জিমি অরমন্ড

ইংরেজ ক্রিকেটার
(জেমস অরমন্ড থেকে পুনর্নির্দেশিত)

জেমস অরমন্ড (ইংরেজি: Jimmy Ormond; জন্ম: ২০ আগস্ট, ১৯৭৭) কভেন্ট্রি এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ২০০০-এর দশকের সূচনালগ্নে অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

জিমি অরমন্ড
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামজেমস অরমন্ড
জন্ম (1977-08-20) ২০ আগস্ট ১৯৭৭ (বয়স ৪৬)
কভেন্ট্রি, ইংল্যান্ড, যুক্তরাজ্য
ডাকনামহর্স
উচ্চতা১.৮১ মিটার (৫ ফুট ১১ ইঞ্চি)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম-ফাস্ট, ডানহাতি অফ ব্রেক
ভূমিকাবোলার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৬০৭)
২৩ আগস্ট ২০০১ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ টেস্ট৩ ডিসেম্বর ২০০১ বনাম ভারত
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ১৩৭
রানের সংখ্যা ৩৮ ১,৯১১
ব্যাটিং গড় ১২.৬৬ ১৫.১৬
১০০/৫০ ০/০ ০/৩
সর্বোচ্চ রান ১৮ ৬৪*
বল করেছে ৩৭২ ২৫,০৪০
উইকেট ৪৪৮
বোলিং গড় ৯২.৫০ ৩০.০৮
ইনিংসে ৫ উইকেট ২০
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ১/৭০ ৭/৬৩
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ০/- ৩১/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৯ জানুয়ারি ২০২১

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে লিচেস্টারশায়ার ও সারে দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি মিডিয়াম-ফাস্ট কিংবা অফ ব্রেক বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন ‘হর্স’ ডাকনামে পরিচিত জিমি অরমন্ড

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট সম্পাদনা

১৯৯৫ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত জিমি অরমন্ডের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। শক্তিশালী, দীর্ঘকায় ও মজবুত গড়নের ফাস্ট-মিডিয়াম বোলার ছিলেন জিমি অরমন্ড। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে মিডিয়াম-ফাস্ট বোলিং করলেও মোহালিতে ভারতের বিপক্ষে নিজস্ব দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে অফ স্পিন বোলিং করেছিলেন। বলে তিনি সুইং আনয়ণ করতে পারতেন। ১৯৯৮, ১৯৯৯ ও ২০০০ সালে এনবিসি ডেনিস কম্পটন পুরস্কার পান।

কর্লে সিসি’র পক্ষে ক্লাব ক্রিকেটে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তার খেলোয়াড়ী জীবনের সূত্রপাত ঘটে। নিজেকে ফাস্ট বোলারদের মৃত্যুকূপে পরিণত করার পাশাপাশি বোলার হিসেবেও সফলতার স্বাক্ষর রাখতে শুরু করেন। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ফিলংলি সিসি’র বিপক্ষেও কয়েকটি খেলায় অংশ নেন। দ্বিতীয় স্লিপ অঞ্চলে দণ্ডায়মান প্রতিপক্ষের তারকা খেলোয়াড় জিওফ মিটনের হাতে থেকে কট আউট থেকে বেঁচে যান।

১৯৯৫ সালে লিচেস্টারশায়ারের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে জিমি অরমন্ডের অভিষেক হয়। ১৯৯৬ ও ১৯৯৮ সালে চ্যাম্পিয়নশীপে সফলতার সাথে খেলেন। কয়েকটি ধারাবাহিক মৌসুম অতিবাহিত করার পর ইংল্যান্ডের অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ের ক্রিকেট খেলার জন্যে আমন্ত্রিত হন। কেনিয়া ও শ্রীলঙ্কায় ইংল্যান্ডের এ দলের সদস্যরূপে গমন করেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে দুইটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন জিমি অরমন্ড। ২৩ আগস্ট, ২০০১ তারিখে ওভালে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এরপর, ৩ ডিসেম্বর, ২০০১ তারিখে মোহালিতে স্বাগতিক ভারত দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি। তাকে কোন ওডিআইয়ে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেয়া হয়নি।

২০০১ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ওভালের অভিষেক টেস্টে এক উইকেট পান। ২০০১-০২ মৌসুমে জিম্বাবুয়ে সফরে একদিনের আন্তর্জাতিক দলের সদস্য হন। তবে, আঘাতের কারণে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন। ঐ মৌসুমের শীতকালে ভারত ও নিউজিল্যান্ড গমনার্থে ইংল্যান্ড দলের সদস্যরূপে মনোনীত হন। নিউজিল্যান্ড সফরে পোশাকবিহীন অবস্থায় অনুশীলনী খেলায় অংশ নিতে দেখা যায়। দলের সাথে ভারত গমন করেন। সেখানে তিনি তার নিজস্ব দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ লাভ করেন। বারো হাজারের অধিক রান সংগ্রহকারী - রিকি পন্টিংরাহুল দ্রাবিড়কে আউটের মাধ্যমে দুই উইকেট পেয়েছিলেন। দূর্বল ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের পাশাপাশি নতুন কোচ ডানকান ফ্লেচারের শারীরিক সুস্থতার দিকে কড়া নজরদারী থাকায় তাকে দলের বাইরে অবস্থান করতে হয়েছিল।

বিতর্কিত ভূমিকা সম্পাদনা

বেশ কয়েকটি উত্ত্যক্ত করার ঘটনায় নিজেকে জড়িত রেখেছিলেন তিনি। ২০০১ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট খেলায় মার্ক ওয়াহ তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে তিনি কেন এখানে এসেছেন? তুমিতো ইংল্যান্ডের পক্ষে খেলার উপযোগী নও। অস্ট্রেলীয় দলের অধিনায়কের দায়িত্বে থাকা স্টিভ ওয়াহ’র প্রতি লক্ষ্য রেখে এর প্রত্যুত্তরে অরমন্ড বলেন যে, হয়তোবা না, কিন্তু, আমি আমার পরিবারের মধ্যে অন্যতম সেরা খেলোয়াড়।[১]

খেলা শেষে জিমি অরমন্ড ধূমপান করতেন ও বিয়ার পান করতেন। ফলশ্রুতিতে, ইংরেজ খেলোয়াড় হিসেবে অতিরিক্ত ওজনের কারণে সমালোচনার শিকার হতেন।[২]

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উপেক্ষিত হবার পর লিচেস্টারশায়ার থেকে চলে আসেন ও সারে দলে যুক্ত হন। প্রথম বছরেই নতুন দলের কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে শিরোপা বিজয়ে ভূমিকা রাখেন।[৩] ২০০৯ সাল পর্যন্ত ঐ ক্লাবের সদস্য ছিলেন। এরপর তাকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। বর্তমানে স্টকপোর্ট গ্রামার স্কুলে ক্রিকেট কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Leach, Jimmy (২০০৯-০৭-০৬)। "Howzat! The best insults in cricket"The Independent। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০২-০১ 
  2. David Hopps। "David Hopps on Fat Boy Jimmy Ormond"The Guardian। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০২-০১ 
  3. "Surrey crowned champions"। BBC। ৭ সেপ্টেম্বর ২০০২। সংগ্রহের তারিখ ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ 

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা