পাইরেটস অব দ্য ক্যারিবিয়ান (ধারাবাহিক চলচ্চিত্র)

কাল্পনিক রোমাঞ্চকর চলচ্চিত্রের ধারাবাহিক

পাইরেটস অব দ্য ক্যারিবিয়ান (ইংরেজি: Pirates of the Caribbean) হচ্ছে অ্যাডভেঞ্চার চলচ্চিত্রের একটি ধারাবাহিক। এটি পরিচালনা করেছেন গোর ভারবিনস্কি, এবং চিত্রনাট্য লিখেছেন টেড এলিয়টটেরি রোজিও। চলচ্চিত্র ধারাবাহিকটি প্রযোজনা করেছেন জেরি ব্রুখাইমার। চলচ্চিত্রটির কাহিনী গড়ে উঠেছে একই নামের ওয়াল্ট ডিজনির একটি থিম পার্ক রাইডকে ভিত্তি করে। ধারাবাহিকটির মূল চরিত্রগুলোর মধ্যে আছে, ক্যাপ্টেন জ্যাক স্পারো (চরিত্র রূপায়নে জনি ডেপ), উইল টার্নার (চরিত্র রূপায়নে অরল্যন্ডো ব্লুম), এবং এলিজাবেথ সোয়ান (চরিত্র রূপায়নে কিরা নাইটলি)। ২০০৩ সালে ‎পাইরেটস অব দ্য ক্যারিবিয়ান: দ্য কার্স অব দ্য ব্ল্যাক পার্ল চলচ্চিত্রের মুক্তির মধ্য দিয়ে এই ধারাবাহিকের শুরু। চলচ্চিত্রটির অপ্রত্যাশিত ব্যবসায়িক সাফল্য প্রত্যক্ষ করার পর ওয়াল্ট ডিজনি পিকচার্স এই চলচ্চিত্র ত্রয়ী সম্পূর্ণ করার কাজ শুরু করে। তিন বছর পর ২০০৬ সালে এই ধারাবাহিকের দ্বিতীয় চলচ্চিত্র ‎পাইরেটস অব দ্য ক্যারিবিয়ান: ডেড ম্যান’স চেস্ট মুক্তি পায়। চলচ্চিত্রের এ পর্বটি অভাবনীয় ব্যবসায়িক সাফল্য লাভ করে। মুক্তির প্রথম দিনেই এটি বিশ্বব্যাপী ব্যবসার রেকর্ড ভঙ্গ করে। বক্স অফিসে এর সর্বমোট আয় ছিলো ১,০৬,৬১,৭৯,৭২৫ মার্কিন ডলার। এটি শত কোটি ডলার আয়ের রেকর্ড করা তৃতীয়, এবং এখন পর্যন্ত বিশ্বের চতুর্থ সর্বোচ্চ আয়কৃত চলচ্চিত্র। এই ধারাবাহিকের তৃতীয় চলচ্চিত্র ‎পাইরেটস অফ দ্য ক্যারিবিয়ান: অ্যাট ওয়ার্ল্ড’স এন্ড মুক্তি পায় ২০০৭ সালে। এটিও বিশ্বব্যাপী ৯৬ কোটি ডলারেরও বেশি ব্যবসা করে। এখন পর্যন্ত এই ধারাবাহিকের চলচ্চিত্রগুলো বিশ্বব্যাপী সব মিলিয়ে প্রায় ২৭০ কোটি মার্কিন ডলার ব্যবসা করেছে। জনি ডেপ ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে এই ধারাবাহিকে চতুর্থ চলচ্চিত্র পাইরেটস অব দ্য ক্যারিবিয়ান: অন স্ট্রেঞ্জার টাইডস-এ অভিনয়ের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। ২০১১ সালের ২০ মে এটি মুক্তি পেয়েছে।

পাইরেটস অফ দ্য ক্যারিবিয়ান
পরিচালকগোর ভারবিনস্কি (১-৩)
রব মার্শাল ()
এসপেন স্যান্ডবার্গ/জোয়াকিম রনিং ()
প্রযোজকজেরি ব্রুখাইমার
রচয়িতাটেড এলিয়ট
টেরি রোজিও
চিত্রনাট্যকারটেড এলিয়ট (১-৪)
টেরি রোসিও (১-৪)
জেফ নাথানসন ()
শ্রেষ্ঠাংশেজনি ডেপ
জিওফ্রে রাশ
অরল্যান্ডো ব্লুম (১-৩)
কিরা নাইটলি (১-৩)
জ্যাক ডেভেনপোর্ট (১-৩)
বিল নাইহি ( ২, ৩)
পেনেলোপে ক্রুজ ()
ইয়ান ম্যাকশেন ()
সুরকারক্লস ব্যাডেল্ট ()
হ্যান্স জিমার (২, ৪)
জিওফ জেনেলি ("৫")
প্রযোজনা
কোম্পানি
ওয়াল্ট ডিজনি পিকচার্স
জেরি ব্রুখাইমার ফিল্মস
পরিবেশকওয়াল্ট ডিজনি পিকচার্স
মুক্তি: ৯ জুলাই ২০০৩
: ৭ জুলাই ২০০৬
: ২৫ মে ২০০৭
: ২০ মে ২০১১
: ২৬ মে ২০১৭
স্থিতিকাল৭২৬ মিনিট (১, ২, ৩, ৪, ৫)
দেশযুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাজ্য
ভাষাইংরেজি
নির্মাণব্যয়$১,২৭৪,০০০,০০০-$১,৩৬৪,০০০,০০০
(সর্বমোট ৫টি চলচ্চিত্রে)
আয়$৪,৫২৪,০০০,০০০
(সর্বমোট ৫টি চলচ্চিত্রে)

চলচ্চিত্রসমূহ সম্পাদনা

দ্য কার্স অফ দ্য ব্ল্যাক পার্ল সম্পাদনা

পোর্ট রয়্যালের গভর্নর ওয়েদার্বি সোয়ানের মেয়ে এলিজাবেথ সোয়ান, ক্যাপ্টেন হেক্টর বারবোসার নেতৃত্বাধীন ব্ল্যাক পার্ল-এর নাবিকদের দ্বারা অপহৃত হয়। কারণ অ্যাজটেক স্বর্ণ এবং এলিজাবেথের রক্তের মাধ্যমে তারা তাদের ওপর আরোপিত অভিশাপ থেকে মুক্ত হবে। এদিকে এলিজাবেথে ছোটবেলার বন্ধু ও গোপন প্রেমিক উইল টার্নার, ক্যাপ্টেন জ্যাক স্প্যারোকে সঙ্গে নিয়ে এলিজাবেথকে উদ্ধারের জন্য রওনা হয়।

ডেড ম্যান’স চেস্ট সম্পাদনা

ইস্ট ইন্ডিয়া ট্রেডিং কোম্পানির লর্ড কাটলার বেকেট উইল ও এলিজাবেথকে গ্রেপ্তার করে, কারণ তারা গত ছবির শেষ দিকে জ্যাক স্প্যারোকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছিলো। পরে বেকেট উইলকে প্রস্তাব দেয় যে, যদি সে স্প্যারো ও তার জাদুকরী কম্পাস খুঁজতে সাহায্য করে তবে সে তাকে ও এলিজাবেথকে মুক্তি দেবে। এই সময়ে স্প্যারো খলনায়ক ডেভি জোন্সের এক পুরোনো ঋণ থেকে নিজেকে মুক্ত করতে ব্যস্ত।

অ্যাট ওয়ার্ল্ড’স এন্ড সম্পাদনা

লর্ড কার্টলার বেকেট, ডেভি জোন্সের ওপর ক্ষমতা অধিকার করে, এবং জোন্সের জাহাজ দ্য ফ্লাইং ডাচম্যান-এর সাহায্যে দস্যুতা চিরতরে দূর করতে উন্মুখ হয়। ইস্ট ইন্ডিয়া ট্রেডিং কোম্পানির সাথে যুদ্ধ করার জন্য জ্যাক স্প্যারোকে প্রয়োজন হয়, তাই বারবোসা, টার্নার, এলিজাবেথ ও ব্ল্যাক পার্লের নাবিকরা ডেভি জোন্স লকার থেকে স্প্যারোকে উদ্ধার করতে যাত্রা করে। কারণ ক্যারিবীয় অঞ্চলের জলদস্যু অধিনায়ক হিসেবে সে ব্রেদার্ন কোর্টের নয় জলদস্যু অধিনায়কের (পাইরেট লর্ড) একজন।

অন স্ট্রেঞ্জার টাইডস সম্পাদনা

চলচ্চিত্রটির কাহিনী নেওয়া হচ্ছে টিম পাওয়ারের উপন্যাস অন স্ট্রেঞ্জার টাইডস থেকে। এই পর্বে ফাউন্টেইন অফ ইয়ুথের সন্ধানে ক্যাপ্টেন জ্যাক স্প্যারো (জনি ডেপ) অ্যাঞ্জেলিকা’র (পেনেলোপে ক্রুজ) সাথে যোগ দেন। তাঁদের সাথে ফাউন্টেইন অফ ইয়ুথের সন্ধানের আরও যোগ দেয় জলদস্যু ব্ল্যাকবিয়ার্ড (ইয়ান ম্যাকশেন), এবং তাঁদের পিছু নেয় ক্যাপ্টেন বারবোসা (জিওফ্রে রাশ)। চলচ্চিত্রটি পরিবেশিত হয় ওয়াল্ট ডিজনি পিকচার্সের সৌজন্য। ১৮ ও ২০ মে ২০১১-এর চলচ্চিত্রটি যথাক্রমে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে, ও বিশ্বব্যাপী মুক্তি লাভ করে। ডিজনি ডিজিটাল থ্রি-ডিআইম্যাক্স থ্রিডি ফরম্যাটের পাশাপাশি প্রচলিত দ্বিমাত্রিক আইম্যাক্স ফরম্যাটেও চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়।

প্রধান চরিত্র সম্পাদনা

চরিত্র চলচ্চিত্র
কার্স অফ দ্য ব্ল্যাক পার্ল ডেড ম্যান’স চেস্ট অ্যাট ওয়ার্ল্ড’স এন্ড অন স্ট্রেঞ্জার টাইডস
ক্যাপ্টেন জ্যাক স্প্যারো জনি ডেপ
ক্যাপ্টেন হেক্টর বারবোসা জিওফ্রে রাশ
জোশামি গিবস কেভিন ম্যাকনেলি
ব্ল্যাকবিয়ার্ড   ইয়ান ম্যাকশেন
ব্ল্যাকবিয়ার্ডের কন্যা   পেনেলোপে ক্রুজ
স্ক্র্যাম   স্টিফেন গ্র্যাহাম
ফিলিপ   স্যাম ক্লেফিন
সাইরিনা   অ্যাস্ট্রিড বার্গেস-ফ্রিসবি
উইল টার্নার অরল্যান্ডো ব্লুম  
এলিজাবেথ সোয়ান কিরা নাইটলি  
জেমস নরিংটন জ্যাক ডেভেনপোর্ট  
ওয়েদার্বি সোয়ান জোনাথন প্রাইস  
র‌্যাগেটি ম্যাকেঞ্জি ক্রুক  
পিন্টেল লি আরেনবার্গ  
মার্টি মার্টিন ক্লেবা  
কটন ডেভিড বেলি  
ডেভি জোন্স   বিল নাই  
লর্ড কার্টলার বেকেট   টম হল্যান্ডার  
টিয়া ডালমা (ক্যালিপসো)   নেওমি হ্যারিস  
বুটস্ট্র্যাপ বিল টার্নার   স্টেলান স্কার্সগার্ড  
মার্সার   ডেভিড শোফিল্ড  
সাও ফ্যাং   চাও উন-ফ্যাট  
ক্যাপ্টেন টিগ   কিথ রিচার্ডস   (অনিশ্চিত)
ম্যালরয় অ্যাঙ্গাস বার্নেট   অ্যাঙ্গাস বার্নেট  
মার্টগ জাইলস নিউ   জাইলস নিউ  
অ্যানামারিয়া জো সালদানা    
বানর জ্যাক টারা/লেভি   (অনিশ্চিত)
বন্দীশালার কুকুর চপার  

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা