জর্জ গান

ইংরেজ ক্রিকেটার

জর্জ গান (ইংরেজি: George Gunn; জন্ম: ১৩ জুন, ১৮৭৯ - মৃত্যু: ২৯ জুন, ১৯৫৮) নটিংহ্যামশায়ারের হাকনল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯০৭ থেকে ১৯৩০ সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে ১৫ টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ হয় তার।

জর্জ গান
আনুমানিক ১৯১০ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে জর্জ গান
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
জর্জ গান
জন্ম১৩ জুন, ১৮৭৯
হাকনল, নটিংহ্যামশায়ার
মৃত্যু২৯ জুন ১৯৫৮(1958-06-29) (বয়স ৭৯)
চাকফিল্ড, সাসেক্স, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি
ভূমিকাব্যাটসম্যান
সম্পর্কউইলিয়াম গান (কাকা), জন গান (ভ্রাতা)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১৫৩)
১৩ ডিসেম্বর ১৯০৭ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ টেস্ট৩ এপ্রিল ১৯৩০ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ১৫ ৬৪৩
রানের সংখ্যা ১১২০ ৩৫২০৮
ব্যাটিং গড় ৪০.০০ ৩৫.৯৬
১০০/৫০ ২/৭ ৬২/১৯৪
সর্বোচ্চ রান ১২২* ২২০
বল করেছে ১২ ৪২২৩
উইকেট ৬৬
বোলিং গড় ৩৫.৬৮
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৫/৫০
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১৫/- ৪৭৭/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে নটিংহ্যামশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে বোলিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

সম্পাদনা

জ্যাক হবস, ফ্রাঙ্ক ওলিফিল মিডের ন্যায় উল্লেখযোগ্য ব্যাটসম্যানের সাথে তিনিও এডওয়ার্ড যুগে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের সূচনালগ্নে প্রভূতঃ ভূমিকা রাখেন। ১৯০২ থেকে ১৯৩২ সালে নটিংহ্যামশায়ারের অন্য যে-কোন খেলোয়াড়ের তুলনায় সর্বাধিক রান তুলেন। ৩৫.৭০ গড়ে ৩১,৫৯২ রান সংগ্রহ করতে পেরেছেন।[] নটিংহ্যামশায়ারের পক্ষে সর্বাধিক ৩৫,২০৮ রান তুলেছেন জর্জ গান।

টেস্ট ক্রিকেট

সম্পাদনা

তার টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবন অন্যতম অপ্রত্যাশিত ঘটনায় ভরপুর ছিল। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে পনেরো টেস্টে অংশ নেন। তন্মধ্যে একটি বাদে বাদ-বাকী টেস্টগুলো ইংল্যান্ডের বাইরে খেলেন। ১৯০৭-০৮ মৌসুমে ইংল্যান্ড দল অস্ট্রেলিয়া গমন করে। শুরুতে তাকে দলের বাইরে রাখা হয়। তবে যে-কোন ভাবেই হোক তিনি স্বাস্থ্যের উন্নতিকল্পে অস্ট্রেলিয়ায় যান। তাকে অবগত করা হয় যে, দলের প্রয়োজনে খেলার সম্ভাবনা রয়েছে। এক পর্যায়ে এর প্রয়োজনীয়তাও পড়ে যায়। সিডনিতে তিনি সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নেন। টেস্ট অভিষেকের প্রথম ইনিংসেই ১১৯ রানের মনোজ্ঞ সেঞ্চুরি করেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ৭৪ রান তুললে পাঁচ টেস্টের সবকটিতেই তাকে দলে রাখা হয়। সিডনিতে অনুষ্ঠিত সিরিজের চূড়ান্ত ও পঞ্চম টেস্টে আবারও ১২২ রানের ইনিংস খেলেন।

৫১.৩৩ গড়ে ৪৬২ রান তুলে গড়ের দিক দিয়ে শীর্ষস্থানে ছিলেন। ১৯০৯ সালে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একটিমাত্র খেলায় অংশ নেয়ার সৌভাগ্য হয় তার। লর্ডসের দ্বিতীয় টেস্টে ও ১ রান তুলেন। তাস্বত্ত্বেও ১৯১১-১২ মৌসুমে আবারও অস্ট্রেলিয়ায় যান। কিন্তু, চার বছর পূর্বেকার সাফল্যের পুণরাবৃত্তি ঘটাতে পারেননি। ৪২.৩৩ গড়ে ৩৮১ রান তুলেন।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর তিনি দল নির্বাচকমণ্ডলীর সুনজরে ছিলেন না। ১৯২৯-৩০ মৌসুমের শেষ চার টেস্টে পূর্ব-পর্যন্ত খেলার সুযোগ পাননি। ঐ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যান। উইলফ্রেড রোডস ও অ্যান্ডি স্যান্ডহামের ন্যায় প্রথিতযশা কিছু খেলোয়াড়ের দীর্ঘদিনের অনন্য সাধারণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ সফরে নেয়া হয়েছিল।

মূল্যায়ন

সম্পাদনা

১৯১৪ সালে উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটারের মর্যাদা লাভ করে জর্জ গান।[]

ক্রিস্টোফার মার্টিন-জেনকিন্সের মতে, জর্জ গান যে-কোন ধরনের বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে নিজেকে মেলে ধরতে সক্ষমতা দেখিয়েছেন। তার দীর্ঘতর খেলোয়াড়ী জীবন বেশ বর্ণাঢ্যময় ছিল। তবে, যারা তার খেলা নিয়মিতভাবে দেখেছেন, তারা একবাক্যে স্বীকার করবেন যে তিনি আরও রান তুলতে পারতেন।[]

 
১৯১২ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে জর্জ গান

ব্যক্তিগত জীবন

সম্পাদনা

নটিংহ্যামশায়ারের উল্লেখযোগ্য ক্রিকেট পরিবারের সদস্য ছিলেন জর্জ গান। টেস্ট ক্রিকেটে অংশগ্রহণকারী জন গান তার জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা ও উইলিয়াম গান সম্পর্কে তার কাকা হন। জি. ভি. গানের পিতা তিনি। ১৩ জুন, ১৯২৯ তারিখে ওরচেস্টারে অনুষ্ঠিত খেলায় নিজ ৫০তম জন্মদিনে অপরাজিত ১৬৪ রান তুলেন। ১৯৩১ সালে ৫২ বছর বয়সে ওয়ারউইকশায়ারের বিপক্ষে ১৮৩ রান তুলেন। একই ইনিংসে তার পুত্র অপরাজিত ১০০ রান তুলেন যা প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট বিরল ঘটনারূপে স্বীকৃত।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Christopher Martin-Jenkins, The Wisden Book of County Cricket, Queen Anne Press, 1981, আইএসবিএন ০-৩৬২-০০৫৪৫-১, p294.
  2. "Wisden Cricketers of the Year"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০২-২১ 
  3. Martin-Jenkins, p33.

আরও দেখুন

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা