্চিলের ইচ্ছা সম্পর্কে অবগত ছিলেন, তিনি ক্লার্কের প্রস্তাব অনুমোদন করেন। [১২] এবং ১৯৪০ সালের ২৩ জুন প্রথম কমান্ডো হামলা শুরু হয় । [১২]
১৯৪০ সালের শরতের মধ্যেই ২০০০ লোক নিয়োগ দেয়া হয় এবং নভেম্বরের মধ্যে নতুন দলগুলোকে বিগ্রেডিয়ার জে সি হেইডন - এর নেতৃত্বে ৪ ব্যাটালিয়নের একটি "স্পেশাল সার্ভিস বিগ্রেড " -এ রূপান্তরিত করা হয়। [১৩] এই স্পেশাল সার্ভিস বিগ্রেড দ্রুত ১২ টি ইউনিটে সম্প্রসারিত হয় এবং "কমান্ডো " নামে পরিচিতি লাভ করে। [১২] প্রত্যেক কমান্ডোর নির্দেশদাতা কর্মকর্তা হিসেবে একজন লেফটেন্যান্ট কর্ণেল ছিলেন ,মোট ৪৫০ জন (প্রথমে ৭৫ জনে এক দল, পরবর্তীতে বিভাজিত করে ১৫ জনে এক সেকশন গঠন করা হয় )
১৯৪০ এর ডিসেম্বরে মধ্যপ্রাচ্যে একটি কমান্ডো ঘাঁটি যুদ্ধরত কমান্ডোদের নতুন সৈন্য সরবরাহ ও প্রশিক্ষণের জন্য স্থাপন করা হয়। [১৪] ১৯৪২ সালে কমান্ডো প্রশিক্ষণ ঘাঁটি স্কটিশ উচ্চভূমির একনাক্যারি - তে বিগ্রেডিয়ার চার্লস হেইডন কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়। লেফটেন্যান্ট কর্ণেল চার্লস ভগ্যান - এর অধীনে কমান্ডো ঘাঁটিটির ওপর সম্পূর্ণ দলকে প্রশিক্ষণ এবং ব্যক্তি স্থানান্তরকরণের দায়িত্ব ন্যস্ত ছিল । [১৪] সেসময় এর প্রশিক্ষণ পদ্ধতি ছিল উদ্ভাবনমূলক এবং শারীরিক চাহিদাসম্পন্ন যা তৎকালীন সাধারণ ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ থেকে অনেক উন্নত। ঘাঁটির কর্মীদের হাতে বাছাই করা হতো,তাদেরকে,যারা অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকদের তুলনায় অধিক কর্মদক্ষ হতো।
প্রশিক্ষণ এবং মূল্যায়ন তাৎক্ষণিকভাবে আগমনের সাথে সাথেই শুরু হতো,স্বেচ্ছাসেবকদের তাদের সম্পূর্ণ যন্ত্রপাতিসহ স্পিন ব্রিজ রেলস্টেশন হতে কমান্ডো ঘাঁটি পর্যন্ত ৮ মাইল(১৩কি.মি.) দৌড়াতে হতো। [১৪] প্রশিক্ষণ সংঘটিত হতো চালু অস্ত্রসস্ত্র ও বিস্ফোরকসহ, যতটুকু বাস্তব পরিস্থিতি করা সম্ভব। শারীরিক যোগ্যতা ছিল পূর্বশর্ত, দেশব্যাপী দৌড় ও বক্সিং খেলার মাধ্যমে যোগ্যতা উত্তরোত্তর বাড়ানো হতো। দ্রুততা ও সহনশীলতা বাড়াতে কাছাকাছি পাহাড়ি এলাকায় উঠা- নামা করানো হতো এবং আক্রমণ কোর্স করানো হতো যার মধ্যে সম্পূর্ণ যন্ত্রপাতি ও অস্ত্রসস্ত্রসহ একটি জিপ - লাইনের সাহায্যে লচ আর্কাইগ (একটি লেক) পাড় হওয়াও অন্তর্ভুক্ত ছিল । প্রশিক্ষণ দিবারাত্রি চালু থাকতো যেমন নদী পাড়াপাড়,পর্বতারোহণ , অস্ত্র প্রশিক্ষণ, খালি হাতে লড়াই, মানচিত্র পঠন, ছোট জলযানে অভিযান প্রভৃতি পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত ছিল।
৩০ টি স্বতন্ত্র দল ও ৪টি এসল্ট বিগ্রেডের সাহায্যে যুদ্ধক্ষমতা অর্জন করে কমান্ডোরা আর্কটিক সার্কেল থেকে ইউরোপ পর্যন্ত এবং মেডিটারেনিয়ান ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে দক্ষিণ- পূর্ব এশিয়া পর্যন্ত সেবা প্রদান করছিল । সমুদ্রগামী ছোট দলের অভিযান থেকে নিয়ে ছত্রীসেনার বিগ্রেড অবতরণের মাধ্যমে মিত্রবাহিনীর আক্রমণ এশিয়া ও ইউরোপে বিস্তৃত করা পর্যন্ত এদের অভিযানের পরিক্রমা বিস্তৃত ছিল। যারা কমান্ডো ছিল তাদের দ্বারাই মূলত আজকের বিশেষ বাহিনীগুলো সৃষ্ট যেমন - প্যারাসুট রেজিমেন্ট ,স্পেশাল এয়ার সার্ভিস(এসএএস) ,স্পেশাল বোট সার্ভিস । অন্যান্য স্থানে এই কমান্ডো দেরকে ব্যাপকভাবে অনুকরণ করা হয়েছে । যেমন - ফ্রেঞ্চ ন্যাভাল কমান্ডোস, ডাচ কর্পস কমান্ডোট্রোপেন, বেলজিয়ান প্যারাকমান্ডো বিগ্রেড, ইউনাইটেড স্টেটস আর্মি রেঞ্জার্স , ইউনাইটেড স্টেটস মেরিন রেইডার্স এরা সবাই কিছুমাত্রা পর্যন্ত ব্রিটিশ কমান্ডো দ্বারা প্ররোচিত হয়েছে । [১৫] [১৬] [১৭]
লেফটেন্যান্ট ডেভিড স্টারলিং
সম্পাদনা১৯৪১ সালে প্রথম আধুনিক বিশেষ বাহিনী গঠিত হয় যা "স্পেশাল এয়ার সার্ভিস" সংক্ষেপে "এসএএস " নামে পরিচিত ছিল, লেফটেন্যান্ট ডেভিড স্টারলিং এর ধারণা ও পরিকল্পনা মোতাবেক। [১৮] ১৯৪০ এর জুনে তিনি ৮ নং (গার্ড)কমান্ডো তে (যা পরবর্তীতে "লেফোর্স" নামে নামকরণ করা হয়) স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেন। লেফোর্স ভেঙে যাওয়ার পরে, স্টারলিং প্রত্যয়ী ছিলেন যে , যুদ্ধের যান্ত্রিক প্রকৃতি অনুযায়ী অল্প সংখ্যক উচ্চ প্রশিক্ষিত যোদ্ধাদল আকস্মিকতার সুবিধা নিয়ে সম্পূর্ণ প্লাটুনের চেয়ে শত্রুপক্ষের যুদ্ধক্ষমতার বেশি ক্ষতিসাধন করতে পারে ৷তার অভিপ্রায় ছিল উচ্চ প্রশিক্ষিত ছোট দল যারা শত্রুদের অভ্যন্তরে প্যারাসুটের সাহায্যে অবতরণ করে তথ্য সংগ্রহ , শত্রুর বিমানে আক্রমণ ও খাদ্য সরবরাহ ও সেনা সরবরাহের রাস্তা ধ্বংস করবে । মধ্যপ্রাচ্যের জেনারেল ক্লড অচিনলেক এর সঙ্গে সি-ইন-সি পরামর্শসভার পর তার পরিকল্পনা আর্মি হাই কমান্ড কর্তৃক অনুমোদিত হয় ।
প্রাথমিক পর্যায়ে ৫ জন অফিসার ও ৬০ টি ভিন্ন পদ নিয়ে দলটি গঠিত হয় [১৯] নীলনদের পাশে ক্যাব্রিট ক্যাম্পে এসএএসের 'এল ডিটাচমেন্ট' ব্যাপক ট্রেনিংয়ের পর পশ্চিম মরুভূমিতে প্রথম অভিযান পরিচালনা করে । পরপর বেশকিছু সফল অভিযানের পর স্টারলিং -এর দূরদর্শিতা প্রমাণিত হয়। ১৯৪২ সালে এসএএস বোয়েরেট আক্রমণ করে । এলআরডিজি(লং রেঞ্জ ডেজার্ট গ্রুপ,ব্রিটিশ আর্মি) দ্বারা পরিবাহিত হয়ে তারা বন্দর , পেট্রোল ট্যাংক ও গুদাম ব্যবস্থাপনার ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে। সীমিত সাফল্যের সাথে মার্চে বেনগাজি বন্দরে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে,তবে এবার তারা আল-বারকাতে ১৫টি বিমানের ক্ষতিসাধন করতে সমর্থ হয় । [২০] ১৯৪২ এর জুনে ক্রেটের এয়ারফিল্ড যথা হেরাকলিয়ন,কাস্টেলি, টিম্পাকি ও মালেমে হামলায় ব্যাপক ক্ষতিসাধিত হয় এবং ফুকা ও মারশা ম্যাট্রুহ এয়ারফিল্ড হামলায় ৩০ টি বিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। [২১]
চিন্ডিটস
সম্পাদনাবার্মা অভিযানে, চিন্ডিটস,যাদের দূরপাল্লার অনুপ্রবেশকারী দলকে জাপানিজ রেখার গভীরে অবস্থিত ঘাঁটি থেকে পেছন থেকে কার্যক্রম পরিচালনার প্রশিক্ষণ দেয়া হত, তারা কমান্ডো(লিভারপুলের কিংস রেজিমেন্ট,১৪২ কমান্ডো কোম্পানি) ও গুর্খা দ্বারা গঠিত হয়েছিল । তাদের জঙ্গলের দক্ষতা যা যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে ব্রিটিশদের বিভিন্ন বিশেষ অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে , বার্মার জঙ্গলে জাপানিদের সঙ্গে লড়াইয়ের পর বহু প্রাণক্ষয়ের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছিল ।
দ্য কোম্পানি অভ চ্যুজেন ইমরটালস্
সম্পাদনা১৯৪১ সালের এপ্রিল-মে তে জার্মানির গ্রিস দখলের পর তাৎক্ষণিকভাবে ফ্রিস সরকার মিশরে পলায়ন করে এবং নির্বাসনে থাকাকালেই সেনাবাহিনী প্রস্তুত করতে শুরু করে। এয়ার ফোর্সের লে. কর্ণেল গি. আলেক্সান্ড্রিয়াস প্রস্তাব দেন ব্রিটিশ এসএএসের মতো একটি আর্মি প্রস্তুত করতে । ১৯৪২ সালের আগস্টে ২০০ সেনা নিয়ে ক্যাভেলরি মেজর এন্টনিওস স্টেফানাকিসের নেতৃত্বে ফিলিস্তিনে দ্য কোম্পানি অভ চ্যুজেন ইমরট্যালস্ (গ্রিক - Λόχος Επιλέκτων Αθανάτων ) তৈরি হয়। ১৯৪২ সালে এদের স্যাক্রিড ব্যান্ড নামে পুননামকরণ করা হয় ।ব্রিটিশ এসএএস রেজিমেন্টের কমান্ডার লে. কর্ণেল ডেভিড স্টারলিং এর প্রগাঢ় সহযোগিতার মাধ্যমে দলটি মিশরের ক্যাব্রিটে এসএএসের ঘাঁটিতে স্থানান্তরিত হয় এবং নতুন ভূমিকায় এদের ট্রেনিং গ্রহণ শুরু করে। ব্রিটিশদের নির্দেশনায় এ বিশেষ দলটি এসএএসের সঙ্গে পশ্চিম মরুভূমিতে ও আজিয়ানের অভিযানে লড়াইয়ে অংশ নেয়।
অস্ট্রেলিয়া
সম্পাদনাব্রিটিশদের পরামর্শ মোতাবেক অস্ট্রেলিয়া তাদের বিশেষ বাহিনী তৈরি করা শুরু করে [২২] গঠিত প্রথম দলটি ছিল স্বাধীন কোম্পানী ,যাদের প্রশিক্ষণ ১৯৪১ এর গোড়ার দিকে ব্রিটিশ ইন্সট্রাকটরের অভিভাবকত্বে ভিক্টোরিয়ার উইলসন্স প্রমণ্টরিতে শুরু হয়। ১৭ জন অফিসার ও ২৫৬ জন সেনা নিয়ে সৃষ্ট ইন্ডিপেন্ডেন্ট কোম্পানির দলটিকে একটি 'পশ্চাৎধাবন(Stay behind) ' দল হিসেবে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়,এমন ভূমিকায় যাতে করে তাদের পরবর্তীতে ব্যবহার করা যায় যেমন জাপানের বিরূদ্ধে ১৯৪২-৪৩ সালে দক্ষিণ-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে, বিশেষত তিমুর ও নিউ গিনির গেরিলা আক্রমণের সময়৷ [২৩] ১৯৪৩ ক্যাভেলরি রেজিমেন্টের আওতায় এনে সমন্বিত করার আগে প্রায় এরকম ৮টি ইনডিপেন্ডেন্ট রেজিমেন্ট গড়ে ওঠে ,যাদের পুনঃসংগঠনের মাধ্যমে কমান্ডো রেজিমেন্ট করে ক্যাভালরি কমান্ডো রেজিমেন্টে রূপান্তরিত করা হয় । এ কাঠামোর মাধ্যমে সব মিলিয়ে ১১টি কমান্ডো স্কোয়াড্রন গড়ে ওঠে।
তারা স্বাধীনভাবে কার্যক্রম অব্যাহত রাখে ,যুদ্ধের পরবর্তী ধাপগুলিতে তাদের প্রায়ই বিগ্রেড পর্যায়ে দায়িত্ব আরোপ করা হত, নিউ গিনি , বোগেনভিল বা বোর্ণিও তে যুদ্ধক্ষেত্রে নিয়ে যাওয়া হতো, যেখানে তাদের দূরপাল্লার নজরদারি(reconnaissance) বা সৈন্যদলের প্রান্তদেশ রক্ষণাবেক্ষণে নিয়োজিত করা হতো। [২৪] এসব ইউনিটের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ানরা যেড স্পেশাল ইউনিট ও এম স্পেশাল ইউনিট গড়ে তোলে । এম স্পেশাল ইউনিটকে ব্যাপকভাবে কৌশলগত তথ্য সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত করা হয়েছিল ,যেখানে যেড স্পেশাল ইউনিট সরাসরি আক্রমণ অভিযান পরিচালনা করত। এদের উল্লেখযোগ্য অভিযানের মধ্যে রয়েছে 'অপারেশন জেউইক ' যাতে ১৯৪৩ সালে সিঙ্গাপুরের বন্দরে বেশ কিছু জাপানী জাহাজ ডুবানো অন্তর্ভুক্ত। ১৯৪৪ সালে 'অপারেশন রিমাউ ' নামে সিঙ্গাপুরে দ্বিতীয় হামলা ব্যর্থ হয়।
যুক্তরাষ্ট্র
সম্পাদনাঅফিস অভ স্ট্র্যাটেজিক সার্ভিসেস (কৌশলগত সেবা দপ্তর)
সম্পাদনাযুক্তরাষ্ট্র দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মেডেল অভ অনার প্রাপ্ত উইলিয়াম জে. ডনোভানের অধীনে অফিস অভ স্ট্র্যাটেজিক সার্ভিসেস(কৌশলগত সেবা দপ্তর) বা ওএসএস চালু করে । এটিই ছিল সিআইএ এর পূর্বসূরি ও বুদ্ধিবৃত্তিক ও বিশেষ উভয় অভিযানের জন্য দায়ী। সিআইএ-এর এলিট স্পেশাল একটিভিটি ডিভিশন হচ্ছে সরাসরি ওএসএসের বংশধর । [২৫]
মেরিন রেইডারস
সম্পাদনা১৯৪২ এর ১৬ ফেব্রুয়ারিতে ইউএস মেরিন কর্পস সমুদ্রসেনার একটি ব্যাটালিয়ন বিশেষ উদ্দেশ্যে সক্রিয় করে যেমন সৈকতের প্রান্তসীমা রক্ষা ও অন্যান্য বিশেষ অভিযান পরিচালনা । ব্যাটালিয়নটি ইউএসের প্রথম বিশেষ অভিযান পরিচালনা বাহিনী হয়ে ওঠে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের "রেইডার" দের জন্য এদের নাম এডমিরাল চেস্টার নিমিতজ এর অনুরোধে মেরিন রেইডার বলে পরিচিত হয় ।
ইউনাইটেড স্টেটস আর্মি রেঞ্জার
সম্পাদনা১৯৪২ সালের মাঝামাঝিতে ইউএস আর্মির মেজর জেনারেল লুসিয়ান টাসকট, ব্রিটিশ আর্মির সঙ্গে মৈত্রী সংযোগ কর্মকর্তা একটি প্রস্তাব জেনারেল জর্জ মার্শালকে দেন যে, ব্রিটিশ কমান্ডোদের মত একটি আমেরিকান দল গঠিত হতে পারে ,যা ইউনাইটেড স্টেটস আর্মি রেঞ্জারসের উৎপত্তি ঘটায় ।
ফার্স্ট স্পেশাল সার্ভিস ফোর্স
সম্পাদনানরওয়েতে অভিযান পরিচালনার জন্য আমেরিকা ও কানাডা মিলে একটি অন্তর্ঘাতমূলক স্কি দল ফার্স্ট স্পেশাল সার্ভিস ফোর্স তৈরি করে। পরবর্তিতে "ডেভিলস বিগ্রেড " (হতভম্ব জার্মান সেনারা "কালো শয়তান" ডাকত) নামে পরিচিত এ দলটিকে ফ্রান্স, ইতালি ও এলুশ্যন দ্বীপপুঞ্জে অধিকৃত অঞ্চলে পাঠানো হতো ।
মেরিল'স মারাউডারস
সম্পাদনামেরিল'স মারাউডারদের চিন্ডিটদের নক্সাতে তৈরি করা হয় এবং তারা বার্মাতে একই ধনের কার্যক্রম পরিচালনা করত। ১৯৪৩ এর নভেম্বরের শেষদিকে ইউএসের সিক্সথ আর্মির তৎকালীন কমান্ডিং জেনারেল, লে. জেনারেল ওয়াল্টার ক্রুগারের ব্যক্তিগত নিয়ন্ত্রণে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের যুদ্ধক্ষেত্রে হামলা ও নজরদারি পরিচালনা করতে আলামো স্কাউট(সিক্সথ আর্মি স্পেশাল রিকনস্যান্স ইউনিট) গঠিত হয়। তিনি চেয়েছিলেন আলামো স্কাউটেরা, যারা মূলত উচ্চ প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক ছোট দল, যারা শত্রু রেখার পেছন থেকে ষষ্ঠ আর্মির স্থল অভিযান পরিচালনার পূর্বে তথ্য সংগ্রহ ও কৌশলগত পরিদর্শন করে তথ্য সরবরাহ করবে।
স্পেশাল ফোর্সেস ট্যাব
