কাতারী রান্না ঐতিহ্যবাহী আরব রান্নার সাথে অঙ্গীভূত।[১] ম্যাচবুস হ'ল কাতারের জাতীয় খাবার; এটি চাল, মাংস এবং শাকসব্জীর সমন্বয়ে তৈরি একটি খাবার।[১] সামুদ্রিক খাদ্য এবং খেজুর হলো দেশটির প্রধান খাদ্য দ্রব্য।[২] এই খাবারগুলোর মধ্যে অনেকগুলি এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশেও প্রচলিত আছে, কারণ এগুলির মধ্যে অনেকগুলো খাবারে অভিন্নতা আছে। এই অঞ্চলের অন্যান্য অংশে কিছু একই খাবারের ভিন্ন নাম রয়েছে বা কিছুটা আলাদা উপকরণ ব্যবহার করা হয়।[৩]

কাতারী মশলার মিশ্রণ সম্পাদনা

বিযার সম্পাদনা

এই কাতারি মশালার মিশ্রণটি তৈরি করতে একসাথে কতগুলো মশলা মিশানো হয়। এই মশলার মিশ্রণটির মধ্যে রয়েছে: কালো গোলমরিচ, ধনিয়া বীজ, দারুচিনি টুকরো, লবঙ্গ, শুকনো আদা, আস্ত এলাচ, শুকনো লাল মরিচ এবং সামান্য হলুদের টুকরো। মশলাগুলি প্রথমে ভাল করে ধৌত করা হয় এবং তারপরে রোদে শুকানো হয়, এর পরে সেগুলো পিষে ফেলা হয় এবং একটি বয়ামে এক সাথে মিশ্রিত করা হয়।[৩]

দাকোসের মিশ্রণ সম্পাদনা

এটি একটি লাল মরিচের মিশ্রণ যার মধ্যে চূর্ণ করা গম, ভুনা ও গুড়ো করা জিরা বীজ, ভেজে গুড়ো করা তিল বীজ, ধনিয়া বীজ, চূর্ণ করা শুকনো লাল মরিচ, রসুনের কোয়া এবং সবশেষে লবণ যোগ করা হয়।[৩]

হিসো সম্পাদনা

এই মশলার মিশ্রণটির মধ্যে আছে: শুকনো আদা, দারুচিনি টুকরো, এলাচের দানা, আস্ত কাল গোলমরিচ, হলুদের টুকরো এবং জিরা বীজ।[৩]

প্রধান খাবার সম্পাদনা

 
কাবসা, ম্যাচবুস, ম্যাচবাস বা ম্যাচবউস মাকবুশ নামেও পরিচিত

কাতারী ম্যাকবুস সম্পাদনা

চাল, মাংস, পেঁয়াজ এবং টমেটোর সাথে মশলা মিশিয়ে খাবারটি তৈরি করা হয়। এই কাবসা খাবারের স্থানবেদে ভিন্নতা আছে।

কাবসা সম্পাদনা

মূল নিবন্ধ: কাবসা

চাল, মাংস এবং শাকসবজির সাথে মশলা মিশিয়ে খাবারটি তৈরি করা হয়। এই খাবারটি অনেকটা বিরিয়ানি বা পোলাওয়ের মতো।

ঘুযি সম্পাদনা

পুরো ভেড়ার বাচ্চা কাবাব বানিয়ে বাদামী ভাতের উপরে পরিবেশন করা হয়।[৪] একে শুওয়াও বলা হয়।

মাদরুবা সম্পাদনা

মাদরুবা হলো একটি মসলাদার খাবার, এটি কশানো চালের সাথে শাকসবজি এবং মাংস মিশিয়ে তৈরি করা হয়।[৩]

হারিস সম্পাদনা

হরিস খাবারটি গমের বীজ পিষে তৈরি করা হয় এবং এতে চর্বি (ঘি) মেশানো হয়। লবণ এবং পানি যোগ করা হয়, এবং এটি মুরগী বা মাংস দিয়ে প্রস্তুত করা যায়।[৩]

 
মাদরুবা

জারিশ সম্পাদনা

জারিশ খাবারটি গম পিষে এর সাথে মাংস বা মুরগী যোগ করে প্রস্তুত করা হয়।[৩]

খোবেস আরগ্যাগ সম্পাদনা

খোবেস আরগ্যাগ একটি পাতলা সমতল রুটি যা ময়দা, পানি এবং লবণ মিশিয়ে তৈরি করা হয় এবং এটি থারিদের মতো অন্যান্য খাবারের সাথে পরিবেশন করা হয়।[৩]

থারিদ সম্পাদনা

থারিদ হলো খোবেস আরগ্যাগ এবং ঝোল, সবজি এবং মুরগী বা মাংসের মিশ্রণ।[৩]

পানীয় সম্পাদনা

আরবি কফি সম্পাদনা

মূল নিবন্ধ: আরবি কফি
গাঢ় ঝলসানো কফি বিন থেকে তৈরি এলাচ দিয়ে মশলাদার করা কফি এবং এটি খেজুরের সাথে পরিবেশন করা হয়।[৩]

করাক সম্পাদনা

কারাক, "দুধের সাথে চা" বা "চাই দুধ" নামেও পরিচিত,[৫] এটি এলাচ, জাফরান এবং চিনিযুক্ত একটি উজ্জ্বল কমলা রঙের মিশ্রণ।[৪] অল্প আঁচে মশলার সাথে কিছু বাষ্পীভূত দুধ মিশ্রিত করে এই চা তৈরি করা হয়।

মিষ্টান্ন সম্পাদনা

 
লুগিমাত
 
সাগো

লুগিমাত সম্পাদনা

এই গাঢ় করে ভাজা পেস্ট্রি মিষ্টান্নটি তৈরি করতে ব্যবহৃত উপাদানসমূহ হলো ময়দা, দুধ, মাখন, চিনি, জাফরান এবং এলাচি। ভাজা হওয়ার পরে এর উপরে মধু বা একটি মিষ্টি সিরাপ ঢেলে পরিবেশন করার জন্য প্রস্তুত করা হয়।[৩]

খাবিস সম্পাদনা

খাবিস তৈরি করার প্রণালীটি হলো বীজবিহীন খেজুর পানিতে ভাল করে সিক্ত করা হয় এরপর এটি ভাজা ময়দার সাথে মিশানো হয় এবং এর সাথে চিনি, তেল, মাখন, জাফরান, এলাচ এবং গোলাপজল মিশ্রিত করা হয়।[৩]

আসিদা সম্পাদনা

আসিদা একটি মিষ্টি খাবার; এটি ময়দা, তেল এবং চিনি দিয়ে তৈরি করা হয়।[৩]

ব্যালালেত সম্পাদনা

চিনি, দারুচিনি, জাফরান এবং এলাচ দিয়ে রান্না করা নুডলস। এর উপরে অনেক সময়ই একটি ভাজা ডিম থাকে।[৩]

সাগো সম্পাদনা

জাফরান এবং এলাচ দিয়ে মশলাদার করা মিষ্টি জেলাটিন পুডিং।[৩]

ওম আলী সম্পাদনা

রুটি ও ভাতের পুডিং।[৬]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "The 3 M's of Qatari Cuisine"। The Daily Meal। ৩ অক্টোবর ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মে ২০১৫ 
  2. "Culture of Qatar"। Hilal Plaza। সংগ্রহের তারিখ ৬ মে ২০১৫ 
  3. Almeer, Sheikha Ahmad (২০১৬)। The Art of Qatari Cuisine। Doha: Gulf Publishing and Printing Co.। 
  4. "Traditional Qatari Cuisine". Anglo info Limited.
  5. "Getting to know Qatar"। Qatar Friendship Fund। ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০১৫ 
  6. "Qatar Food and Food Etiquette" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১ জুলাই ২০১৪ তারিখে. Qatar Visitor.

টেমপ্লেট:মধ্য প্রাচ্যের রন্ধনশৈলী