কোশ টেপা খাল

কোশ টেপা বা কোশতেপা খাল ( ফার্সি: کانال قوش تپه; উজবেক: Qoʻshtepa kanali ) হলো আমু দরিয়া থেকে পানি সরিয়ে ফ্রায়ব প্রদেশ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার জন্য উত্তর আফগানিস্তানে নির্মিত একটি খাল। মূল খালটি ২৮৫ কিলোমিটার দীর্ঘ হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে এবং সামগ্রিকভাবে উদ্যোগটি ৫৫০,০০০ হেক্টর মরুভূমিকে কৃষিজ জমিতে রূপান্তর করবে। কোশ তেপা খালটি বলখ প্রদেশে শুরু হয়ে জওজানের মধ্য দিয়ে গিয়ে ফারিয়াবে শেষ হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

আফগানিস্তানের তালেবান সরকার খালটিকে একটি মেগা প্রকল্পে পরিণত করেছে এবং ২০২২ সালে এটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। প্ল্যানেট ল্যাব কর্তৃক সরবরাহ করা চিত্রগুলি দেখায় যে, ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত খালের ১০০ কি.মি.'র বেশি খনন করা হয়েছে এবং প্রকল্পের প্রথম পর্যায় ২০২৩ সালের অক্টোবরে সম্পন্ন হয়। তবে দ্বিতীয় পর্যায় অবিলম্বেই শুরু হয়।

স্বাধীন বিশেষজ্ঞ ও প্রকৌশলীরা এই প্রকল্পের বিষয়ে সংশয় ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন এই বলে যে, আফগান সরকারের কাছে কার্যকরভাবে খালটি কীভাবে সম্পূর্ণ করতে হবে তা জানা নেই। বিশেষ করে, তারা উল্লেখ করেছে যে প্রাথমিক নির্মাণ পদ্ধতি নিযুক্ত করার সাথে তদারকির অভাব রয়েছে।

আমু নদীর পানি ব্যবহার ব্যবস্থা

সোভিয়েত ইউনিয়নের আমলে কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও উজবেকিস্তানের চারটি প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রজাতন্ত্রের মধ্যে আমুর জল ভাগ করার একটি আনুষ্ঠানিক ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছিল।

সোভিয়েত ইউনিয়ন অভ্যন্তরীণ হওয়ায়, এই চুক্তিগুলি আফগানিস্তানের স্বার্থকে প্রতিফলিত করেনি এবং ২০২২ সালে যখন খাল নির্মাণ শুরু হয়েছিল, তখনও আফগানিস্তান আন্তঃসীমান্ত নদীর জল ব্যবহার করার বিষয়ে কোনও আঞ্চলিক বা আন্তর্জাতিক চুক্তির পক্ষ ছিল না। যেমন আমু নদীর অববাহিকা অঞ্চলের অন্যান্য দেশের উদ্বেগের সমাধানের জন্য কোনো পূর্ব-বিন্যস্ত বিরোধ নিষ্পত্তির পদ্ধতিই ছিল না। আফগান সরকার যুক্তি দিয়েছিল যে, আমু নদীর জল ব্যবহার করার সাধারণ অধিকার আফগানিস্তানের আছে এবং তা একটি আনুষ্ঠানিক চুক্তি থাকা সত্ত্বেও।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

প্রধান নিম্ন-নদীর দেশ উজবেকিস্তান এতে সম্ভাব্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশংকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে খালটি তার কৃষিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। ২০২৩ সালে উজবেক কর্মকর্তারা এই বিষয়ে তালেবানদের সাথে আলোচনা করেছিলেন, যদিও কোন আনুষ্ঠানিক চুক্তিতে পৌঁছানো যায়নি।

সম্ভাব্য হুমকি

পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন যে, কোশ টেপা খাল আমু নদী থেকে আরও বেশি জল সরিয়ে আরাল সাগরের পরিস্থিতি আরও খারাপ করবে। CABAR.asia বিশ্লেষণাত্মক প্রকাশনা দ্বারা প্রকল্পের একটি বিশদ বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে, নিযুক্ত নির্মাণ পদ্ধতিগুলি নতুন বলে মনে হয়েছিল এবং তারা এই উপসংহারে পৌঁছেছে যে খালের পানি হ্রাসের সম্ভাবনা প্রচুর পরিমাণে আছে।