নিখিল সেন

বাংলাদেশী অভিনেতা

নিখিল সেনগুপ্ত (১৬ এপ্রিল ১৯৩১ – ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯) ছিলেন বাংলাদেশের একজন প্রতিথযশা নাট্যকার ও সংস্কৃতিকর্মী। এছাড়াও তিনি একজন অভিনয় শিল্পী, আবৃতিশিল্পী, ভাষা সৈনিক, মুক্তিযোদ্ধা এবং রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। আবৃতিতে অবদানের জন্য ২০১৫ সালে শিল্পকলা পদক এবং নাটকে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ২০১৮ সালে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার একুশে পদক লাভ করেন।[১][২]

নিখিল সেন
জন্ম(১৯৩১-০৪-১৬)১৬ এপ্রিল ১৯৩১
বরিশাল, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান বাংলাদেশ)
মৃত্যু২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯(2019-02-25) (বয়স ৮৭)
বরিশাল, বাংলাদেশ
জাতীয়তাবাংলাদেশী
পিতা-মাতা
  • যতীশ চন্দ্র সেনগুপ্ত (পিতা)
  • সরোজিনী সেনগুপ্ত (মাতা)
পুরস্কারশিল্পকলা পদক (২০১৫)
একুশে পদক (২০১৮)

প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা

নিখিল সেনগুপ্ত ১৯৩১ সালের ১৬ এপ্রিল বরিশালের কলশ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।[১] পুরো নাম নিখিল সেনগুপ্ত হলেও তিনি নিখিল সেন এবং নিখিল দা নামেই পরিচিত। তার পিতার নাম যতীশ চন্দ্র সেনগুপ্ত ও মাতার নাম সরোজিনী সেনগুপ্ত। এই দম্পতির দশ সন্তানের মধ্যে নিখিল চতুর্থ।[১] তিনি মাধ্যমিক পাশ করে উচ্চ শিক্ষার জন্য কলকাতা সিটি কলেজে ভর্তি হন এবং কলকাতা থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করে পুনরায় বরিশালে ফিরে আসেন।

কর্মজীবন সম্পাদনা

১৯৪১ সাল থেকে নিখিল বরিশালের সাংস্কৃতিক কার্যক্রম বিশেষ করে থিয়েটার ও আবৃত্তিতে জরিত ছিলেন। তিনি ১৯৫১ সালে প্রতিষ্ঠিত বরিশাল শিল্পী সংসদের একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। ১৯৫২ সালে বরিশাল থিয়েটার নামে একটি সাংস্কৃতিক দল গঠন করেন। নিখিল সিরাজের স্বপ্ন নাটকে সিরাজ চরিত্রে অভিনয় করার মধ্য দিয়ে নাট্যজীবন শুরু করেন নিখিল সেন। পরবর্তীতে অসংখ্য নাটকে অভিনয় করেন।

২০০৫ সাল পর্যন্ত তিনি ২৮টি মঞ্চ নাটকে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।[৩] এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, মনোজ মিত্রের সাজানো বাগান, মমতাজউদ্দীন আহমেদের নীলদর্পণ এবং মামুনুর রশীদের ওরা কদম আলী

রাজনীতি ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ সম্পাদনা

নিখিল সেন কমিউনিস্ট আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে যোগদান করেন এবং পাকিস্তানি শাসনামলে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হিসেবে দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিলেন।[৪] ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে তিনি যুদ্ধে যোগদান করেন।

পুরস্কার ও সম্মাননা সম্পাদনা

ব্যক্তিগত জীবন ও মৃত্যু সম্পাদনা

নিখিল সেনগুপ্ত ব্যক্তিগত জীবনে ১ ছেলে ও ২ কন্যার জনক। ২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বার্ধক্য জনিত কারণে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্থানীয় সময় দুপুর ১টায় ৮৭ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।[৬][৭]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "একুশে পদক পাচ্ছেন বরিশালের নিখিল সেন"বৈশাখী টেলিভিশন। ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  2. "একুশে পদকপ্রাপ্ত নিখিল সেনকে বরিশাল প্রেসক্লাবের সংবর্ধনা"কালের কণ্ঠ। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  3. "একুশে পদকপ্রাপ্ত নিখিল সেন আর নেই"যুগান্তর। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  4. "একু‌শে পদকপ্রাপ্ত নিখিল সেন আর নেই"দেশ টিভি। ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  5. "একুশে পদক পাচ্ছেন একুশ গুণী"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  6. "একুশে পদকপ্রাপ্ত নিখিল সেন আর নেই"বাংলাদেশ প্রতিদিন। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  7. "একুশে পদকপ্রাপ্ত নিখিল সেনের প্রয়াণ, সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোক"চ্যানেল আই। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