সম্পাদনা১৯৮৩ সালে ইউএস সরকার স্পেশাল ফোর্সেস ট্যাব চালু করে। পরবর্তীতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, নির্দিষ্ট কিছু দলের যেমন ডেভিল'স বিগ্রেড , আলামো স্কাউট এবং ওএসএসের যেসব সেনারা ১৯৫৫ এর পূর্বে কমপক্ষে ১২০ দিন যুদ্ধক্ষেত্রে কাটিয়েছে তাদের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অবদান রাখার জন্য স্পেশাল ফোর্সেস ট্যাব পাবে তাদেরকে বর্তমানের ইউএস ও কানাডিয়ান (ডেভিল'স বিগ্রেডের মাধ্যমে) বিশেষ বাহিনীর জাত্যংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে ।
অক্ষশক্তি
সম্পাদনাঅক্ষশক্তি ব্রিটিশদের মত একই পাল্লায় বিশেষ বাহিনীর নীতি অবলম্বন করেনি।
জার্মান
সম্পাদনাজার্মানের ব্র্যান্ডেডবার্গার রেজিমেন্ট তাদের গোয়েন্দা সংস্থা এবওয়ের কর্তৃক ১৯৩৯ সালে ফল ওয়েইস ও ১৯৪০ ও ১৯৪১ সালে যথাক্রমে ফল জেলব ও বার্বারোসা অভিযানের দূরপাল্লার নজরদারি ও অনুপ্রবেশ পরিচালনার জন্য একটি বিশেষ বাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় ।
পরবর্তীতে যুদ্ধের সময় ওটো স্করজেনি দ্বারা পরিচালিত ৫০২ তম এসএস জ্যাগার ব্যাটালিয়ন মিত্র বাহিনীর বহরকে যুদ্ধক্ষেত্র হতে অন্যত্র পরিচালিত করে মিত্র বাহিনীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। এদের কিছু লোক আমেরিকানদের দ্বারা ধৃত হয় এবং একটি গুজব ছড়ায় যে স্করজেনি প্যারিসে জেনারেল ডয়িট আইজেনহাওয়ার কে হত্যা বা ধরার জন্য একটি হামলা করতে যাচ্ছে। যদিও এটি মিথ্যা ছিল , তবুও আইজেনহাওয়ারকে মূলঘাঁটিতে বেশ কিছুদিন আটকে থাকতে হয় এবং স্করজেনিকে "ইউরোপের সবচেয়ে ভয়ংকর লোক " হিসেবে নামকরণ করা হয়েছিল।
ইতালি
সম্পাদনাইতালির ডেসিগলা ফ্লোত্তিগলা মাস মেডিটেরিনিয়ানে ব্রিটিশ জাহাজসমূহ ডুবানো ও ক্ষতিগ্রস্ত করার দ্বায়িত্বে ছিল। এছাড়া আরও বিশেষ বাহিনী ছিল যেমন এ.ডি.আর.এ ( আরডিতি ডিস্ট্রুত্তরি রেজিয়া এরোনোতিকা ) । এ রেজিমেন্টটি ১৯৪৩ সালে উত্তর আফ্রিকাতে মিত্র বাহিনীর বিমানঘাঁটি ও রেললাইন আক্রমণ করত ৷ একটি অভিযানে তারা ২৫ টি বি-১৭ ধ্বংসে সক্ষম হয়।
জাপান
সম্পাদনা১৯৪২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সুমাত্রার প্যালেম্ব্যাং -এর যুদ্ধে যা নেদারল্যান্ডসের ইস্ট ইন্ডিজের অন্তর্ভুক্ত , রাজকীয় জাপানি আর্মি প্রথম ছত্রীসেনা অবতরণ করে । ৪২৫ জন সেনা নিয়ে গঠিত ফার্স্ট প্যারাশ্যুট রেইডিং রেজিমেন্টের অভিযানটি ছিল সুপরিকল্পিত। তারা প্যালেম্ব্যাং বিমানঘাঁটি দখল করে অন্যদিকে সেকেন্ড প্যারাশ্যুট রেইডিং রেজিমেন্ট শহর ও গুরুত্বপূর্ণ তেল শোধনাগার দখল করে । পরবর্তীতে বার্মা অভিযানেও ছত্রীসেনা ব্যবহারের হয় ।৪টা টাইপ-৯৫ হা-গো হালকা কামান নিয়ে ফার্স্ট গ্লাইডার ট্যাংক ট্রুপ ১৯৪৩ সালে গঠিত হয়। জাপানের কিয়ুশু তে অবস্থিত জাপানি বিমানসেনাদের মূল ঘাঁটি কারাসেহারা বিমানবন্দরে একটি প্রথম শ্রেনির হামলাকারী দল, "তেইশিন সুদান" নাম নিয়ে প্যারাট্রুপ বিগ্রেড গুলো সংঘবদ্ধ হয় । জাপানের কিয়ুশু তে অবস্থিত জাপানি বিমানসেনাদের মূল ঘাঁটি কারাসেহারা বিমানবন্দরে একটি প্রথম শ্রেনির হামলাকারী দল, "তেইশিন সুদান" নাম নিয়ে প্যারাট্রুপ বিগ্রেড গুলো সংঘবদ্ধ হয় ।
যাইহোক ,যখন মিত্রশক্তি ও অন্যান্য শক্তিও একই ধরনের বায়ুবাহিত দল তৈরি করে ,জাপানি বাহিনীগুলো সামঞ্জস্যহীনভাবে উচ্চ মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে এবং বিস্তৃত ও ব্যয়বহুল প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সেনা হারানোর ফলে তাদের কার্যক্রম সর্বাধিক সংকটপূর্ণ যুদ্ধক্ষেত্রে সীমিত হয়ে পড়ে । ফিলিপাইন অভিযানে সাউদওয়েস্টার্ন এক্সপিডিশনারি আর্মির নিয়ন্ত্রণে মেজর জেনারেল রিকিচি সুকাডার অধীনে "তেইশিন সুদান" এর ২টি রেজিমেন্ট মিলে ফার্স্ট রেইডিং গ্রুপ তৈরি করা হয় । যদিও একটি ডিভিশন হিসেবে গড়ে তোলা হয় ,কিন্তু এদের সক্ষমতা ছিল আরো কম, যেমন ষষ্ঠ রেজিমেন্টের লোকবল ছিল সাধারণ আর্মির একটি ব্যাটালিয়নের মতো এবং তাদের যেকোনো ধরনের আর্টিলারি বা সাজোঁয়া যানের অভাব ছিল এবং সরঞ্জাম সরবরাহের জন্য তাদের অন্য দলের উপর নির্ভর করতে হতো । এমনকি তাদের সেনারাও সবাই প্যারাশ্যুট প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ছিল না যদিও চলাচলের জন্য বিমানের ওপর নির্ভর করতো।
প্রায় ৭৫০জন সেনা, মূলত দ্বিতীয় আক্রমণ বিগ্রেডের, ৬ ডিসেম্বর ১৯৪৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানঘাঁটি লুজন ও লেইটে হামলার জন্য আদিষ্ট হয়। তারা কেআই -৫৭ বিমান ব্যবহার করে অবতরণের চেষ্টা করে কিন্তু বেশিরভাগই গুলিবিদ্ধ হয়ে ধ্বংস হয় ।৩০০ কমান্ডো যেভাবে হোক, লেইটের বুরাওয়েনে নামতে পারে এবং সম্পূর্ণ শেষ হয়ে যাবার পূর্বে বেশকিছু বিমান ধ্বংস করে এবং ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায় ।
ফিনল্যান্ড
সম্পাদনাফিনিশ আর্মি ও বর্ডার গার্ড মিলে "সিসসি " ফোর্স যা মূলত দূরপাল্লার নজরদারি দল তৈরি করে । এটি শুধুমাত্র স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য উন্মুক্ত ছিল এবং এরা শত্রু রেখার পেছনে থেকে ছোট ছোট দলে কার্যক্রম পরিচালনা করত। এরা তথ্য সংগ্রহ এবং হামলা বিশেষত শত্রুদের সাপ্লাই ঘাঁটি বা অন্যান্য কৌশলগত অবস্থানের ওপর ; উভয়টিই পরিচালনা করত। এগুলো উচ্চমাত্রায় কার্যকর ছিল । ইলোম্যান্টসির যুদ্ধে সোভিয়েত সরবরাহ ব্যবস্থা এমনভাবে এক স্থানে এসে থেমে গিয়েছিল যে তারা তাদের বৃহৎ সংখ্যক গোলন্দাজ বাহিনীকে ফিনিশ গোলন্দাজ বাহিনীর বিরুদ্ধে কাজেই লাগাতে পারছিল না। এসব অভিযানের প্রতি রাজনৈতিক স্পর্শকাতরতার জন্য এসব অভিযানের ঘটনা গোপনীয় হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়; স্বতন্ত্র সৈন্যরা এসব গোপনীয়তা সঙ্গে নিয়েই কবরে চলে যেত । এ দলের এক বিখ্যাত সেনানায়ক ছিলেন লৌরি টরনি যিনি পরবর্তীতে ইউএস আর্মিতে যোগাদান করে ইউএস সেনাদের বিশেষ অভিযানের প্রশিক্ষণ দেন ।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ বাহিনী
সম্পাদনাবাংলাদেশের মুক্তি বাহিনী হচ্ছে গেরিলা প্রতিরোধ আন্দোলন যা সামরিক ,আধা সামরিক ও বেসামরিক জনগণের সাহায্যে স্বাধীনতা যুদ্ধেগড়ে ওঠে যা পরবর্তীতে পূর্ব পাকিস্তানকে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে রূপান্তরিত করে। [২৬] [২৭]
১৯৭১ সালের ৭ ই মার্চ শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে সর্বাত্মক সংগ্রামের প্রস্তুতি নিতে ডাক দেন। [২৮] পরবর্তীতে যখন প্রতিরোধ প্রদর্শনী শুরু হয় তখন আর্মি " অপারেশন সার্চলাইটের " মাধ্যমে পূর্ণ মাত্রায় প্রতিদান দিতে থাকে যা ১৯৭১ সালের মে পর্যন্ত চলতে থাকে। [২৮]
১৯৭১ সালের এপ্রিলে প্রাদেশিক সরকার কর্তৃক প্রতিরোধের একটি আনুষ্ঠানিক সেনানেতৃত্ব গড়ে তোলা হয়। মিলিটারি কাউন্সিলের প্রধান ছিলেন এম.এ.জি. ওসমানী[২৯] এবং এতে ১১ সেক্টর কমান্ডার ছিলেন ।[৩০] ১৯৭১ সালের ৪ঠা এপ্রিলে বাংলাদেশ আর্মড ফোর্সেস গঠিত হয়। এতে নিয়মিত বাহিনীর পাশাপাশি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস এবং বেসামরিক জনগণের মাধ্যমে গঠিত গণবাহিনী অন্তর্ভুক্ত হয় । [৩১]
মুক্তিবাহিনীর সবচেয়ে বিখ্যাত দলগুলোর মধ্যে ছিল মেজর জিয়াউর রহমানের "যেড ফোর্স" ,মেজর খালেদ মোশাররফের "কে ফোর্স", কেএম শফিউল্লাহর " এস ফোর্স" । আওয়ামীলীগের ছাত্রনেতারা কিছু মিলিশিয়া বাহিনী গঠন করে যেমন মুজিব বাহিনী, কাদের বাহিনী ও হেমায়েত বাহিনী। [৩০] এছাড়াও কমরেড মনি সিং পরিচালিত কমিউনিস্ট পার্টি অভ বাংলাদেশ ও ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিও বিভিন্ন ব্যাটালিয়ন পরিচালিত করে। [৩২]
গেরিলা যুদ্ধের কৌশল অবলম্বন করে মুক্তিযোদ্ধারা দেশের গ্রাম্য এলাকা সমূহে নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করেছিল।ফলে "ওৎ পেতে আঘাত(ambush) " এবং "অন্তর্ঘাত(sabotage ) " এর মাধ্যমে সফল অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি বাংলাদেশ নেভী ও বাংলাদেশ এয়ার ফোর্স গঠিত হয়। [৩৩] মুক্তিবাহিনীরা নিয়মিত বাহিনীর থেকে প্রশিক্ষণ নিত,যেখানে পূর্ব ও উত্তরপূর্ব অঞ্চলগুলোর মানুষের বাঙ্গালি মানুষের সঙ্গে নৃতাত্ত্বিক ও ভাষাগত সাদৃশ্য ছিল। [৩৪] যুদ্ধের সময় মুক্তিবাহিনী বাংলাদেশের মিত্র বাহিনীর অংশ হয়ে ওঠে।[৩৫] ১৯৭১ এর ডিসেম্বরে ঢাকা ও অন্যান্য শহর স্বাধীন করতে ও পাকিস্তান আর্মির আত্মসমর্পণ নিশ্চিত করতে এটিই করণীয় ছিল । [৩৫][৩৬]
১৯৭১ সালের জুনে জাতিসংঘ পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য একটি দল প্রেরণ করে। পশ্চিম পাকিস্তানের মিডিয়া সেল একটি সংবাদ প্রচার করছিল যে পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল। এমতাবস্থায় মুক্তিবাহিনীর একজন সেক্টর কমান্ডার খালেদ মোশাররফ, একটি কমান্ডো দল পাঠানোর পরিকল্পনা করেন।এদের লক্ষ্য ছিল কমান্ডো অভিযানের মাধ্যমে ঢাকাকে অস্থিতিশীল করে তোলা। দলটির মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল এটা প্রদর্শন করা যে - পরিস্থিতি প্রকৃতপক্ষে স্বাভাবিক নয়।তার ওপর পাকিস্তান সে সময় বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে আর্থিক অনুদান পাওয়ার আশা করছিল যা দ্বারা অস্ত্র কেনা হতো ।তাই দলটির পরিকল্পনা ছিল বিশ্ব ব্যাংকের মিশনের কর্মকর্তাদের পরিস্থিতি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা প্রদান এবং আর্থিক অনুদান বন্ধকরণ ।[৩৭] আরেকজন সেক্টর কমান্ডার এটিএম হায়দার কে নিয়ে খালেদ মোশাররফ ক্র্যাক প্লাটুনগঠন করেন । ক্র্যাক প্লাটুনের প্রাথমিক সদস্য সংখ্যা ছিল ১৭ জন। কমান্ডোরা সেসময় মেলাঘর ক্যাম্পে ট্রেনিং নিচ্ছিল।[৩৮] মেলাঘর ক্যাম্প থেকে ক্র্যাক প্লাটুনের কমান্ডোরা ৪ জুন ঢাকায় প্রবেশ করে ও ৫ জুন গেরিলা আক্রমণ শুরু করে ।[৩৭] পরবর্তীতে কমান্ডোর সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং তারা বিভক্ত হয়ে ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করতে থাকে।[৩৯] ক্র্যাক প্লাটুনের মৌলিক উদ্দেশ্য ছিল মুক্তিবাহিনীর সামর্থ্য প্রদর্শন এবং পাকিস্তানি আর্মি ও তাদের সাহায্যকারীদেরকে আতঙ্কিত করা। আরেকটি মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জানানো যে পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয়। কমান্ডো দল ঢাকার মানুষদের অনুপ্রানিত করারও লক্ষ্য স্থির করেছিল যারা প্রায়শই অত্যাচার ও হত্যার শিকার হতো । এ উদ্দেশ্যগুলি ক্র্যাক প্লাটুনের দ্বারা সফলভাবে অর্জিত হয়েছিল। বিশ্বব্যাংক তাদের প্রতিবেদনে স্পষ্টরূপে উল্লেখ করেছিল যে ঢাকাতে বিপজ্জনক পরিস্থিতির প্রাদুর্ভাব রয়েছে । বিশ্বব্যাংকের মিশন তাদের প্রতিবেদনে এ সুপারিশ করে পূর্ব পাকিস্তানে যেন দ্রুত সামরিক শাসনব্যবস্থা সমাপ্ত হয় । [৪০] ক্র্যাক প্লাটুন বেশকিছু সফল ও গুরুত্বপূর্ণ অভিযান পরিচালনা করে। তারা ১৯৭১ সালে ঢাকায় প্রবেশ করে পৃথক হয় এবং ঢাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার ক্ষতিসাধন করে যার ফলে ঢাকার পাকিস্তানি আর্মি ও সামরিক প্রশাসন সমস্যার সম্মুখীন হয় । পাকিস্তানি আর্মির জন্য ঢাকার চাইনিজ রেস্তোরাঁগুলো প্রায় একপ্রকার নিষিদ্ধই ছিল । [৪১]
আধুনিক বিশেষ বাহিনী
সম্পাদনাএডমিরাল উইলিয়াম এইচ ম্যার্যাভেন, ইউএস স্পেশাল অপারেশন কমান্ডের প্রাক্তন নবম কমান্ডিং অফিসার ২ প্রকার পন্থার কথা ২০১২ সালের ইউএস সিনেট কমিটি অন আর্মড সার্ভিসেস এর এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেন - " প্রত্যক্ষ পন্থার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে প্রযুক্তিগতভাবে সমৃদ্ধ প্রাণঘাতি ছোট দল, তথ্যের প্রতি মনোযোগী এবং আন্তঃসংস্থার সহযোগিতা যুদ্ধক্ষেত্রে ডিজিটালভাবে নেটওয়ার্কের দ্বারা সমন্বিত। " অপরপক্ষে "অপ্রত্যক্ষ পন্থার অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে স্বাগতিক দেশের বাহিনীদের শক্তিশালীকরণ, মানবিক সংস্থাসমূহকে সঠিক সাহায্য প্রদান ও মূল লোকবলকে কাজে লাগানো " [৪২] শুধুমাত্র একটি বাহিনীর উপর নির্ভরশীল না হয়ে জাতীয় শক্তির উপাদানগুলো অবশ্যই একই লয়ে ব্যবহার করতে হবে, যেমন বিশেষ বাহিনী, যারা সম্পূর্ণ সেনাবাহিনীকে অপ্রস্তুত অবস্থায় রেখে যায় এবং সেনাবাহিনীর নিয়মতান্ত্রিকতাকে ফাঁপা করে তোলে। [৪৩]
বিংশ শতাব্দীর পরের অর্ধাংশে ও একবিংশ শতাব্দীতে বিশেষ বাহিনী অনন্য উচ্চতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে যখন সরকার বুঝতে শুরু করে যে কিছু সময় বিতর্ক সৃষ্টিকারী প্রচলিত পন্থায় বৃহৎ অভিযান পরিচালনার চেয়ে অজ্ঞাতনামা বিশেষজ্ঞ ছোট দল কর্তৃক আরো ভালভাবে সহজে উদ্দেশ্য অর্জিত হয়। কসোভো ও আফগানিস্তান উভয় স্থানেই বিশেষ বাহিনী স্থানীয় গেরিলা বাহিনী ও বিমানশক্তির মাঝে সংযোগ রক্ষায় ব্যবহৃত হয় ।
সাধারণত গেরিলা যোদ্ধারা শত্রু সেনাদের সরতে বাধ্য করে এমন স্থানে নিয়ে আসত যেখানে তারা দৃশ্যমান হয় এবং আকাশ থেকে হামলা করা যায় ।
তারা যুদ্ধকালিন বা শান্তিকালীন উভয় সময়েই কৃতিত্বের সাথে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। যেমন লাওশিয়ার গৃহযুদ্ধ , বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ,ভিয়েতনাম যুদ্ধ, পর্তুগিজ কলোনি যুদ্ধ , দক্ষিণ আফ্রিকার সীমান্ত যুদ্ধ, ফকল্যাণ্ড যুদ্ধ , উত্তর আয়ারল্যান্ডের সমস্যায়, জাফনা বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলিড্রপে, প্রথম ও দ্বিতীয় গাল্ফ যুদ্ধে , আফগানিস্তানে ,ক্রোয়েশিয়া, কসোভো, বসনিয়া যুদ্ধ ,প্রথম ও দ্বিতীয় চেচেন যুদ্ধ ,ইরানি এম্বাসি দখল(লন্ডন) ,মার্সেইলে এয়ার ফ্রান্স ফ্লাইট ৮৯৬৯ তে ,অপারেশন ডিফেন্সিভ শিল্ড, অপারেশন খুকরি,মস্কো থিয়েটারে বন্দি উদ্ধার সংকটে ,অপারেশন অরচার্ডে , লিমায় জাপানি এম্বাসি বন্দি উদ্ধার সংকটে , শ্রীলঙ্কায় এলটিটিই এর বিরুদ্ধে এবং পাকিস্তানে ওসামা বিন লাদেনের বিরুদ্ধে ।
২০০১-২০০২ তে আফগানিস্তানের তালিবান সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটানোর ক্ষেত্রে ইউএসের আফগানিস্তান হামলায় একাধিক দেশের স্পেশাল ফোর্স জোট গঠন করে এবং মুখ্য ভূমিকা পালন করে। পরবর্তী বিভিন্ন অভিযানে বিশেষ বাহিনী তালিবানদের বিরূদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখে।
যেহেতু বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে নারী-পুরুষ বৈষম্য দূর হচ্ছে ,তাই মহিলারাও বিশেষ বাহিনীর জন্য নির্বাচিত হচ্ছে এবং ২০১৪ সালে নরওয়েতে সম্পূর্ণ নারী দ্বারা গঠিত বিশেষ বাহিনী গঠিত হয়েছে যার নাম - জ্যাগারট্রুপেন(ইংরেজিতে - জ্যাগার ট্রুপ)
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ North Atlantic Treaty Organization (১৩ ডিসেম্বর ২০১৩)। "Allied Joint Doctrine for Special Operations"। NATO Standard Allied Joint Publication। Brussels: NATO Standardization Agency। AJP-3.5 (Edition A, Version 1): 1-1।
- ↑ Richard Bowyer, Dictionary of Military Terms, Bloomsbury Reference (2005-08), ISBN 190497015X / ISBN 9781904970156.
- ↑ Joint Chiefs of Staff (JCS) (16 July 2014). "Special Operations" (PDF). Joint Publication. Washington, DC: Department of Defense. 3–05: GL-11. Archived from the original (PDF) on 1 December 2016. Retrieved 18 September 2016.
- ↑ North Atlantic Treaty Organization (১৭ নভেম্বর ২০১৫)। "NATO Glossary of Terms and Definitions (English and French)" (পিডিএফ)। AAP-06 (Edition 2015)। Brussels: NATO Standardization Agency: 2-S-8। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ Thomas 1983, পৃ. 690।
- ↑ Sawyer, Ralph D. (1993). The Seven Military Classics of Ancient China. Boulder: Westview Press, Inc. pp. 39, 98–9. ISBN 0-8133-1228-0.
- ↑ Christides, Vassilios. "Military Intelligence in Arabo-Byzantine Naval Warfare" (PDF). Institute for Byzantine Studies, Athens. pp. 276–80. Archived from the original (PDF) on 2011-07-25. Retrieved 2011-08-02.
- ↑ "The Corps of Guides – the original Indian Army special forces." ..."The Scouts were not subordinate to any brigade or division but were army troops – deployed at the discretion of the field force commander." (Bellamy 2011, p. 115)
- ↑ John Plaster (2006). The Ultimate Sniper: An Advanced Training Manual For Military and Police Snipers. Paladin Press. p. 5. ISBN 0-87364-704-1.
- ↑ Paolo Morisi (2018). Hell in the Trenches: Austro-Hungarian Stormtroopers and Italian Arditi in the Great War. Helion and Company. p. 240. ISBN 978-1912174980.
- ↑ Haskew, p. 47
- ↑ ক খ গ Haskew, Michael E (2007). Encyclopaedia of Elite Forces in the Second World War. Barnsley: Pen and Sword. pp. 47–8. ISBN 978-1-84415-577-4.
- ↑ Joslen, H. F. (1990). Orders of Battle, Second World War, 1939–1945. London: Naval & Military Press. p. 454. ISBN 1-84342-474-6.
- ↑ ক খ গ Moreman, Timothy Robert (2006). British Commandos 1940–46. London: Osprey Publishing. pp. 37–49. ISBN 1-84176-986-X.
- ↑ "Les fusiliers marins et les commandos". Ministère de la Défense. Retrieved 17 April 2010.
- ↑ "The history of the Commando Foundation". Korps Commandotroepen. Archived from the original on 31 October 2010. Retrieved 17 April 2010.
- ↑ "Centre d'Entraînement de Commandos". Ministère de la Défense,la Composante Terre. Retrieved 17 April 2010.
- ↑ London Gazette Issue 34420 published 23 July 1937, p. 10 of 80
- ↑ Thompson, Leroy (1994). SAS: Great Britain's elite Special Air Service. Zenith Imprint. p. 48. ISBN 0-87938-940-0.
- ↑ Shortt, James; McBride, Angus (1981). The Special Air Service. Osprey Publishing. p. 9. ISBN 0-85045-396-8.
- ↑ Molinari, Andrea (2007). Desert Raiders: Axis and Allied Special Forces 1940–43. Osprey Publishing. p. 75. ISBN 978-1-84603-006-2.
- ↑ Horner 1989, p. 21.
- ↑ Horner 1989, pp. 22–6.
- ↑ Horner 1989, pp. 26.
- ↑ The Office of Strategic Services: America's First Intelligence Agency, Michael Warner, CIA History Staff, Center for the Study of Intelligence, United States Central Intelligence Agency (2000)
- ↑ Alagappa, Muthiah, ed. (2001). Coercion and governance : the declining political role of the military in Asia. Stanford Univ. Press. p. 212. ISBN 0-8047-4227-8.
- ↑ Ahmed, Helal Uddin (2012). "Mukti Bahini". In Islam, Sirajul; Jamal, Ahmed A. (eds.). Banglapedia: National Encyclopedia of Bangladesh (Second ed.). Asiatic Society of Bangladesh.
- ↑ ক খ Abu Md. Delwar Hossain (2012), "Operation Searchlight", in Sirajul Islam and Ahmed A. Jamal (ed.), Banglapedia: National Encyclopedia of Bangladesh (Second ed.), Asiatic Society of Bangladesh
- ↑ Unconventional Warfare in South Asia: Shadow Warriors and Counterinsurgency, Gates and Roy, Routledge, 2016
- ↑ ক খ The Colonel Who Would Not Repent: The Bangladesh War and Its Unquiet Legacy, Salil Tripathi, Yale University Press, 2016, pg 146.
- ↑ South Asian Crisis: India — Pakistan — Bangla Desh, Robert Jackson, Springer, 1972, pgs. 33, 133
- ↑ Communist and Marxist parties of the world, Charles Hobday, Longman, 1986, pg. 228 .
- ↑ Jamal, Ahmed Abdullah (October–December 2008). "Mukti Bahini and the Liberation War of Bangladesh: A Review of Conflicting Views" (PDF). Asian Affairs. Centre for Development Research, Bangladesh. 30 (4). Archived from the original (PDF) on 3 January 2015.
- ↑ Fraser, Bashabi (1 January 2008). Bengal Partition Stories: An Unclosed Chapter. Anthem Press. p. 7. ISBN 9781843312994.
- ↑ ক খ Stanton, Andrea L. (5 January 2012). Cultural Sociology of the Middle East, Asia, and Africa: An Encyclopedia. SAGE. p. 170. ISBN 9781412981767
- ↑ "The battle for Bangladesh". The Daily Star. Retrieved 22 April 2016.
- ↑ ক খ Mosharraf, Khaled (2013). মুক্তিযুদ্ধে ২ নম্বর সেক্টর এবং কে ফোর্স (in Bengali). Prathamā prakāśana. pp. 55–56. ISBN 978-984-90253-2-0.
- ↑ Islam, Zahirul (2013). মুক্তিযুদ্ধে মেজর হায়দার ও তার বিয়োগান্ত বিদায় (in Bengali). Prathamā prakāśana. p. 77. ISBN 978-984-90253-1-3.
- ↑ Islam, Zahirul (2013). মুক্তিযুদ্ধে মেজর হায়দার ও তার বিয়োগান্ত বিদায় (in Bengali). Prathamā prakāśana. p. 78. ISBN 978-984-90253-1-3.
- ↑ "3 Power Plants Bombed By East Pakistan Rebels". Morning Record. 22 July 1971.
- ↑ "Dacca Cafes Bombed". The Spokesman-Review. 25 July 1971.
- ↑ "POSTURE STATEMENT OF ADMIRAL WILLIAM H. McRAVEN, USN COMMANDER, UNITED STATES SPECIAL OPERATIONS COMMAND BEFORE THE 112th CONGRESS SENATE ARMED SERVICES COMMITTEE MARCH 6, 2012" (PDF). United States Special Operations Command. Archived from the original (PDF) on 24 September 2015. Retrieved 3 August 2015.
- ↑ "Special Operations for the 21st Century: Starting Over" (PDF). Association of the United States Army. Archived from the original (PDF) on 23 September 2015. Retrieved 3 August 2015.