চৌগাছা কামিল মাদ্রাসা
এই নিবন্ধটিতে স্বপ্রকাশিত উৎসের অনুপযুক্ত তথ্যসূত্র থাকতে পারে। (মে ২০২০) |
চৌগাছা কামিল মাদ্রাসা বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের খুলনা বিভাগের যশোর জেলার চৌগাছা উপজেলার যশোর মহা সড়কের পাশে অবস্থিত একটি আলিয়া মাদ্রাসা।[১] ১৯৫১ সালে প্রতিষ্ঠাকালীন সময় এটি চৌগাছা ওল্ডস্কীম মাদ্রাসা নামে পরিচিত ছিল। বর্তমানে চৌগাছা কামিল মাদ্রাসা নামে পরিচিত হলেও প্রাতিষ্ঠানিক নাম চৌগাছা কামিল স্নাতকোত্তর আলিয়া মাদ্রাসা। মাদ্রাসাটিতে ইবতেদায়ী শাখা (প্রাথমিক শিক্ষা), দাখিল স্তর (মাধ্যমিক), আলিম (উচ্চ মাধ্যমিক) , ফাজিল (স্নাতক) ও কামিল (স্নাতকোত্তর) শ্রেণীতে পাঠ দান করা হয়। বর্তমানে এখানে প্রায় ৬০০ শিক্ষার্থী ও ২০ জন শিক্ষক পাঠদান করছেন।
সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
সম্পাদনানামকরণ ও শ্রেণি বিন্যাস
সম্পাদনাচৌগাছা কামিল মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার শুরুতে এলাকাবাসী ও ম্যানেজিং কমিটির মতামতের ভিত্তিতে সর্বপ্রথম নামকরণ হয় চৌগাছা ওল্ডস্কীম মাদ্রাসা। অতঃপর ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে মাদ্রাসাটি বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক সর্বপ্রথম স্বীকৃতি লাভ করে এবং নামকরণ হয় চৌগাছা নিউস্কীম দাখিল মাদ্রাসা। অতঃপর ১৯৭৭ সালে আলিম মঞ্জুরি হয়, নামকরণ চৌগাছা সিনিয়র আলিম মাদ্রাসা, ১৯৯০ সালে ফাজিল মঞ্জুরী হয়, নামকরণ হয় চৌগাছা সিনিয়র (ফাজিল) মাদ্রাসা এবং ২০০৫ সালে কামিল (হাদিস) বিভাগ মঞ্জুরী লাভ করে এবং নামকরণ হয় চৌগাছা কামিল স্নাতকোত্তর আলিয় মাদ্রাসা।[২] এবং ২০০৬ সালে মাদ্রাসাটি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশের অধিভুক্তি লাভ করে, এবং ২০১৬ সালে মাদ্রাসাটি ফাজিল ও কামিল স্তরের জন্য ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্থানান্তরিত হয়।
প্রতিষ্ঠাতাকালীন সদস্য
সম্পাদনাচৌগাছা কামিল মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার মূলে কতিপয় শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গের সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল। তারা হলেন
নং | নাম | বাসস্থান |
---|---|---|
১ | রিয়াজ উদ্দীন আহমাদ | চৌগাছা |
২ | আরজান আলী | চৌগাছা |
৩ | আব্দুল গনি সরদার | স্বরুপদাহ |
৪ | রজব আলী মৃধা | চৌগাছা |
৫ | মোঃ ইবরাহীম আহমাদ |
অবস্থান
সম্পাদনাচৌগাছা কামিল মাদ্রাসা, বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের খুলনা বিভাগের যশোর জেলা, চৌগাছা পৌরসভার যশোর মহা সড়কের পাশে চৌগাছা বাজার এ অবস্থিত।
বিভাগসমূহ
সম্পাদনাবর্তমানে চৌগাছা কামিল মাদ্রাসাতে নিম্ন বিভাগে পাঠদান করা হয়ে থাকে
ইবতেদায়ী বিভাগ
সম্পাদনামাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড এর সিলেবাস অনুযায়ী ইবতেদায়ী (প্রাথমিক শিক্ষা) বিভাগ চালু আছে এবং এই বিভাগে বর্তমানে প্রায় সাত জন শিক্ষক নিয়মিত পাঠদান করছেন।
দাখিল বিভাগ
সম্পাদনামাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড এর সিলেবাস অনুযায়ী দাখিল (মাধ্যমিক) বিভাগ চালু আছে এবং এই বিভাগে বর্তমানে প্রায় সাত জন শিক্ষক নিয়মিত পাঠদান করছেন। বর্তমানে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক ০৪ টি বিভাগ থাকলেও চৌগাছা কামিল মাদ্রাসাতে বর্তমানে শুধু মাত্র সাধারণ বিভাগ চালু আছে।
আলিম বিভাগ
সম্পাদনাবাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড এর সিলেবাস অনুযায়ী আলিম (উচ্চ মাধ্যমিক) বিভাগ চালু আছে এবং এই বিভাগে বর্তমানে প্রায় নয় জন শিক্ষক নিয়মিত পাঠদান করছেন। বর্তমানে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক ০৩ টি বিভাগ থাকলেও চৌগাছা কামিল মাদ্রাসাতে বর্তমানে শুধু মাত্র সাধারণ বিভাগ চালু আছে।[৩]
ফাজিল বিভাগ
সম্পাদনাবাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড এর সিলেবাস অনুযায়ী ০৩ বছর মেয়াদি ফাজিল(বি.এ(পাস) ডিগ্রী) বিভাগ চালু আছে এবং এই বিভাগে বর্তমানে প্রায় ছয় জন শিক্ষক নিয়মিত পাঠদান করছেন।
কামিল বিভাগ
সম্পাদনাবাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড এর সিলেবাস অনুযায়ী ০২ বছর মেয়াদি কামিল (মাস্টার্স ডিগ্রী) বিভাগ চালু আছে এবং এই বিভাগে বর্তমানে প্রায় ছয় জন শিক্ষক নিয়মিত পাঠদান করছেন। বর্তমানে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক ০৪ টি বিভাগ এর সকল বিভাগ চালু আছে।
সুযোগ-সুবিধা
সম্পাদনাআবাসিক
সম্পাদনাদীর্ঘদিন ধরে চৌগাছা কামিল মাদ্রাসাতে আবাসিক সুবিধার ব্যবস্থা চালু রাখা হয়েছে। প্রশাসনিক ভবনের সাথেই এই আবাসিক ব্যবস্থা রয়েছে যেখানে দূরদূরান্তের শিক্ষার্থীগন আবাসনের মাধ্যমে সহজে মাদ্রাসাতে পড়ালেখার সুযোগ পেয়ে থাকে। বর্তমানে শুধুমাত্র ছাত্র দের জন্য আবাসিক ব্যবস্থা রয়েছে।[৪]
মসজিদ
সম্পাদনামাদ্রাসা এর পশ্চিম পার্শ্বে রয়েছে দুই-তলা বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় মাদ্রাসা মসজিদ। যেখানে নিয়মিত ভাবে মাদ্রাসার সকল ছাত্রদেরকে কোরআন এবং বিভিন্ন ধর্মীয় মাসালা শিক্ষা দেওয়া হয়।
ঈদগাহ
সম্পাদনাবর্তমানে চৌগাছা উপজেলার সর্ববৃহৎ ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয় এই প্রাচিনতম চৌগাছা কামিল মাদ্রাসাতে। যেখানে একই সাথে প্রায় লক্ষাধিক মুসল্লি উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দুই ঈদের নামাজের জামাতে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও এটা উপজেলার কেন্দ্রীয় ঈদগাহ হিসাবে পরিচিতি আছে।
খেলার মাঠ
সম্পাদনামাদ্রাসা প্রাঙ্গণে রয়েছে সুবিস্তিত খেলার মাঠ যেখানে অবসরে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা খেলা করার সুযোগ পেয়ে থাকে। এবং শিক্ষার্থীর বার্ষিক ক্রিয়ার ব্যবস্থাপনায় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ করে থাকেন। এমন কি চৌগাছার এই সুনাম ধন্য মাদ্রাসা টি বিভিন্ন মাদ্রাসা ভিত্তিক, স্কুল ভিত্তিক ক্রিয়া সমুহে অগ্রজ হিসাবে অংশগ্রহণ করে থাকে।
হলরুম
সম্পাদনাবর্তমানে মাদ্রাসার দক্ষিণ-পশ্চিম পার্শ্বে রয়েছে বিশাল এক হলরুম যেখানে মাদ্রাসার বিভিন্ন অনুষ্ঠান সমুহ অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। একই সাথে এই হলরুমে প্রায় সহস্রাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করতে পারে।
মহিলা কমনরুম
সম্পাদনাচৌগাছা কামিল মাদ্রাসা আধুনিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি অত্যন্ত উল্লেখ যোগ্য প্রতিষ্ঠান যেখানে মহিলা শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে একটি মহিলা কমনরুম।
প্রকাশনা
সম্পাদনাহেরার রশ্মি
সম্পাদনাচৌগাছা কামিল মাদ্রাসার পঞ্চাশতম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকিতে হেরার রশ্মি নামক একটি বর্ষ পঞ্জিকার প্রকাশ করেন।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Chowgacha Kamil Madrasha - Sohopathi | সহপাঠী" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৮-২৫।
- ↑ "চৌগাছা কামিল মাদ্রাসার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস"।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "জেলায় শ্রেষ্ঠ আরিফা"। Daily Nayadiganta। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৮-২৫।
- ↑ কথা, সমাজের। "চৌগাছার ২১টি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা বিশ্ব খাদ্য সংস্থার বিস্কুট ও উপবৃত্তি পাচ্ছে না"। সমাজের কথা। ২০২১-০৮-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৮-২৫।