বাংলাদেশ–রাশিয়া সম্পর্ক
বাংলাদেশ–রাশিয়া সম্পর্ক বলতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ এবং রুশ ফেডারেশনের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে বোঝায়। ১৯৭২ সালের ২৫ জানুয়ারি বাংলাদেশ ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর তার উত্তরসূরি রাষ্ট্র রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক চলমান রয়েছে। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় রাশিয়ার দূতাবাস এবং চট্টগ্রামে একটি কনস্যুলেট-জেনারেল রয়েছে। অন্যদিকে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে বাংলাদেশের দূতাবাস রয়েছে। বর্তমানে রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ সামরিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে।
বাংলাদেশ |
রাশিয়া |
---|
ইতিহাস
সম্পাদনাসোভিয়েত–পূর্ব পাকিস্তানি সম্পর্ক
সম্পাদনা১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা লাভের পর প্রথমদিকে পাকিস্তানের সঙ্গে সোভিয়েত ইউনিয়নের সম্পর্ক ভালো ছিল না। কিন্তু, পশ্চিম পাকিস্তানের সঙ্গে সোভিয়েতদের সম্পর্ক ভালো না হলেও পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) সঙ্গে সোভিয়েত ইউনিয়নের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ন্যাপ-মোজাফফর এবং পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে সোভিয়েত ইউনিয়নের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল, এবং পশ্চিম পাকিস্তানের তুলনায় পূর্ব পাকিস্তানেই দল দু'টির জনসমর্থন বেশি ছিল[১]। পূর্ব পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক আন্দোলন এবং মার্কিনবিরোধী মনোভাব পশ্চিম পাকিস্তানের তুলনায় জোরদার ছিল, যা পরোক্ষভাবে সোভিয়েত ইউনিয়নকে উপকৃত করে[২]। ১৯৫৪ সালে পাকিস্তান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি সামরিক চুক্তি স্বাক্ষর করলে পূর্ব পাকিস্তানে এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এই চুক্তির বিপক্ষে পূর্ব পাকিস্তানে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা দেয়, এবং পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদের ১৬২ জন নবনির্বাচিত সদস্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তানের সামরিক চুক্তির নিন্দা জানিয়ে যৌথ বিবৃতি প্রদান করেন[২]।
সোভিয়েত–বাংলাদেশি সম্পর্ক
সম্পাদনা১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে সোভিয়েত ইউনিয়ন পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ) পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী কর্তৃক সংঘটিত গণহত্যার নিন্দা জানায় এবং গণহত্যা বন্ধ করার জন্য পাকিস্তান সরকারকে আহ্বান জানায়। যুদ্ধ চলাকালে সোভিয়েত ইউনিয়ন বাঙালি মুক্তিযোদ্ধাদের বিস্তৃত সামরিক ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করে[৩][৪]। স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষদিকে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্রবাহিনীর নিকট প্রায় পরাজিত পাকিস্তানকে সহায়তা করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গোপসাগরে মার্কিন সপ্তম নৌবহরকে প্রেরণ করে। এর প্রত্যুত্তরে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনীর প্রতি সম্ভাব্য মার্কিন হুমকি প্রতিহত করার জন্য সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর এবং ১৩ ডিসেম্বর ভ্লাডিভোস্তক থেকে সোভিয়েত প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহরের দুই স্কোয়াড্রন ক্রুজার ও ডেস্ট্রয়ার এবং পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত একটি পারমাণবিক ডুবোজাহাজ প্রেরণ করে[৪]। সোভিয়েত নৌবহরটির নেতৃত্বে ছিলেন অ্যাডমিরাল ভ্লাদিমির ক্রুগ্লিয়াকভ। সোভিয়েত নৌবহরের আগমনের ফলে মার্কিন নৌবহর পাকিস্তানকে সহায়তা করতে ব্যর্থ হয়[৫]। সোভিয়েত নৌবহর ১৯৭১ সালের ১৮ ডিসেম্বর থেকে ১৯৭২ সালের ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত ভারত মহাসাগরে মার্কিন নৌবহরকে তাড়া করে বেড়ায়[৬][৭][৮]। এছাড়া সোভিয়েত নৌবাহিনী গোপনে ভারতীয় নৌবাহিনীকে সহায়তা করে এবং পাকিস্তান নৌবাহিনীর বিরুদ্ধে গুপ্ত অভিযান পরিচালনা করে[৪]। স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশের বিজয়ের পর ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি সোভিয়েত ইউনিয়ন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে, এবং ২৫ জানুয়ারি রাষ্ট্রদ্বয়ের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়[৯]।
১৯৭১ সালের ৮ অক্টোবর বাংলাদেশে রাজনৈতিক সমাধানের দাবিতে সোভিয়েত ইউনিয়নের রাজধানী মস্কোয় এ দিন শিক্ষক ও ছাত্ররা গণপ্রতিবাদে যোগ দেন। ৭ অক্টোবর রাতে সোভিয়েত নাগরিকেরা টেলিভিশনে বাংলাদেশের শরণার্থীদের দুর্দশার চিত্র দেখেন। এ ছাড়া মস্কোর ছাত্র ও শিক্ষকদের স্থানীয় প্রতিনিধিদের এক বৈঠকে বলা হয়, শেখ মুজিবুর রহমানের গোপন বিচার উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। সোভিয়েত কমিউনিস্ট পার্টির পত্রিকা প্রাভদায় প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, সোভিয়েত ইউনিয়নের সর্বত্র বাংলাদেশের সমর্থনে সভা হচ্ছে। সোভিয়েত ইউনিয়নের কমিউনিস্ট পার্টির পত্রিকা প্রাভদা ১০ অক্টোবর বাংলাদেশের ঘটনাবলির বিস্তারিত বিশ্লেষণের মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অবস্থান নেয়। প্রতিবেদনে প্রাভদা বলে, পূর্ববঙ্গে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ব্যাপক ও নৃশংস গণহত্যার দায় এড়িয়ে যাওয়ার কৌশল হিসেবে পাকিস্তানের প্রশাসন শেখ মুজিবুর রহমানের বিচারের তামাশা করছে। সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানের পরিবর্তে পাকিস্তান সরকার অনৈতিক কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করছে।[১০]
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরবর্তী বছরগুলোতে সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে বাংলাদেশের বিশেষ সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় চট্টগ্রাম বন্দর ও কর্ণফুলি নদীতে পাকিস্তানি বাহিনী অসংখ্য মাইন পুঁতে রেখেছিল। তাছাড়া যুদ্ধের সময় অনেক নৌযান ডুবে যাওয়ায় বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত এ বন্দরটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে উঠেছিল। যুদ্ধের পর সোভিয়েত নৌবাহিনী যুদ্ধবিধ্বস্ত চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে মাইন অপসারণ এবং বন্দরটির কার্যক্ষমতা পুনরুদ্ধারের কাজে নিয়োজিত হয়। সোভিয়েত প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহরের ২২টি জাহাজ এ উদ্দেশ্য ১৯৭২ সালের মে মাসে দূর প্রাচ্যের ভ্লাদিভোস্তক বন্দর থেকে চট্টগ্রামে আসে[১১]। মাইন অপসারণের কাজটি সম্পন্ন করতে তাদের প্রায় এক বছর সময় লাগে, এবং ইউরি রেদকিন নামক একজন সোভিয়েত মেরিন এসময় মাইন বিস্ফোরণে প্রাণ হারান[১২]। বাংলাদেশ নেভাল একাডেমি প্রাঙ্গণে তার কবর অবস্থিত।
সোভিয়েত সহযোগিতার ফলে চট্টগ্রাম শীঘ্রই একটি প্রধান বন্দর হিসেবে পূর্বের অবস্থান ফিরে পায় এবং ১৯৭৩ সালে এর ধারণক্ষমতা যুদ্ধপূর্ব ধারণক্ষমতাকে ছাড়িয়ে যায়। এছাড়া, সোভিয়েত ইউনিয়ন নবপ্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ বিমানবাহিনীকে বিস্তৃত সহায়তা প্রদান করে। বিশেষত সোভিয়েত সরকার বাংলাদেশ বিমানবাহিনীকে ১০টি এক-আসনবিশিষ্ট মিগ-২১এমএফ এবং ২টি দুই-আসনবিশিষ্ট মিগ-২১ইউএম যুদ্ধবিমান উপহার প্রদান করে[১৩]। ১৯৭২ সালের মার্চে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান মস্কো সফর করেন এবং মুক্তিযুদ্ধের সময় সহায়তার জন্য সোভিয়েত সরকারকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন[১৪][১৫][১৬]।
বাংলাদেশে ১৯৭৫ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের দ্রুত অবনতি ঘটতে থাকে। জিয়াউর রহমান ও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সামরিক সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, পাকিস্তান ও আরব রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলে, ফলে স্বাভাবিকভাবে এসব রাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক শীতল হয়ে পড়ে। এসময় বাংলাদেশ সক্রিয় সোভিয়েত-বিরোধী পররাষ্ট্রনীতি অবলম্বন করে। ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ কম্পুচিয়ায় ভিয়েতনামের আক্রমণে সোভিয়েত সমর্থনের নিন্দা জানায়, এবং ১৯৭৯ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন কর্তৃক আফগানিস্তানে সামরিক হস্তক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করে। আফগানিস্তানে সোভিয়েত হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে বাংলাদেশসহ আরো ৬৪টি রাষ্ট্র ১৯৮০ সালে মস্কোয় অনুষ্ঠিত গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক গেমস বয়কট করে। এছাড়া, ১৯৮৩ সালের ডিসেম্বরে এবং ১৯৮৪ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ সরকার ঢাকা থেকে ৯ জন সোভিয়েত কূটনীতিককে বহিষ্কার করে[১৭]।
তবে তা সত্ত্বেও সোভিয়েত ইউনিয়ন বাংলাদেশকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহায়তা প্রদান করতে থাকে। সোভিয়েতরা বিদ্যুৎ উৎপাদন, প্রাকৃতিক গ্যাস ও জ্বালানি তেল – এই তিনটি ক্ষেত্রের উন্নয়নে বাংলাদেশকে বিশেষভাবে সহযোগিতা করে। সোভিয়েত অর্থায়নে বাংলাদেশের বৃহত্তম তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মিত হয়। ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশে দাতা দেশগুলোর মধ্যে সোভিয়েত ইউনিয়নের অবস্থান ছিল ১৪তম। এছাড়া, এসময় সোভিয়েত ইউনিয়ন বাংলাদেশের সঙ্গে সক্রিয় সাংস্কৃতিক সম্পর্ক বজায় রাখে।
রুশ–বাংলাদেশি সম্পর্ক
সম্পাদনা১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর বাংলাদেশ রাশিয়াকে সোভিয়েত ইউনিয়নের উত্তরসূরি হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। ১৯৯০-এর দশকে রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ছিল চলনসই। বসনীয় যুদ্ধ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক ঘটনাবলিতে এসময় বাংলাদেশ ও রাশিয়া ভিন্ন পক্ষ অবলম্বন করে। পরবর্তীতে ২০০০-এর দশকে রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে উন্নতি ঘটে।
রাজনৈতিক সম্পর্ক
সম্পাদনা২০০৯ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেন্ট পিটার্সবার্গ সফর করেন এবং তৎকালীন রুশ প্রধানমন্ত্রী ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন[১৮]। ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে শেখ হাসিনা আবার মস্কোতে রুশ রাষ্ট্রপতি পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন[১৯]। ২০১৪ সালের ক্রিমিয়া সঙ্কটের সময় বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা রাষ্ট্রের মতো রাশিয়ার বিরোধিতা না করে নিরপেক্ষতা অবলম্বন করে।
সামরিক সম্পর্ক
সম্পাদনারাশিয়া বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনীকে অস্ত্রশস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহকারী রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে অন্যতম। ২০১৩ সালে বাংলাদেশ রাশিয়ার কাছে থেকে মেতিস-এম ট্যাঙ্ক-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ক্রয় করে[২০][২১]। ২০১৫ ও ২০১৬ সালে বাংলাদেশ রাশিয়ার নিকট হতে ১৬টি ইয়াক-১৩০ প্রশিক্ষণ বিমান ক্রয় করে[২২][২৩][২৪]। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ রাশিয়া থেকে ৬টি এমআই-১৭১এসএইচ হেলিকপ্টার ক্রয় করে[২৫]।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক
সম্পাদনা২০১২ সালে বাংলাদেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎ শক্তির উন্নয়নে সহায়তা করার জন্য রাশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়[২৬]। ২০১৩ সালে রাশিয়া বাংলাদেশের পাবনা জেলার রূপপুরে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়।[২৭][২৮][২৯][৩০][৩১] ২০১৬ সালে ২,৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মাণকাজ আরম্ভ হয় এবং ২০২৪ সালের মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দুইটি ইউনিট সম্পূর্ণ হবে বলে ধারণা করা হয়।[৩২]
বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে রাশিয়ায় রপ্তানি হয়েছে ৬৬ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলারের পণ্য, বিপরীতে আমদানি করা হয়েছে ৪৬ কোটি ৬০ লাখ ডলারের পণ্য। ২০১৯-২০ অর্থবছরে রাশিয়ার ঋণ সহায়তা ১০০ কোটি ডলারের কাছাকাছি।[৩৩]
সাংস্কৃতিক সম্পর্ক
সম্পাদনাবাংলার সঙ্গে রাশিয়ার সাংস্কৃতিক যোগসূত্র স্থাপিত হয় অষ্টাদশ শতাব্দীতে। প্রথম বাংলা নাটক মঞ্চস্থ করেছিলেন রুশ নাট্যকার ও অভিযাত্রী গেরাসিম লেবেদেভ। লেবেদেভ তার ভাষা-শিক্ষক গোলকনাথ দাশের সহায়তায় ১৭৮৫ সালের ২৭ নভেম্বর 'দ্য ডিসগাইজ' নামক একটি ইংরেজি নাটক বাংলায় অনুবাদ করে 'ছদ্মবেশ' নামে মঞ্চস্থ করেন[৩৪]। স্থানীয় বুদ্ধিজীবীদের সহায়তায় লেবেদেভ বাংলায় প্রথম ইউরোপীয় ধাঁচের থিয়েটারও স্থাপন করেন[৩৫][৩৬]।
এছাড়া, লেবেদেভ একটি ছোট বাংলা অভিধান রচনা করেন, পাটিগণিতের ওপর বাংলায় একটি বই লিখেন এবং আনন্দমঙ্গল কাব্যের অংশবিশেষ রুশ ভাষায় অনুবাদ করেন[৩৭]।
বর্তমান পরিস্থিতি
সম্পাদনাআরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Kazmi, Muhammad Raza (২০০৩)। Liaquat Ali Khan: his life and work (ইংরেজি ভাষায়)। United Kingdom: Oxford University Press, 2003। পৃষ্ঠা 354। আইএসবিএন 978-0-19-579788-6।
- ↑ ক খ Hamid Hussain। "Tale of a love affair that never was: United States-Pakistan Defence Relations"। Defence Journal of Pakistan (ইংরেজি ভাষায়)। Hamid Hussain, 2002। ৪ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১২।
- ↑ "Bilateral Talks between Foreign Minister Dr. Dipu Moni and Russian Foreign Minister Mr. Sergey Lavrov"। Ministry of Foreign Affairs (Bangladesh) (ইংরেজি ভাষায়)। এপ্রিল ৭, ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ ক খ গ "1971 India Pakistan War: Role of Russia, China, America and Britain"। The World Reporter (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১১-১১-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-১০-৩০।
- ↑ Simha, Rakesh Krishnan (৩১ আগস্ট ২০১৩)। "Sweeping mines, salvaging looted gold after the 1971 War"। Russia & India Report (ইংরেজি ভাষায়)। ২৯ জুন ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪।
- ↑ "Cold war games"। Bharat Rakshak (ইংরেজি ভাষায়)। ২০০৬-০৯-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-১০-২০।
- ↑ Birth of a nation. Indianexpress.com (2009-12-11). Retrieved on 2011-04-14.
- ↑ "1971 War: How Russia sank Nixon's gunboat diplomacy"। Russia and India Report (ইংরেজি ভাষায়)। Russia Beyond the Headlines। ডিসেম্বর ২০, ২০১১। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ১৯, ২০১৫।
- ↑ "USSR, Czechoslovakia Recognize Bangladesh" (ইংরেজি ভাষায়)। Sumter, South Carolina, US: The Sumter Daily Item, via Google News। Associated Press। ২৫ জানুয়ারি ১৯৭২।
- ↑ ডেস্ক, প্রথম আলো (২০২১-১০-০৮)। "রণাঙ্গনেই সমস্যার চূড়ান্ত ফয়সালা"। চিরন্তন ১৯৭১ | প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১২-০৫।
- ↑ "In the Spirit of Brotherly Love"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২৯ মে ২০১৪।
- ↑ "Rescue Operation on Demining and Clearing of Water Area of Bangladesh Seaports 1972-74" (ইংরেজি ভাষায়)। Consulate General of the Russian Federation in Chittagong। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ Goossens, Stefan। "Bangladesh Air Force"। Scrmable (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১২ মার্চ ২০১৫।
- ↑ "Mujib visits Moscow"। Daytona Beach Morning Journal (ইংরেজি ভাষায়)। Associated Press। মার্চ ১, ১৯৭২। পৃষ্ঠা 6।
- ↑ "PM in Russia: A Shift in Foreign Policy?"। Dhaka Courier (ইংরেজি ভাষায়)। জানুয়ারি ২৭, ২০১৩। ৮ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ – HighBeam Research-এর মাধ্যমে। (সদস্যতা নেয়া প্রয়োজন (সাহায্য))।
- ↑ Choudhury, G. W. (জুলাই ১৯৭২)। "Moscow's Influence in the Indian Subcontinent"। The World Today (ইংরেজি ভাষায়)। Royal Institute of International Affairs। 28 (7): 304–311। জেস্টোর 40394640।
- ↑ Feroze, Shahriar (ডিসেম্বর ২১, ২০১৪)। "Intellectually Moscow"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ১৯, ২০১৫।
- ↑ "Bangladesh-Russia relations : New openings & challenges"। Roundtable (ইংরেজি ভাষায়)। দ্য ডেইলি স্টার। মার্চ ২, ২০১৩। সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৭।
- ↑ "Agreements between Russia and Bangladesh promote bilateral relations"। English.ruvr.ru (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১০-২২।
- ↑ "Army gets new SP guns, Metis M-1 missiles"। ঢাকা ট্রিবিউন (ইংরেজি ভাষায়)। ২৩ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ডিসেম্বর ২০১৫।
- ↑ "Archived copy" (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৩-০১-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০১-০৯।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৩১ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭।
- ↑ http://www.armstrade.org/includes/periodics/news/2015/1005/110031458/detail.shtml
- ↑ "First Yak-130s arrive in Bangladesh" (ইংরেজি ভাষায়)। IHS Janes 360। সংগ্রহের তারিখ ২৯ ডিসেম্বর ২০১৫।
- ↑ "Modernisation of army to continue: PM" (ইংরেজি ভাষায়)। United News of Bangladesh (UNB)। ২৮ মে ২০১৫। ২৩ জানুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "Welcome to MOFA Website"। Mofa.gov.bd (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১০-২২।
- ↑ Mahbub, Sumon (১৫ জানুয়ারি ২০১৩)। "N-plant funding deal cut" (ইংরেজি ভাষায়)। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।
- ↑ "PM seeks more Russian investment in ICT sector" (ইংরেজি ভাষায়)। The News Today। ১৫ জানুয়ারি ২০১৩। ৮ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭।
- ↑ "Collaboration in defence, telecom agreed upon" (ইংরেজি ভাষায়)। The News Today। ১৫ জানুয়ারি ২০১৩। ৮ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭।
- ↑ "Bangladesh agrees nuclear power deal with Russia" (ইংরেজি ভাষায়)। BBC News। ২ নভেম্বর ২০১১।
- ↑ "Bangladesh to Get $1Bln Loan for Weapons"। The Moscow Times (ইংরেজি ভাষায়)। ১৬ জানুয়ারি ২০১৩।
- ↑ মো. নিজাম, উদ্দিন (20016-12-01)। "রূপ প্রকল্প ও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র" (ইংরেজি ভাষায়)। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ 2017-01-06। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ "বাংলাদেশের স্বার্থের শিবির কোনটি"। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুলাই ২০২২।
- ↑ Raha, Kironmoy, Calcutta Theatre 1835-1944, in Calcutta, the Living City, Vol I, edited by Sukanta Chaudhuri, p187, Oxford University Press, আইএসবিএন ০-১৯-৫৬৩৬৯৬-১
- ↑ "G.S. Lebedev — Founder of the Russian Indology (1749-1817)"। Russian Indology: Personalities (ইংরেজি ভাষায়)। Russian Cultural Centre, Mumbai। ২০০৭-০৮-২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১২-০৮।
- ↑ Sahni, Kalpana (জুন ১৭, ২০০৬)। "Fiddler on the loose"। Foreign Exchange (ইংরেজি ভাষায়)। Daily Times। ২০০৬-০৬-২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১২-০৮।
- ↑ ঘোষ, প্রদ্যোত (২০১২)। "লেবেদেফ, গেরাসিম স্তেপানোভিচ"। ইসলাম, সিরাজুল; জামাল, আহমেদ। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশ জাতীয় জ্ঞানকোষ (দ্বিতীয় সংস্করণ)। বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি।