বাদশাহ আব্দুল আজিজ বিমান ঘাটি
বাদশাহ আব্দুল আজিজ বিমান ঘাঁটি (আরবি: قاعدة الملك عبد العزيز الجوية) (আইএটিএ: DHA, আইসিএও: OEDR) প্রকৃতপক্ষে রয়েল সৌদি বিমান বাহিনী নিয়ন্ত্রিত একটি সৌদি বিমান ঘাঁটি যা পুর্ববর্তী দাহরান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং দাহরান বিমানক্ষেত্র হিসাবেও পরিচিত। এটি সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ দাহরানে অবস্থিত এবং সৌদি আরবের প্রথম বিমানবন্দর। ১৯৪৫ থেকে ১৯৬২ পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনী (ইউএসএএফ) দ্বারা পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত ছিল [২]। মার্কিন বিমান বাহিনীর মেয়াদ শেষে দাহরান বিমানক্ষেত্রটি হয়ে ওঠে দাহরান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর যা একইসাথে রাজকীয় সৌদি বিমান বাহিনীর বাদশাহ আব্দুল আজিজ বিমানঘাঁটি নামে পরিচিত হয়ে ওঠে। বর্তমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের মাঝের সামরিক সম্পর্কের উৎপত্তি ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিমানবন্দরটির যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে।
বাদশাহ আব্দুল আজিজ বিমান ঘাটি | |||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
قاعدة الملك عبد العزيز الجوية | |||||||||
দাহরান, পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ in সৌদি আরব | |||||||||
![]() | |||||||||
স্থানাঙ্ক | ২৬°১৫′৪৫.২″ উত্তর ৫০°০৯′১১.০″ পূর্ব / ২৬.২৬২৫৫৬° উত্তর ৫০.১৫৩০৫৬° পূর্বস্থানাঙ্ক: ২৬°১৫′৪৫.২″ উত্তর ৫০°০৯′১১.০″ পূর্ব / ২৬.২৬২৫৫৬° উত্তর ৫০.১৫৩০৫৬° পূর্ব | ||||||||
ধরন | বিমানঘাঁটি | ||||||||
সাইটের তথ্য | |||||||||
মালিক | সৌদি আরবের সামরিক বাহিনী | ||||||||
পরিচালক | রয়েল সৌদি বিমান বাহিনী | ||||||||
জনসাধারনের জন্য উন্মুক্ত | ১৯৫০ | ||||||||
অবস্থা | সক্রিয় | ||||||||
সাইটের ইতিহাস | |||||||||
নির্মিত | ১৯৪৫ | ||||||||
ব্যবহারকাল | ১৯৬১-১৯৯৯ ১৯৯১-বর্তমান | ||||||||
রক্ষীসেনা তথ্য | |||||||||
রক্ষীসেনা | রয়েল সৌদি বিমান বাহিনী উইং ৩ এবং ১১ [১] | ||||||||
বিমানঘাঁটি তথ্য | |||||||||
শনাক্তকারী | IATA: DHA, ICAO: OEDR | ||||||||
উচ্চতা | ৮৪ ফুট (২৬ মি) AMSL | ||||||||
|
অবস্থানসম্পাদনা
সৌদি পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশের প্রধান শহরগুলির বিবেচনায় বাদশাহ আব্দুল আজিজ বিমানঘাঁটিটির অবস্থানঃ আল-থুকবা থেকে ৫ কিলোমিটার পশ্চিমে, খোবার থেকে ৫ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে এবং দাম্মাম থেকে ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পুর্বে।
ইতিহাসসম্পাদনা
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, পারস্য উপসাগর ও আরব উপদ্বীপ ছিল মার্কিন এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের মাঝে লেন্ড-লিজ সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি এশিয়ায় অবস্থিত মিত্র বাহিনীর জাপান সাম্রাজ্যের বিপক্ষে সহযোগিতামূলক বাহিনী ও সামরিক সাহায্য সরবরাহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মধ্যবর্তী বিরতি অঞ্চল এবং নৌ-সংযোগ।
প্রাথমিকভাবে সৌদি আরবের অবস্থানগত গুরুত্বের কারণে, ১৯৪৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের লেন্ড-লিজ সহায়তার আওতায় সৌদি আরবকে অন্তর্ভুক্ত করে এবং সহায়তা পাবার ক্ষেত্রে সমগ্র আরব বিশ্বের মাত্র তিনটি দেশের মধ্যে সৌদি আরব একটি ছিল। ১৯৪৪ সালে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ বিভাগ (১৯৪৯ সালে যা নাম পরিবর্তন করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রতিরক্ষা বিভাগ রাখা হয়) সৌদি আরবের দাহরান বা তার কাছাকাছি একটি বিমানঘাঁটি নির্মাণের প্রস্তাব দেয়।
১৯৪৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব দাহরান এয়ার ফিল্ড চুক্তি স্বাক্ষরে সম্মত হয়। এই চুক্তির আওতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আরব-আমেরিকান তেল কোম্পানি (যা পরবর্তীতে আনুষ্ঠানিকভাবে সৌদি আরব তেল কোম্পানি নামে পরিচিত) শহরের নিকটে একটি ছোট বিমান ক্ষেত্র ইংরেজি: air field নির্মাণ করতে পারে। এখানে "বিমান ঘাটি" শব্দটির বিরোধিতা এবং এর পরিবর্তে "বিমান ক্ষেত্র" শব্দটির ব্যবহার প্রকাশ করেছিল সৌদি আরবের সাম্রাজ্যবাদের প্রশ্নে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি সংবেদনশীলতা ও উদ্বেগ। একইসাথে, চুক্তি অনুসারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পরবর্তী তিন বছর বিমানক্ষেত্রটি ব্যবহারের পুর্ণ অধিকার সংরক্ষণ করে এবং যুদ্ধ শেষে পূর্ণ মালিকানা সৌদি আরবের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
বেসামরিকসম্পাদনা
নিকটবর্তী দাম্মাম তৈল খনির মাধ্যমে সমগ্র অঞ্চলের অর্থনৈতিক কাঠামো সুদৃঢ় হতে থাকায় ১৯৫০ সালের পরবর্তীতে দাহরান এয়ারফিল্ড বাণিজ্যিক পরিবহনের কেন্দ্র হয়ে উঠে। অধিকন্তু, ট্রান্স ওয়ার্ল্ড এয়ারলাইন্স দাহরানকে তাদের এশিয়া ও ইউরোপের মাঝের আসা-যাওয়া এর সংযোগ কেন্দ্র হিসাবে বেছে নেয়। ক্রমবর্ধমান উন্নয়নের ও সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির ফলাফল হিসাবে দাহরান বিমানক্ষেত্রটি ১৯৬১ সালে (১৯৬২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দখল হস্তান্তর করার কিছু পুর্বে) দাহরান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
সামরিকসম্পাদনা
চুক্তি মোতাবেক ১৯৬২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনী বিমানক্ষেত্রটির দখল হস্তান্তরের পরবর্তী বাদশাহ আব্দুল আজিজ বিমানঘাঁটি পূর্ব প্রদেশ এবং তার নিকটবর্তী অঞ্চলের আকাশসীমা প্রতিরক্ষা, কৌশলগত এবং পরিকল্পনা সমর্থনের জন্যে রাজকীয় সৌদি বিমান বাহিনীর অন্যতম প্রধান ঘাটি হয়ে উঠেছিল। একইসাথে এখানে আরএসএএফ কর্মীদেরকে বিমান সম্পর্কিত প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। ১৯৬৩ থেকে ১৯৯৯ এর মাঝামাঝি সময়ে এটি "দাহরান বিমানঘাঁটি" নামে পরিচিত ছিল। বিমানঘাঁটিটিতে ১৯৬৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ২০ নভেম্বর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর ৫২৪ তম স্পেশাল অপারেশন স্কোয়াড্রন উত্তর আমেরিকান এফ-১০০ সুপার সাবেরের বিমাুন নিয়ে নিয়োজিত ছিল।
উপসাগরীয় যুদ্ধসম্পাদনা
১৯৯১ সালে অপারেশন ডেসার্ট শিল্ড/ডোজার স্টর্মের সময়, যুক্তরাষ্ট্রের ১০১ তম এয়ারবর্ন ডিভিশনের বিমানবন্দরটিতে তাদের ঘাটি হিসাবে ব্যবহার করেছিল।
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ "Scramble" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-০৬।
- ↑ "মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমুহ: সিরিয়া, ইরান, ইরাক, আফগানিস্তান, জর্দান, সৌদি আরব" (ইংরেজি ভাষায়)। ১৯৫৫। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-০৬।
বহিঃসংযোগসম্পাদনা
- দাহরান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর
- OEDR সম্পর্কিত বিমানবন্দর তথ্যাদি - ওয়ার্ল্ড এ্যারো ডাটা