চাঁদনি চক, কলকাতা
চাঁদনি চক হল ভারতের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা জেলার উত্তর কলকাতার একটি পাড়া। এটি পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে পুরনো কম্পিউটার সফটওয়্যার পণ্য এবং হার্ডওয়্যার ও সস্তা পণ্যের জন্য বিখ্যাত।[১] ১৭৮৪ সাল থেকে কলকাতার মানচিত্রে চকবাজার এলাকার অবস্থান পাওয়া যায়। ধারণা করা হয়দিল্লির চাঁদনি চকের নামানুসারে কলকাতার চাদনী চকের নাম রাখা হয়। এখানে একটি মেট্রো স্টেশন আছে।
চাঁদনি চক | |
---|---|
পাড়া | |
কলকাতায় অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২২°৩৩′৫৬″ উত্তর ৮৮°২১′২৪″ পূর্ব / ২২.৫৬৫৫৬° উত্তর ৮৮.৩৫৬৬৭° পূর্ব | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | পশ্চিমবঙ্গ |
শহর | কলকাতা |
জেলা | কলকাতা |
মেট্রো স্টেশন | চাঁদনি চক |
এলাকা কোড | +৯১ ৩৩ |
লোকসভা কেন্দ্র | কলকাতা উত্তর |
বিধানসভা কেন্দ্র | চৌরঙ্গী |
ইতিহাস
সম্পাদনা১৭৮৪ সাল থেকে উত্তর কলকাতার অর্থনৈতিক কেন্দ্র ও বাজার হিসেবে চাঁদনি চক গোড়াপত্তন ঘটে। এ. আপজনের ১৭৮৪ সালের কলকাতার মানচিত্রে "চাঁদনি চক বাজার", "চাঁদনি বাজার কা রাস্তা", "চাঁদনি চক" বা "গোরিমার লেন" হিসেবে দেখানো হয়েছে। কলকাতা পৌরসংস্থার নথিপত্রে ১৯৩৭ সালের আগে স্থানীয়ভাবে সেই রাস্তাগুলির একটি 'গুরিয়ামা লেন' নামে লিপিবদ্ধ। ১৯৩৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাস্তার নাম আনুষ্ঠানিকভাবে পরিবর্তন করে 'চাঁদনি অ্যাপ্রোচ' করা হয়। ১৯৩৮ সালে আবার এর নামকরণ 'চাঁদনি চক স্ট্রিট' করা হয়।[১] অনুমান করা হয় যে মুঘলদের স্বীকৃতির প্রতীক হিসাবে দিল্লির চাঁদনি চকের নামানুসারে এই নাম দেওয়া হয়েছিল।[২]
উইলিয়াম কেরি অনুমান করেন যে এই নামটি দোকানের উপরের ছাউনি বা আধা-স্থায়ী ছাঁদ (বাংলায় চাঁদনা) থেকে এসেছে। বাজারটি ১৯শ শতাব্দীতে বিদ্যমান ছিল। আর জে মিনির "রাউন্ড অ্যাবাউট ক্যালকাটা" (১৯২২) বইয়ের তথ্যানুসারে চাঁদনি চকে পোশাকের বাজার, সাইকেলের দোকান, ক্যামেরার দোকান, সিগারেট ও শরবতের জন্য ছোট ছোট দোকান ছিল। আধা-স্থায়ী স্থাপনা নিয়ে হকার ও দোকানদাররা এর প্রতি বর্গ ইঞ্চি জায়গা দখল করতে থাকে। ১৯০৭ সালে পৌরসংস্থা চাঁদনি চকের রাস্তাগুলো প্রশস্ত করার জন্য জমি কিনেছিল, কিন্তু তা পথচারীদের কাজে আসেনি।[১]
১৯৯৪ সালের অক্টোবরে এসপ্ল্যানেড থেকে চাঁদনি চক পর্যন্ত প্রসারিত অংশটি নির্মাণের জন্য অনুমোদিত হওয়ায় চাঁদনি চক মেট্রো করিডোরের অধীনে আসে।[৩]
বাজার
সম্পাদনাচাঁদনি চক পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে পুরোনো এবং বৃহত্তম সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার বাজার হিসাবে পরিচিত। সস্তা হওয়ায় এবং নিকটতম সুবিধার কারণে চাঁদনি চকে একাধিক প্রযুক্তি কোম্পানির প্রধান দপ্তর ও পরিষেবা কেন্দ্র ছিল।[৪][৫] একে নকল সফটওয়্যার, মিডিয়া ও পণ্য বিক্রির জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি দপ্তর দ্বারা ২০০৯ ও ২০১০ সালে একটি কুখ্যাত বাজার হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছিলো।[৬][৭]
পরিবহন
সম্পাদনাদক্ষিণ ও উত্তর কলকাতার মধ্যে অন্যতম প্রধান সংযোগকারী সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ চাঁদনি চকের মধ্য দিয়ে যায়। এছাড়াও কলকাতার সড়ক লেনিন সরণি চাঁদনি চকের মধ্য দিয়ে গেছে যা একে সরাসরি শিয়ালদহের সাথে সংযুক্ত করেছে। চাঁদনি চক ও এসপ্ল্যানেড মেট্রো স্টেশন উত্তর দক্ষিণ মেট্রো করিডোরের নিকটতম মেট্রো স্টেশন। কলকাতার পূর্ব পশ্চিম মেট্রো করিডোরের মেট্রো স্টেশন হিসেবেও এসপ্ল্যানেড কাজ করে।[৮]
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ "Streetwise Kolkata: Chandni Chowk's name could have come from the canopies of its shops"। ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১।
- ↑ "Etymologies of Names of Neighbourhoods of Kolkata (Calcutta)"। Two Together।
- ↑ "A Brief History of The Kolkata Metro - blog.tummoc.com"। ২৭ জুলাই ২০২১।
- ↑ "Chandni Chowk - Kolkata"। www.connectingtraveller.com।
- ↑ "Jail-Broken iPhones, LCDs On The Pavement & Ancient Mobile Phones - Chor Bazar In Kolkata, Chandni is the ultimate Thug Life! - The Beacon Kolkata"। ২১ জানুয়ারি ২০১৮। ২১ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "Section 3"। Special 301 Report – উইকিসংকলন-এর মাধ্যমে।
- ↑ "Section 3"। Special 301 Report – উইকিসংকলন-এর মাধ্যমে।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২০ আগস্ট ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ নভেম্বর ২০১৩।