দেবু ভট্টাচার্য

একজন বাংলাদেশী সঙ্গীতজ্ঞ

দেবু ভট্টাচার্য (জন্ম: ১ আগস্ট, ১৯৩০ - মৃত্যু: ১৯৯৪) একজন বাংলাদেশী সঙ্গীতজ্ঞ। তিনি গীতিকার হিসেবে সঙ্গীতাঙ্গনে প্রবেশ করলেও পরবর্তীতে একজন নামকরা সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক হিসেব উপমহাদেশে সমাদৃত হন।[২] তিনি মরণোত্তর বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান একুশে পদক-এ ভূষিত হন।[৩] এছাড়াও লোকমান হোসেন ফকির-এর সাথে যৌথভাবে শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক বিভাগে প্রথমবারের মত প্রদত্ত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।[৪]

দেবু ভট্টাচার্য
জন্ম
প্রাণকুমার ভট্টাচার্য

১ আগস্ট, ১৯৩০[১]
মৃত্যু১৯৯৪
জাতীয়তাবাংলাদেশী
অন্যান্য নামদেবদাস ভট্টাচার্য
নাগরিকত্ব বাংলাদেশ
শিক্ষাচিত্রকলা
মাতৃশিক্ষায়তনকলকাতা আর্ট স্কুল
পেশাগীতিকার, সুরকার এবং সঙ্গীত পরিচালক
পরিচিতির কারণসঙ্গীতজ্ঞ
পুরস্কারজাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার
সঙ্গীত কর্মজীবন
ধরন
বাদ্যযন্ত্র

প্রাথমিক জীবন সম্পাদনা

দেবু ভট্টাচার্য ১৯৩০ সালের ১ আগস্ট বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার জন্মের আগে তার পরিবার থাকতেন বাগেরহাট জেলার ফকিরপুরে। দেবুর বাবার দেওয়া নাম ছিল প্রাণকুমার ভট্টাচার্য। স্কুলে দেবদাস ভট্টাচার্য নামে তার নাম নিবন্ধিত হয়। ১৯৫০ সালে তিনি কলকাতার আর্ট স্কুল থেকে চিত্রকলা বিষয়ে পড়াশুনা শেষ করেন। সেখানে তার শিক্ষক ছিলেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত চিত্রকর জয়নুল আবেদীন। পরবর্তীতে তিনি সাহচর্য লাভ করেন আরও দুই স্বনামধন্য চিত্রশিল্পী পটুয়া কামরুল হাসানএস এম সুলতান-এর।

কর্মজীবন সম্পাদনা

দেবু ভট্টাচার্য ১৯৪৫ সালে কর্মজীবন শুরু করেন তিমিরবরণ পরিচালিত একটি অর্কেস্ট্রা গ্রুপে একজন সঙ্গীতজ্ঞ হিসেবে। সেখানেই তিনি গীতিকার ও সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। নাচ ও নাটকেও তার প্রবল আগ্রহ ছিল। খুব অল্প বয়স থেকেই তিনি বাঁশি বাজানোর পারদর্শী ছিলেন। ১৯৫০ সালে ভারতীয় ধ্রুপদী রাগে বাজানো তার কয়েকটি বাঁশি সঙ্গীতের রেকর্ড বাজারে আসে। ১৯৫০ থেকে ১৯৭০-এর দশকে তিনি ধ্রুপদী, লোকসঙ্গীত ও আধুনিক ধারার সঙ্গীত রচনা করেছেন। এই গানগুলোতে তিনি স্থানীয় ও পাশ্চাত্য ধ্রুপদী ঘরানার সমন্বয় ঘটিয়েছেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশের প্রখ্যাত অনেক কবির দেশপ্রেমমূলক কবিতার আলোকে সঙ্গীত রচনা ও সুর করেছেন। রুনা লায়লার কণ্ঠে দেশপ্রেমমূলক "প্রতিদিন তোমায় দেখি সূর্যের আগে" গানটি তার এক আসাধারন সৃষ্টি।[৫]

দেবু ভট্টাচার্যের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশী ও পাকিস্তানি অনেক সঙ্গীত শিল্পী প্রতিষ্ঠা অর্জন করেছেন। ১৯৬০-এর দশকে তিনি পাকিস্তানের কণ্ঠশিল্পী গজল সম্রাট মেহেদী হাসান, সুরাইয়া মুলতানীকর, ও আহমদ রুশদী ও বাঙালি সঙ্গীতশিল্পীদের মধ্যে বশির আহমেদ, শাহনাজ রহমতুল্লাহ, ফেরদৌসী রহমান, রুনা লায়লা প্রমুখের মাধ্যমে তিনি উপমহাদেশে বাংলা সঙ্গীত ও সংস্কৃতিকে জনপ্রিয় করে তোলেন। তার অনুপ্রেরণাতেই আলতাফ মাহমুদ বড় মাপের কণ্ঠশিল্পী ও সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে গড়ে ওঠেন।[৬] টেলিভিশন ও মঞ্চে তার জীবনের সর্বশেষ পরিবেশনা ছিল জ্যাজ শিল্পী চিকো হেরম্যান-এর সঙ্গে একটি যৌথ ফ্ল্যুট-সিম্ফনি।

চলচ্চিত্রের তালিকা সম্পাদনা

পুরস্কার ও সম্মাননা সম্পাদনা

মৃত্যু সম্পাদনা

দেবু ভট্টাচার্য ১৯৯৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "আজ ১ আগস্ট"দৈনিক যুগান্তর। ঢাকা, বাংলাদেশ। ১ আগস্ট ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মে ২০১৬ 
  2. "তিন সুরকারের সঙ্গীতানুষ্ঠান শিল্পকলায়"দৈনিক আমার দেশ। ১৪ জুন ২০১৩। ২১ জুন ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মে ২০১৬ 
  3. "একুশে পদক"সাহিত্য বাজার। ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মে ২০১৬ 
  4. "চার দশকে আমাদের সেরা চলচ্চিত্রগুলো"। ২৪ অক্টোবর ২০১২। ২৮ ডিসেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মে ২০১৬ 
  5. রওশন আরা বিউটি (৩ এপ্রিল ২০১৪)। "প্রতিদিন তোমায় দেখি সূর্যের আগে, প্রতিদিন তোমার কথা হৃদয়ে জাগে"দৈনিক আজাদী। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মে ২০১৬ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  6. "স্মরণে আলতাফ মাহমুদ"চ্যানেল আই অনলাইন। ২৩ ডিসেম্বর ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ মে ১৭, ২০১৬ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  7. "সাতই মার্চের তারুণ্য উদ্দীপ্ত কনসার্ট জয়বাংলা"দৈনিক জনকণ্ঠ। ঢাকা, বাংলাদেশ। ৮ মার্চ ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ মে ১৭, ২০১৬ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা