ফুলকপি
ফুলকপি ব্রাসিকেসি পরিবারভুক্ত ব্রাসিকা অলেরাসিয়া (Brassica oleracea) প্রজাতির সবজিগুলোর একটি। এটি একটি বার্ষিক ফসল যা বীজের মাধ্যমে বংশবিস্তার করে। সাধারণতঃ ফুলকপির পুষ্পাক্ষ অর্থাৎ সাদা অংশটুকুই খাওয়া হয় আর সাদা অংশের চারপাশে ঘিরে থাকা ডাঁট এবং পুরু, সবুজ পাতা দিয়ে স্যুপ রান্না করা হয় অথবা ফেলে দেওয়া হয়। ফুলকপি খুবই পুষ্টিকর একটি সবজি; এটি রান্না বা কাঁচা যে কোন প্রকারে খাওয়া যায়, আবার এটি দিয়ে আচারও তৈরি করা যায়।
ফুলকপি Brassica oleracea | |
---|---|
প্রজাতি | Brassica oleracea |
গ্রুপ | Botrytis cultivar group |
উৎস | উত্তর-পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল |
পাতা দিয়ে ঘিরে থাকা সাদা অংশটুকু দেখতে ফুলের মতো বলেই ফুলকপির এমন নামকরণ। [১] এর বৈজ্ঞানিক নাম ব্রাসিকা অলিরাসিয়া (Brassica oleracea), যার মধ্যে বাঁধাকপি, ব্রকলি ইত্যাদিও পড়ে, অবশ্য এরা ভিন্ন গোত্রভুক্ত। ১৮২২ সালে ব্রিটিশরা ভারতে ফুলকপি চাষ প্রবর্তন করেছিল।[২]
পুষ্টিগুণ
সম্পাদনাফুলকপিতে রয়েছে ভিটামিন ‘বি’, ‘সি’, ‘কে’, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম ও জিংক।[৩] একটি মাঝারি আকারের ফুলকপিতে রয়েছে শক্তি-২৫ কিলো ক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট-৪.৯৭ গ্রাম , প্রোটিন-১.৯২ গ্রাম , ফ্যাট-০.২৮ , আঁশ-২ গ্রাম, ফোলেট-০.৫৭ মাইক্রোগ্রাম, নিয়াসিন-০.৫০ মাইক্রোগ্রাম, থায়ামিন-০.০৫ , প্যানথানিক এসিড-০.৬৬৭ মাইকোগ্রাম।[৪] ফুলকপি পুষ্টিসমৃদ্ধ সবজি।এর পাতার উপরিভাগে ক্যানসার নিরোধক উপাদান পেয়েছেন বলে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন। বাল্টিমোর জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের গবেষকরা ফুলকপির পাতায় আইসো থায়োসায়ানেটস নামক রাসায়নিক পদার্থ পেয়েছেন। বিজ্ঞানীরা গবেষণায় দেখেছেন, মলাশয় ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অর্ধেক কমাতে হলে সপ্তাহে প্রায় দুই পাউন্ড ফুলকপি এবং এ জাতীয় শাকসবজি খেতে হবে। বিজ্ঞানীরা আরও জানিয়েছেন, ফুলকপির কচি পাতা সপ্তাহে এক আউন্সের কিছু বেশি খেলে তার দেহে ক্যানসারের ঝুঁকি অর্ধেক কমতে পারে। আরেক গবেষণায় দেখা গেছে, ফুলকপির কচি পাতা থেকে সংগৃহীত আইসো থায়োসায়ানেটস নির্যাস প্রয়োগে ওদের বুকের টিউমারের আকার ও সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে, যা ক্যানসারে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ছিল।ফুলকপির পাতায় প্রচুর ভিটামিন ‘এ’ ক্যালসিয়াম, খাদ্যশক্তি ও আয়রন আছে। এতে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ কালো কচু শাকের চেয়ে প্রায় দেড়গুণ, সবুজ কচু শাকের চেয়ে প্রায় ৩ গুণ, লাল শাকের চেয়ে দ্বিগুণ, কলমি শাকের চেয়ে ৬ গুণ, পুঁই ও পাট শাকের চেয়ে ৭ গুণ, পালং ও ডাঁটা শাকের চেয়ে ৮ গুণ, মুলা শাকের চেয়ে ২৫ গুণ ও গরুর দুধের চেয়ে ৫ গুণ বেশি আছে। ফুলকপির কচি পাতায় প্রায় সব খাদ্যের চেয়ে অনেক বেশি আয়রন আছে। যেমন-সবুজ কচু শাকের চেয়ে ৪ গুণ, ডাঁটা শাকের চেয়ে দেড় গুণ, কলমি শাকের চেয়ে ১০ গুণ, মুলা শাকের চেয়ে ১২ গুণ ও পালং শাকের ৫ গুণ বেশি আয়রন আছে। খাদ্যশক্তিও প্রায় সব শাকসবজির চেয়ে অনেক বেশি আছে। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ আছে। খাদ্যোপযোগী প্রতি ১০০ গ্রাম ফুলকপির পাতায় ক্যালসিয়াম ৬২৬ মিলিগ্রাম ও আয়রন ৪০ মিলিগ্রাম থাকে। ফুলকপিতে আয়রনের পরিমাণ আলু, মুলা, মিষ্টিকুমড়া, বেগুন, টমেটো, চিচিঙ্গা ও ঝিঙের চেয়ে বেশি। তবে এই পুষ্টিমান ফুলকপির জাত ও উৎপাদন স্থানের ওপর নির্ভরশীল।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Cauliflower: definition"। dictionary.com। ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১১-২২।
- ↑ Vegetable Crops। New India Publishing। ১ জানুয়ারি ২০০৭। পৃষ্ঠা 209। আইএসবিএন 978-81-89422-41-7।
- ↑ "ফুল কপি চাষ - জাতীয় ই-তথ্যকোষ"। ৯ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জানুয়ারি ২০১৬।
- ↑ "ফুল কপি খেয়ে স্মার্ট হয়ে যান"।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
পাদটীকা
সম্পাদনা- Sharma, S.R, Singh, P.K., Chable, V. Tripathi, S.K. (২০০৪)। "A review of hybrid cauliflower development"। Journal of New Seeds। 6: 151-193। ডিওআই:10.1300/J153v06n02_08।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- PROTAbase on Brassica oleracea (cauliflower and broccoli)
- Fractal dimensions of a green broccoli and a white cauliflower (Kim) (PDF)
- Orange Cauliflower Development
- Cabbages and Cauliflowers: How to Grow Them by James John Howard Gregory
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |