দত্তারাম হিন্দলেকর
দত্তারাম ধর্মজী হিন্দলেকর (মারাঠি: दत्ताराम हिंदलेकर; জন্ম: ১ জানুয়ারি, ১৯০৯ - মৃত্যু: ৩০ মার্চ, ১৯৪৯) তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বোম্বে প্রেসিডেন্সির বোম্বে এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ভারতীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। ভারত ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৩৬ থেকে ১৯৪৬ সময়কালে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।
;![]() ১৯৩৬ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে দত্তারাম হিন্দলেকর | ||||||||||||||||||||||
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | দত্তারাম ধর্মজী কাঞ্জী হিন্দলেকর | |||||||||||||||||||||
জন্ম | বোম্বে (বর্তমানে: মুম্বই), বোম্বে প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত | ১ জানুয়ারি ১৯০৯|||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ৩০ মার্চ ১৯৪৯ বোম্বে, মহারাষ্ট্র, ভারত | (বয়স ৪০)|||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||
ভূমিকা | উইকেট-রক্ষক-ব্যাটসম্যান | |||||||||||||||||||||
সম্পর্ক | বিজয় মাঞ্জরেকার (ভ্রাতৃস্পুত্র) সঞ্জয় মাঞ্জরেকার (প্রপৌত্র) | |||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ২২) | ২৭ জুন ১৯৩৬ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ১৭ আগস্ট ১৯৪৬ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||
১৯৩৪ - ১৯৪৬ | বোম্বে | |||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৯ জানুয়ারি ২০২০ |
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে হিন্দু ও মুম্বই দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে কার্যকরী ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শন করতেন দত্তারাম হিন্দলেকর।
শৈশবকাল
সম্পাদনামহারাষ্ট্রের বোম্বে এলাকার রত্নগিরির কৃষক পরিবারের সন্তানরূপে দত্তারাম হিন্দলেকরের জন্ম। বোম্বে পোর্ট ট্রাস্টে মাসিক ৮ রূপিতে কাজ করতে থাকেন। ফলশ্রুতিতে, এক জোড়া গ্লাভস কেনার মতো অর্থ তার সঞ্চয়ে ছিল না। ফলশ্রুতিতে, প্রায়শঃই খেরশেদ মেহেরমজী’র কাছ থেকে গ্লাভস ধার করে মাঠে নামতে হতো।[১] বিখ্যাত ক্রিকেটার বিজয় মাঞ্জরেকার ও সঞ্জয় মাঞ্জরেকার সম্পর্কে তার ভাইপো ও প্রপৌত্র হন।[১]
খেলোয়াড়ী জীবন
সম্পাদনা১৯৩৪-৩৫ মৌসুম থেকে ১৯৪৬-৪৭ মৌসুম পর্যন্ত দত্তারাম হিন্দলেকরের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে চারটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন দত্তারাম হিন্দলেকর। ২৭ জুন, ১৯৩৬ তারিখে লর্ডসে সফরকারী ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১৭ আগস্ট, ১৯৪৬ তারিখে ওভালে একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি। ভারতের টেস্ট ইতিহাসের অন্যতম সেরা উইকেট-রক্ষকদের অন্যতম ছিলেন তিনি। খুব স্বল্পসংখ্যক ক্রিকেটারদের অন্যতম হিসেবে ইনিংস উদ্বোধন ও সর্বশেষে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন। অংশগ্রহণকৃত চার টেস্টের সবকটিই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেন।
১৯৩৬ ও ১৯৪৬ সালে ভারত দলের সাথে দুইবার ইংল্যান্ড গমন করেছিলেন। উভয় ক্ষেত্রেই দলের প্রথম পছন্দের উইকেট-রক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ১৯৩৬ সালে লর্ডস টেস্টে ব্যাটিং উদ্বোধনে নেমেছিলেন। তবে আঙ্গুলে আঘাত পান ও দৃষ্টিবিভ্রমের কবলে পড়েছিলেন।[২] তার এ আঘাতপ্রাপ্তির ফলে পরবর্তী টেস্ট খেলায় অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকে এবং বিজয় মার্চেন্ট ও মুশতাক আলী’র ন্যায় খ্যাতনামা উদ্বোধনী জুটির আত্মপ্রকাশ ঘটে।
১৯৪৬ সালের ইংল্যান্ড গমন করার বিষয়টি অপ্রত্যাশিত ঘটনারূপে বিবেচিত হয়ে আসছে। ঐ পর্যায়ে তার বয়স তখন ৩৭ বছর ছিল। ১৯৪৫-৪৬ মৌসুমের বোম্বে পঞ্চদলীয় প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত খেলায় দূর্দান্ত ক্রীড়ানৈপুণ্য প্রদর্শন করেছিলেন। ফলে, দল নির্বাচকমণ্ডলী তার উপর সুনজর পড়ে। আঘাতের কারণে ১৯৪৬ সালেও খেলায় অংশগ্রহণ সীমিত হয়ে পড়ে। ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্টে সবশেষে মাঠে নামেন। তিনি রাঙ্গা সোহনী’র সাথে জুটি গড়েন। শেষ ১৩ মিনিট বল ঠেকিয়ে খেলাকে রক্ষা করতে সমর্থ হয়েছিলেন তিনি।
খেলার ধরন
সম্পাদনাডানহাতি ব্যাটসম্যান দত্তারাম হিন্দলেকর বাঁকাভাবে টুপি পরিধান করতেন ও পা ৪৫ ডিগ্রী কোণে বাঁকিয়ে ক্রিজে দাঁড়াতেন। দৃষ্টিনন্দন ব্যাটিংশৈলীর অধিকারী না হলেও উইকেটের পিছনে ও ব্যাটিংকালে দক্ষতার পরিচয়জ্ঞাপন করেছেন। ব্যক্তিত্ব গুণে সর্বদাই আমোদপ্রিয়ভাব বজায় রাখতেন ও সফরকারী দলের অত্যন্ত জনপ্রিয় সদস্যের মর্যাদা লাভ করেছিলেন।
ব্যক্তিগত জীবন
সম্পাদনাউপযুক্ত চিকিৎসার অভাব হেতু ৩০ মার্চ, ১৯৪৯ তারিখে মাত্র ৪০ বছর বয়সে দত্তারাম হিন্দলেকরের দেহাবসান ঘটে। অসুস্থতার শেষ দিকে বোম্বের আর্থার রোড হাসপাতালে তাকে প্রেরণ করা হয়েছিল। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। স্ত্রী ও সাত সন্তান রেখে যান তিনি। তার মৃত্যুর পর বিসিসিআই ও বোম্বে ক্রিকেট সংস্থা পরিবারের সাহায্যার্থে আর্থক সাহায্যের আবেদন জানালেও খুব কমই সাড়া পড়েছিল। ৬ আগস্ট, ১৯৪৯ তারিখে বোম্বে পোর্ট ট্রাস্ট কর্তৃপক্ষ ক্যাবারে নৃত্য আয়োজন করে ও ৭০ রূপির অধিক অর্থ সংগৃহীত হয়েছিল। ঐ নৃত্যানুষ্ঠানে ভারতের প্রায় সকল শীর্ষস্থানীয় ক্রিকেটারদের সমাগম ঘটেছিল।[৩]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Dattaram Hindlekar - India Cricket - Cricket Players and Officials - ESPNcricinfo"। Cricinfo। ২০১৮-০১-১৮। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-১৮।
- ^ Christopher Martin-Jenkins, The Complete Who's Who of Test Cricketers
- ^ Richard Cashman, Patrons, Players and the Crowd (1979), p. 89
- ^ Boria Majumdar, Twenty-Two Yards to Freedom (2004), p. 100
আরও দেখুন
সম্পাদনাবহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে দত্তারাম হিন্দলেকর (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে দত্তারাম হিন্দলেকর (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)