ক্লিফ ম্যাকওয়াট

ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটার

ক্লিফোর্ড অব্রে ম্যাকওয়াট (ইংরেজি: Cliff McWatt; জন্ম: ১ ফেব্রুয়ারি, ১৯২২ - মৃত্যু: ২০ জুলাই, ১৯৯৭) তৎকালীন ব্রিটিশ গায়ানার জর্জটাউন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৫০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ক্লিফ ম্যাকওয়াট
১৯৫৬ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে ক্লিফ ম্যাকওয়াট
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামক্লিফোর্ড অব্রে ম্যাকওয়াট
জন্ম১ ফেব্রুয়ারি, ১৯২২
জর্জটাউন, ডেমেরারা, ব্রিটিশ গায়ানা
মৃত্যু২০ জুলাই, ১৯৯৭
অটোয়া, অন্টারিও, কানাডা
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি
ভূমিকাউইকেট-রক্ষক
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৮৩)
১৫ জানুয়ারি ১৯৫৪ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট১১ এপ্রিল ১৯৫৫ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
ব্রিটিশ গায়ানা
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৪১
রানের সংখ্যা ২০২ ১,৬৭৩
ব্যাটিং গড় ২৮.৮৫ ২৮.৮৪
১০০/৫০ ০/২ ২/৭
সর্বোচ্চ রান ৫৪ ১২৮
বল করেছে ২৪ -
উইকেট
বোলিং গড় ১৬.০০ ৫২.৫০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ১/১৬ ১/১৬
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৯/১ ৪৫/৬
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৬ মে ২০২০

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটে ব্রিটিশ গায়ানা দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, বামহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে বোলিং করতেন ক্লিফোর্ড ম্যাকওয়াট নামে পরিচিত ক্লিফ ম্যাকওয়াট

খেলোয়াড়ী জীবন সম্পাদনা

১৯৪৩-৪৪ মৌসুম থেকে ১৯৫৬-৫৭ মৌসুম পর্যন্ত ক্লিফ ম্যাকওয়াটের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ১৯৪৩-৪৪ মৌসুমে ব্রিটিশ গায়ানার পক্ষে খেলেছিলেন। ১৯৫৩-৫৪ মৌসুমে ত্রিনিদাদের বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১২৮ রান তুলেছিলেন। কার্যকরী বামহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্লিফ ম্যাকওয়াটের সুনাম ছিল। এছাড়াও, ক্ষিপ্রগতিসম্পন্ন উইকেট-রক্ষক হিসেবে দলে ভূমিকা রাখার প্রয়াস চালাতেন।

১৯৪৮-৪৯ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের সংরক্ষিত উইকেট-রক্ষক হিসেবে ভারত, পাকিস্তান ও সিলন গমন করেছিলেন।

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ছয়টিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন ক্লিফ ম্যাকওয়াট। ১৫ জানুয়ারি, ১৯৫৪ তারিখে কিংস্টনে সফরকারী ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১১ এপ্রিল, ১৯৫৫ তারিখে পোর্ট অব স্পেনে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

নিয়মিত উইকেট-রক্ষক ক্লাইড ওয়ালকটের আঘাতজনিত কারণে ঘাটতি মোকাবেলায় ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ কর্তৃপক্ষ বেশ কয়েকজন উইকেট-রক্ষককে তার স্থলাভিষিক্ত করে। অন্যতম উইকেট-রক্ষক হিসেবে তিনিও এ দায়িত্ব পালনে চেষ্টা চালিয়েছিলেন।

ইংল্যান্ডের মুখোমুখি সম্পাদনা

১৯৫৩-৫৪ মৌসুমে ইংল্যান্ড দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমনে আসে। কিংস্টনে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম টেস্টে তিনি প্রথমবারের মতো খেলতে নামেন। ৫৪ ও অপরাজিত ৩৬ রান তুলেছিলেন তিনি। তন্মধ্যে, প্রথম ইনিংসে ষষ্ঠ উইকেটে জেরি গোমেজের সাথে ৮৮ রানের জুটি গড়েন। এরপর, দ্বিতীয় ইনিংসে এভারটন উইকসের সাথে নিরবিচ্ছিন্নভাবে ৯০ রান তুলে স্বাগতিক দলকে খুব সহজেই জয় এনে দেন।[১]

৮ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে বেশ কিছু কার্যকর রান সংগ্রহে সচেষ্ট হন। তবে, বেশ কয়েকবার আউট হওয়া থেকে বেঁচে যাওয়ার প্রেক্ষিতে একজন লেখক তাকে ‘ম্যাকাট’ নামে আখ্যায়িত করেন। জর্জটাউন টেস্টে তার মৃত্যুর অল্পকিছুদিন আগে মৃত্যুবরণকারী জে. কে. হল্টের সাথে অষ্টম উইকেটে নেমে দলকে ফলো-অন থেকে বাঁচানোর আপ্রাণ প্রয়াস চালান। কিন্তু, জুটির সংগ্রহ ৯৯ থাকা অবস্থায় তিনি রান আউটের শিকার হন। তবে, ক্লিফ ম্যাকওয়াট পরবর্তীকালে উল্লেখ করেছিলেন যে, তিনি প্রায় দুই গজ দূরে ছিলেন। দর্শকেরা আম্পায়ার ব্যাজ মেনজিসের প্রতি লক্ষ্য করে তেড়ে আসে ও খেলায় প্রায় দশ মিনিট বন্ধ ছিল।

পাঁচ টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজের সবকটিতেই তিনি অংশগ্রহণ করেছিলেন। ভারত সফরে ক্লাইড ওয়ালকটের সহকারী ছিলেন। তবে, পরবর্তী পাঁচ বছরের পূর্ব-পর্যন্ত তাকে কোন টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়নি।

অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি সম্পাদনা

এক বছর পর আরেকটি টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হন। ১৯৫৪-৫৫ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমনে আসে। পরবর্তী মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে আলফ্রেড বিন্স তার স্থলাভিষিক্ত হন ও তৃতীয় টেস্টে ক্লেয়ারমন্ট দেপিয়াজা অংশ নেন।

এভাবেই তার টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবনের সমাপ্তি ঘটে।

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

১৯৮৬ সালে কানাডায় অভিবাসিত হন। কানাডায় অভিবাসিত হলেও খেলার প্রতি তার দুর্নিবার আকর্ষণ লক্ষ্য করা যায়। সেখানে সড়ক দূর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন। অতঃপর, ২০ জুলাই, ১৯৯৭ তারিখে ৭৫ বছর বয়সে কানাডার অটোয়া এলাকায় ক্লিফ ম্যাকওয়াটের জীবনাবসান ঘটে।[২]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা