খান জাহানের নির্মিত প্রাচীন রাস্তা

খান জাহানের নির্মিত প্রাচীন রাস্তা বলতে প্রায় সাড়ে ৬শত বছর আগে তৎকালীন খলিফাতাবাদ নগরের প্রতিষ্ঠাতা উলুঘ খান জাহান এটি নির্মিত একটি প্রাচীন রাস্তা ।[১] এই রাস্তাটি খননকালে ১৫ শতকের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নবস্তু ও কৌতূহল উদ্দীপক কয়েকটি প্রাচীন স্থাপনার ধ্বংসাবশেষ বেরিয়ে আসে। উন্মোচিত এ সকল স্থাপত্য কাঠামোর মধ্যে আছে প্রাচীন কালের কালভার্ট, কিছু নিরাপত্তা চৌকি, প্রবেশদ্বার প্রভৃতি।

খান জাহানের নির্মিত প্রাচীন রাস্তা
সাধারণ তথ্য
অবস্থানমগরা গ্রাম, ষাটগম্বুজ ইউনিয়ন
ঠিকানাবাগেরহাট সদর উপজেলা
শহরবাগেরহাট
দেশবাংলাদেশ
স্বত্বাধিকারীবাংলাদেশ প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তর

অবস্থান সম্পাদনা

ঐতিহাসিক মসজিদ ষাট গম্বুজ মসজিদ হতে প্রায় সাড়ে তিনশ মিটার উত্তর ও খুলনা-বাগেরহাট মহাসড়ক হতে প্রায় ৫০০ মিটার উত্তর দিকে এই প্রাচীন রাস্তাটির অবস্থান। বাগেরহাট সদর উপজেলা এর ষাটগম্বুজ ইউনিয়নে মগরা গ্রামে এটির অবস্থান।

ইতিহাস ও বিবরণ সম্পাদনা

খান জাহান আলীর নির্মিত এই প্রাচীন রাস্তাটি যশোর ও বাগেরহাটে অঞ্চল হতে খলিফাতাবাদ নগরীর পাশ দিয়ে একদম চট্টগ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। এই ইট বিছানো পাকা রাস্তাটি একই সাথে সেই সময়ের শহর রক্ষার বাঁধ হিসাবেও ব্যবহৃত হত বলে মনে করা হয় । যদিও বর্তমানে দীর্ঘ সময়ের বিস্তৃত এই প্রাচীন রাস্তাটির বেশীরভাগ নিদর্শনই আজ হারিয়ে গেছে। তবেও এখনও সেই ইট দ্বারা নির্মিত খান জাহান এর প্রাচীন রাস্তা ও সেতুর প্রায় এক কিলোমিটারর ও বেশি এলাকা টিকে আছে, যা বর্তমানে ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক বিশ্ব ঐতিহ্যের' অন্তরভুক্ত করা হয়েছে । প্রায় শত বছর আগে ১৯১৪ সালে প্রকাশিত সতীশ চন্দ্র মিত্রের লেখা বিখ্যাত ‘যশোর-খুলনার ইতিহাস’ গ্রন্থেও খানজাহানের এ প্রাচীন রাস্তার উল্লেখ ছিল ।[২] এই গ্রন্থটিতে তৎকালীন সময়ে খলিফাতাবাদ থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত এই রাস্তাটির সম্ভাব্য রুট সম্পর্কে উল্লেখ রয়েছে। সেই রুটে বলা হয়েছে “রাস্তাটি ষাটগম্বুজ মসজিদ হতে পূর্বদিকে বাগেরহাট শহরের ভিতর দিয়ে অতিক্রম করে। এটি কাড়াপাড়া, ও বাসাবাটি গ্রামের মধ্য দিয়ে তথকালিন সময়ে ভৈরবকূল অতিক্রম করে বৈটপুর, কচুয়া, চিংড়াখালী গ্রামের মাঝ হয়ে হোগলা বুনিয়ার নিকট দিয়ে বলেশ্বর অতিক্রম করে বর্তমান বরিশাল জেলায় প্রবেশ করেছিল। ষোড়শ শতাব্দীর পূর্ব পর্যন্ত এই রাস্তাটির অস্তিত্ব সম্পর্কে জানা যায়। ধারণা করা হয় প্রবল ভূমিকম্পে পদ্মা নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হওয়ার ফলে এই রাস্তাটির অস্তিত্ব বিলিন হয়। ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এই প্রাচীন রাস্তাটির রক্ষনাবেক্ষন করে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি ঘোষণা করেন।

 
Old Road Constructed by Khan Jahan Ali
 
Old Road Constructed by Khan Jahan Ali
 
Old Rode by Khan Jahan Ali

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. www.bagerhatinfo.com
  2. গ্রন্থ-যশোর-খুলনার ইতিহাস
    লেখক-সতীশ চন্দ্র মিত্র