পীযূষ গঙ্গোপাধ্যায়
পীযূষ গঙ্গোপাধ্যায় (২ জানুয়ারি, ১৯৬৫ – ২৫ অক্টোবর, ২০১৫[১]) ছিলেন একজন বাংলা চলচ্চিত্র, টেলিভিশন ও নাট্য অভিনেতা। ২০০৫ সালে মহুলবনীর সেরেঙ ছবিতে অভিনয় করে তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্র অভিনেতা হিসেবে বেঙ্গল ফিল্ম জার্নালিস্টস’ অ্যাসোশিয়েশন অ্যাওয়ার্ড পান।[২]
পীযূষ গঙ্গোপাধ্যায় | |
---|---|
![]() | |
জন্ম | |
মৃত্যু | ২৫ অক্টোবর ২০১৫ বেল ভিউ ক্লিনিক, কলকাতা | (বয়স ৫০)
জাতীয়তা | ভারতীয় |
পেশা | অভিনেতা |
উল্লেখযোগ্য কর্ম | মহুলবনীর সেরেঙ, গয়নার বাক্স, বাবা কেন চাকর, আবার ব্যোমকেশ, ল্যাপটপ, আবর্ত, ইতি শ্রীকান্ত, ব্যোমকেশ বক্সী, অটোগ্রাফ, আমোদিনী, আবার যখের ধন, জলনূপুর ও চোখের তারা তুই |
কর্মজীবন
সম্পাদনাপীযূষ গঙ্গোপাধ্যায় তার কর্মজীবন শুরু করেন নাবার্ডের কর্মচারী হিসেবে। পরে তিনি অভিনয় জগতে চলে আসেন। তিনি কলকাতার নাট্যমঞ্চে অভিনয় শুরু করেছিলেন। বাংলা নাটকে অভিনয়ের সঙ্গে তিনি প্রথম থেকে যুক্ত ছিলেন। ব্রাত্য বসু, বিভাস চক্রবর্তী, অরুণ মুখোপাধ্যায় ও রমাপ্রসাদ বণিক প্রমুখ নাট্যব্যক্তিত্বের সঙ্গে তিনি মঞ্চে অভিনয় করেন।[৩]
পীযূষ গঙ্গোপাধ্যায় বাংলা টেলিভিশনেরও প্রতিষ্ঠিত ও জনপ্রিয় অভিনেতা ছিলেন। তিনি অঞ্জন দত্ত, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, অপর্ণা সেন প্রমুখ পরিচালকদের পরিচালিত চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেন।[৪]
১৯৯০-দশকের মধ্যভাগ থেকে ২০১০-এর দশকের মধ্যভাগ পর্যন্ত তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তিনি টেলিভিশনে অভিনয় শুরু করেন আবার যখের ধন ধারাবাহিকে অভিনয়ের মাধ্যমে।[৩] তার অভিনীত কয়েকটি জনপ্রিয় ধারাবাহিক হল জল নূপুর, আবার যখের ধন ও আমোদিনী।[৫] তিনি মা ভার্সেস বউমা নামে একটি আপাতবাস্তব টেলিভিশন অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেছিলেন।[৬] তার অভিনীত জনপ্রিয় চলচ্চিত্রগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ল্যাপটপ, রহস্য চলচ্চিত্র ব্যোমকেশ বক্সী এবং শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনের নির্মিত চলচ্চিত্র ইতি শ্রীকান্ত।[৩]
ব্যক্তিগত জীবন
সম্পাদনাপীযূষ গঙ্গোপাধ্যায় ১৯৬৫ সালে হাওড়ার সালকিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন।
পীযূষ গঙ্গোপাধ্যায়ের পৈতৃক নিবাস বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জে । তার ছেলেবেলা কেটেছে এখানে । তিনি পড়াশোনাও করেছেন নারায়ণগঞ্জে । পরবর্তীতে তিনি কলকাতার বেহালার অধিবাসী হন । ছাত্রজীবনে পীযূষ গঙ্গোপাধ্যায় খ্যাতনামা গোলকিপার ছিলেন। একটি দুর্ঘটনার শিকার না হলে তিনি ফুটবলকেই কেরিয়ার হিসেবে বেছে নিতেন।
তিনি পামেলা গঙ্গোপাধ্যায়কে বিবাহ করেন। তাদের এক পুত্র আছে। নাম রমিত গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি চিত্রকলা ও মান্না দের সংগীতের অনুরাগী ছিলেন।
মৃত্যু
সম্পাদনা২০১৫ সালের ২৫ অক্টোবর রাত ২টো ৪৫ মিনিটে কলকাতার বেল ভিউ ক্লিনিকে পীযূষ গঙ্গোপাধ্যায় মারা যান।[৭] ২০ অক্টোবর হাওড়ার সাঁতরাগাছিতে একটি গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তার মৃত্যুর কারণ ‘মাল্টি-অর্গান ফেলিওর ও একটি কেস পলিট্রমায় ফ্যাট এমবলিজম’।[৭]
চলচ্চিত্রতালিকা
সম্পাদনা- চার (২০১৪) (পরিচালক সন্দীপ রায়)
- বসন্ত উৎসব (২০১৩) (পরিচালক ঋতব্রত ভট্টাচার্য)
- গয়নার বাক্স (২০১৩) (পরিচালক অপর্ণা সেন)
- আবর্ত (২০১৩) (পরিচালক অরিন্দম শীল)
- ল্যাপটপ (২০১২)[৮] পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়)
- আবার ব্যোমকেশ (২০১২) (পরিচালক অঞ্জন দত্ত)
- দশমী (২০১২) (পরিচালক সুমন মৈত্র)
- অটোগ্রাফ (২০১০)[৯] (পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়)
- ব্যোমকেশ বক্সী (২০১০) (পরিচালক অঞ্জন দত্ত)
- অংশুমানের ছবি[১০] (২০০৯) (পরিচালক অতনু ঘোষ)
- ম্যাডলি বাঙালি (২০০৪) (পরিচালক অঞ্জন দত্ত)
- ইতি শ্রীকান্ত (২০০৪) (পরিচালক অঞ্জন দাস)
- মহুলবনীর সেরেঙ (২০০৪) (পরিচালক শেখর দাস)
- বাবা কেন চাকর (১৯৯৮) (পরিচালক স্বপন সাহা)
- মাতৃভূমি (১৯৯৭) (পরিচালক মিলন ভৌমিক)
- আমোদিনী (১৯৯৪) (পরিচালক চিদানন্দ দাশগুপ্ত)
পুরস্কার
সম্পাদনা- ১৯৯১ প্রমথেশ বড়ুয়া পুরস্কার
- ১৯৯৬ শ্যামল সেন স্মৃতি সম্মান
- ২০০৫ বেঙ্গল ফিল্ম জার্নালিস্টস অ্যাসোশিয়েশন অ্যাওয়ার্ড
- ২০০৮ সংবাদ প্রতিদিন কমপ্ল্যান টেলি সম্মান
- ২০১১ স্টার জলসা পরিবার পুরস্কার
- ২০১৪ পশ্চিমবঙ্গ সরকার (তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ) টেলি অ্যাকাডেমি পুরস্কার
- ২০১৪ শৈলজানন্দ স্মারক চলচ্চিত্র সম্মান
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Indian Express popular actor Pijush Ganguly passes away
- ↑ "BFJA Awards 2005"। Filmi Club। সংগ্রহের তারিখ ২৫ অক্টোবর ২০১৫।
- ↑ ক খ গ "Pijush Ganguly expires; CM expresses grief"। Kolkata Today। ২৫ অক্টোবর ২০১৫। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ অক্টোবর ২০১৫।
- ↑ "Bengali Actor Pijush Ganguly Dies After Tragic Accident in Kolkata"। NDTV। ২৫ অক্টোবর ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২৫ অক্টোবর ২০১৫।
- ↑ "Five days after accident, curtain falls forever on Bengali actor Pijush Ganguly"। Newsmen। ২৫ অক্টোবর ২০১৫। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ অক্টোবর ২০১৫।
- ↑ "Ma vs. Bouma"। Zee Bangla। ২ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ অক্টোবর ২০১৫।
- ↑ ক খ "Popular actor Pijush Ganguly passes away"। India.com। Press Trust of India। ২৪ অক্টোবর ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২৫ অক্টোবর ২০১৫।
- ↑ "Laptop"। Times of India। ১৪ এপ্রিল ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০১২।
- ↑ "Nayak revisited"। Telegraph Calcutta। ১৫ অক্টোবর ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০১২।
- ↑ "Angshumaner Chhobi"। Times of India। ২৩ আগস্ট ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০১২।