প্রমোদ দাশগুপ্ত
প্রমোদ দাশগুপ্ত (১৩ জুলাই ১৯১০ - ২৯ নভেম্বর ১৯৮২) একজন ভারতীয় বাঙালি কমিউনিস্ট রাজনীতিবিদ ছিলেন। তিনি ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) (সিপিআই (এম)) এর পশ্চিমবঙ্গ শাখার প্রথম সম্পাদক ছিলেন, ১৯৬৪ সালে পার্টির জন্ম থেকে ১৯৮২ সালে তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত। তিনি সিপিআই (এম) এর পলিটবুরোরও সদস্য ছিলেন, পার্টির সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী পরিষদ। যদিও তিনি ব্যক্তিগতভাবে কখনও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি, দাশগুপ্ত দল এবং পার্টির ক্যাডারদের শৃঙ্খলাবদ্ধ সংগঠক হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে, সিপিআই (এম) -র নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট ১৯৭৭ সালের নির্বাচনের এক দুর্দান্ত বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় এসেছিল এবং দাশগুপ্তের মৃত্যুর পরে বেশ কয়েক দশক ধরে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে প্রভাবশালী শক্তি হিসাবে রয়ে গিয়েছিল।[১]
প্রমোদ দাশগুপ্ত | |
---|---|
সিপিআই (এম)-এর পশ্চিমবঙ্গ শাখার রাজ্য সম্পাদক | |
কাজের মেয়াদ ১৯৬৪ – ১৯৮২ | |
পূর্বসূরী | অবস্থান তৈরি হয়েছে |
উত্তরসূরী | সরোজ মুখার্জী |
পশ্চিমবঙ্গ বামফ্রন্ট কমিটির চেয়ারম্যান | |
কাজের মেয়াদ ১৯৭৭ – ১৯৮২ | |
পূর্বসূরী | পদ তৈরি হয়েছে |
উত্তরসূরী | সরোজ মুখার্জী |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | কুঁয়োরপুর ফরিদপুর জেলা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত (এখন বাংলাদেশে) | ১৩ জুলাই ১৯১০
মৃত্যু | ২৯ নভেম্বর ১৯৮২ বেইজিং, গণচীন | (বয়স ৭২)
জীবনী
সম্পাদনাপ্রমোদ দাশগুপ্ত ১৯১০ সালের জুলাই মাসে ব্রিটিশ ভারতের অবিভক্ত বাংলার কুঁয়োরপুর বৈদ্য পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর বাবা সরকারি চাকরিতে নিযুক্ত একজন চিকিৎসক ছিলেন। দাশগুপ্তের আট ভাইবোন ছিল, যাদের মধ্যে একটি বোন সহকর্মী সিপিআই (এম) সদস্য হবেন। [২] তিনি ১৯২৪ সালে সন্ত্রাসবাদী আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়ে অনুশীলন দলে যোগ দেন। ১৯২৮ সালে বরিশাল জিলা স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাশ করেন এবং ব্রজমোহন কলেজে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ায় প্রবৃত্ত হন। এরপরেই তিনি তাঁর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড কলকাতায় সরিয়ে নিয়েছিলেন। কলকাতা কর্পোরেশন ওয়ার্কশপে মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ শিক্ষানবিশ ছিলেন।[১]
১৯২৯ সালে বিখ্যাত মেছুয়া বাজার বোমা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এবং সতীশচন্দ্র পাকড়াশী, সুধাংশু দাসগুপ্ত ও সত্যব্রত সেনের মতো আরও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল এবং কারাদন্ডে দণ্ডিত করা হয়েছিল, যদিও প্রমোদকে দোষী সাব্যস্ত করার মতো যথেষ্ট প্রমাণ ছিল না। তবে তাঁকে বেঙ্গল ফৌজদারি আইন সংশোধন আইনে আটক করা হয়েছিল। তিনি আট বছরের জন্য বাংলার বিভিন্ন কারাগারে এবং দেওলি আটক শিবিরে ছিলেন। ১৯৩৭ সালে তিনি মুক্তি পেয়েছিলেন।[১]
১৯৩৮ সালে তিনি ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য ও ১৯৪৫ সালে দলীয় মুখপত্র 'স্বাধীনতা'র কর্মাধ্যক্ষ হন।[১]
১৯৪৭ সালে প্রাদেশিক কমিটির সদস্য হন, ১৯৬০ সালে অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টির রাজ্য সম্পাদক, পরের বছর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন। ১৯৬৪ সালে পার্টি বিভক্ত হলে সিপিআই (এম) দলে যোগ দেন। ১৯৬১ থেকে ১৯৭৭ সালে পার্টিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ায় তার সাংগঠনিক ক্ষমতার পরিচয় পাওয়া যায়।[১]
১৯৮২ সালে চিকিৎসার জন্য প্রমোদ চীন দেশে যান। তার সঙ্গে ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। চীনের বেইজিংয়েই তার মৃত্যু হয়।[১][৩][৪]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান। কলকাতা: শিশু সাহিত্য সংসদ। পৃষ্ঠা ৫৭৫। আইএসবিএন 978-81-7955-135-6।
- ↑ "'Jyoti Basu is Mr Soft and Pramode Dasgupta the Mr Hard of West Bengal CPM' ". India Today. 15 April 1978.
- ↑ July 26, Sumanta Sen; December 31, 2013 ISSUE DATE:; September 16, 1982UPDATED:; Ist, 2014 17:46। "Marxist leader Promode Dasgupta's death leaves a political void in CPI-M"। India Today (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৭-১৭।
- ↑ August 1, Sumanta Sen; January 31, 2013 ISSUE DATE:; May 14, 1983UPDATED:; Ist, 2014 18:21। "Younger CPI(M) members make their presence felt after Promode Dasgupta's death"। India Today (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৭-১৭।
- " স্মরণিকা: পিডিজি "। গণশক্তি । 31 জুলাই 2018-এ পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।