বাংলাদেশ মুসলিম লীগ
বাংলাদেশ মুসলিম লীগ বাংলাদেশের একটি ডানপন্থী রাজনৈতিক দল যা ১৯০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত নিখিল ভারত মুসলিম লীগের উত্তরসূরী।[১][২] ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর বাংলাদেশ সরকার এই দলটির পূর্বসুরীদের নিষিদ্ধ করলেও ১৯৭৬ সালে সেগুলো আইনি বৈধতা পেয়েছিল। এরপর আবদুস সবুর খান সেগুলোর সমন্বয়ে বাংলাদেশে মুসলিম লীগকে গঠন করে দলের সভাপতি নির্বাচিত হন।[৩] বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সঙ্গে যোগ দেওয়ার পর এর একজন নেতা শাহ আজিজুর রহমান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হন।[৩]
বাংলাদেশ মুসলিম লীগ | |
---|---|
সভাপতি | বেগম জুবেদা কাদের চৌধুরী |
মহাসচিব | কাজী আবুল খায়ের |
প্রতিষ্ঠাতা | আবদুস সবুর খান |
প্রতিষ্ঠা | ৮ আগস্ট ১৯৭৬ |
নিবন্ধিত | ২১ সেপ্টেম্বর ১৯৭৬ |
পূর্ববর্তী | কনভেনশন লীগ কাউন্সিল লীগ কাইয়ুম লীগ |
ভাবাদর্শ | মুসলিম জাতীয়তাবাদ |
রাজনৈতিক অবস্থান | ডানপন্থী |
ধর্ম | ইসলাম |
নির্বাচনী প্রতীক | |
![]() লণ্ঠন | |
দলীয় পতাকা | |
![]() | |
বাংলাদেশের রাজনীতি রাজনৈতিক দল নির্বাচন |
ইতিহাস
সম্পাদনা১৯০৬ সালে ব্রিটিশ ভারতের ঢাকায় নিখিল ভারত মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। মুঘলদের সমর্থন ও ভারতবর্ষের অন্যান্য গোষ্ঠীগুলোর বিরোধিতা না করে ভারতের মুসলমানদের রক্ষা করার লক্ষ্যে এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
১৯৪৭ সালে ভারত বিভাজন ও পাকিস্তানের স্বাধীনতার পর, নিখিল ভারত মুসলিম লীগ ভেঙ্গে পাকিস্তান মুসলিম লীগ গড়ে ওঠে এবং পূর্ব পাকিস্তানে দলটি ক্ষমতায় আসে। দলটি ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে প্রদেশটিতে যুক্তফ্রন্টের হাতে প্রাদেশিক আইনসভার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। ১৯৬০-এর দশকে পাকিস্তান মুসলিম লীগ তিনটি পৃথক দল কনভেনশন লীগ, কাউন্সিল লীগ ও কাইয়ুম লীগে বিভক্ত হয়ে পড়ে।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর পূর্ব পাকিস্তান থেকে সদ্যগঠিত বাংলাদেশে দল তিনটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
১৯৭৬ সালে রাষ্ট্রপতি সৈয়দ এ. বি. মাহমুদ হোসেনের জারিকৃত রাজনৈতিক দল নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশের ফলে দল তিনটি বৈধতা অর্জন করে। এরপর উভয় দল একীভূত হয়ে ১৯৭৬ সালের ৮ আগস্টে একটি একক রাজনৈতিক দল হিসেবে গঠিত হয়।[৪][৫] পরবর্তীতে এটি ২১ সেপ্টেম্বর ১৯৭৬ সালে নিবন্ধন লাভ করে।[৬]
১৯৭৮ সালে এটি দুটি ভাগে বিভক্ত হয়েছিল। আবদুস সবুর খান দলটির রক্ষণশীল অংশের এবং শাহ আজিজুর রহমান উদারপন্থী অংশের নেতৃত্ব দেন। পরবর্তীতে শাহ আজিজুর রহমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে যোগ দেন।[৫] আবদুস সবুর খানের নেতৃত্বাধীন দলটি ১৯৭৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে ২০ টি আসন জিতেছিল।[২]
সবুর খানের মৃত্যুর পর বাংলাদেশ মুসলিম লীগ একাধিক ভাগে ভাগ হয়ে যায়।[৫] এর দুটি বিভক্ত অংশের নাম বাংলাদেশ মুসলিম লীগ ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল, যেগুলো বর্তমানে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নিবন্ধিত।[৭]
বাংলাদেশ মুসলিম লীগের বর্তমান সভাপতি বেগম জুবেদা কাদের চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল খায়ের।[৮]
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Chakravarti, S. R. (১৯৯৫)। Bangladesh under Mujib, Zia, and Ershad: dilemma of a new nation (ইংরেজি ভাষায়)। Har-Anand Publications। পৃষ্ঠা 108।
- ↑ ক খ "Historical Dictionary of Bangladesh"। www.observerbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০২-১৫।
- ↑ ক খ মোঃ আজম বেগ (২০১২)। "খান, আবদুস সবুর"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ "বাংলাদেশ মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা খান এ সবুরের মৃত্যুবার্ষিকী আজ"। সময়ের খবর। ২৫ জানুয়ারি ২০২৫।
- ↑ ক খ গ Rahman, Syedur (২০১০-০৪-২৭)। Historical Dictionary of Bangladesh (ইংরেজি ভাষায়)। Scarecrow Press। পৃষ্ঠা 42–43। আইএসবিএন 9780810874534।
- ↑ "৪টি দলের অনুমোদন লাভ"। দৈনিক ইত্তেফাক। ২২ সেপ্টেম্বর ১৯৭৬।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "রাজনৈতিক দলসমূহ (বিস্তারিত)"। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন।