জেলা শিল্পকলা একাডেমি, মাদারীপুর

মাদারীপুরের সাংস্কৃতিক সংগঠন

জেলা শিল্পকলা একাডেমি, মাদারীপুর বা মাদারীপুর শিল্পকলা একাডেমি রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি অধিভুক্ত-নিয়ন্ত্রিত জেলাভিত্তিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র যা মাদারীপুরের নতুন শহর অধীনস্থ প্রধান সড়কের পার্শ্ববর্তী অবস্থিত।[২]

জেলা শিল্পকলা একাডেমি, মাদারীপুর
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির লোগো
অফিসিয়াল লোগো
নীতিবাক্যসৃজনশীল বাংলাদেশ
প্রতিষ্ঠিতফেব্রুয়ারি ১৯, ১৯৭৪
চেয়ারম্যানজেলা প্রশাসক
জেলা সাংস্কৃতিক কর্মকর্তামো‌ঃ সাইফুল ইসলাম মিলন[১]
অনুষদ
কর্মচারী
স্বত্বাধিকারীসংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়
অবস্থান,
বাংলাদেশ
ঠিকানাপ্রধান সড়ক, নতুন শহর, মাদারীপুর ৭৯০০
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

বিবরণ সম্পাদনা

বর্তমানে একাডেমিতে একটি মিলনায়তন, একটি কার্যালয় ও প্রশিক্ষণ ভবন, একটি মহড়া ভবন এবং একটি আর্ট গ্যালারি রয়েছে। এটি উপরে-নিচে তিনশত আসন সংবলিত তিনতলা বিশিষ্ট ভবন। মিলনায়তনের অভ্যন্তরে শিল্পীদের জন্য রয়েছে সাজঘর। ২০১৭ সালে নির্মিত নতুন ভবনটি সাধারণত নৃত্য, নাট্য, আবৃত্তি ও মূকাভিনয়সহ নানা পরিবেশনা শিল্পের চর্চা ও মহড়ার কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।[৩]

একাডেমির কার্যক্রম পরিচালনা পরিষদে রয়েছেন একজন জেলা সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা, একজন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, একজন কার্যালয় তত্ত্বাবধানকারী এবং আটজন কর্মচারী।

ইতিহাস সম্পাদনা

১৯৭৪ সালের ১৯শে ফেব্রুয়ারি মাদারীপুর শিল্পকলা একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়।[১] ১৯৮৮ সালের ১৮ই জুলাই মাদারীপুর সাংস্কৃতিক চর্চা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্যে তৎকালীন জেলা প্রশাসক কাজী নাসিরুল ইসলাম শকুনি দীঘির দক্ষিণ পাড়ে পুরাতন ভবনটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক শকুনি দীঘির উত্তর পার্শে একাডেমির বর্তমান স্থানে শিল্পকলা একাডেমি ভবন নির্মাণ করা হয়। নতুন ভবনটি ১৯১৭ সালের ২৮শে জানুয়ারি তৎকালীন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর উদ্ভোধন করেন।[৩]

কার্যক্রম সম্পাদনা

মাদারীপুর শিল্পকলা একাডেমি মূলত সঙ্গীত, চারুকলা, নৃত্য, মঞ্চনাটক সহ বিবিধ সাংস্কৃতিক বিষয়ের চর্চা এবং বিকাশ ঘটানোর উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত। এই একাডেমি জেলাভিত্তিক প্রাতিষ্ঠানিক কর্মসূচি- প্রশিক্ষণ কার্যক্রম, পরীক্ষা পরিচালনা ছাড়াও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক উৎসবের আয়োজন করে থাকে। যার মধ্যে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, বাংলা বর্ষ বিদায় ও বরণ অনুষ্ঠান, বসন্ত উৎসব, পৌষ মেলা, লোকজ সাংস্কৃতিক মেলা, জাতীয় শিশু দিবস, জাতীয় শোক দিবস, রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী, নজরুল জন্মজয়ন্তী, বিশ্বসঙ্গীত দিবস, বিশ্ব নাট্য দিবস, আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবস, ঋতু ভিত্তিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বাৎসরিক চারুকলা প্রদর্শনী, আবৃত্তি উৎসব, নাট্য উৎসব, মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, ত্রৈমাসিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও, গুণীজনদের জন্ম-মৃত্যু উদযাপনসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকে। প্রতিবছর এই একাডেমিতে বিভিন্ন নাট্যউৎসব আয়োজিত হয়ে থাকে।

মাদারীপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা সম্পাদনা

বাংলাদেশের শিল্প ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ প্রতি বছর প্রতিটি জেলায় গুণীজনদের শিল্পকলার বিভিন্ন শাখায় সম্মাননা জ্ঞাপন করার জন্য বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি কর্তৃক ‘জেলা শিল্পকলা একাডেমী সম্মাননা’ প্রদান কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। এই পুরস্কারের মধ্যে রয়েছে সম্মাননা পদক ও দশ হাজার টাকার সম্মাননা চেক। এরই অংশ হিসেবে ২০১৩ সাল থেকে প্রতি বছর শিল্প সংস্কৃতিতে অবদানের জন্য পাঁচ জন শিল্পীকে এই সম্মাননা প্রদন করা হয়। ২০১৫ সালে যন্ত্রসঙ্গীতে মায়া রানী দাস, কন্ঠসঙ্গীতে মো‌ঃ মোজাম্মেল হোসেন, নাট্যকলায় বাশার মাহমুদ, চারুকলায় জাহিদুর রহমান খান ও নৃত্যকলায় নার্গিস আক্তার মনি এই সম্মাননা পদক পান। ২০১৪ সালে কন্ঠসঙ্গীতে কাজী শহীদ ফরিদ, আবৃত্তিতে শাহাদাত হোসেন লিটন, নাট্যকলায় মশিউর রহমান খান টিটো, চারুকলায় সন্‌জীব দাস অপু ও নৃত্যকলায় রোমানা আফরোজা কুসুম এই সম্মাননা পদক পান।[৪]

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "মাদারীপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত"কালের কণ্ঠ। ২০১৮-০২-২০। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-০৪ 
  2. "জেলা শিল্পকলা একাডেমী - যোগাযোগ"বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-০৪ 
  3. "সন্তানদের মানুষ না করতে পারলে জঙ্গিবাদীরা সুযোগ নেবে"এনটিভি অনলাইন। ২০১৭-০১-২৮। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-০৪ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  4. জেলা শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা। মাদারীপুর: জেলা শিল্পকলা একাডেমি। ২০১৬-০৪-২৩। 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা