নাজমুল আবেদীন ফাহিম
নাজমুল আবেদীন ফাহিম একজন বাংলাদেশী ক্রিকেট প্রশিক্ষক। তিনি দীর্ঘদিন বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের গেম ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
নাজমুল আবেদীন ফাহিম | |
---|---|
জন্ম | মতিঝিল, ঢাকা, পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ) |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
মাতৃশিক্ষায়তন | জগন্নাথ কলেজ |
পেশা | ক্রিকেট প্রশিক্ষক |
প্রতিষ্ঠান | |
দাম্পত্য সঙ্গী | সামিয়া ফেরদৌস (বি. ২০০৭) |
পুরস্কার | জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার |
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনানাজমুল আবেদীন ফাহিম ঢাকার মতিঝিলে স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান কলোনিতে (বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংক কলোনি) জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানে চাকরি করতেন। পরবর্তীতে বাবার চাকরির সুবাদে ফাহিম করাচিতে চলে যান এবং ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করেন।[১]
শিক্ষাজীবন
সম্পাদনাফাহিমের শিক্ষা জীবন শুরু হয় ঢাকার স্টেট ব্যাংক প্রিপারেটরি স্কুলে। পরবর্তীতে তিনি করাচিতে যান এবং কয়েক বছর পর দেশে ফিরে মতিঝিল সেন্ট্রাল গভর্নমেন্ট হাই স্কুলে ভর্তি হন। সেখান থেকে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তিনি নটর ডেম কলেজে ভর্তি হন এবং ১৯৭৭ সালে সেখান থেকে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে তিনি জগন্নাথ কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।[১]
কর্মজীবন
সম্পাদনাখেলোয়াড় জীবনে ফাহিম মূলত ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। দ্বিতীয় বিভাগের দল একতা বিতানের হয়ে তিনি পেশাদার ক্রিকেটে প্রবেশ করেন। পরবর্তীতে ওয়ারী ও গুলশান ইয়ুথ ক্লাবের হয়ে প্রথম বিভাগে অংশগ্রহণ করেন তিনি।
১৯৮৬ সালে তিনি মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় জেমস ফিনলে নামক একটি প্রতিষ্ঠানের চা-বাগানে সহকারী ম্যানেজার হিসেবে যোগদান করেন এবং ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত সেখানে চাকরি করেন। এরপর তিনি বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি)-তে যোগদান করেন। এর কয়েকমাস পর বৃত্তি নিয়ে ভারতের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব স্পোর্টস থেকে প্রশিক্ষণ নেন তিনি।[১]
তিনি পিচ কিউরেটর হিসেবেও প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট ম্যাচের পিচ প্রস্তুত করতে কাজ করেছিলেন তিনি।[২] এছাড়া ১৯৯৮ আইসিসি নক-আউট ট্রফির ম্যাচগুলোর জন্য পিচ তৈরিতেও তার অবদান আছে।
২০০০ সালে তিনি অস্ট্রেলিয়া থেকে কোচদের লেভেল টু কোর্স সম্পন্ন করেন। পরে, ২০০৯ সালে ঢাকায় এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের অধীনে লেভেল থ্রি কোর্স করেন।[১]
২০০৫ সালে তিনি বিকেএসপি ছেড়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে হাই পারফরম্যান্স দলের সিনিয়র কোচ হিসেবে যোগদান করেন। এরপর তিনি অনূর্ধ্ব-১৯ দলের প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পান।[৩][৪] ২০০৮-এ তাকে প্রশিক্ষণ থেকে সরিয়ে প্রশাসনিক দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ সময় তিনি কাজ করেছেন বিসিবির গেম ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার হিসেবে। ২০১৭ সালে তাকে মহিলা দলের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তার সময়েই বাংলাদেশ নারী দল ২০১৮ এশিয়া কাপে শিরোপা জেতে, বিজয়ী হয় ২০১৯ আইসিসি মহিলা বিশ্ব টুয়েন্টি২০ বাছাইপর্বেও। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি বিসিবি থেকে পদত্যাগ করেন।[৫] ২০২১ সালে বিসিবির কার্যনির্বাহী পরিষদের নির্বাচনে পরিচালক পদে খালেদ মাহমুদ সুজনের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন তিনি।[৬][৭]
২০২২ টি১০ লিগে তিনি বাংলা টাইগার্স দলের মেন্টর হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হন।[৮][৯] ২০২৩ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে ফরচুন বরিশালের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।[১০]
ব্যক্তিগত জীবন
সম্পাদনাফাহিম ২০০৭ সালে সামিয়া ফেরদৌসের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।[১]
পুরস্কার ও সম্মাননা
সম্পাদনা- জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার (২০২০)[১১]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "কোচ একজন মানুষকে বদলে দিতে পারেন"। কালের কণ্ঠ। ৩০ মার্চ ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২।
- ↑ "বিসিবি ছাড়ার কারণ জানালেন নাজমুল আবেদীন ফাহিম"। আরটিভি। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২।
- ↑ "একটু দম নিতে বিসিবি ছাড়লেন ফাহিম"। সারাবাংলা। ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২।
- ↑ "Nazmul Abedeen resigns from BCB"। ডেইলি সান (ইংরেজি ভাষায়)। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২।
- ↑ "১৪ বছর পর পুরনো ঠিকানায় ফিরলেন নাজমুল আবেদীন ফাহিম"। আমাদের সময়। ৩ অক্টোবর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২।
- ↑ "বিসিবি পরিচালক হতে নির্বাচনে লড়বেন নাজমুল আবেদীন ফাহিম"। ডেইলি স্টার। সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "বিসিবি নির্বাচনে সুজনের বিশাল জয়"। বাংলানিউজ২৪। অক্টোবর ৬, ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২।
- ↑ "বাংলা টাইগার্সে সাকিবের সতীর্থ আমির"। যুগান্তর। ২৫ আগস্ট ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২।
- ↑ "Nazmul Abedeen Fahim as Bangla Tigers team mentor for season 6"। বাংলা টাইগার্স (ইংরেজি ভাষায়)। ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২।
- ↑ "বরিশালের হেড কোচের দায়িত্বে ফাহিম"। ঢাকা পোস্ট। ১৭ নভেম্বর ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার পেলেন ৮৫ জন"। যুগান্তর। ১১ মে ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২।