ডিমলা সদর ইউনিয়ন
ডিমলা ইউনিয়ন বাংলাদেশের নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার অন্তর্গত একটি ইউনিয়ন। ডিমলা ইউনিয়ন ডিমলা উপজেলার কেন্দ্রস্থল।এই ইউনিয়ন এর বাবুরহাট ওয়ার্ডে ডিমলা উপজেলা প্রশাসনিক কার্যালয় অবস্থিত এবং বাবুরহাটেই এই উপজেলার সবচেয়ে বড় বাজার অবস্থিত।
ডিমলা | |
---|---|
ইউনিয়ন | |
ডাকনাম: ডিমলা ইউপি | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | রংপুর বিভাগ |
জেলা | নীলফামারী জেলা |
উপজেলা | ডিমলা উপজেলা |
সরকার | |
• চেয়ারম্যান | আবুল কাশেম সরকার (বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ) |
উচ্চতা[১] | ৫৫ মিটার (১৮০ ফুট) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ৪৪,৯৩২ |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৫৩৫০ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
অবস্থান
সম্পাদনাডিমলা সদর ইউনিয়নের উত্তরে বালাপাড়া ইউনিয়ন ও খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়ন, পূর্বে গয়াবাড়ী ইউনিয়ন ও নাউতারা ইউনিয়ন, দক্ষিণে জলঢাকা উপজেলার গোলনা ইউনিয়ন এবং পশ্চিমে বালাপাড়া ইউনিয়ন অবস্থিত।[২]
ইউনিয়নের পশ্চিম দিক দিয়ে বুড়ি তিস্তা নদী ও সিংহারা নদী প্রবাহিত হয়েছে।
প্রশাসনিক এলাকা
সম্পাদনাডিমলা সদর ইউনিয়ন ১০টি মৌজা/গ্রাম নিয়ে গঠিত। মৌজা সমুহ ৯টি প্রশাসনিক ওয়ার্ডে বিভক্ত। ডিমলা ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে একজন ইউপি সচিব, একজন দফাদার ও ৯ জন্য গ্রাম পুলিশ রয়েছে। জনগণের প্রতক্ষ্য ভোটে নির্বাচিত একজন চেয়ারম্যান, তিনজন সংরক্ষিত নারী সদস্যা ও ৯ জন্য সাধারন সদস্য নিয়ে ইউপি বোর্ড সংসদ গঠিত। জনগণের প্রতক্ষ্য ভোটে নির্বাচিত বর্তমান চেয়ারম্যান হলেন জনাব মোঃ আবুল কাশেস সরকার (বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ)।
- উত্তর তিতপাড়া
- দক্ষিণ তিতপাড়া
- বাবুর হাট
- রামডাঙ্গা
- সরদার হাট
- কুঠির ডাঙ্গা
- ডিমলা
- নটাবাড়ী
- কুমার পাড়া
- পচার হাট
ইতিহাস
সম্পাদনাঐতিহাসিকদের মতে, প্রাচীনকালে ডিমলাসহ এ অঞ্চল কামরূপ রাজ্যের অংশ ছিল। এ অঞ্চলটি পাল, খেনবংশ, কোচবংশ প্রভৃতি রাজবংশ দীর্ঘ সময় ধরে শাসন করেছে। ডিমলা থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে জলঢাকা উপজেলার খেরকাটি নামক গ্রামে পাল বংশের দ্বিতীয় রাজা ধর্মপাল দুর্গ নির্মাণ করেছিলেন, পরবর্তীতে তার নামে এ এলাকার নাম হয় ধর্মপাল। ১৪শ শতাব্দির শেষদিকে অঞ্চলটি খেন রাজবংশের অন্তর্গত ছিল। আলাউদ্দিন হোসেন শাহ কামতা রাজ্য জয় করলেও এ অঞ্চল মুসলমানদের দখলে আসেনি। বরং কোচ রাজ্যের অন্তর্গত হয়। আইন-ই-আকবরীর তথ্য মতে এ অঞ্চল কাছওয়ারা বা কোচবিহার নামে অবহিত হত। মোঘল আমলে রংপুর অঞ্চলে যে ছয়টি পরগনা ছিল, ডিমলা ছিল কাজিরহাট পরগনার অধীন। ১৬৮৭ সালে সুবেদার শায়েস্তা খাঁর পুত্র ইবাদত খাঁ কোচ মহারাজা মহিন্দ্র নারায়নের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয় এবং কাজিরহাট, কাকিনা ও ফতেহপুর চাকলা দখল করে নেয়। সেই সময় এ এলাকার জমিদার হন মোহাম্মদ কলিমুল্লাহ।
১৭৬৫ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার দেওয়ানি লাভ করলে এ অঞ্চলেও ব্যাপক পরিবর্তন। জমি বন্দোবস্ত ও পাঁচশালা ইজারা ব্যস্থার কারনে বাংলার অন্যান্য অঞ্চলের মত এখানেও অনেক ভূস্বামীর জন্ম হয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ১৭৭০ সালে ইজারা নিয়ে ডিমলার জমিদার হন বাবু হররাম সেন। ১৭৬৯ সালে কালেক্টর গঠিত হলে ডিমলা রংপুর জেলার অধীন হয়। ১৮৫৭ সালে ডিমলা থানা সদর প্রতিষ্ঠিত হয়। যদিও ১৭৯৩ সালে ১২ নং রেজুলেশন অনুযায়ী তৎকালীন রংপুর জেলায় যে ২১টি থানা গঠিত হয়েছিল, ডিমলা ছিল তার একটি, যা বর্তমানকার কিশোরগঞ্জ, জলঢাকা ও ডিমলা উপজেলা নিয়ে গঠিত ছিল। ১৮৭৫ সালে নীলফামারী মহকুমা সৃষ্টির হলে ডিমলা এর অন্তর্ভুক্ত হয়। ডিমলা উপজেলা গঠিত হলে ডিমলা ইউনিয়ন এর অন্তর্ভুক্ত হয় ১০টি মৌজা/গ্রাম নিয়ে।
জনসংখ্যা
সম্পাদনাডিমলা সদর ইউনিয়নের জনসংখ্যা উপাত্ত[৩]
- মোট জনসংখ্যাঃ ৪৪৯৩২ জন
- নারীঃ ২১৫৯৫ জন
- পুরুষঃ ২৩৩৩৭ জন
শিক্ষা
সম্পাদনাডিমলা সদর ইউনিয়নে ৬ টি কলেজ, ৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১টি ফাজিল, ১টি আলিম মাদ্রাসা, ৪৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৬টি কিন্ডার গার্ডেন রয়েছে।[৪]
গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমুহঃ-
- ডিমলা কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড পলিটেকনিক কলেজ
- ডিমলা ইসলামিয়া ডিগ্রী কলেজ
- ডিমলা সরকারি মহিলা কলেজ
- ডিমলা সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ
- ডিমলা টেকনিক্যাল এ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট
- ডিমলা টেক্সটােইল ইন্সটিটিউট
- ডিমলা রানী বিন্দা রানী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
- ডিমলা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
- ডিমলা উচ্চ বিদ্যালয়
- স্বপন বিদ্যা নিকেতন
- ডিমলা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়
- জেলা পরিষদ স্কুল ও কলেজ
- ডিমলা পাবলিক স্কুল ও কলেজ
- ডিমলা মিলেনিয়াম স্কুল ও কলেজ
কম্পিউটার ও কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (শিক্ষা মন্ত্রনালয় ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ড অনুমোদিত কম্পিউটার ও কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্র নিম্নরুপ)
- কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ট্রেনিং ইন্সটিটিউট
- ডিমলা টেকনিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটার ট্রেনিং ইন্সটিটিউট
- ডিমলা কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার
অর্থনীতি
সম্পাদনাডিমলা ইউনিয়ন মূলত কৃষি প্রধান এলাকা। এ এলাকার ৬৬.৩৬% জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি। প্রধান কৃষি ফসলের মধ্যে রয়েছে ধান, ভূট্টা, আলু, মরিচ, তামাক, পিঁয়াজ, আদা, হলুদ। এ অঞ্চলে ভূট্টা ও মরিচের প্রচুর ফলন হয়। পূর্বে এ অঞ্চলে কাউন, তিল, তিসি, পাট ও গমের আবাদ করা হত। এছাড়াও এখানে কলা, লিচু, কাঁঠাল, আম, তরমুজ, পেঁপে ও খিরা বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয়। ২০০১ সালের ভূমিজরিপ অনুসারে উপজেলার ৫৭.৩৭% পরিবার কৃষিজমির মালিক।
কৃষি নির্ভর অর্থনীতির বাইরে মৎস্য, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগির খামার, আসবাবপত্রের কারখানা, কুটিরশিল্প, মৃৎশিল্প, লৌহশিল্প এলাকার অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি। সম্প্রতি এ এলাকায় উত্তরা ইপিজেড নীলফামারীর এভারগ্রীণ প্রোডাক্ট লিমিটেড নামক একটি কোম্পানী তার শাখা সম্প্রসারণের লক্ষে একটি বৃহৎ কারখানা শুরু করেছে।
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি
সম্পাদনা- মশিউর রহমান যাদু মিয়া; (রাজনীতিবিদ) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সিনিয়র মন্ত্রী ছিলেন।
- শফিকুল গনি স্বপন; (রাজনীতিবিদ) তিনি বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী ছিলেন।
- আফতাব উদ্দিন সরকার, (রাজনীতিবিদ) দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্য।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Geographic coordinates of Dimla, Bangladesh" (ইংরেজি ভাষায়)। DATEANDTIME.INFO। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জানুয়ারি ২০১৭।
- ↑ মানচিত্রে ডিমলা সদর ইউনিয়ন[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "ডিমলা সদর ইউনিয়নের জনসংখ্যা"। www.lcgbangladesh.org। ২৭ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৫।
- ↑ "ডিমলা সদর ইউনিয়নের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমুহ"। ডিমলা সদর ইউনিয়ন। ১৫ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
বাংলাদেশের ইউনিয়ন বিষয়ক এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |