ক্লিমেন্ট গিবসন

ইংরেজ ক্রিকেটার

ক্লিমেন্ট হার্বার্ট গিবসন (ইংরেজি: Clement Gibson; জন্ম: ২৩ আগস্ট, ১৯০০ - মৃত্যু: ৩১ ডিসেম্বর, ১৯৭৬) এন্ত্রে রায়োস প্রদেশে জন্মগ্রহণকারী ও আর্জেন্টিনীয় বংশোদ্ভূত বিখ্যাত প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ১৯১৯ থেকে ১৯২৬ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে সাসেক্স দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এছাড়াও, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়এমসিসি দলে খেলেছিলেন তিনি।

ক্লিমেন্ট গিবসন
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামক্লিমেন্ট হার্বার্ট গিবসন
জন্ম(১৯০০-০৮-২৩)২৩ আগস্ট ১৯০০
এন্ত্রে রায়োস প্রদেশ, আর্জেন্টিনা
মৃত্যু৩১ ডিসেম্বর ১৯৭৬(1976-12-31) (বয়স ৭৬)
বুয়েন্স আয়ার্স, আর্জেন্টিনা
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম
ভূমিকাবোলার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯১৯ - ১৯২৬সাসেক্স
১৯২০ - ১৯২১কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়
১৯২২/২৩ - ১৯৩৯মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি)
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৮৪
রানের সংখ্যা ১৩৬৯
ব্যাটিং গড় ১৫.০৪
১০০/৫০ –/৩
সর্বোচ্চ রান ৬৪
বল করেছে ১৭,৬৫২
উইকেট ২৪৯
বোলিং গড় ২৮.৫৪
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৮/৫৭
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৫৩/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৯ জুন ২০১৯

দলে মূলতঃ ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন ক্লিমেন্ট গিবসন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে ডানহাতে কার্যকরী ব্যাটিংশৈলী উপস্থাপন করেছেন তিনি।

শৈশবকাল সম্পাদনা

১৯১৮ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণে কোন প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলা আয়োজন হয়নি। ফলে, উইজডেন কর্তৃপক্ষ সরকারি বিদ্যালয় থেকে আসা অন্য চারজন বোলারের সাথে তাকেও অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননায় ভূষিত করে। তখন তিনি এটন কলেজে ফাস্ট-মিডিয়াম সুইং বোলার হিসেবে খেলতেন।[১] এটনে থাকাকালীন ১৯১৮ ও ১৯১৯ সালে ক্রিকেট একাদশের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন ক্লিমেন্ট গিবসন। বিদ্যালয় ত্যাগ করার পর ১৯১৯ সালে কাউন্টি দলের পক্ষে দুইটি খেলায় অংশ নেন।

এটনে থাকাকালীন বিস্ময়কর রেকর্ডের অধিকারি হন। চার বছর অবস্থানকালে একাদশ দলের সদস্যরূপে ১০.৫০ গড়ে ১২২ উইকেট পেয়েছিলেন। ১৯১৯ সালে লর্ডসের খেলায় ৬/১৮ ও ৩/১২ পেয়েছিলেন। এটন থেকে কেমব্রিজের ক্লেয়ার কলেজে ভর্তি হন।[২] কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে সফলতার সাথে দুই মৌসুম খেলার পর ১৯২১ সালে ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক আর্চি ম্যাকলারেন তাকে শৌখিন খেলোয়াড় নিয়ে গড়া একাদশ দলে অন্তর্ভুক্ত করেন।

নিউজিল্যান্ড গমন সম্পাদনা

কেমব্রিজের পর আর্চি ম্যাকলারেনের নেতৃত্বে মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের সদস্যরূপে ১৯২২-২৩ মৌসুমে অনানুষ্ঠানিক সফরে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে যান।[৩] এ পর্যায়ে তার খেলার ধরন তেমন দর্শনীয় ছিল না। তবে, বেশ ভালো বোলিং করতেন।

এছাড়াও, ম্যাকলারেনের আগ্রহে ১৯২৪-২৫ মৌসুমে আনুষ্ঠানিকভাবে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড গমনের জন্যে আমন্ত্রিত হন। কিন্তু, তিনি তা প্রত্যাখ্যান করে ১৯২৬ সালের গ্রীষ্মে আর্জেন্টিনায় চলে যান। সেখানেই জীবনের বাদ-বাকী সময় অতিবাহিত করেন।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট সম্পাদনা

১৯১৯ থেকে ১৯৩৯ সময়কালীন ক্লিমেন্ট গিবসনের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। তন্মধ্যে, ১৯১৯ থেকে ১৯২৬ পর্যন্ত সাসেক্স, ১৯২০ থেকে ২১ কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ও ১৯২২/২৩ মৌসুম থেকে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) পক্ষে খেলেছেন। তবে, কোন টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ হয়নি তার। দুইবার ক্ষণস্থায়ী তারকা ক্রিকেটারের সুনাম লাভ করেছিলেন।[৩] ১৯১৯ সালের গ্রীষ্মে সাসেক্সের পক্ষে কয়েকটি খেলায় অংশ নেন। ১৯২০ ও ১৯২১ সালের অত্যন্ত শক্তিশালী দল কেমব্রিজের অন্যতম সদস্যের মর্যাদা পেয়েছিলেন। এ পর্যায়ে সি. এস. ম্যারিয়টকে সাথে নিয়ে অবিস্মরণীয় বোলিং জুটি গড়েন।

১৯২১ সালে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল ইংল্যান্ড গমন করে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে উপর্যুপরী আট টেস্টে জয় পাওয়া ওয়ারউইক আর্মস্ট্রংয়ের দল ক্রমশঃ ‘অপরাজেয়’ হয়ে উঠে। তবে, ইস্টবোর্নে সফররত অস্ট্রেলিয়া একাদশ দলের পরাজয়ে অন্যতম প্রধান ভূমিকা রাখেন তিনি। প্রথম ইনিংসে এক উইকেট পান। দ্বিতীয় ইনিংসে ক্লিমেন্ট গিবসন ৬/৬৪ পান।[৪] তন্মধ্যে, ওয়ারেন বার্ডসলিহার্বি কলিন্স - উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানদ্বয় তার শিকারে পরিণত হয়েছিলেন।

১৯২৬ সাল পর্যন্ত মাঝে-মধ্যে সাসেক্সের পক্ষে খেলতেন। সাসেক্সের পক্ষে খেললেও তেমন সফলতা পাননি। তাসত্ত্বেও ঐ সময়ে তিনি বেশ ভালো বোলিং করতেন। ওভালে জ্যাক হবসকে উভয় ইনিংসে পরিষ্কার বোল্ড করেন। ১৯৩৯ সালে এমসিসির পক্ষে সর্বশেষ প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়েছিলেন ক্লিমেন্ট গিবসন।

১৯৩২ সালে দক্ষিণ আমেরিকান দল ইংল্যান্ড গমন করে। সংক্ষিপ্ত সফরে ঐ দলকে নেতৃত্ব দেন ক্লিমেন্ট গিবসন। এ সফরে ছয়টি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলা ছিল|[৫] এছাড়াও, আর্জেন্টিনা সফরে আসা সফরকারী দলের বিপক্ষে আর্জেন্টিনা দলের সদস্যরূপে খেলতেন।

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

চমৎকার ভঙ্গীমায় দৌঁড়ে সহজভাবে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন। চমৎকার নিশানায় করা বলগুলো বেশ দেরীতে সুইং করতো। লেগ স্ট্যাম্প বরাবরে বোলিং করলেও তা অফের দিকে চলে যেতো।

লিনকোনিয়া ও ফাকম্বের প্রথম ব্যারন স্যার হার্বার্ট গিবসনের দ্বিতীয় সন্তান ক্লিমেন্ট গিবসন আর্জেন্টিনায় জন্মগ্রহণ করেন।[২] ৩১ ডিসেম্বর, ১৯৭৬ তারিখে ৭৬ বছর বয়সে বুয়েন্স আয়ার্সে ক্লিমেন্ট গিবসনের দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Clement Gibson"। Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুলাই ২০১৫ 
  2. Burke's Peerage, Baronetage & Knightage, 107th edition, 3 volumes (Wilmington, Delaware, U.S.A.: Burke's Peerage (Genealogical Books) Ltd, 2003), volume 2, page 1543.
  3. "Clement Gibson"। www.cricketarchive.com। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুলাই ২০১৫ 
  4. "Scorecard: England XI v Australians"। www.cricketarchive.com। ২৭ আগস্ট ১৯২১। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুলাই ২০১৫ 
  5. "South Americans in British Isles, 1932"। www.cricketarchive.com। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুলাই ২০১৫ 

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা