থিয়াগো আলকান্তারা

স্পেনীয় ফুটবলার

থিয়াগো আলকান্তারা দো নাসিমেন্তো (জন্ম ১১ এপ্রিল ১৯৯১), সাধারণত থিয়াগো নামে পরিচিত, একজন স্পেনীয় ফুটবলার। থিয়াগো বর্তমানে একজন সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার হিসেবে প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব লিভারপুল খেলেন।

থিয়াগো আলকান্তারা
Thiago Alcântara
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম থিয়াগো আলকান্তারা দো নাসিমেন্তো[১]
জন্ম (1991-04-11) ১১ এপ্রিল ১৯৯১ (বয়স ৩৩)[১]
জন্ম স্থান স্যান পিয়েত্রো ভের্নোতিকো, ইতালি
উচ্চতা ১.৭২ মি (৫ ফু ৮ ইঞ্চি)[২]
মাঠে অবস্থান মিডফিল্ডার
ক্লাবের তথ্য
বর্তমান দল
লিভারপুল
জার্সি নম্বর
যুব পর্যায়
১৯৯৫–১৯৯৬ ফ্লামেঙ্গো
১৯৯৬–২০০০ ইউরেকা
২০০০–২০০১ কেলমে
২০০১–২০০৫ ফ্লামেঙ্গো
২০০৫–২০০৮ বার্সেলোনা
জ্যেষ্ঠ পর্যায়*
বছর দল ম্যাচ (গোল)
২০০৮–২০১১ বার্সেলোনা বি ৫৯ (৩)
২০০৯– বার্সেলোনা ৫৭ (৬)
২০১৩–২০২০ বায়ার্ন মিউনিখ (০)
২০২০– লিভারপুল
জাতীয় দল
২০০৭ স্পেন অনূর্ধ্ব ১৬ (০)
২০০৯–২০০৮ স্পেন অনূর্ধ্ব ১৭ (৫)
২০০৯ স্পেন অনূর্ধ্ব ১৮ (১)
২০০৯–২০১০ স্পেন অনূর্ধ্ব ১৯ ১১ (৪)
২০১০– স্পেন অনূর্ধ্ব ২১ ১৪ (২)
২০১১– স্পেন (০)
* কেবল ঘরোয়া লিগে ক্লাবের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা গণনা করা হয়েছে এবং ১৪ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখ অনুযায়ী সকল তথ্য সঠিক।
‡ জাতীয় দলের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা ১১ অক্টোবর ২০১১ তারিখ অনুযায়ী সঠিক।

ক্লাব ক্যারিয়ার সম্পাদনা

প্রারম্ভিক সময় সম্পাদনা

থিয়াগো ইতালির স্যান পিয়েত্রো ভের্নোতিকো শহরে জন্মগ্রহণ করেন এবং শৈশব কাটান স্পেনে। তার বাবা হলেন প্রাক্তন ব্রাজিলীয় বিশ্বকাপ বিজয়ী মাজিনিও. তিনি ব্রাজিলীয় ক্লাব ফ্লামেঙ্গোর নিচু স্তরের দলের হয়ে খেলতে শুরু করেন। পাঁচ বছর বয়সে তিনি তার বাবার সাথে স্পেনে চলে আসেন এবং গালিসীয় দল ইউরেকায় যোগ দেন। ২০০১ সালে তিনি কেলমের হয়ে খেলেন, যখন তার বাবা এলচের হয়ে খেলছিলেন।[৩][৪] ২০০৫ সালে, দশ বছর বয়সে, তিনি ফ্লামেঙ্গোতে ফিরে আসেন এরপর আবারে স্পেনে চলে যান এবং বার্সেলোনার সাথে চুক্তি সাক্ষর করেন।[৫]

বার্সেলোনা সম্পাদনা

প্রারম্ভিক ক্যারিয়ার সম্পাদনা

২০০৯ সালের ১৭ মে, ১৮ বছর বয়সে মায়োর্কার বিপক্ষে মূল দলের হয়ে অভিষেক হয় থিয়াগোর। খেলার ৬৩তম মিনিটে বদলি হিসেবে নামেন তিনি। ২০১০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি, রেসিং সান্তানদেরের বিপক্ষে খেলায় ৭৬তম মিনিটে ইয়ইয়া তরের বদলি হিসেবে নামেন থিয়াগো এবং বার্সেলোনার হয়ে তার প্রথম গোল করেন।[৬] বার্সেলোনার হয়ে তিনি দ্বিতীয় গোল করেন ২০১১ সালের ৯ এপ্রিল আলমেরিয়ার বিপক্ষে। রিয়াল সোসিয়েদাদের বিপক্ষে তিনি তৃতীয় গোল করেন। ২০১০–১১ মৌসুমে তিনি ১৭টি খেলায় মাঠে নামেন, তিনটি গোল করেন এবং তিনটি গোলে সহায়তা করেন। ২০১১ সালের ২৯ জুন, তিনি বার্সেলোনার সাথে নতুন করে চুক্তিবদ্ধ হন, যার মেয়াদ ২০১৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত।

২০১১–১২ মৌসুম সম্পাদনা

থিয়াগো ২০১১–১২ মৌসুম শুরু করেছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে স্পেনীয় সুপার কাপের প্রথম লেগের মাধ্যমে। খেলার ৫৮তম মিনিটে জাভি হার্নান্দেজের বদলি হিসেবে নামেন তিনি। লা লিগায় বার্সেলোনার প্রথম খেলায় ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে তিনি গোল করেন। খেলায় বার্সেলোনা ৫–০ ব্যবধানে জয় লাভ করে।[৭] ২০১২ সালের ২৯ এপ্রিল, রায়ো ভায়েকানোর বিপক্ষেও তিনি গোল করেন। খেলায় বার্সেলোনা ৭–০ ব্যবধানে জয় লাভ করে।[৮]

বায়ার্ন মিউনিখ সম্পাদনা

২০১৩ সালের ১৪ জুলাই, থিয়াগো জার্মান ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখের সাথে চার বছরের চুক্তি স্বাক্ষর করেন। তার স্থানান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় ২৫ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে।[৯] ২০১৩ সালের ২৭ জুলাই, ডিএফএল সুপার কাপে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে খেলায় থিয়াগোর অভিষেক হয়। খেলায় বায়ার্ন ৪–২ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়।[১০]

আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার সম্পাদনা

যুব দল সম্পাদনা

২০০৮ উয়েফা ইউরোপীয় অনূর্ধ্ব ১৭ চ্যাম্পিয়নশীপে স্পেনের হয়ে অংশগ্রহণ করেন থিয়াগো এবং দলের শিরোপা জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ২০১১ উয়েফা ইউরোপীয় অনূর্ধ্ব ২১ চ্যাম্পিয়নশীপেও তিনি অংশগ্রহণ করেন। প্রতিযোগীতার ফাইনালে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে গোলপোস্টের ৪০ গজ দূর থেকে নেওয়া ফ্রি-কিকে গোল করেন থিয়াগো এবং দলকে ২–০ ব্যবধানের জয় এনে দেন।[১১] তাকে ম্যান অব দ্য ম্যাচ এবং প্রতিযোগিতার সেরা খেলোয়াড় ঘোষণা করা হয়।

২০১৩ সালের ১৮ জুন, ২০১৩ উয়েফা ইউরোপীয়ান অনূর্ধ্ব-২১ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ইতালির বিপক্ষে থিয়াগো হ্যাট্রিক করেন এবং দলকে ৪–২ গোলের জয় এনে দেন। এর মাধ্যমে স্পেন চতুর্থবারের মত এই শিরোপা নিজেদের করে নেয়।[১২][১৩]

সিনিয়র দল সম্পাদনা

২০১১ সালের ১০ আগস্ট, ইতালির বিপক্ষে প্রীতি খেলায় স্পেনের সিনিয়র দলের হয়ে অভিষেক হয় থিয়াগোর। ২০১১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর, স্পেনের হয়ে প্রথম প্রতিযোগিতামূলক খেলায় মাঠে নামেন থিয়াগো। ২০১২ ইউরো বাছাইপর্বের ঐ খেলায় লিশটেনস্টাইনের বিপক্ষে ৬–০ ব্যবধানে জয় লাভ করে স্পেন।

ক্যারিয়ার পরিসংখ্যান সম্পাদনা

ক্লাব সম্পাদনা

২৪ আগস্ট ২০১৩ অনুসারে।[১৪]

ক্লাব মৌসুম লিগ কাপ ইউরোপ অন্যান্য[১৫] মোট
উপস্থিতি গোল উপস্থিতি গোল উপস্থিতি গোল উপস্থিতি গোল উপস্থিতি গোল
বার্সেলোনা বি ২০০৭–০৮
২০০৮–০৯ ২৫ ২৫
২০০৯–১০[১৬] ১৮ ১৮
২০১০–১১ ১১ ১১
মোট ৫৯ ৫৯
বার্সেলোনা ২০০৮–০৯
২০০৯–১০
২০১০–১১ ১২ ১৭
২০১১–১২ ২৭ ৪৫
২০১২–১৩ ২৭ ৩৬
মোট ৬৮ ১৯ ১০ ১০১ ১১
বায়ার্ন মিউনিখ ২০১৩–১৪
মোট
ক্যারিয়ারে সর্বমোট ১২৯ ১০ ১৯ ১০ ১৬২ ১৪

আন্তর্জাতিক সম্পাদনা

১১ অক্টোবর ২০১১ অনুসারে।[১৭]

জাতীয় দল সাল উপস্থিতি গোল
স্পেন ২০১১
২০১২
২০১৩
মোট

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

থিয়াগো ১৯৯৪ ফিফা বিশ্বকাপ জয়ী ব্রাজিলীয় ফুটবলার মাজিনিওর পুত্র। তার মা ভ্যালেরিয়া আলকান্তারা ছিলেন একজন ভলিবল খেলোয়াড়।[১৮] তার ছোট ভাই রাফিনিয়া বর্তমানে বার্সেলোনা দলের সদস্য।[১৯]

সম্মাননা সম্পাদনা

ক্লাব সম্পাদনা

বার্সেলোনা
বায়ার্ন মিউনিখ

স্পেন সম্পাদনা

  • উয়েফা ইউরোপীয় অনূর্ধ্ব-১৭ চ্যাম্পিয়নশীপ: ২০০৮
  • উয়েফা ইউরোপীয় অনূর্ধ্ব-২১ চ্যাম্পিয়নশীপ: ২০১১, ২০১৩

একক সম্পাদনা

  • উয়েফা অনূর্ধ্ব-২১ চ্যাম্পিয়নশিপ গোল্ডেন প্লেয়ার: ২০১৩[২০]
  • উয়েফা অনূর্ধ্ব-২১ চ্যাম্পিয়নশিপ সিলভার বুট: ২০১৩[২১]
  • উয়েফা অনূর্ধ্ব-২১ চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতার সেরা দল: ২০১৩[২০]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "FIFA World Cup Russia 2018: List of Players: Spain" (পিডিএফ)। FIFA। ১৫ জুলাই ২০১৮। পৃষ্ঠা 28। ১১ জুন ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  2. "Thiago Alcântara - Liverpool - UCL"। UEFA। সংগ্রহের তারিখ ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ 
  3. "Patrocinios Kelme"। Kelme official website। ২৮ জুন ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ মার্চ ২০১৩ 
  4. Font, Carles (৩১ জুলাই ২০১১)। "Thiago Alcántara, la nueva perla azulgrana"। Suite101.net। ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ মার্চ ২০১৩ 
  5. "O melhor da Barra na web"। PortalBARRA। সংগ্রহের তারিখ ১ মার্চ ২০১৩ 
  6. "FC Barcelona vs Racing de Santander"। Goal.com। ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১০। ২১ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ মার্চ ২০১৩ 
  7. Gonzalez, Roger (২৯ আগস্ট ২০১১)। "Barcelona 5-0 Villarreal: Messi, Fabregas & Alexis Sanchez all on target as champions cruise to victory"। Goal.com। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ মার্চ ২০১৩ 
  8. Sinanan, Keeghann (২৯ মে ২০১২)। "Rayo Vallecano 0-7 Barcelona: Messi and Pedro both net doubles as Catalan giants romp to resounding victory"। Goal.com। ১৩ আগস্ট ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ মার্চ ২০১৩ 
  9. "Thiago Alcántara sold to Bayern Munich for 25 million euros"। ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা। ১৪ জুলাই ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ৯ অক্টোবর ২০১৩ 
  10. Grohmann, Karolos (২৭ জুলাই ২০১৩)। "Borussia Dortmund 4 Bayern Munich 2: Revenge for Klopp as Reus double earns Super Cup victory in repeat of Champions League final"। ডেইলি মেইল। সংগ্রহের তারিখ ৯ অক্টোবর ২০১৩ 
  11. "Spain win tournament with victory over Switzerland"The Daily Telegraph। ২৭ জুন ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২ মার্চ ২০১৩ 
  12. Magowan, Alistair (১৮ জুন ২০১৩)। "Italy 2 Spain 4"বিবিসি স্পোর্ট। সংগ্রহের তারিখ ৯ অক্টোবর ২০১৩ 
  13. "Thiago's perfect hat-trick secures Euro U-21 triumph for Spain"inside World Soccer। ১৯ জুন ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ৯ অক্টোবর ২০১৩ 
  14. "Transfermarkt player statistics"। Transfermarkt। সংগ্রহের তারিখ ২ মার্চ ২০১৩ 
  15. অন্যান্য এর মধ্যে রয়েছে স্পেনীয় সুপার কাপ, ইউরোপীয়ান সুপার কাপ, ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ ও অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক প্রতিযোগিতা।
  16. ২০১০ সেগুন্দা দিভিশন বি প্লে-অফ সহ (৫ উপস্থিতি, ১ গোল)
  17. "McShane, Paul"। National Football Teams। সংগ্রহের তারিখ ২ মার্চ ২০১৩ 
  18. "Thiago y Jonathan, ADN fútbol"। El Mundo Deportivo। ২১ আগস্ট ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ৩ মার্চ ২০১৩ 
  19. "FC Barcelona Youth A 2009/10"ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা। ২৪ মে ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ মার্চ ২০১৩ 
  20. "Thiago leads all-star squad dominated by Spain"। উয়েফা। ২১ জুন ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ৯ অক্টোবর ২০১৩ 
  21. "Morata wins Golden Boot in Spanish clean sweep"। উয়েফা। ৯ অক্টোবর ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০১৩ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা