জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী
জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী (২০ আগস্ট, ১৯১২ — ১ আগস্ট ১৯৮২) একজন বাঙালী সাহিত্যিক।
জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী | |
---|---|
জন্ম | ২০ আগস্ট ১৯১২ |
মৃত্যু | ১ আগস্ট ১৯৮২ |
মাতৃশিক্ষায়তন | অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ |
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনাজ্যোতিরিন্দ্র নন্দী ১৯১২ সালে অধুনা বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলায় তাঁর মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন । অবিভক্ত কুমিল্লার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাঁর বাল্যকাল ও কৈশোর কেটেছে।[১] তাঁর ডাকনাম ছিল ধনু। পিতা অপূর্বচন্দ্র নন্দী ব্রাহ্মণবাড়িয়া হাইস্কুলে শিক্ষকতা করতেন, তাঁর মায়ের নাম চারুবালা দেবী। অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৩০ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেছিলেন তিনি। ১৯৩২-এ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে আইএসসি পাশ করে ওই কলেজেই স্নাতক স্তরে ভর্তি হলেন জ্যোতিরিন্দ্র এবং ১৯৩৫ সালে প্রাইভেটে বিএ পাশ করেন তিনি। ১৯৩৬ সালে কর্মসূত্রে কলকাতা আসেন তিনি ও প্রথম চাকরি পান বেঙ্গল ইমিউনিটিতে। তারপর টাটা এয়ারক্রাফ্ট, জে ওয়ালটার থমসন-এর পাশাপাশি কাজ করেছেন যুগান্তর সংবাদপত্রের সাব এডিটর হিসেবে এবং মৌলানা আজাদ খান সম্পাদিত দৈনিক আজাদ পত্রিকায়। তার কর্মক্ষেত্রে ছিল ইন্ডিয়ান জুটমিলস অ্যাসোসিয়েশনের ইংরেজি ও বাংলা ভাষার মুখপত্র মজদুর ও জনসেবক পত্রিকা।[২]
সাহিত্য
সম্পাদনাছোটবেলা থেকে তিনি সাহিত্যচর্চ্চা করতেন। স্বদেশি আন্দোলনে যুক্ত থাকার অভিযোগে ১৯৩১ সালে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। এক বছর গৃহবন্দী থাকাকালীন তার সাহিত্যচর্চার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। জ্যোৎস্না রায় ছদ্মনামে সোনার বাংলা ও ঢাকার থেকে প্রচারিত বাংলার বাণী পত্রিকায় তাঁর লেখা কয়েকটি ছোটগল্প প্রকাশিত হয়। কলকাতায় এসে তিনি সাগরময় ঘোষের সান্নিধ্যে আসেন ও দেশ পত্রিকায় ১৯৩৬ সালে প্রকাশিত হয় ছোটগল্প রাইচরণের বাবরি। মাতৃভূমি, ভারতবর্ষ, চতুরঙ্গ, পরিচয় পত্রিকায় তাঁর লেখা প্রকাশিত হতে থাকে।[৩] প্রেমেন্দ্র মিত্রের নজরে আসে জ্যোতিরিন্দ্রর লেখা। তাঁর লেখা ছোটগল্প ভাত ও গাছ, ট্যাক্সিওয়ালা, নীল পেয়ালা, সিঁদেল, একঝাঁক দেবশিশু ও নীলফুল এবং বলদ পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিত হয়। ১৯৪৮ সালে দেশ পত্রিকায় ধারাবাহিক উপন্যাস সূর্যমুখী প্রকাশিত হয়। এর পর থেকে তিনি সাহিত্যচর্চাকেই জীবিকা হিসাবে বেছে নেন। জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী ১৯৬৫ সালে আনন্দবাজার পত্রিকা থেকে সুরেশচন্দ্র স্মৃতি পুরস্কার ও ১৯৬৬ সালে আনন্দ পুরস্কারে সম্মানিত হন। তাকে কল্লোল যূগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ছোটগল্পকার বলে মনে করা হয়।[৪] তাঁর উপন্যাসের সংখ্যা ২০টি ও গল্পগ্রন্থ আছে তিপান্নটি।[৫]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "জ্যোতিরিন্দ নন্দী - জীবন ও গল্প (pdf)"।
- ↑ "জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী – এক 'নিঃসঙ্গ লেখক'"। টার্গেট বাংলা (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৭-০৭-০৪। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৭-২৮।
- ↑ "আগুন ও নিরাসক্তি নিয়ে উঠোন জুড়ে দাঁড়িয়ে যে জন"। anandabazar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৭-২৮।
- ↑ "জ্যোতিরিন্দ্র নন্দীর গল্পে চেনা স্বর - কালি ও কলম"। কালি ও কলম (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৫-০৬-২০। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৭-৩০।
- ↑ "আনন্দবাজার পত্রিকা - কল-eকাতা"। archives.anandabazar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৭-২৮।